বিকালের মনোরম পরিবেশে দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা।
গত কয়েকদিন ধরে আমাদের এদিকে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অবশ্য শুধু আমাদের এখানে না। শুনেছি সারা দেশেই নাকি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তাছাড়া গত কয়েকদিন ধরে নিজের শরীরটাও বেশ খারাপ ছিলো সাথে ছিল বাচ্চার অসুস্থতা। সবকিছু মিলিয়ে গত কয়েকদিনে বাইরে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। ঘরে বসে থাকতে থাকতে রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। তাই সকালে উঠে ফেরদৌসকে ফোন দিয়েছিলাম বিকালে ঘুরতে বের হবে কিনা সেটা শোনার জন্য। ফেরদৌস বলল যদি আবহাওয়া ভালো হয় তাহলে দুজন ঘুরতে বের হবো। আমিও ফেরদৌসের কথায় সম্মতি জানালাম। তারপর সারাদিনব্যাপী বিকালের সময়টার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আর মনে মনে চিন্তা করছিলাম যদি বিকালে বৃষ্টি হয় তাহলে আজকেও আর ঘুরতে যাওয়া হবে না।
এভাবে দেখতে দেখতে এক সময় দুপুর গড়িয়ে বিকেল হোলো। বিকালের দিকে আবহাওয়া আরো ভালো হয়ে গেলো। যার ফলে ফেরদৌস কে ফোন দিয়ে আমি বাসা থেকে বের হলাম। অবশ্য ফেরদৌস আমাকে জানালো ওর বের হতে কিছুটা দেরি হবে। তাই আমি ঠিক করলাম আসরের নামাজ আমাদের এলাকা থেকে পড়ে তারপর ফেরদৌসের এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। আমাদের এলাকা থেকে অটো রিক্সায় ফেরদৌসের এলাকাতে যেতে বেশি সময় লাগে না। তবে ইদানিং আমাদের শহরে জ্যাম একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শহরের একটি জায়গাতে প্রায়ই জ্যাম লেগে থাকে। এই জ্যামের কারণেই আমার ফেরদৌসের কাছে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়ে গেলো।
অবশ্য আমি কাছাকাছি পৌঁছে ফেরদৌসকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম সে কোথায়। সে জানালো তার যেখানে থাকার কথা ছিল সে সেখানেই রয়েছে। তারপর আমি নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে ইউসুফ ভাইয়ের দোকানের সামনে পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ফেরদৌস আগে থেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে পৌঁছে আর কথা না বাড়িয়ে আমি ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে উঠে বসলাম। যদিও আমরা আজকে ঠিক করিনি কোথায় যাবো। তবে আমি ঠিকই জানতাম ফেরদৌস আজকে কোন দিকে যাবে। যার ফলে গন্তব্য ঠিক না করা হলেও আমরা দুজনেই জানতাম যে আজকে কোথায় যাবো। ধীরেসুস্থে ফেরদৌস মোটরসাইকেল চালাতে লাগলো আর আমরা দুই বন্ধু গল্প করতে লাগলাম।
মূলত আজকে আমরা গিয়েছিলাম আমাদের শহর থেকে কিছুটা দূরে একটি বিল মত তৈরি হয় সেখানে। সেখানে একটি ভাসমান রেস্টুরেন্টও রয়েছে। আমাদের গন্তব্য ছিল সেদিকেই। ফেরদৌস বলছিল সে শুনেছে সেই বিলে নাকি এখন অনেক পানি হয়েছে? সেটা দেখার জন্যই আমরা আজকে যাচ্ছিলাম সেদিকে। আজকের বিকালের আবহাওয়াটা ছিল খুবই চমৎকার। মোটরসাইকেলে করে ঘোরার জন্য একেবারে আদর্শ পরিবেশ। আকাশ ছিল মেঘ ঢাকা সাথে মৃদু বাতাসও বয়ে যাচ্ছিল। এর ভেতরে মোটরসাইকেলে ঘুরতে আসলেই অনেক মজা লাগে। আমরা দুজন সেই মজাটা পুরোপুরি উপভোগ করছিলাম। যাইহোক এক সময় এভাবে চলতে চলতে আমরা সেই বিলের কাছে পৌঁছালাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখতে পেলাম যতটা পানি পাড়ার কথা শুনেছিলাম আসলে ততটা বাড়েনি। আর সেই ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও এখনো চালু হয়নি। যদিও রেস্টুরেন্ট টাকে দেখলাম বিলের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে চার-পাঁচজন ছেলেকে দেখতে পেলাম সেখানে।
