একলা চলো রে-নিঃসঙ্গ ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতা (দ্বিতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমি যখন সামরিক জাদুঘর থেকে আইডিবি ভবনের দিকে রওনা দিলাম। তখন মনে করেছিলাম আইডিবি ভবনে পৌঁছাতে হয়তো আমার দু চার মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু আমার হিসাবে একটু গন্ডগোল হয়েছিলো। আমি দূরত্বটা ঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারিনি। কারণ আমি হাঁটা শুরু করার পরে প্রায় ১০-১৫ মিনিট হাঁটার পরেও দেখি আইডিবি ভবনের সামনে পৌঁছাতে পারিনি। তখন বুঝতে পারলাম আমি আসলে এই দুটো জায়গা যত কাছাকাছি মনে করেছিলাম। যায়গা দুটো ততোটা কাছে নয়।

IMG_20221123_121304.jpg

IMG_20221123_121342.jpg

যাইহোক আইডিবি ভবনের সামনে পৌঁছে প্রথমে কয়েকটি ছবি তুললাম। তারপর সোজা আইডিবি ভবনের ভেতর ঢুকে গেলাম। আইডিবি ভবনের নিচতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত অসংখ্য প্রযুক্তি পণ্যের দোকান। সেখানে আপনি ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ক্যামেরা প্রজেক্টর, স্মার্ট টিভি থেকে শুরু করে সমস্ত রকম পণ্য পাবেন। আর এ সকল পণ্যের খুচরা যন্ত্রাংশ ও এখানে পাওয়া যায়। দেশের আর কোথাও বোধহয় প্রযুক্তি পণ্যের এত ব্যাপক সমারোহ নেই। আমি ঘুরে ফিরে সবগুলি ফ্লোর দেখতে লাগলাম। যদিও আমি সেখানে গিয়েছি শুধুই ঘুরতে। কোন কিছু কেনার উদ্দেশ্য ছিল না।

IMG_20221123_121440.jpg

IMG_20221123_121347.jpg

তারপরেও যেহেতু ভবিষ্যতে আমার একটি ল্যাপটপ কেনার ইচ্ছা আছে। সেজন্য আমি এইচপির একটি ল্যাপটপ দেখলাম। কোর i5 11 জেনারেশনের ল্যাপটপটির দাম লেখা ছিল সত্তর হাজার টাকা। ল্যাপটপের ভেতর এইচপির ল্যাপটপ আমার বেশ পছন্দের। যাইহোক ঘুরেফিরে মার্কেটটা দেখতে লাগলাম। আর মাঝে মাঝে কিছু ছবি তুলছিলাম। তবে আইডিবি ভবনে আমার কাছে মনে হলো আগের থেকে এখন লোকসমাগম কম হয়। আর এখন সেখানে সাধারণ ক্রেতার থেকে বিভিন্ন অফিস আদালতের ক্রেতাই বেশি দেখলাম।

IMG_20221123_121525.jpg

IMG_20221123_121423.jpg

এখানে যে শুধু প্রযুক্তি পণ্য বিক্রি হয় তা না। এখানে আপনার কোন প্রযুক্তিপণ্য নষ্ট হয়ে গেলে সেটা সার্ভিসিং করার ব্যবস্থাও আছে। আপনি যদি এদের কাছ থেকে কোন পণ্য কিনেন তাহলে এরা আপনার বাসা বা অফিসে গিয়ে অনেক সময় সেগুলো ঠিক করে দিয়ে আসে। তাদের এই সার্ভিসটি আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। আমি আইডিবি ভবনে ঘোরাফেরা করছিলাম আর মাঝে মাঝে সময় দেখছিলাম কটা বাজে। কারণ বেলা দুটোর সময় বিমান বাহিনী জাদুঘরের গেট খুলবে। তার আগ পর্যন্ত আমাকে এখানে সময় কাটাতে হবে।

IMG_20221123_122237.jpg

IMG_20221123_121426.jpg

এদিকে ঘুরতে ঘুরতে আমার বেশ ক্ষুধা লেগে গেলো। আইডিবি ভবনে একটি মাত্র রেস্টুরেন্ট রয়েছে যার নাম বন এপেটাইট। এই রেস্টুরেন্টের খাবার আমার বেশ পছন্দের। অনেক আগে যখন আমি আইডিবি ভবনে আসতাম তখন চেষ্টা করতাম সেখান থেকে দুপুরের খাবারটা সেরে নিতে। যাইহোক আমি সেই রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে কি কি খাবার আছে সেটা দেখতে লাগলাম। গিয়ে দেখতে পেলাম তাদের সব খাবার তখনও প্রস্তুত হয়নি। আমি ঠিক করেছিলাম সেখান থেকে ফ্রাইড রাইস, চিকেন চিলি, ভেজিটেবল, চিকেন ফ্রাই এগুলি খাবো। কিন্তু তারা আমাকে জানালো তাদের চিকেন চিলি এখনো রান্না হয়নি।

