হসপিটালে বন্ধুর পাশে কাটানো কিছু মুহূর্ত
নমস্কার,,,
আজ যার কথা লিখতে চলেছি তাকে নিয়ে এর আগেও অনেক বার পোস্ট করেছি। এই স্টিমিট সাইড থেকে শুরু করে আমার বাংলা ব্লগ, সব খানেই তার হাত ধরেই আমার যাত্রা শুরু। আমার বন্ধু তর্পণ পাল। এই ব্লগিং জার্নিতে আমার গুরু সে।
হঠাৎ একদিন সকালে ফোনে তার অসুস্থতার কথা আমাকে সে জানালো। বললো, ওর ক্যান্সার ধরা পরেছে। আমি রীতিমত বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম মজা করছে। তারপর যখন সব টেস্টের রেজাল্ট আমাকে দেখালো তখন আমি একদম চুপ হয়ে গেলাম।
খুব আর্জেন্ট সার্জারি করতে হয়। ইন্ডিয়া যাওয়ার সময় টা হাতে ছিল না। অপারেশন টা ভালো ভাবে হয়েছে। এখন কেমো থেরাপি চলছে। আমার সাথে মোটামুটি রোজ ওর ফোনে কথা হয়। আসলে একটু খোঁজ খবর নেওয়া ছাড়া তো আমাদের হাতে আর কিছুই করার নেই।
আমি ঢাকা আসার আগে থেকেই খবর নিয়ে নেই যে কবে ওর থেরাপি আছে। কারণ তর্পণ বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর আমি যেখানে থাকি আর পাশেই ওটা। তাই আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে আজ সকালে প্রথমে তর্পণ কে দেখতে যাব।
তর্পণ এর কথা মতো আমি ওর রুমে চলে যাই। গিয়ে দেখি তর্পণ চোখ বুজে অনেকটা ঘুমিয়ে আছে। হাতে স্যালাইন দেওয়া। আগের থেকে অনেকটা শুকিয়ে গেছে। কেমো দিয়ে শরীরটা যে দুর্বল হয়ে গিয়েছে বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারছিলাম। এমন অবস্থায় বন্ধুকে দেখতে হবে কখনো কল্পনাও করি নি। ভেতর ভেতর খুব খারাপ লাগছিল। আস্তে ডেকে ওর সাথে কথা বললাম। গলার আওয়াজ বলে দিচ্ছিল ছেলেটা ভেতরে বেশ কষ্ট পাচ্ছে।
পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসতে নিলাম। কিন্তু রুমের কর্তব্য রত যারা ছিল তারা সোজা জানিয়ে দিল যে, ভেতরে কারো বসা যাবে না। দাড়িয়ে কথা বলে চলে যেতে হবে। হসপিটালের নিয়মের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। পরে জানতে পারলাম ঐ ওয়ার্ড এ যারা যারা আছেন সবাই ক্যান্সার পেশেন্ট। আর কেমো নিচ্ছেন ওখানে। বেশ নিরিবিলি ভেতরের পরিবেশ। আমি দাড়িয়ে থেকেই কিছুক্ষণ কথা বললাম। কথা বলার মাঝেই দেখলাম তর্পণ দুই বার ঘুমিয়ে গেল। আসলে শরীরটা মারাত্মক দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আর খাওয়া দাওয়াও ঠিক মত করতে পারছে না। আমি ভাবলাম তাহলে ঘুমোক ছেলেটা। আমি বরং যাই এখন। তারপর তর্পণ কে বলে বাইরে চলে এলাম।
সত্যি বলতে ভীষণ খারাপ লাগছিল আসার সময়। ভেতরে কেমন একটা লাগছিল। বারবার মনে হচ্ছিল যে এই অসুখের কাছে আমরা কতটা অসহায়!! রুমের বাইরে এসে কিছুটা সময় একাই বসে থাকলাম। চুপচাপ কিছুটা সময় থাকার পর আমি হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসলাম।
আসলে এই পোস্ট টা লেখার সময় টাতেও আমি আটকে যাচ্ছিলাম বারবার। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আমার বন্ধু তর্পণ যেন সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসে। ওর স্বপ্ন গুলো এখনো অনেক বাকি। আরো অনেকটা দূর যেতে হবে। ঈশ্বর যেন এই কঠিন সময়ে তর্পণ এর পাশে থাকেন এবং ওকে ধৈর্য্য ও শক্তি দিয়ে এই জীবন যুদ্ধ মোকাবেলা করার সাহস দান করেন, এটাই প্রার্থনা করি।
