বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার গল্প (ষষ্ঠ পর্ব)।
বীচে আমরা অনেকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পরও একফোঁটা বাতাস পেলাম না। এর ভিতর বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির ফলে আমরা কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। এর ভিতরে বন্ধু রাফসান বলল চলো কোথাও গিয়ে বসি। সবচাইতে ভালো হয় যদি কোনো এসি রেস্টুরেন্টে বসা যায়। রাফসানের কথাটা আমাদের সবারই পছন্দ হলো। কারণ ততক্ষণে সবাই গরমে ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে আমরা কথাবার্তা বলে ঠিক করলাম আমরা একবারে রাতের খাবার সেরে নেই। আমাদের সেই বন্ধু আমাদেরকে বলল কক্সবাজারের বিখ্যাত একটা রেস্টুরেন্ট আছে যেটার নাম পৌষি। সে আমাদেরকে সেখানে নিয়ে গেলো খাওয়ানোর জন্য। পৌষি রেস্টুরেন্টে আমি অনেক আগে একবার খেয়েছিলাম।
তাদের খাবারের মান বেশ ভালো। রেস্টুরেন্ট ঠিক করা হলে আমরা সবাই দুটো অটো রিক্সায় করে রওনা দিলাম সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে। তার আগে আপনাদেরকে একটা কথা জানিয়ে রাখি। আমরা হাঁটতে হাঁটতে সেখানে আমাদের সাথে আরো দুই তিন জন পরিচিত ছেলে যোগ দিয়েছিলো। যারা আমাদের পূর্ব পরিচিত কিন্তু কর্মসূত্রে কক্সবাজারে থাকে। লোকজন অনেক বেশি হয়ে যাওয়ার ফলে আমাদেরকে দুটো অটোরিকশা নিতে হয়েছিল। অটোরির সাথে উঠে আমরা যখন পৌষি রেস্টুরেন্টের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। তখন খেয়াল করলাম ঠান্ডা এক পশলা বাতাস আমাদের সবাইকে স্পর্শ করে গেলো। বুঝতে পারলাম আশেপাশে কোথাও হয়তো বৃষ্টি হচ্ছে। এতক্ষণের ভ্যাপসা গরমটা মুহূর্তের ভেতর কেটে গেলো।
পৌষি রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে নামার পরে আমরা সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলাম। তারপর সবাই হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে টেবিলে বসে খাবারের অর্ডার করলাম। আমাদের সবারই সেখানে গিয়ে তাদের ভর্তা প্ল্যাটার টেস্ট করার ইচ্ছা ছিলো। তবে ভর্তা প্ল্যাটারের সাথে আমরা চিংড়ি মাছ, লইট্টা ফ্রাই, সাথে আরও একটা মাছ নিয়েছিলাম খাওয়ার জন্য। আসলে লোক অনেক হওয়ায় এক একজন এক একটা জিনিস খেতে চাচ্ছিল। যাই হোক খাবার অর্ডার দেয়ার কিছুক্ষণের ভেতরেই টেবিলে খাবার চলে এলো। তারপর সবাই মিলে খেতে শুরু করলাম। খাবারের টেস্ট ভালোই ছিলো। তবে আমার কাছে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছিলো। তারা খাবারের সাথে বড়ইয়ের একটা চাটনি দিয়েছিলো। ডাল দিয়ে ওই চাটনি টা খেতে বেশ মজা লাগছিলো। আমরা কক্সবাজার গিয়েছিলাম চারজন। কিন্তু সেখানে গিয়ে আরো বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব পেয়ে যাওয়ায় খেতে খেতে আমাদের আড্ডাটা বেশ জমে উঠেছিলো। যাইহোক আড্ডা দিতে দিতে এক সময় আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ হতেই আমরা বিল দিতে গেলে বন্ধু ইমরান কিছুতেই আমাদেরকে বিল দিতে দিল না। সে এক প্রকার জোর করেই বিল পরিশোধ করে দিলো। এতগুলো লোক আমরা খেয়েছিলাম সেখানে বেশ ভালো অংকের বিল এসেছিলো।
তবে ইমরান ছেলেটা এমনই। খুবই অতিথি পরাণ এবং বন্ধু-বান্ধবের যে কোন বিপদে ইমরান সবচাইতে আগে এগিয়ে যায়। যাই হোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা রেস্টুরেন্টের বাইরে আসতেই খেয়াল করে দেখি রাস্তায় কিছুটা পানি জমে রয়েছে। তখন পাশ থেকে একজন বলল কিছুক্ষণ আগে বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য তার প্রভাবটাও আমরা টের পাচ্ছিলাম। কারণ বাইরের আবহাওয়া ততক্ষণে বেশ ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো। আমরা তখন ঠিক করলাম এত তাড়াতাড়ি হোটেলে ফিরে না গিয়ে আমরা আবার বিচে গিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দেই। সেই কথা মতো আমরা সবাই আবার বিচের দিকে রওনা দিলাম। সেখানে গিয়ে আরো বেশ কিছুক্ষণ গল্পগুজব করার পরে বন্ধুদের ভেতর কয়েকজন বলল একটু চা খাওয়া দরকার। পরবর্তীতে সবাই মিলে গেলাম চা খেতে। চা খাওয়া শেষ হলে তারপর সেদিনের মতো সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা রুমে ফিরে এলাম।(চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | কক্সবাজার |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
পৌষি রেস্টুরেন্টের খাবারের মান আসলেই খুব ভালো। আমিও বেশ কয়েকবার পৌষি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছিলাম। তবে নিরিবিলি রেস্তোরাঁর খাবারও ভালো এবং ভিতরের পরিবেশটাও খুব সুন্দর। যাইহোক সেখানে গিয়ে তো দেখছি আপনাদের দল ভারী হয়ে গিয়েছিলো। বেশি মানুষ হলে সেখানে আড্ডা দিতে বেশ ভালো লাগে। তবে সন্ধ্যার পর বীচে বাতাস না থাকলে সত্যিই বিরক্ত লাগে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।