বিজ্ঞানের এই যুগেও কিছু ব্যাপার অলৌকিক মনে হয়
নমস্কার,,
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবার ভোরের দিকেও বেশ হয়েছে বৃষ্টি। আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা আজ। আচ্ছা আমরা সবাই তো বিজ্ঞানে বিশ্বাস করি। আর বিজ্ঞানের এই যুগে মন্ত্র তন্ত্র , ভূত পেত্ কেউ খুব একটা বিশ্বাস করেও না, আবার মানেও না। কিন্তু কখনো কখনো কিছু ব্যাপার দেখার পর আমরা যেন মানতে বাধ্য হই। ঠিক তেমনই একটা গল্প করছি আজ।
গতপরশু দিনের কথা। বিকালের দিকে হঠাৎ করেই কারেন্ট টা গেল। ভালো লাগছে না কিছুই। বেশ গরম। এমন সময় পাশের বাড়ির কাকীর কাছ থেকে শুনতে পেলাম নদীর ঐ পার একটা গ্রামে চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আমাকে সেখান থেকে ঘুড়ে আসতে বলছে কাকী। ভাবলাম অনেক দিন আমাদের নদীর ঐ দিকে যাই না। আজ যখন সুযোগ পেয়েছি যাই একটু ঘুরে আসি। আর খুব একটা দূরে নয় গ্রাম টা। শহর থেকে কাছেই।
চড়ক পূজা আমি ছোট থেকেই দেখে আসছি। আমাদের বাড়ি থেকে একটু ফাঁকে ফাঁকা একটা জায়গা আছে যেখানে প্রতি বছর চড়ক ঘোরানো হয়। এখন অবশ্য নানান কাজে বাইরে থাকি তাই অনুষ্ঠানের সময় খুব একটা থাকা হয় না আর। যাই হোক, চড়ক পূজা তে আসলে শিব ঠাকুরের পূজা করা হয়। এক মাস ধরে সংযম করতে হয়। আর সংক্রান্তির দিন চড়ক অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে মূলত পিঠের ভেতর বর্শী বিধিয়ে মানুষকে গাছের সাথে লাগিয়ে ঘোরানো হয়। আবার জিভের ভেতর, গালের ভেতর দিয়ে চিকন শিক ফুটিয়ে দেওয়া হয়। সত্যি বলতে এসব কেন করা হয় এ ব্যাপারে আমি একদম জানি না। অদ্ভূত ব্যাপার হলো সবাই মজা আর আনন্দ নিয়ে এসব করে। শরীরের আঘাত কেউ অনুভব করে না।
তো আমি নদী পার হয়ে বেশ ঘুরে ঘুরে আসল জায়গায় পৌঁছলাম। অনেক মানুষ যাচ্ছিল, তাদের পেছন পেছন চলে গিয়েছি। দেখলাম তখনো পুরো দমে কার্যক্রম শুরু হয় নি। প্রথমে যে গাছে করে মানুষকে ঘোরানো হবে তাতে দুধ ঢেলে, তেল দিয়ে পূজা করলো। তারপর যেখানে গাছটা খাড়া করে রাখা হবে সেখানে অর্থাৎ মাটির নিচে পূজা করলো এবং সবাই মিলে ঢাক ঢোল বাজিয়ে গাছটা খাড়া করে মাটি দিয়ে শক্ত করে পুঁতে দিল।
একটু পরেই দেখলাম, দুইজনের মুখের মধ্যে চিকন শিক টা ফুটিয়ে দিল। ওরা চার পাশ দিয়ে ঘুরছিল। তারপর আসলো সেই মানুষ টা যার পিঠে বড়শি ফোটানো হবে। ইতিমধ্যে চারপাশে অনেক লোক সমাগম হয়ে গেছে। ছেলেটার বয়স খুব একটা বেশি ছিল না। চারপাশের সকল মানুষকে প্রণাম করলো এবং তাদের সাথে কথা বলে আশীর্বাদ নিল। তারপর সবার সামনে যেখানে গাছটা পোতা আছে সেখানে শুয়ে পরলো এবং তার পিঠে দুজন ঠাকুর বর্শি বিধিয়ে দিল। এরপরে তাকে দড়ির সাথে ঝুলিয়ে অপর পাশ থেকে আরো কয়েকজন মিলে ধরে ঘোরানো হলো।