আমরা ছোটখাটো বিপদে পড়লেই নিরাশ হয়ে যাই। এরকম ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের কাছে গেলে বোঝা যায় যে জীবন কতটা কঠিন। মৃত্যু চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে। তাছাড়া কেমো দিলে শরীরটা অনেক দুর্বল হয়ে যায়। খবরটা শুনে আসলে অনেক খারাপ লাগলো। কাছের মানুষদের এরকম খবর মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর। দোয়া রইল আপনার বন্ধুর জন্য।
আসলেই আপু,, একদম ঠিক বলেছেন। খুব খারাপ লাগছিল চোখের সামনে সব দেখে। ঈশ্বর যেন ওকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন এটাই প্রার্থনা করি সব সময়।
আসলে এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন আমরা যেন এই অসুস্থতার কাছে অনেক অসহায়। আপনার বন্ধুর এরকম একটা অসুস্থতার খবর শুনে সত্যি ভীষণ খারাপ লেগেছে। আসলে ক্যান্সার রোগটা এমন যে কেউ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসে আবার কেউ সবাইকে ছেড়ে চলে যায়। আপনার বন্ধুর জন্য অনেক দোয়া রইল যেন তিনি নিজের জীবন যুদ্ধের সাথে লড়াই করে আবারও আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারে। ওনার শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছিল তাই কথার মাঝে দুইবার ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। আপনার বন্ধুর জন্য দোয়া রইল।
আসলে কেমোর এই ধাপ গুলো পার করা অনেক কঠিন একটা কাজ। শরীর একদম শেষ করে ফেলে। তবে আমার বিশ্বাস তর্পণ খুব দ্রুত আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য ।
ভাইয়া নিজের বন্ধুর এমন অবস্থা শুনে কারোর মন ভাল থাকার কথা নয়। যে কেউ ছোটে যাবে এক নজর দেখার জন্য। আপনার বন্ধু তর্পণের ক্যান্সার ধরা পরেছে সেটা শুনে আমার নিজের কাছেও খারাপ লাগলো। ধৈর্য ধরা ছাড়া আরে কোন উপায় নেই, আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ ভাই ধৈর্য্য আর অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই আসলে। আমার বিশ্বাস তর্পণ দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।
আপনার বন্ধু তর্পনের এরকম একটা অসুস্থতার খবর শুনে সত্যি ভীষণ খারাপই লাগলো। ওনার শরীরটা মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়েছে এর জন্য। আসলে ক্যান্সার এমন একটা অসুখ এতে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে তার বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে যায়। দোয়া করি যেন আপনার বন্ধু তর্পন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক এবং আবারও আপনাদের সবার মাঝে ফিরে আসতে পারে। আশা করছি সব খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।
চিকিৎসার এই ধাপ টা অনেক কঠিন আসলে। তবে তর্পণ খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। দোয়া করবেন আপু ওর জন্য। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এই ধরনের পোস্টগুলো পড়তেও কেমন জানি কষ্ট লাগে। ভগবান কখন যে কাকে কি বিপদে ফেলে, সেটা আসলে বোঝা মুশকিল। পোস্টটা পড়ে নিয়েছি, তবে কমেন্ট এ কি লিখবো সেটাই বুঝতে পারছিনা।
আমিও মন থেকে আশীর্বাদ করি আপনার বন্ধু যেনো পুনরায় সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারেন।
সত্যি বলতে আমাদের বলার কিছু থাকেনা এই
মুহূর্ত গুলোতে। ধৈর্য্য ধরা আর অপেক্ষা করা ছাড়া যেন আমরা নিরুপায় একদম। আমার বিশ্বাস ভালো কিছুই হবে। 🙏