ছোট বোন যখন মেন্টর

নমস্কার,,

আজকের টাইটেল টা বেশ মজার তাই নাহ! ছোট বোন যখন মেন্টর। তবে কেন এটা লিখেছি সেটা না হয় একটু পরেই বলছি। একটা কথা খুব মনে পরছে আজ। ঠিক যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন একবার এইম ইন লাইফ নিয়ে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলাম একদম সবার সামনে দাড়িয়ে। আগে থেকেই দুষ্ট ছিলাম বেশ , এটা আর নতুন করে বলার দরকার নেই এখানে। তো সে দিন একদম ব্ল্যাক বোর্ডের সামনে দাড়িয়ে বলেছিলাম, বড় হয়ে ভ্যাগাবন্ড হতে চাই আমি। তার পেছনে বেশ কিছু মজার লজিকও ইংরেজিতে খুব সুন্দর ভাবে লিখে মুখস্ত করেছিলাম। আমার স্যার রীতিমত অবাক হয়ে গিয়েছিল আমার জীবনের উদ্দেশ্য শুনে। যদিও পুরোটাই ছিল মজার ছলে করা। তো আজকে জীবনের এই পর্যায়ে এসে নিজেকে সত্যিই ভ্যাগাবন্ড মনে হয়। সব কিছুতেই লুজার হওয়া একটা মানুষের অবয়ব ভেসে ওঠে সব সময়।

IMG20230619190845.jpg
Location

যাই হোক, ওপরের ছবিতে তিনটে মেয়ে আর একটা ছেলেকে পাশাপাশি হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। ওদের দুই জন আমার মামাতো বোন, একজন মাসতুতো বোন আর একজন হল বোন জামাই। আমরা কয়েকজন একসাথে হয়েছিলাম তার অন্যতম কারণ হলো আমার এক মামাতো বোন আর ঐ বোন জামাই আমেরিকা থেকে এসেছে কিছুদিন হলো। এত অল্প সময়ে সবার বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা সবাই মিলে ঐ মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একসাথে কিছুটা সময় কাটাতে। যে মামাতো বোন দেশের বাইরে থাকে ওর নাম সুস্মিতা। ওকে মুমু নামেই আমরা সবাই ডাকি।

IMG20230619190840.jpg
Location

অনেকেই জানেন যে আমি রিসেন্টলি উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যাওয়ার একটু একটু চেষ্টা করছি। একটা অফার লেটার পেয়েছি ইউরোপ থেকে। কিন্তু এখনো কোন ডিসিশন নেই নি। তো আমার বোন মুমু যখন ব্যাপারটা নিয়ে জানতে পারে তখন একদিন আমেরিকা থেকেই মাঝরাতে আমাকে ফোন দিয়েছিল। প্রায় দুই ঘন্টা আমার সাথে একটানা কথা বলেছিল। পুরো আলোচনার একটাই টপিক ছিল, ফোকাসটা যেন ইউএস এর দিকে করি আমি। আর এর জন্য যে সকল গাইড লাইন প্রয়োজন হবে সব আমার ছোট বোন দেবে। তবু আমি যেন ঠিক পথে এগোই। তো তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ওর দেখানো পথ ধরেই একটু একটু চেষ্টা করে যাচ্ছি।

IMG20230619191640.jpg
Location

বোন জামাই জয় বয়সে আমার বড় হলেও সম্পর্কে আমি ওর দাদা। হাহাহাহাহা, মজার নাহ্ ব্যাপারটা! তবে আমাদের মাঝে অমন কোন বাছ বিচার নেই। দুজন দুজনকে নাম ধরে তুমি করে ডাকি। আর সত্যি বলতে এই ছেলেটা এত বড় একটা পজিশনে আছে, তারপরও এতোটা বিনয়ী এবং মিশুকে সেটা বলে বোঝানোর নয়। কিছুদিন আগে এই জামাইও আমাকে অনেক দিক থেকে গাইড লাইন দিয়ে হেল্প করেছে। তো মুমু যখন আমাকে বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে বোঝায়, তখন আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। প্রকৃতির কি নিয়ম! একটা সময় আমি এই মুমুকে কত কিছু নিয়ে বোঝাতাম, আর এখন সেই মুমুই আমাকে বোঝাচ্ছে, পথ দেখাচ্ছে। কত বড় হয়ে গেছে বোন আমার! ব্যাপারটা ভাবতেও ভালো লাগে খুব। আর এজন্যই টাইটেল টা অমন লিখেছি।

আমি কত দূর কি পারব, না পারব, সেটা পরের কথা। তবে একটা ব্যাপারে আমার কখনোই আফসোস থাকবে না, সেটা হলো আমাকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক কাছের মানুষ হাত বাড়িয়েছে, সবাই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু রাস্তা তে যদি আমি হাঁটতে না পারি তবে সেটা আমার ব্যর্থতা। দিনশেষে কথা ঐ একটাই, ভগবান যা করেন ভালোর জন্যেই করেন।

Sort:  

আসলে মানুষ যখন বাস্তবতার সম্মুখীন হয় তখন ছোট মানুষও বড়দের থেকে বেশি সঠিক কথা বলতে শিখে যায়। আমি মনে করি বয়সের সাথে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি পায় না, জ্ঞান বৃদ্ধি পায় বাস্তবতার সম্মুখীন হলে। আর আপনার ছোট বোন আপনার ভালোর জন্যই সবকিছু চিন্তা করছেন। আর উনি ছোট হলেও হয়তো আপনার থেকে ওনার অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে অনেক বেশি সজীব ভাই।

 last year 

হ্যাঁ অনেকটা দূর এগিয়ে গেছে আমার বোন, তাই যতটা পারছি ওর থেকে হেল্প নিচ্ছি ভাই। এখন বাকিটা ঈশ্বরের হাতে। আশীর্বাদ করবেন সবসময় 🙏

 last year 

শুনে খুব খুশি হলাম আপনার ছোট বোন আপনাকে খুব সুন্দর ভাবে গাইড করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। আসলেই যারা প্রকৃত ভালো মানুষ হন, তারা নিরহংকারী আর বিনয়ী হয়ে থাকেন ।ঠিক যেমন আপনার ছোট বোনের বর। আশা করছি, আপনার ইউরোপে গিয়ে উচ্চশিক্ষা খুব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

তবে আপনার বড় হয়ে, ভ্যাগাবন্ড হতে চাওয়ার ব্যাপারটা খুবই মজার ছিল, হি হি হি।

 last year 

না না ইউরোপে আমি সহজে যাচ্ছি না। ওটা অফার লেটার পেয়েছি, তারপর এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেই নি। আরেকটু ভালো কিছুর জন্য চেষ্টা করছি। আশির্বাদ করবেন। আর আমার জীবনে চাওয়া পাওয়া গুলো এমন হেলা ফেলায় শেষ করেছি বলেই বাস্তবতা আমাকে সত্যি সত্যি ভ্যাগাবন্ড করে রেখেছে এখন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56949.15
ETH 2401.26
USDT 1.00
SBD 2.33