এই সম্পূর্ন ব্যাপার গুলো আমাকে রীতিমত অবাক করে দেয়। এই যে মানুষ গুলোর পিঠে বা জিভে শিক বা বড়শি ফোটানো হলো, কারোর শরীর থেকে এক ফোঁটা রক্ত বের হয় না। অনেকে বলতে পারে যে আগে থেকেই অবশ করে দেয় জায়গাটা ইনজেকশন দিয়ে। কিন্তু তাতেও তো রক্ত বের হবে। আর যে জোরে ঘোরানো হয় তাতে তো পিঠের চামড়া ছিঁড়ে পড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কিছুই হয় না।
আমি যতদূর শুনেছি মন্ত্রের দ্বারা সেই জায়গা গুলো অবশ করে দেয় এবং শরীরে বিধানোর আগে সেখানে মন্ত্র পড়া জলের ছিটিয়ে দেওয়া হয়। আর পুরোটাই ঈশ্বরের সাধনার ফল। এই বিজ্ঞানের যুগে অনেকে এইসব বিশ্বাস করে না। কিন্তু চোখের সামনে থেকে দেখার পর বিশ্বাস না করে উপায় নেই। তন্ত্র মন্ত্রের জোর আসলেই কিছু না কিছু আছে।







বর্তমান যুগে আমরা প্রায় সকলেই তন্ত্র মন্ত্রে বিশ্বাসী নই ।তবুও চড়কের সময় এই অদ্ভুত জিনিসগুলো দেখলে বিশ্বাস না করে উপায় থাকে না ,আমিও চড়কের সময় যখন দেখি প্রতিবছর এরকম পিঠে বর্ষি ফোটানো হয় ,মুখের মধ্যে সরু লোহার শিক ফোটানো হয় নিজেরই অনেক ভয় করে ।যে কিভাবে এরকম অবস্থায় মানুষকে ঘোরানো হচ্ছে ?কিন্তু তাদের আসলে কিছু হয় না। তাই একটু হলেও মানতে বাধ্য হতে হয় তন্ত্র মন্ত্রের ও জোর আছে।
আমিও বেশ ভয় পাই এসব দেখে। কাছে থেকে দেখলে তো মাঝে মধ্যে মাথা ঘুরে উঠে। তবে মন্ত্রের জোর ছাড়া এমন টা কখনোই সম্ভব নয়। সব ঈশ্বরের লীলা 🙏
একদমই তাই সবই মন্ত্রের জোড়।
চড়ক পূজা নিয়ে আমার মনের ভিতর ছোটবেলা থেকেই অনেক বেশি কৌতুহল ছিল। তবে বিশ্বাস করেন আমি আজ অব্দি কখনো সামনাসামনি এরকম মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেনি। আর আপনি যে বর্ণনা দিলেন তাতে তো দেখার ইচ্ছে আরও অনেক বেশি কমে গেল। যদিও এরকম ব্যাপার হয় আমি শুনেছি, তবে নিজের চোখ দিয়ে ঘটনাগুলো পড়তে বেশ ভয়ঙ্কর লাগছিল আমার কাছে।
ভাই আমিও ভয় পাই। কাছে থেকে তো দেখতেই পাই না তেমন। দূর থেকে দেখি। আর আমি কাজ গুলোর ধর্মীয় ব্যাখ্যা টা জানতে চাই খুব করে। দেখি কবে আমার এই ইচ্ছে পূরণ হয়।
Youtube এ খুঁজলে হয়তো পেয়ে যাবেন সব ব্যাখ্যা।
আমি সেদিন এসেই সার্চ করেছিলাম। দুই জায়গায় দুই রকম ব্যাখ্যা পাই। কিন্তু ধর্মীয় কোন দিক আসলে নেই সে ভাবে। আর অনেক টা নিজে থেকেই একটা জাতি এমন টা শুরু করে। আর সেই থেকে চলে আসছে।