টাইগার ও টুকির গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

নমষ্কার,,

আমরা মোটামুটি সবাই বিভিন্ন পোষা প্রাণীকে অনেক আদর করে থাকি। অনেকে আবার ভয় পেয়ে কাছে যায় না। আবার কেউ কেউ দুর করে তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই অবলা প্রাণীগুলো যে কতটা আদর প্রিয় সেটা নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বুঝতে পারতাম না এবার ঢাকায় এসে। সত্যি বলতে আমি কুকুর বিড়াল থেকে সবসময় একটু দূরে থাকার চেষ্টা করি। এটা আর অন্য কিছু নয়। শুধু মনের ভয়। তবে ইদানিং সেই ভয়টাও কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আর এক অন্য রকম ভালো লাগাও কাজ করছে। এর পেছনেও একটা কারণ আছে। সেটা নিয়েই আজ লিখছি।

IMG20240212212853.jpg

IMG20240215211836.jpg

Location

ঢাকায় আমি যেখানে থাকি ওখানে সৌমিত্র দা নামের এক ভদ্রলোক আছেন। ভীষন বিনয়ী আর ভালো মনের একজন মানুষ এক কথায়। আমি আসার আগে থেকেই বাড়িতে একটা বিড়াল দেখতাম আমি। আমি শুধু ভাবতাম ব্যাচেলর ফ্ল্যাটে বিড়াল করে টা কি! পরে জানলাম যে এই সৌমিত্র দাদা বিড়াল টা কে আদর করে ফ্ল্যাটেই রেখে দেয়। বাইরে যেতে দেয় না। আদর করে খাইয়ে দেয়। এক কথায় ছোট বাচ্চার মত আদর করে দেয় এবং যত্ন নেয়। আর বিড়ালটার নাম দিয়েছে টুকি। আমি এমন বিড়াল প্রেমী ছেলে কে দেখে রীতিমত অবাক। দাদার সাথে গল্পে গল্পে জানতে পারলাম যে শুধু এই বিড়ালই নয়, পাশের রাস্তায় আরো দুটো কুকুর আছে। ওরাও দাদার এমন ভক্ত।

IMG20240212212925.jpg

Location

সেদিন সন্ধ্যায় রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আমি আর সৌমিত্র দা। দাদা হঠাৎ করেই বলে উঠলো টাইগার যেকোনো মুহূর্তে এসে আমাকে অ্যাটাক করবে। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না দাদার কথা। একটু পর দেখি পেছন পেছন দুটো কুকুর আসছে। আবার সেগুলো দাদার পেছনে এসে বার বার টি শার্ট ধরে টানছে। আমি বেশ মজা নিয়ে দেখছিলাম ব্যাপার টা। তারপর দাদা বললো ওরা আদর খাওয়ার জন্য এমন করছে, যতক্ষণ না অবধি আদর পেয়ে সন্তুষ্ট হবে ততক্ষণ পর্যন্ত দাদাকে ছাড়বে না। আর হলোও ঠিক তাই। দাদা এক পাশে দাড়িয়ে প্রায় বিশ মিনিট ধরে ওদের আদর করলো। তারপর ওরা আমাদের পিছন ছাড়লো।

এই অবুঝ প্রাণী গুলোও ভালোবাসার এমন পাগল যে হতে পারে এটা আমি ভাবতেও পারিনি কখনো। মনে মনে একটা কথাই শুধু ভাবছিলাম যে, এই অবলা প্রাণী গুলো ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে কখনো বেইমানি করবে না। আর কোন ভালোবাসাটা আসল সেটা বুঝতে একদম ভুল করে না। যত দিন এখানে আছি টাইগার আর টুকির সাথে দেখা হবে রোজ। টুকি তো বলা যায় আমাদের ফ্ল্যাট মেম্বার। মাঝে মধ্যেই ওদের গল্প শোনাবো আপনাদের। আশা করি ভালোই লাগবে।

Sort:  
 4 months ago 

আসলে অবুঝ এই প্রাণীগুলো একটু ভালোবাসা পেলে তাদের আর কিছুই লাগে না। তারা যত কিছুই করুক না কেন, যারা তাদেরকে ভালোবাসে তাদের সাথে কখনোই বেইমানি করে না। আপনার ওই দাদা কুকুর বিড়াল দুটোকেই এত বেশি ভালোবাসে দেখে ভালো লাগলো। টাইগার ও টুকির গল্প পড়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে অনেক বেশি। আশা করছি পরবর্তীতেও টাইগার ও টুকির গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। এত সুন্দর করে এই গল্প লিখেছেন দেখে পড়তে ভালো লেগেছে।

 4 months ago 

ওদের কান্ড কারখানা বেশ মজার আপু। আমরা সবাই বেশ ইনজয় করি। আশা করি পরবর্তিতে আবার ওদের নিয়ে লিখব। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

কিছু কিছু মানুষ আছে যারা আমাদের পরিবেশের অবহেলিত প্রাণীগুলোকে অসম্ভব ভালোবাসে যেমন আপনি যে সৌমিত্র দাদার কথা বলছেন তিনি কুকুর আর বিড়াল খুব ভালোবাসেন। এমন মানুষ যদি প্রতিটা ঘরে ঘরে থাকে তাহলে কিন্তু আমাদের পরিবেশের সৌন্দর্যটা পরিবর্তন করা সম্ভব।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

হ্যাঁ এটা মন্দ বলেন নি ভাই। তবে অনেকেই এড়িয়ে চলেন এই ব্যাপারটা। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 4 months ago 

যারা এরকম পশু পাখির আদর করে তাদের পশু পাখির প্রতি যে কিরকম ভালোবাসা থাকে তার সামনাসামনি না দেখলে বোঝা যায় না। আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগে না এগুলো। আমাদের বাসায় গেলেও বেশ কতগুলো বিড়াল দেখা যায়। আমার ভাই এগুলোকে খুব আদর যত্ন করে বাসায় রাখে। তাছাড়া বিড়াল বা এরকম প্রাণী খুব ভালোভাবে বুঝতে পারেন মানুষের ভালোবাসা। যাইহোক ভালো লাগলো টুকির গল্প শুনে।

 4 months ago 

আমিও অনেকটা এড়িয়ে যাই। আসলে কেমন যেন ভয় ভয় লাগে আমার। তবে সৌমিত্রর আদর করা দেখলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাই পুরা। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66161.28
ETH 3556.76
USDT 1.00
SBD 3.14