পরিবারের সাথে রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতা।
বেশ কিছুদিন হলো বাইরে পরিবারের সাথে কোথাও খেতে যাওয়া হয় না। ফুডপান্ডা আসার পরে এই এক সমস্যা হয়েছে। এখন আর রেস্টুরেন্টে যেতে ইচ্ছা করে না। কোন কিছু খেতে ইচ্ছা করলে অর্ডার করলেই বাড়িতে খাবার হাজির হয়ে যায়। যার ফলে আর রেস্টুরেন্টে যাওয়ার ঝামেলা করতে ভালো লাগেনা। তবে আমার মেয়ে অনেকদিন থেকেই বলছিল বাইরে খেতে যাবে। আমিও মনে মনে চিন্তা করছিলাম পরিবার নিয়ে একবার বাইরে থেকে ঘুরে এলে মন্দ হয় না। খাওয়া দাওয়া হবে সাথে কিছুটা সময় একসাথে কাটানো হলো।
দু একদিন আগে ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ একটি রেস্টুরেন্টের অফারে চোখ আটকে গেল। অফারটি পছন্দ হওয়াতে চিন্তা করলাম। যেহেতু রেস্টুরেন্টটি নতুন হয়েছে তাই তাদের পরিবেশ এবং খাবারের মান আশা করি ভালই হবে। তখন ঠিক করলাম এই রেস্টুরেন্টই খেতে যাব। গতকালকেই পরিকল্পনা করেছিলাম আজকে দুপুরে খেতে যাওয়ার। তাই আমি নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রীকে বলে গেলাম তোমরা তৈরি হয়ে থেকো। আমি নামাজ পড়ে এসেই একসাথে বেরিয়ে যাব। যথারীতি আমি নামাজ পড়ে এসে তৈরি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম।
তবে রেস্টুরেন্টটি নতুন হওয়াতে আমি লোকেশনটা পুরোপুরি চিনতে পারছিলাম না। তাই বন্ধু ফেরদৌসকে ফোন দিয়ে রেস্টুরেন্টের লোকেশন সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হয়ে নিলাম। রেস্টুরেন্টের অবস্থান আমার বাসা থেকে খুব কাছেই। রিক্সা করে যেতে মিনিট দশেক লেগেছে। রেস্টুরেন্টটি একটি নতুন বিল্ডিং এর তিন তলায় অবস্থিত। কিন্তু রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে গিয়ে আমরা প্রথমে কিছুটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। কারণ এটি মূলত একটি রেস্টুরেন্ট কাম পার্টি সেন্টার। এখানে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমরা যেই দরজা দিয়ে ঢুকছিলাম সেই জায়গাটা ছিল পার্টি সেন্টারের। সেখানে দেখি কোন লোকজন নেই। চিন্তা করছিলাম যে আমরা কি ভুল কোন জায়গায় এসে পড়লাম কিনা। তারপর অনেক দূরে গ্লাসের ওপার থেকে দেখতে পেলাম দুজন লোক হাত ইশারা করছে। তখন বুঝতে পারলাম যে আমরা সঠিক জায়গায় এসেছি। তখন রেস্টুরেন্টের একজন লোক এসে জানালো পুরো জায়গাটি তাদের। তবে রেস্টুরেন্টটি অন্য পাশে।
রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম তেমন কোন লোকজন নেই। এই রেস্টুরেন্টের উদ্বোধন হয়েছে মাত্র অল্প কয়েকদিন হল। যে কোন রেস্টুরেন্টের কাস্টমার পেতে প্রথম কিছুদিন সময় লাগে। যাইহোক আমরা সুবিধামতো একটি জায়গায় বসে পূর্ব পরিকল্পনা মত খাবার অর্ডার করলাম। রেস্টুরেন্টটির বসার ব্যবস্থা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। এখানে যেমন খোলা জায়গায় বসার ব্যবস্থা আছে। তেমনি পরিবার নিয়ে একটু প্রাইভেসি মেইনটেইন করে বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। এ ধরনের জায়গায় বসে নিশ্চিন্তে খাওয়া-দাওয়া করা যায়। কারণ খাওয়ার সময় কেউ তাকিয়ে থাকলে আমার কাছে খুবই অস্বস্তি লাগে। আর সাথে যেহেতু আমার স্ত্রী রয়েছে সেও খোলামেলা জায়গায় বসতে পছন্দ করে না।
যাইহোক খাবার অর্ডার করার পরে ওয়েটার জানালো ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগবে খাবার তৈরি হতে। আমরা রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় শোয়া-দুটো বেজে গিয়েছিল। খাবার আসতে এত সময় লাগবে জেনে ওয়েটারকে বললাম একটু তাড়াতাড়ি করতে বলবেন। ওয়েটার তখন বলল স্যার চিন্তা করবেন না। আমরা চেষ্টা করব যত দ্রুত সম্ভব খাবার পরিবেশন করতে। আমি মনে মনে চিন্তা করছিলাম আগে যদি স্যুপটা পরিবেশন করত। তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা সুবিধা হত। কারণ ইতিমধ্যে যথেষ্ট ক্ষুধা লেগেছে আমাদের সবারই।
