ঘুরতে গিয়ে নানা রকম বিপত্তির সম্মুখীন হওয়া।
গত পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আমাদের দুই বন্ধুর ঘোরাফেরার কথা শেয়ার করেছিলাম। গতকাল পোস্ট যেখানে শেষ করেছিলাম আজকে সেখান থেকেই শুরু করছি। হাজিগঞ্জ থেকে আমরা যখন রাফসানের এলাকা দিকে আসছিলাম তখন দেখতে পেলাম আমরা যতই রাফসানের এলাকার দিকে আগাচ্ছি আকাশ ততটাই কালো হয়ে উঠছে। আমি আর ফেরদৌস দুজনেই দুশ্চিন্তায় পরলাম। মনে হচ্ছিলো আমরা রাফসানে এলাকায় পৌঁছানোর আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। আমি ফেরদৌস কে বললাম একটু দ্রুত চালানোর চেষ্টা করো। দেখো বৃষ্টির আগে রাফসানের এলাকায় পৌঁছাতে পারি কিনা। যাই হোক ফেরদৌস যথাসম্ভব মোটরসাইকেল দ্রুত চালাতে লাগলো।
দেখতে দেখতে আমরা অল্প সময়ের ভেতরেই রাফসানের এলাকায় পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌছে দেখতে পেলাম রাফসান আরো দুটো ছেলের সাথে গল্প করছে। আমাদেরকে ঢুকতে দেখে ছেলে দুটো সেখান থেকে চলে গেলো। আমরা রাফ্সানের শোরুমে ঢুকে প্রথমে ওর শরীরের কি অবস্থা সেটা জিজ্ঞেস করলাম। ও বলল এখন মোটামুটি ভালো আছি। তবে পরিবারের সকলেই অসুস্থ ছিলো। যার ফলে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সাথে এটাও জানালো ওর ছোট ছেলে জ্বরে একেবারে কাহিল হয়ে পড়েছিলো। যদিও এখন তার অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। তারপর আমরা যথারীতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে লাগলাম। বাইরের আকাশ দেখে মনে হচ্ছিল রীতিমত রাত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তখনও সন্ধ্যা হতে কিছুটা সময় বাকি ছিলো।
এক পর্যায়ে আমি রাফসানের শোরুম থেকে বের হয়ে ফেরদৌসকে বললাম তুমি বসো আমি নামাজ পড়ে আসি। তবে হঠাৎ করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তখনও প্রায় নামাজ শুরু হতে 15-20 মিনিট বাকি। আমি হঠাৎ করে ফেরদৌসকে বললাম চলো আজকের মতো বাড়ি চলে যাই। পরে আবার একদিন আসা যাবে। কারণ বৃষ্টি শুরু হলে সহজে থামবে না। তখন হয়তো আমরা এখানে আটকা পড়ে যাবো। তাই বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে যদি আমরা শহরে পৌঁছাতে পারি তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। ফেরদৌসের ও আমার কথাটা পছন্দ হলো। তারপর আমরা দ্রুত শহরের দিকে রওনা দিলাম। তাছাড়া আমার মাথায় আরো একটা চিন্তা কাজ করছিলো যে দ্রুত শহরে পৌঁছাতে না পারলে মাগরিবের জামাত মিস করবো।
যাইহোক ফেরদৌস মোটামুটি বেশ দ্রুতই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। আমরা যতই শহরের দিকে আগাচ্ছিলাম ততই ঠান্ডা বাতাস টের পাচ্ছিলাম। আমরা বুঝতে পারছিলাম শহরের দিকে হয়তো বৃষ্টি হচ্ছে অথবা ইতিমধ্যে বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। দেখতে দেখতে আমরা একেবারে শহরের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম অল্প সময়ের ভেতরে। কিন্তু বিপত্তিটা তখনই ঘটলো। হঠাৎ করে আমরা বৃষ্টির কবলে পড়লাম। এদিকে মাগরিবের নামাজেরও সময় হয়ে গিয়েছে। আমরা একটা মোড় পার