রেনডম ফটোগ্রাফি পোস্ট।
গত কয়েক দিনের ঘোরাফেরার সময় প্রচুর ছবি তুলেছি। বছরের এই সময়টা ঘোরাফেরা করার জন্য সবচাইতে আদর্শ সময়। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়। গত কিছুদিন যাবত আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ রয়েছে। না শীত না গরম। আমার মতো ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের জন্য এর চাইতে ভালো আবহাওয়া আর হতে পারে না। যদিও বন্ধু ফেরদৌস ফরিদপুরে না থাকায় আমার ঘোরাফেরা অনেকটাই সীমিত হয়ে গিয়েছে। আমি বসে বসে দিন গুনছি যে ফেরদৌস আবার কবে ফিরবে। দীর্ঘদিন ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা করার ফলে ও শহরে না থাকলে আমার ঘোরাফেরা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। যাই হোক গত বেশ কিছু দিনে যে ছবিগুলো তুলেছি। তার ভেতর থেকে আমার পছন্দের কিছু ছবি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
কয়েকদিন আগে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম পদ্মার চরে ঘুরতে। সেখানে গিয়ে খেয়া নৌকার মাধ্যমে নদী পার হয়ে ওপারের বড় চরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এই ছবিটি তোলা। চরের পরিবেশ আমার কাছে বরাবরি ভালো লাগে। কারণ এখানে লোক বসতি খুবই কম। অনেক দূর পরপর একটা বাড়ি দেখা যায়। ছবিতে ঠিক তেমন একটি বাড়ি দেখা যাচ্ছে। শহরের কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ ছেড়ে। এমন খোলামেলা জায়গায় এলে এমনিতেই মনটা ভালো হয়ে যায়।
এই ছবিটিও সেই একই দিনে তোলা। আমরা নদী পার হয়ে যখন ওপার পৌঁছলাম। তখন নদীর খাড়া ঢালবেয়ে উপরে উঠতে হয়েছিল বেশ খানিকটা। সেখান থেকে হঠাৎ করে নিচে তাকিয়ে এই ঘোড়ার গাড়ি দেখতে পেলাম। তখনই দ্রুত হাতে ছবিটি তুলে নিলাম। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট খুব একটা ভালো না হওয়ায় সেখানে মালামাল পরিবহনের জন্য এখনো প্রধান বাহন হিসাবে ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন রয়েছে। চরের মানুষের জীবনের সাথে ঘোড়ার গাড়ি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে।
এই ছবিটি সেদিন গজারিয়ার একটি মেলা থেকে তোলা। আমি প্রতিবছরই এই মেলাতে যাওয়ার চেষ্টা করি। তবে এবার আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে মেলায় ঘুরেফিরে খুব একটা সুবিধা করতে পারিনি। কারণ মেলায় পৌঁছানোর পর থেকেই প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিলো। সেই বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ খানিকটা সময় মেলা প্রাঙ্গণে আটকে ছিলাম। তার ভেতরেই কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। এই ছবিটি সেই ছবিগুলোর ভেতরের দুটি ছবি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ মেলার অন্যতম আকর্ষণ মাটির তৈরি খেলনা। মেলায় আগত শিশুদের সবচাইতে বেশি আগ্রহ থাকে এই দোকানগুলোর প্রতি। যদিও দিন দিন তাদের সেই আগ্রহের জায়গাটি দখল করে নিচ্ছে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা।
উপরের ছবি দুটির ভেতরে প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে মাটির তৈরি মানুষের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। বিশেষ করে যেগুলো রান্না ঘরের কাজে লাগে। একসময় আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অন্যতম অংশ ছিল এই মাটির তৈরি বাসন-কোসন। কিন্তু এখন সেটা একেবারেই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এখন সবাই সিলভারের তৈরি বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র ব্যবহার করে। যদিও মাটির পাত্র ব্যবহার করাটা ছিল অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত।