এই কথা চিন্তা করতে করতেই টেবিলে গরম গরম থাই সুপ হাজির হয়ে গেল। সাথে ছিল চিকেন অন্থন। তারা যে বুদ্ধি করে স্যুপটা আগে পরিবেশন করেছে এটা দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। আমরা একটা প্যাকেজ অর্ডার করেছিলাম। সেই প্যাকেজে ছিল থাই সুপ, অন্থন, চিকেন সাসলিক,চাইনিজ ভেজিটেবল, চিকেন চিলি অনিয়ন, ফ্রাইড রাইস, সালাদ, ফ্রাইড চিকেন, আর ড্রিংকস। যাই হোক স্যুপ খাওয়া শেষ হলে আমরা বসে নিজেদের ভিতর গল্প গুজব করছিলাম। এর কিছুক্ষণ পরই আমাদের অন্যান্য খাবার টেবিলে হাজির হয়ে গেলো।
বুঝতে পারলাম তারা একবারে সব খাবার রেডি করে তারপর পরিবেশন করেছে। যার ফলে তাদের সময় একটু বেশি লাগছে। যদিও খাবার যখন টেবিলে পরিবেশন করেছিল ততক্ষণে কিছু কিছু খাবার ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক যেহেতু পেটে ক্ষুধা ছিল। তাই আমরা ছবি তুলে তারপর খাওয়া শুরু করলাম। খাবারগুলোর স্বাদ মোটামুটি ভালই ছিল নতুন রেস্টুরেন্ট হিসাবে। আমরা ধীরেসুস্থে খেতে লাগলাম। তবে এত খাবার আমরা তিনজনে শেষ করতে পারিনি। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমরা বিল মিটিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
নতুন রেস্টুরেন্ট হিসেবে সার্ভিস অনেকটাই ভাল মনে হচ্ছে। আসলে ভিড়ের পরিমাণ যখন কম থাকে তখন তারা ভালোভাবেই কাস্টমারদের সার্ভিস দেয়। খোলামেলা জায়গায় পরিবার পরিজন নিয়ে খাওয়া দাওয়া করা কেমন জানি লাগে। সেই তুলনায় এই রেস্টুরেন্টটি অনেক ভালো আছে। যাই হোক মাঝে মাঝে এভাবে বাইরে খেতে গেলে ভালো লাগে। তবে আমরা দিনে দিনে অলস হয়ে যাচ্ছি। রেডি হয়ে যেতেই অনেক টাইম লেগে যায়। তাই তো ফুডপান্ডায় অর্ডার করে ফেলি। রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।
ঠিকই বলেছেন। নতুন রেস্টুরেন্ট হিসেবে তাদের সার্ভিস বেশ ভালই।
আসলেই ফুডপান্ডার জন্য এখন মানুষ বাহিরে বের হতে। অর্ডার করলে খাবার ঘরে। যাই হোক নতুন রেস্টুরেন্টর ছবি দেখেই মনে হচ্ছে পরিবেশ তা বেশ সুন্দর। খাবার গুলো দেখেই বেশ লোভনীয় লাগছে। আসলেই বুদ্ধি করে সুপ তা দেওয়াতে বেশ ভালোই হয়েছে। আসলে নতুন রেস্টুরেন্ট হলে একটা সুবিধা আছে ,বিশেষ ছাড় আর সার্ভিস ও বেশ ভালো হয়। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ
সুপটা তাড়াতাড়ি পরিবেশন করার ব্যাপারটা আমার কাছেও ভালো লেগেছিল। না হলে ক্ষুধা পেটে আরও বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো।
এটা সত্যি এখন বাইরে যাওয়া কমই হয়। কিছু খেতে ইচ্ছে হলে ফুড পান্ডায় অর্ডার করলেই হয়। আপনি পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলেন।রেস্টুরেন্টের পরিবেশ বেশ ভালোই লাগলো।আর খাবারগুলো ও কিন্তু লোভনীয় লাগছে।নতুন রেস্টুরেন্টে লোকজন কম হলে তারা অল্প লোকের খুব যত্ন নিতে পারে।পরিবারের সবাইকে নিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন জেনে ভাল লাগলো। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া রেস্টুরেন্টি তো অনেক বড় আর নিরিবিলি দেখতে পেলাম। নতুন তো তাই লোকজন কম ছিল তাই আপনি প্রথমে কনফিউজ হয়ে গেছিলেন। রেস্টুরেন্টি সুন্দর ভাবেই সাজানো হয়েছে। খাবারের মান তো দেখে ভালই লেগেছে। আশা করি আপনারা খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন। ফুডপান্ডা আমাদের আরেকটু অলস হতে সাহায্য করছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।