এলোমেলো কাটানো একটা দিন
নমস্কার,,
গত রাতে ঘুমাতে দেরি হলেও আজ বেশ সকাল সকাল উঠতে হয়েছে ঘুম থেকে। প্রায় সাড়ে ছয় টায় উঠেছি। এত সকালে সাধারণত ওঠা হয় না। আসলে আজ ছিল ক্ষৌরকার্য তাই সকাল সকাল উঠেছি। কিছুদিন আগে একটা পোস্টে লিখেছিলাম আমার সেজো জেঠু ইন্ডিয়ায় মারা গেছেন। আর আমাদের ধর্মে নিকট আত্মীয়ের মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। আমরা যেহেতু জাতিতে ক্ষত্রিয় তাই ১৩ দিন এই বিধান গুলো মানতে হয়। যাই হোক, সকালে আচার বিধি মানার পর স্নান করে তারপর ঘরে ঢুকতে হয়েছে।
বিপত্তি বাঁধলো স্নান করার পরেই। দেখি গা কেমন যেন টুলছে। ঘুমে চোখ ধরে আসছে। এদিকে শুলেও ঘুম হবে না। আবার তখন যদি শুয়ে পড়ি তাহলে মায়ের কথা শুনতে হবে নিশ্চিত। ফোন নিয়ে যে বসবো সেটাও ভালো লাগছে না। ল্যাপটপে কিছু কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। মন বসছিল না কিছুতেই। সকালের খাবার খেতে খেতে প্রায় সাড়ে এগারো টা বেজে গিয়েছিল আজ। আসলে অনেক কাজ করতে হয়েছে মা বাবা দুজনকেই। তাই রান্নাতে একটু দেরি। খাওয়ার পর যেন চোখে সরষে ফুল দেখছি। শুধু ঘুম আর ঘুম । অমনি ধপাস বিছানায়। নিজের ওপরই রাগ হচ্ছিল বেশি। রাত জাগার ফল এসব। নিজের কাজ গুলো মিছেমিছি পিছিয়ে যাচ্ছে শুধু।
যাই হোক ত্রিশ মিনিটের বেশি ঘুম হলো না একদমই। একটু পর ফ্রেশ হয়ে কাজে বসলাম। তারপর বিকালের দিয়ে বাড়ির কিছু কাজ নিয়ে শহরের দিকে ছুটলাম। গরম টা বেশ ছিল। যদিও সকালে আকাশ টা মেঘলা ছিল কিন্তু দুপুরে দারুণ রোদ উঠেছিল। বাইরে গিয়েও শান্তি পাচ্ছিলাম না। সন্ধ্যার পর যখন বাড়ি ফিরছি তখন কানে সাউন্ড বক্সের ধুমধাম বিটের গান আসতে নিলো। তখন মনে হলো আজ তো বিশ্বকর্মা পূজো। তাই জন্যই এতো আয়োজন।
এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে বের করে দুজন মিলে পাড়ার ভেতর দিয়ে ঘুরলাম কিছুক্ষণ। বড় বড় বিল্ডিং গুলো সুন্দর লাইটিং করেছিল পুজো উপলক্ষে। বেশ দারুন লাগছিল দেখতে। সাথে তো রাস্তায় সাউন্ড বক্সে গান চলছেই। এক কথায় হাঁটতে মন্দ লাগছিল না। তারপর দুজনে চা হাতে কিছুক্ষণ গল্প করতে করতেই দেখি মেঘ ডাকা শুরু করেছে। ভাবলাম বৃষ্টি আসবে না হয়তো। এসব এমনি গলাবাজি করছে। হিহিহিহি। ওমা একটু পরেই দেখি বলা নেই কওয়া নেই বৃষ্টি রাণী এসে হাজির। তখন আর কি করার! হালকা ভিজেই বাড়ি ঢুকে গেলাম দৌড়ে। আর এভাবেই একটা এলোমেলো দিনের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
রাতে যদি কোনদিন ঘুমাতে দেরি হয়ে যায় আর সকালে যদি এরকম কাজ থেকে যায়, তাহলে তো খুবই মুশকিল । সারাটা দিনই শুধু ঘুম পায় আর ঘুম পায় । কোনো কাজ ঠিক করে করা যায় না। আমাদের মধ্যেও খুব কাছের কেউ মারা গেলে ১৩ দিন নিয়ম-কানুন পালন করতে হয়। সারাটা দিন কাটানোর পর সন্ধ্যার সময় যখন বন্ধুর সাথে একটু বের হলেন, বিশ্বকর্মা পূজার মাইকের আওয়াজ শুনে। তখনও আবার বৃষ্টি রানী এসে আপনাদের একটু ভিজিয়ে দিয়ে গেল দেখছি, হি হি হি।