দুই বন্ধুর উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি।
সেদিন বিকেলে জমিদার বাড়ি থেকে ঘুরে ফিরে বের হওয়ার পরে খেয়াল করে দেখি তখন ও বেলা অনেকটা অবশিষ্ট রয়ে গিয়েছে। তাই চিন্তা করলাম এখন বাড়ি না ফিরে অন্য কোন জায়গা থেকে ঘুরে আসি। সাথে সাথেই দুই বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করতে লাগলাম কোথায় যাওয়া যায়। পরে দুজন মিলে ঠিক করলাম আমরা চরভদ্রাসনের দিকে যাবো। কারণ সদরপুর থেকে চরভদ্রাসনে যাওয়ার রাস্তাটা আমার খুবই পছন্দের একটি রাস্তা। একদম নিরিবিলি একটি রাস্তা। রাস্তার দুপাশ দিয়ে গাছের সাড়ি। এই ধরনের রাস্তায় মোটর সাইকেলে করে ঘুরতে এমনিতেই অনেক ভালো লাগে।
পরিকল্পনা করার পর দুজনে রওনা দিলাম। দুই বন্ধু গল্প করতে করতে ধীরেসুস্থে যাচ্ছিলাম। কারণ আমাদের তেমন কোন তাড়া ছিল না। এভাবে যেতে যেতে এক সময় একটি বাজারে এসে উপস্থিত হলাম। ইতিমধ্যে আসরের আজান হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ হলো। তখন আমি চিন্তা করলাম এই বাজারের মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে তারপর সামনে আগাই। যে বাজারে আমরা থেমেছিলাম সেই বাজারটি আমার অনেক পরিচিত একটি জায়গা। আমি যখন চাকরি করতাম তখন আমাকে মাঝে মাঝে সেই বাজারে যেতে হতো। অনেক দিন পরে সেই বাজারে পৌঁছে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম।
যাইহোক আমি নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখি ফেরদৌস আশেপাশে নেই। তখন আমি চিন্তা করলাম ফেরদৌস হয়তো কোন কাজে গিয়েছে। তাই আমি চিন্তা করলাম যেহেতু অনেকদিন পর এই বাজারে এসেছি। তাই বাজারটা একটু ঘুরে ফিরে দেখি। আমি গ্রামের দিকে যে কোন বাজারে গেলেই চেষ্টা করি সেখানে একবার ভালো মতো ঘুরে ফিরে বেড়াতে। কারণ গ্রামের বাজার গুলিতে এমন কিছু জিনিস পাওয়া যায় যেগুলো শহরের বাজারে দেখা যায় না। এভাবে আমি বাজারের ভেতর ঘুরতে লাগলাম। লোকজনের ব্যস্ততা দেখে মনে হচ্ছিল সেখানে আজকে হাটবার। তাই প্রচুর লোকজনের আনাগোনা ছিল।
সেই গ্রাম্য বাজারটিতে আমি ঘুরেফিরে পুরো বাজারটা দেখতে লাগলাম। একটি জায়গায় দেশি বড়ই দেখতে পেলাম। আমার স্ত্রী বেশ কিছুদিন থেকে বলছিল দেশি বড়ই কেনার কথা। কিন্তু শহরের বাজারে দেশি বড়ই খুব একটা দেখা যায় না। যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো দেখলে আর কিনতে ইচ্ছা করে না। একবার মনে হচ্ছিল বড়ই কিনে নিয়ে যায়। পরক্ষণে আবার চিন্তা করলাম এখন কোথায় যাব তার কোন ঠিক নেই। এখন যদি বড়ই কিনি তাহলে সাথে করে নিয়ে বেড়াতে হবে। এই কথা চিন্তা করে আর কেনা হলো না।
তারপর আরো দেখতে পেলাম শাকসবজি নিয়ে অনেক বিক্রেতা বসেছে। সাথে আরও নানা রকমের হকার দেখতে পেলাম। যারা এমন কিছু পণ্য সামগ্রী নিয়ে বসেছে যেগুলো সাধারণত গ্রামের হাটবাজারেই দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর ফেরদৌসকে ফোন দিলে সে জানালো সে মসজিদের সামনের একটি রাস্তায় আমার জন্য অপেক্ষা করছে। তখন আমি দ্রুত ফেরদৌসের মোটরসাইকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। দুতিন মিনিট হাটার পরে দেখতে পেলাম ফেরদৌস মোটরসাইকেল নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। তারপর আমি গিয়ে মোটরসাইকেলে বসতেই আমরা চলতে শুরু করলাম। