ছোট ঘটনার ভয়াবহ সমাপ্তি (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


রাজন হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলো। রাত বাজে এখন বারোটা। একটু পর তার চাচার অপারেশন শুরু হবে। চাচার অপারেশনের জন্যই রাজন এত রাতে হাসপাতালে এসেছে। যদিও তার আত্মীয়-স্বজন বলছিল তাকে বাড়ি চলে যেতে। কারণ এত রাতে তাকে একাই বাড়ি যেতে হবে। সে ছাড়া বাকি যারা হসপিটালে আছে তারা রাতটা হসপিটালেই রাত কাটাবে। সবাই জোরাজুরি করলেও রাজন তাদেরকে বোঝালো কোন সমস্যা হবে না। এখান থেকে তার বাড়ি খুবই কাছে। সে কোন ঝামেলা ছাড়াই চলে যেতে পারবে।

Polish_20221227_183848555.jpg

রাজন এর আগেও রাতবিরেতে অনেক চলাফেরা করেছে। যদিও তার এলাকা নিয়ে সবার ভেতর অনেক ভয় কাজ করে। কারণ সেখানে রাতের বেলায় ছিনতাইকারীদের বেশ উপদ্রব থাকে। যদিও কখনো তার কোনো সমস্যা হয়নি। তাছাড়া তার একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করে। তার এলাকার ভেতর থেকে কেউ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত তার চাচার অপারেশন শেষ হতে হতে রাত দেড়টা বেজে গেল। তারপর রাজন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একটি রিকশা করে বাড়িতে ফিরতে লাগলো।

সেই সন্ধ্যার সময় রাজন হসপিটালে গিয়েছে। এখন বাজে রাত প্রায় পৌনে ২ টা। এত দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাটানোর ফলে রাজনের খুব ক্লান্তি লাগছিলো। মনে মনে সে চিন্তা করছিল বাসায় পৌঁছেই একটা লম্বা ঘুম দিতে হবে। ইতিমধ্যে রাজন তার বাড়ির বেশ কাছাকাছি চলে এসেছে। মেইন রোড থেকে তার বাড়িতে যাওয়ার গলিতে রিক্সা ঢুকেছে। গলির একটা জায়গায় কিছুটা অন্ধকার মতো। এই জায়গাটা পার হওয়ার সময় রাজনের সব সময় কেমন যেন অস্বস্তি লাগে। আজকেও যেন তার কেমন লাগছিল।

যখনই তার রিক্সা সেই অন্ধকার জায়গার কাছাকাছি পৌঁছালো। তখন হঠাৎ করে কয়েকটি মুখোশধারী ছেলে এসে তার রিক্সার পথ রোধ করে দাঁড়ালো। তাদের সকলের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিলো। রাজন আরো কয়েকজনকে দেখতে পেল অন্ধকার মতো একটু জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। পুরো পরিস্থিতি বুঝে রাজন চিন্তা করল এখন ঝামেলা করে খুব একটা সুবিধা হবে না। তাই সে ছিনতাইকারীদের কথামতো তার মানিব্যাগ এবং মোবাইল তাদেরকে দিয়ে দিল। রাজন যে রিক্সায় এসেছিল সে রিক্সাওয়ালা সেখান থেকে রিকশা ঘুরিয়ে চলে গেল। যার ফলে রাজনকে সেখান থেকে হেঁটে বাড়ি পৌঁছতে হলো।

পুরো ঘটনার আকস্মিকতায় রাজন হতভম্ব হয়ে গিয়েছে। তার বাড়ির এত কাছ থেকে যে তার কাছ থেকে ছিনতাই করতে পারে। এটা কখনো তার চিন্তাতে আসেনি। এমনিতেই রাজন এখন বেশ ভদ্র ভাবে চলাফেরা করে। তবে একটা সময় এলাকার প্রভাবশালী মাস্তানদের সাথে তার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। এই ঘটনায় রাজন মোটেও ভয় পায়নি। কিন্তু সে প্রচন্ড রেগে গিয়েছে। সে মনে মনে চিন্তা করেছে যেভাবেই হোক এর বদলা সে নেবে। তাই সে বাড়িতে না গিয়ে তার বাড়ি থেকে কয়েক বাড়ি দূরে তার এক বন্ধুর বাড়ি আছে সেখানে গেলো। সেখানে গিয়ে সেই বন্ধুকে ঘুম থেকে ডেকে তুললো। যেহেতু রাজনের কাছে মোবাইল নেই। তাই সে তার সেই বন্ধুর ফোন থেকে আরেক বন্ধুকে ফোন করল।

যাকে ফোন করলো সেই বন্ধুর নাম লিটন। লিটন এলাকার মাস্তানদের ভেতর অন্যতম। প্রচন্ড সাহসের জন্য তাকে সবাই ভয় পায়। লিটনকে ফোন দিয়ে রাজন পুরো ঘটনাটা জানালো। তারপর বলল তুই কিছু লোকজন আর অস্ত্রপাতি নিয়ে আমার বাড়ির কাছে চলে আয়। ছিনতাইকারি গুলো এখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। তুই তাড়াতাড়ি আসতে পারলে ওদেরকে ধরতে পারবো। লিটন রাজনকে বলল তুই চিন্তা করিস না। আমি ১০-১৫ মিনিটের ভিতর চলে আসছি। ১০-১৫ মিনিটের কথা বললেও লিটনের লোকজন নিয়ে আসতে প্রায় আধা ঘন্টা লেগে গেলো। রাজন লিটনকে দেখে জিজ্ঞেস করল তোর এত সময় লাগলো কেন ? তখন লিটন বলল আরে বুঝিস না এত রাত্রে সবাইকে পেতে কষ্ট হয়েছে। (চলবে)

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

রাজন নিজের এলাকাতে এসে ছিনতাইকারীর হাতে পড়েছে জেনে সত্যিই খারাপ লাগলো তবে রাজনের বন্ধু লিটনের এর পেছনে কোন হাত আছে কিনা বুঝতে পারছি না। হয়তো সেই জন্য তাদের আসতে দেরি হয়েছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বে জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 2 years ago 

রাজন তার চাচার অপারেশন করাতে দেরি হওয়ার ফলে অনেক রাতে বাড়ি ফিরতে হয় ৷ কিন্তু বাড়ি ফিরতেই তাকে ছিনতাই কারীর কবলে পরতে হয় ৷ এরপর সেও তার বন্ধুদের সাথে সেও তার বদলা নিতে যায় ৷
যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷

 2 years ago 

রাজন তার চাচার অপারেশন হবে তাই হাসপাতালে গিয়েছিল। রাত দেড় টা বাজে সে রিকশা নিয়ে বাসার দিকে গেল।সবাই নিষেধ করেছিল এত রাতে যেতে কিন্তু তবুও সে চলে গেল রিকশা নিয়ে।বাসার কাছাকাছি যেতেই ছিনতাইকারীর কবলে পরে।নিজের এলাকায় এমন কিছু ঘটবে রাজন কখনও চিন্তা করেনি।এর ভেতর তার বন্ধু লিটনের কোন হাত আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না।দেখা যাক পরের পর্বে কি অপেক্ষা করছে।আশাকরি খুব শীঘ্র ই জানতে পারব।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।

 2 years ago 

বাড়ির পাশে রাজনের সাথে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। যদি তার আত্বীয় স্বজনের কথা মত আরো আগে চলে আসতো তাহলে হয়তো বিপদে পড়তে হতো না। যায় হোক দেখি লিটন কি করে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58474.85
ETH 2500.10
USDT 1.00
SBD 2.39