বন্ধুদের সাথে হঠাৎ করে মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
বেশ কয়েকদিন হল আমাদের শহরের সবচাইতে ঐতিহ্যবাহী মেলা জসিম পল্লী মেলা শুরু হয়েছে। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের স্মরণে এই মেলাটির প্রতিবছর আয়োজন করা হয়ে থাকে। অবশ্য মাঝের বেশ কয়েকটা বছর এই মেলা আয়োজন বন্ধ ছিল। এই মেলাটি বন্ধ থাকার জন্য শহরের মানুষের ভেতর এক ধরনের হতাশা কাজ করতো। তবে গত বছর থেকে মেলাটি আবার শুরু হয়েছে। এবার মেলা শুরু হয়েছে একুশে জানুয়ারি। তবে আমি সবসময় চেষ্টা করি মেলা শুরু হওয়ার কয়েকদিন পরে যেতে। কারণ মেলার প্রথম দিকে অনেক স্টল ফাঁকা থাকে। কিন্তুু কয়েকদিন পরে গেলে তখন দেখা যায় মেলার সবগুলো স্টল পরিপূর্ণভাবে চালু হয়েছে। তখন মেলা দেখতে ভালো লাগে।
তবে এবার মেলা শুরু হওয়ার বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও মেলায় যাওয়া হয়েছিলো না। গত পরশু রাতে এশার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর বন্ধু রুবেলের ওষুধের দোকানের সামনে এলাকার কয়েকজনের জটলা দেখতে পেলাম। এর ভিতর থেকে একটি ছেলে আমাকে ডেকে বললো ভাই আমরা সবাই মেলায় যাচ্ছি আপনি যাবেন নাকি? আমি বললাম আমি তো এখন নামাজ পড়তে যাচ্ছি। মেলায় যেতে হলে নামাজ পড়ে তারপর যাবো। ছেলেটি বললো আপনি যেতে চাইলে আমরা নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। তখন আমি ছেলেটিকে বললাম ঠিক আছে তোমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো। আমি নামাজ শেষ করে আসছি।
একটা সময় ছিল যখন এলাকার বন্ধু-বান্ধব মিলে মেলায় ঘুরতে যেতাম। সে এক দারুন মজার অভিজ্ঞতা ছিলো। তবে দীর্ঘদিন হলো আর সেভাবে মেলায় যাওয়া হয় না। তাই এবার সুযোগটা পেতেই লুফে নিলাম। আমি নামাজ পড়ে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে দ্রুত তৈরি হয়ে চলে এলাম। আমি এসে দেখি ইতিমধ্যে প্রায় ৮/৯ জন মানুষ জড়ো হয়েছে। সেখানে সেই ৮/৯ জন মানুষের ভেতর কয়েকজন ছিল আমাদের বন্ধু-বান্ধব। আর কয়েকজন ছিল এলাকার ছোট ভাই।
যাই হোক একটি অটো রিক্সায় করে আমরা মেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল অম্বিকাপুর বাজারে থেমে চা খাওয়া। তারপর অটো ছেড়ে দিয়ে সেখান থেকে হেঁটেই মেলায় যাওয়া। কারণ সে চায়ের দোকান থেকে মেলার দূরত্ব খুব একটা বেশি না। আমরা আমাদের প্রথম গন্তব্যে অল্প সময়েই পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে সবাই মিলে গরুর দুধের চা খেলাম। ইতিমধ্যে এলাকার এক বন্ধু ফোন দিয়ে বলল সেও আমাদের সাথে যোগ দিতে আসছে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম তার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবো। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। অল্প কয়েক মিনিটের ভিতরে সে সেখানে এসে উপস্থিত হল।
তারপর আমরা সকলে মিলে মেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সবার ভেতর এক অন্যরকম মজা কাজ করছিল। সবাই মিলে নানারকম আড্ডায় মত্ত ছিলাম। তবে আমরা যখন মেলায় পৌছায় তখন রাত সাড়ে আটটা বেজে গেছে। আমরা ধারণা করেছিলাম এই সময় মেলায় খুব একটা ভিড় থাকবে না। কিন্তু মেলায় পৌঁছে বুঝতে পারলাম আমাদের ধারণা ছিল পুরোপুরি ভুল। এতো রাতেও মেলায় অনেক লোক দেখতে পেলাম। মূলত আমার পরিবার নিয়ে মেলায় আসার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বন্ধু-বান্ধব আর ছোট ভাইদের পেয়ে আর সুযোগটা হারাতে চাইনি। যার ফলে তাদের সাথেই চলে এসেছি মেলায়। তো মেলায় আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দোকানপাট গুলো ঘুরেফিরে দেখতে লাগলাম।
তবে এবার মেলায় খেয়াল করে দেখলাম বেশ কয়েকটি স্টল এখনো ফাঁকা রয়েছে। যেটা অন্য বারের মেলায় থাকে না। পুরো মেলাটা ঘুরে তারপর আমরা একটি রেস্টুরেন্টে বসলাম হালকা কিছু খাওয়ার উদ্দেশ্যে। সেই রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা হালিম এবং ফুচকা খেলাম। আমরা সর্বমোট নয় জন ছিলাম। সেখানে খাওয়া-দাওয়া শেষ হতে আমরা মেলায় আরো কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে তারপর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ফেরার সময় আমি অবশ্য পরিকল্পনা করেছি কয়েকদিন পরে পরিবার নিয়ে মেলায় আসতে হবে। কারণ আমার মেয়ে বেশ কয়েকদিন থেকেই মেলায় যাওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। কবে মেলায় আসা যায় পরিবার নিয়ে সেটা চিন্তা করতে করতে বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
| ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @rupok |
| স্থান | পল্লী কবির বাড়ি |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
পল্লী কবি জসিমউদদীন স্মরনে "পল্লী মেলা" শুরু হয়েছে ২১ শে জানুয়ারী। বেশ কয়েক বছর মেলা হয়নি হয়ত করোনার জন্য। গত বছর থেকে আবার শুরু হয়েছে। এজন্য মনে হয় শহরের মানুষগুলো বিনোদনের একটা মাধ্যম পেলো। বিনোদনের জন্য সবাই ছুটে গেছে, দেখে খুব ভাল লাগলো। আপনি এশার নামাজ শেষ করে গেলেন বন্ধু ওএলাকার ছোট ভাইদের নিয়ে।ফটোগ্রাফি গুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে কত জমজমাট হচ্ছে।যদিও কয়েকটা স্টল এখনো ফাঁকা। আপনার ঘোরার অনুভূতি আর খাওয়া - দাওয়া সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভাল সময় কাটিয়েছেন আশাকরি। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
যেহেতু কবি জসিম উদ্দিন ফরিদপুরের সন্তান তাই তার স্মরনে প্রতি বছর পল্লী মেলা আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে হয়তো করোনার কারনে বেশ কিছুদিন মেলার আয়োজন না হওয়ায় এবার অনেক মানুষ গেছে মেলাটিতে। আর আপনি এশার নামাযে শেষ করে বন্ধুদের নিয়ে সেই মেলায় গিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করলেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে কত সুন্দর হয়েছে মেলার আয়োজন।