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল একটি গ্রাম্য সিঙ্গারার দোকান। কারণ ফেরদৌসের কাছে অনেক প্রশংসা শুনেছিলাম সেই দোকানের সিঙ্গারার। এমনিতেই আমার বেশ ক্ষুধা লেগেছিল। তাই ফেরদৌসকে বললাম তাড়াতাড়ি মোটরসাইকেল চালাও। প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। সেই সিঙ্গারা খাওয়ার গল্প অন্য দিন হবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | মনিকোঠা বাজার |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
দুই বন্ধু মিলে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেন দেখি এর আগের পোস্টেও দেখলাম। যাই হোক চরভদ্রাসনের শান্তা রাস্তা দিয়ে বাজারে ঘুরাঘুরি করে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। পুরো বাজার ঘুরাঘুরি করতে নিশ্চয়ই ভালো লেগেছে। সিঙ্গারার কথা পড়ে,আমারও সিঙ্গারা খেতে মন চাচ্ছে। 😉😉।সিঙ্গারা গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ
এইভাবে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমরা দুই বন্ধু মিলে তাই প্রায়ই বেরিয়ে পড়ি।
দুই বন্ধু মিলে চরভদ্রাসনের শান্ত রাস্তা দিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন পড়ে ভাল লাগলো। শহরের বাজারে দেশি বরই তেমন ভাল পাওয়া যায় না। এখানে পেয়েছেন নিয়ে নিলেই হত। এক কেজি বরই আর কি এমন হতো।আগে আমি এই ভুলটা করতাম, কোথাও গেলে ভাবতাম পরে যাওয়ার পথে কিনব কিন্তু পরে আর নেয়া হয় না।তাই যা দেখি সাথে সাথেই নিয়ে নেই এখন। সিংগারা খাওয়ার গল্পটি শোনার অপেক্ষায় রইলাম।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে আপু আমার হাতে করে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাগ টানতে ভালো লাগে না। এই জন্য আমি কখনো বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে না বের হলে সাধারণত কোন কিছু কিনি না।
দুই বন্ধু মিলে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন ভাইয়া। আসলে এভাবে বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করার মজাই আলাদা। বিকেল বেলা বাজারের মসজিদে আসর নামাজ আদায় করেছেন এবং বাজারের বেশ কয়েকটি সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন,দেখে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। যাইহোক সিংগারা খাওয়ার গল্পের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমরা দুই বন্ধু মাঝে মাঝেই এইভাবে ঘুরতে বের হই। তখন বিভিন্ন বাজারের মসজিদ গুলোতে নামাজ পড়া হয়। এটা এক দারুন অনুভূতি। বিভিন্ন রকমের মসজিদ দেখতে পাওয়া যায় এতে।
আপনি যথার্থই বলেছেন ভাইয়া,এটা সত্যিই এক দারুণ অনুভূতি। আমিও প্রায় সময় বিভিন্ন জায়গার মসজিদে নামাজ আদায় করার চেষ্টা করি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য। সবসময় খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
বন্ধুদের সাথে ঘোরার মজাই আলাদা। আর প্রিয় জায়গায় যাওয়ার জন্য সঙ্গি যদি প্রিয় বন্ধু হয় ,তাহলে ঘোরার আনন্দ দ্বিগুন হয়। দুই বন্ধুর ঘোরার কিছু সুন্দর মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ঠিকই বলেছেন। প্রিয় বন্ধুর সাথে পছন্দের জায়গায় ঘুরতে আসলেই অনেক ভালো লাগে।