যাইহোক বিলের এই অবস্থা দেখে আমরা সেখানে না দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আরো সামনের দিকে যাবো। এভাবে যেতে যেতে এক সময় একটি গ্রাম্য বাজারে উপস্থিত হলাম। সেখানে আমরা ঘুরে ফিরে বিভিন্ন জিনিস পত্র দেখছিলাম। সেই বাজারে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পর আমরা আরো সামনের দিকে এগোতে লাগলাম। একসময় আমি ফেরদৌসকে বললাম আর সামনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তখন ফেরদৌস সেদিক থেকে মোটরসাইকেল একটা এলাকার দিকে ঘুরিয়ে নিলো। তারপর আমরা অন্য একটি রাস্তা দিয়ে এলাকার দিকে ফিরতে লাগলাম। সেই রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে একটা পর্যায়ে একটি বড় গ্রাম্য বাজারে আমরা থামলাম। উদ্দেশ্য ছিল সেখান থেকে হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া করা। সেখানে থেমে হালকা কিছু খাওয়া দাওয়া করে তারপর দুজন আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আগামীকাল রাফসানদের এলাকায় যাবো। এই পরিকল্পনা করে আজকের মত দুজন দুজনের কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের এখানেও সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।এমন বৃষ্টি আসলে ভালো লাগে না।যাক আপনি এখন সুস্থ হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনি এই কয়টা দিন বাসায় থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে আছেন।তাইতো ফেরদৌস কে ভাইয়া ফোন দিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বললেন।দুজন বিকেলে বের হয়ে বিলের কাছে গেলেন।কিন্তু বিলের পানি সেই তুলনায় বাড়েনি তাই রেস্টুরেন্টও এখনো চালু হয়নি।আপনারা এরপর বড় গ্রাম্য বাজারে গিয়ে কিছু খাওয়া দাওয়া করলেন।এরপর রাফসান ভাইয়াদের এলাকার পরেরদিন যাবেন বলে দুজন বাসায় চলে যান।ভালোই ঘুরেছেন এই ঠান্ডা ওয়েদারে।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
প্রথমেই আপনার এবং বাচ্চার সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। পরিবারের ছোট সদস্য যদি অসুস্থ থাকে তাহলে বড়দের মন এমনিতেই খারাপ থাকে। যাই হোক ভাসমান রেস্টুরেন্টের ফটোগ্রাফি দেখতে ইচ্ছে করছিল বেশ। পরবর্তীতে রাফসানদের এলাকার ফটোগ্রাফি দেখতে চাই ভাইয়া।
প্রথমেই সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। চমৎকার একটি বিকেল কাটিয়েছেন। মনোরম পরিবেশে দুই বন্ধু মিলে ঘোরাফেরা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। এমন জায়গায় ঘুরতে গেলে অটোমেটিক মন ভালো হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে ঘুরতে আমিও পছন্দ করি। ভালো লাগলো আপনার লেখা গুলো পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
টানা বৃষ্টি আসলেই বিরক্ত লাগে ভাই। আমাদের এদিকেও একই অবস্থা। আপনি ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করতে বরাবরই খুব পছন্দ করেন। বাইকে করে বেশ ভালোই ঘুরলেন। তবে বিলের মধ্যে পানি বেশি থাকলে হয়তোবা আরো বেশি উপভোগ করতে পারতেন সম্পূর্ণ বিকেলটা। গ্রাম্য বাজারের ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লাগলো। সবমিলিয়ে পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কয়েকদিন থেকে সারা বাংলাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে ভাইয়া। তাই তো সবাই ঘর বন্দি সময় পার করছে। প্রথমে আপনি অসুস্থ হলেন এরপর মামনি অসুস্থ হলো সব মিলিয়ে এই কয়দিন বেশ খারাপ সময় কেটেছে আপনার বুঝতেই পারছি ভাইয়া। যাইহোক আপনার বন্ধুর সাথে বাহিরে ঘুরতে গিয়েছেন জেনে সত্যিই ভালো লাগলো।আসলে মাঝে মাঝে বাহিরে ঘুরতে গেলে বেশ ভালো লাগে।