IMG_20221123_121809.jpg

IMG_20221123_123518.jpg

এদিকে পেটের ভেতর ছুঁচোর নাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। কি করি সেটা চিন্তা করছিলাম। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার মত অবস্থা আমার ছিল না। তাই চিন্তা করছিলাম আইডিবি ভবন থেকে বের হয়ে আশেপাশের কোন হোটেল থেকে খেয়ে আসি। কিছুক্ষণ আইডিবি ভবনের রেস্টুরেন্টে বসে পরে নিচে চলে গেলাম রেস্টুরেন্ট খোঁজার উদ্দেশ্যে। অবশ্য বেশি খোঁজাখুঁজি করতে হয়নি। কারণ অল্প কিছুক্ষণ খোঁজার পরে রাস্তার অপর পাশে একটি রেস্টুরেন্ট দেখতে পেলাম। সেখান থেকে আমি দুপুরের খাওয়াটা সেরে নিলাম। তবে সত্যি কথা বলতে তাদের রান্না আমার কাছে একেবারেই পছন্দ হয়নি। তারপরেও যেহেতু প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছিল তাই কোন রকমে খেয়ে উঠলাম।

IMG_20221123_121712.jpg

IMG_20221123_124638.jpg

খাওয়া শেষ হওয়ার পর দেখি এখনো প্রায় ৪০ মিনিট বাকি বিমানবাহিনী জাদুঘরের গেট খুলতে। অবশ্য ততক্ষণে আজান দিয়ে দিয়েছে। তাই চিন্তা করলাম নামাজ পড়ে মসজিদে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেই। তারপর বিমান বাহিনীর জাদুঘরে যাওয়া যাবে। কাছেই একটি মসজিদ পেয়ে গেলাম। সেখানে নামাজ পড়ে বিশ্রাম নিলাম। তারপর বিমান বাহিনী জাদুঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বিমান বাহিনী জাদুঘরের অবস্থান ঠিক আইডিবি ভবনের উল্টো দিকে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখি এখনো ১০ মিনিট সময় আছে দুটো বাজতে।তারা আবার খুবই সময় সচেতন। নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগেও তারা গেট খুলবে না। যাই হোক ঠিক দুটোর সময় তারা টিকিট কাউন্টারে গেট খুললো। তারপর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে আমি টিকেট কেটে জাদুঘরে ঢুকে পড়লাম। বিমান বাহিনীর জাদুঘরের ভেতরে ঢুকে আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম। (চলবে)

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানআইডিবি ভবন

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

বাপরে! এখানে তো দেখছি সমস্ত রকম গ্যাজেটের বাহার। বেশ ভালো লাগছে দেখে।আমার আবার এরকম সাজিয়ে রাখা ল্যাপটপ,মোবাইল এগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগে। বোন অ্যাপেটাইট নামটা দেখেই আমি ভাবলাম হয়তো কোন রেস্টুরেন্ট।তারপরে দেখলাম পড়ে, হ্যাঁ ঠিকই এটা একটা রেস্টুরেন্ট। যাক কি আর করা যাবে সব সময় তো আর ভালো খাবার ঘুরতে বের হলেই খাওয়া যায় না।বোন অ্যাপেটাইট না হোক, অন্য কোন রেস্টুরেন্টে অন্তত পেটটা যে ভরেছে সেটুকুই যথেষ্ট।তবে খাবার মনমতো না হলে পেট ভরলেও মন ভরে না। অন্য দিন অন্য কোন ভালো জায়গায় ভালো কিছু খেয়ে নেবেন দাদা।

 2 years ago 

বিমান বাহিনীর যাদুঘর খোলা ও বন্ধের সময়টা জানতাম না, ভেবেছিলাম ঈদের ছুটিতে হয়ত খোলা থাকবে। কিন্তু না, আমরা যাওয়ার ঘন্টা খানেক আগে লোকজন নিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।আমরা গিয়েও বাইরে অনেক লোকজন সেদিন দেখেছিলাম।আমরা ফেরত এসেছিলাম সেদিন।দেখি আবার যাব।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ভাল লাগলো ব্লগটি পড়ে।

 2 years ago 

আইডিবি ভবনে এত ইলেকট্রিক যন্ত্র দেখলাম বেশ ভালই লাগলো। ভালোই হয়েছে ঘুরতে এসে আপনার পছন্দের ল্যাপটপটা একবার দেখে গেলেন। তবে আরেকটি কথা শুনে ভালো লাগলো যে এরা বাসায় গিয়ে সার্ভিসিং করে দিয়ে আসে। এরকম হলে তো বেশ সুবিধাই হয়। ক্ষুধা লাগাতে দেখছি পছন্দের চিকেন চিলিটাও খেতে পারলেন না। একেবারে বাইরের একটা রেস্টুরেন্টে খেতে হল। তাও খাবারটাও ভালো লাগলো না। অনেক সময় এরকম হয় খাবার ভালো না হলেও খিদার জন্য খেতে হয়। তবে শেষপর্যন্ত জাদুঘরের সামনে গিয়ে পৌঁছালেন দেখে ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে নিশ্চয়ই দেখতে পারব।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68156.06
ETH 3517.56
USDT 1.00
SBD 2.81