হয়ে সামনের দিকে আগাচ্ছিলাম। তখন দেখলাম বৃষ্টি জোরে আসছে। তখন আমি ফেরদৌসকে বললাম মোটরসাইকেলটা ঘুরাও। পেছনের মোড়ে একটা মসজিদ আছে। সেখান থেকে নামাজ আদায় করি। এই কথা বলতেই ফেরদৌস মোটরসাইকেল ঘুরালো। তারপর সেই মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষ করে বের হয়ে দেখি বৃষ্টি প্রায় থেমে গিয়েছে। অবশ্য তখনও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। যেহেতু শহরের কাছাকাছি চলে এসেছি তাই চিন্তা করলাম এই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে না থেমে আমরা আগাতে থাকি।
দুই বন্ধু বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শহরের দিকে আগাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে মোটরসাইকেল চালাতে চালাতে ফেরদৌস বেশ কড়া ব্রেক করলো। আমি তখনও বুঝতে পারিনি কি হয়েছে। তবে সামনে তাকাতেই বিপদটা দেখতে পেলাম। দেখলাম সামনে পুলিশ গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছিলো ফেরদৌস এর গাড়ির কাগজপত্র সাথে ছিল না। সেইসাথে ওর ড্রাইভিং লাইসেন্স টাও নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে আমরা বুঝতে পারছিলাম পুলিশ এখন ধরতে পারলে বেশ ঝামেলা করবে। যার ফলে আমরা পুলিশকে অ্যাভয়েড করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মোটরসাইকেল থামাতে থামাতে আমাদের অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিলো। একজন পুলিশ সদস্য ততক্ষণে আমাদের কাছে চলে এসেছিলো। যাইহোক তারপর যা হওয়ার সেটাই হলো। মূলত পুলিশ মোটরসাইকেল ধরছিল টাকা খাওয়ার জন্য। যেহেতু ফেরদৌসের কাগজপত্র কিছুটা সমস্যা ছিলো। তাই আমরাও শেষ পর্যন্ত পুলিশকে কিছু টাকা দিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে সেখান থেকে চলে এলাম। পুলিশের কাছ থেকে মুক্ত হয়ে ফেরদৌস আমাকে আরো কিছুটা সামনে এগিয়ে দিলো। তারপর দুইজন হঠাৎ করে ঘটা এই বিপদ নিয়ে আলোচনা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে তারপর আমরা যার যার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। এভাবেই আমাদের এবারের ঘোরাফেরা পর্ব শেষ হলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আসলে কাগজপত্র সাথে নেই তাই পুলিশ টাকা খাওয়ার কাজটি খুব সুন্দর ভাবে ই করতে পারলো।টাকা দিয়ে ভালো ই করেছেন।নয়তো কাগজ নেই দেখে কতো কি ই না করতে পারতো।যাক নতুন এক অভিজ্ঞতা হলো। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কোথায় বলে পুলিশে ধরলে আট ঘাঁ। আর টাকা না দিলে তো আর ছাড়তোই না। আপনার আজকের পোস্ট পড়ে বুঝাই যাচেছ যে বেশ ভালো রকমের ঝামেলার মধ্য দিয়ে আপনাদের এবারের ঘুরাফিরা। তবু বন্ধুর সাথে এমন বিকেলে ঘুরতে কিন্তু সবারই কম বেশী ভালো লাগে। আমার কিন্তু আপনাদের বন্ধুদের সম্পর্কগুলো বেশ ভালো লাগে।
ভাইয়া মসজিদে গিয়ে বৃষ্টির বিপদ থেকে বেচেঁ গেলেন কিন্তুু পুলিশের বিপদ থেকে আর বাচঁতে পারলেন না। ভাইয়া কত টাকা ঘুষ দিয়ে পুলিশের বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন,সেটা জানলে মজা হতো,হে হে হে। ধন্যবাদ।