বাড়ি ফেরার গল্প
নমষ্কার,,
ভারত থেকে দেশে ফিরেছি গত ৬ ডিসেম্বর। নির্বাচনের আগের দিন, সকাল সন্ধ্যা হরতাল ছিল সেদিন। আগে থেকেই বাসের নাম্বার গুলোতে যোগাযোগ করি, কিন্তু কোন লাভ হয় না। সবাই জানিয়ে দেয় যে ঐদিন বাস বন্ধ থাকবে। আমি আর দেরি করতে চাইছিলাম না ইন্ডিয়াতে। কারণ ভোটের পর দেশের অবস্থা যদি আরো খারাপ হয়ে যায় তবে ফেরা অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে। আমার একটা বিশ্বাস ছিল যে, যদি বর্ডার খোলা থাকে তবে অবশ্যই বাড়িতে ঠিক কোন না কোন ভাবে পৌঁছাতে পারবোই। এই একটা মনের জোর নিয়েই সকাল-সকাল মালদা থেকে রওনা দেই হিলি স্থলবন্দরের উদ্দেশ্যে।
আরেকটু আগে রওনা দিতে পারলে হয়তো ভালো হতো। আসলে শীতের দিনে কি করে যে দেরি হয়ে যায় ঠিক বোঝা যায় না। যাই হোক সকাল সাড়ে নটার দিকে আমার বাস মালদা টার্মিনাল থেকে ছেড়ে দেয়। হিলি পৌঁছতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো লেগে যায়। বাসে বসে থাকতে খুব একটা বিরক্ত লাগে নি আমার। বিগত কয়েকদিনে যে সুখময় স্মৃতিগুলো ছিল সেগুলো মনে করতে করতেই কখন যে সময় পেরিয়ে গেছে একদম বুঝতে পারিনি। হিলি স্থলবন্দরের পৌঁছানোর পর দেখি সেখানে দালালের মেলা লেগে আছে। আমি যার মাধ্যমে পারাপার হই তাকে আর আমাকে খুঁজে নিতে হয় না, সেই আমাকে খুঁজে নেয়। ব্যাপারটা বেশ মজার লাগে আমার কাছে।
ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ দুই পারেই খুব ভালোভাবে এবং দ্রুত সব কাজ সম্পন্ন হয় ইমিগ্রেশন এর। এবার হলো আসল খেলা। বাড়ি যাব কি করে! বাস তো বন্ধ। অটোতে উঠে বাসস্ট্যান্ড আসার পথে হঠাৎ করে একটা সিএনজি পেয়ে গেলাম। ভাড়াটা একটু বেশি চাইলো। তবে আমি আর দামাদামি করিনি। উঠে মোকামতলা পর্যন্ত চলে আসলাম। সিএনজি থেকে নেমেই আরেকটা সিএনজি ধরি বগুড়া শহরে ঢোকার জন্য। এক্ষেত্রে খুব একটা প্রবলেম হয়নি। আর তারপর বগুড়া পৌঁছে আরেকটা সিএনজি নিয়ে নেই বাড়িতে আসার জন্য। হরতাল হলেও সিএনজিগুলো চলছিল বলে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছি আমি।
যদিও মনের ভেতর একটা আতঙ্ক কাজ করছিল সব সময়। কারণ যেকোনো মুহূর্তে রাস্তায় যদি কেউ হামলা করে বসে তবে যা কিছু হয়ে যেতে পারে। বাড়ির সকলে ভীষণ চিন্তায় ছিল। সবশেষ ঈশ্বরের আশীর্বাদে খুব ভালোভাবেই আমি বাড়ি পৌঁছাই একদম সন্ধ্যের মাঝেই। ইন্ডিয়া ট্যুরের অনেক গল্পই এখনো শেয়ার করা বাকি। ধীরে ধীরে সবকিছুই আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
বেশ ভালো লাগলো ইন্ডিয়া থেকে ভোটের আগের দিন সন্ধ্যা মুহূর্তে আপনি দেশে পৌঁছে গেছেন। পাশাপাশি বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন সমস্ত বিষয়ে। যে সমস্ত যানবাহনে বগুড়া পৌঁছেছেন সে বিষয়ে তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। আর বিস্তারিত জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাই সব সময় সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।
আপনি দেখছি ভোটের পরবর্তী ভয়ানক পরিস্থিতির কথা জেনেও দেশে আসার জন্য মারিয়া হয়ে উঠেছিলেন এবং বর্ডার পার হয়ে অনেক রিক্সা নিয়ে বাড়ি পৌঁছে গেছেন। সিএনজি চলছিলো জন্য আসতে পেরেছিলেন তবে বড়ো ধরনের বিপদ হতে পারতো।ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আসলে এটুকু রিস্ক না নিয়ে উপায় ছিল না দিদি। ভগবান সহায় ছিল তাই কোন বাধার সম্মুখীন হই নি। ভালো থাকবেন দিদি।