এই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে নানা রকমের রংবেরঙের মাটির তৈরি ব্যাংক। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন অনেকেই দেখতাম এই ধরনের ব্যাংকে টাকা পয়সা জমাত। যদিও আমার কোন সময় টাকা পয়সা জমানোর অভ্যাস ছিল না। যার ফলে আমার কখনো ব্যাংক কেনাও হয়নি। তবে আমার বয়সি অনেকেই দেখেছি আগ্রহ সহকারে ব্যাংক কিনে সে ব্যাংকে টাকা জমাতে। আজকাল অবশ্য ব্যাংকে টাকা জমানো লোকের পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে। যার ফলে এই ধরনের মাটির তৈরি ব্যাংকের বিক্রিও অনেক কমেছে। যদিও অনেকে এখন ঘর সাজানোর কাজেও এই ব্যাংকগুলো ব্যবহার করে।
উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন বাঁশ কাঠের তৈরি বিভিন্ন রকমের তৈজসপত্র। একসময় এই জিনিসগুলো গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়িতে দেখা যেতো। যদিও এখন আর অবস্থা তেমনটা নেই। এখন বেশিরভাগ মানুষের বাসায় মেলামাইন স্টিল অ্যালুমিনিয়াম এর তৈরি তৈজসপত্র দেখা যায়। যারা আরেকটু বেশি সৌখিন তারা কাঁচের জিনিসপত্র ব্যবহার করে। যদিও শহরের মানুষজন অনেক সময় শখ করে এগুলো কিনে থাকে কিন্তু বাসা বাড়িতে এগুলোর ব্যবহার একেবারেই উঠে গিয়েছে বলতে গেলেই চলে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার চর, গজারিয়া |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ঘোরাঘুরির জন্য বছরের এই সময়টাই সেরা। আপনি ঘোরাঘুরি করতে অনেক পছন্দ করেন। তবে ফেরদৌস ভাইয়া থাকলে আপনার অনেক ভালো লাগে। আপনি আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে নদীর পাড় ও মেলার কিছু অংশ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বন্ধু থাকলে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাওয়া যায়। ফেরদৌস ভাই না থাকায় আপনি একা একাও যেতে পারছেন না। ঘুরার তো এখনই সময়। তবে চরের মানুষদের জীবনের সাথে ঘোরার সম্পর্কটা জেনে ভালো লাগলো। আর গ্রামীণ মেলাগুলোতে এখন আর মাটির তৈরি জিনিসপত্র পাওয়া যায় না। কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সেই সংস্কৃতি! মাটির ব্যাংকে কতো টাকা জমিয়েছে। আমার এই অভ্যাসটা এখনও আছে। তবে ব্যাংকটা প্লাস্টিকের এখন!
বছরের এই সময়টা ঘোরাফেরার জন্য সত্যিই খুবই আদর্শ একটি সময়। এই সময়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। ভাই আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র গুলো এবং বেত দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আবার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ির ফটোগ্রাফিটি অসাধারণ হয়েছে। দারুন একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট শেয়ার করার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফেরদৌস ভাইয়া আপনার জীবনের একটা অংশ হয়ে আছে। ফেরদৌস ভাইয়া থাকলে আপনার অনেক জায়গায় ঘোরা হয়। আর আপনি ঘুরতে পছন্দ করেন তা জানি।আর বেশ কদিন ধরে ওয়েদার ও খুব ভাল। আপনি পরিবার নিয়ে পদ্মার চরে গিয়েছিলেন। আর খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন।দেখে খুব ভাল লাগলো। গজারিয়া মেলার ও বেশকিছু ফটোগ্রাফি করেছেন,খুব ভাল লাগলো দেখে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।
আসলেই ভাইয়া এই সময়টা ঘুরাঘুরি করার জন্য খুবই পারফেক্ট। কয়েকদিন আগে পরিবার নিয়ে পদ্মার চরে ঘুরতে গিয়েছিলেন,সেই পোস্ট আমি দেখেছিলাম। সেখানে গিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও করেছিলেন। এই পোস্টে মেলায় তোলা ফটোগ্রাফি গুলোও চমৎকার হয়েছে ভাইয়া। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময়।