আমার সেরা রেসিপি - "ফুলকপির রোস্ট"
কপিরাইট ফ্রী ইমেজ সোর্স : PixaBay
আমি একজন সেরা রাঁধুনি । নানান রকম রান্না পারি । তার মধ্যে বেশ কিছু আইটেম আমার বেশ বিখ্যাত । এগুলো ইউনিক রেসিপি । দু'একটার কথা বলি - সুস্বাদু বেগুন পোড়া ভর্তা, টক-ঝাল আলু ভাতে, স্পেশ্যাল এগ ওমলেট, চিকেন স্যুপ, লুম, বাটার নুডুলস, সবজি খিচুড়ি (বাঙ্গাল স্টাইল), ভাত ভাজা (নট ফ্রাইড রাইস), বেগুন-আলু-মুলো দিয়ে ওমলেটের ঝোল, তন্দুরি ফুলকপি আর ফুলকপির রোস্ট ।
এর মধ্যে আমার সর্ব সেরা রেসিপি হলো ফুলকপির রোস্ট । এটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে । ছবিতে যেটা দেখছেন ওটা কিন্তু ফুলকপি রোস্ট নয়, ওটা হলো তন্দুরি ফুলকপির ছবি । পিক্সাবে তে ফুলকপির রোস্ট এর ছবি খুঁজে পেলাম না তো কি আর করবো ওটাই মেরে দিলাম । ফুলকপি রোস্টে গা মাখো মাখো ঝোল থাকে, অর্থাৎ হালকা গ্রেভী । ঝাল হালকা একটু বেশি থাকে, খুব হালকা একটু টক-মিষ্টিও থাকে । একটুখানি ফুলকপি ভেঙে মুখে দিলেই মাখনের মতো মিলিয়ে যায় । আর স্বাদ তো জাস্ট অসাধারণ ।
তবে, সব দিন তো আর রান্না এক রকম হয় না । তাই একদিন আমার সর্বকালের সেরা রেসিপি রাঁধতে গিয়ে একটুখানি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলো । তো সেই মজার ঘটনাটাই আজ শেয়ার করবো ভাবছি আপনাদের সাথে ।
বেশ কয়েক বছর আগের কথা । টিনটিনের বয়স তখন কত ? এই ধরুন বছর খানেক । নভেম্বর মাসের গোড়ার কথা । বাতাসে হালকা শীতের আমেজ । বাজারে টাটকা ফুলকপিতে ছেয়ে গিয়েছে । এই সময় একদিন বিকেলে নিজের হাতে বাজার করলাম । সবজি বাজার । শ্বশুর-শাশুড়ী এসেছেন । তাই ভাবলুম একটু বাজার করি । তো, বাজার থেকে প্রচুর ফুলকপিও কিনেছিলাম । এর দুই দিন পরের কথা । @winkles এসেছে আমাদের বাড়িতে । তো, ওকে কথায় কথায় বললুম যে আজকে ভাবছি তোমাদের সবাইকে আমার বিখ্যাত ফুলকপির রোস্ট করে খাওয়াবো । আমার শ্বশুরমশাইকেও দেখলাম নতুন একটা খাবার খাওয়ার বেশ ইচ্ছে হয়েছে ।
তাই, আমিও আর দেরি না করে মহা উৎসাহে শুরু করে দিলাম আমার বিখ্যাত "ফুলকপির রোস্ট" রেসিপি । এই রেসিপি রান্না করতে হরেক রকম মশলা লাগে । যেমন - টকদই, গরম মশলা, জিরের গুঁড়ো, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ, গরম মশলা, পেঁয়াজ কুচি, আদা-রসুনের পেস্ট, টমেটো পেস্ট, আমচুর, সবজি রোস্ট মিক্সড মশলা, তেজপাতা, খাঁটি কাচ্চি ঘানি সরিষার তেল আর খাঁটি গব্য ঘী ।
তো সব কিছু রেডি করে ফুলকপি ডুমো ডুমো করে কেটে মশলা আর দই মাখিয়ে ম্যারিনেট করতে রেখে দিলুম ফ্রিজে । ৪০ মিনিট পরে শুরু হলো আমার রান্না । সব কিছুই প্ল্যান মাফিকই এগোচ্ছিলো । গোল বাধলো আমচুর দেওয়ার সময় । দ্রুত কাজ সারতে প্যাকেটের মুখ কাঁচি দিয়ে কেটে ডাইরেক্ট কড়াই এর উপরে হালকা ঝাঁকাতে লাগলুম । মুখটা খুব ছোট্ট করে কাটাতে একটুও বের হচ্ছিলো না আমচুর । তাই কাঁচি দিয়ে মুখটা আরেকটু চওড়া করে দিয়ে দিলাম এক রাম ঝাঁকি । সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটের পুরো ১০০ গ্রাম আমচুর ঢেলে পড়ে গেলো কড়াই এ ভেতর ।
হায় হায় ! এ কী করে ফেললাম । মাত্র এক চামচ আমচুর দেওয়ার কথা ! রোস্ট তো এতো বেশি টক হয়ে যাবে এখন যে খেতে গেলে দাঁতই টক হয়ে যাবে । দ্রুত তাই ব্যালান্স করার জন্য এক খাবলা লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে দিলাম ঝোলে । এরপরে টেস্ট করতে গিয়ে দেখি টক বেশ কমে গিয়েছে কিন্তু, উহ উহঃ কী ঝাল রে বাপস ! জিভে যেনো কেউ আগুন জ্বেলে দিয়েছে ।
কী করি, কী করি ভাবতে ভাবতে মনে পড়লো চিনির কথা । কিন্তু, হায় রে ! কে জানতো তনুজা দুই কৌটোতেই নুন রাখে । আমি ভেবেছি যেহেতু নিচের কৌটোতে নুন তাই উপরের কৌটোতে মাস্ট চিনিই আছে । কিন্তু, চিনি ছিল নিচের ড্রয়ারে তালা মারা । কী কপাল আমার ! দিলাম ঢেলে এক খাবলা নুন, চিনি মনে করে । তাও ভাগ্যি ভালো খুব বেশি দেইনি । একটু টেস্ট করতে গিয়ে আমার গেলো মাথা বোঁ করে ঘুরে । দ্রুত মাথা ঠান্ডা করে কাউকে না জানিয়ে তনুজাকে চিনির কথা জিজ্ঞেস করলুম । চিনি পেয়ে দিলাম ঢেলে । অতিরিক্ত উৎসাহে পরিমাণে বেশি ঢালা হয়ে গেলো । তখন আমি মনে করেছি যে বেশি চিনি দিয়ে বেশি টক, বেশি ঝাল দিয়ে যে ভুল করেছি তা সব ফিক্স করে ফেলবো এক গাদা চিনি দিয়ে ।
এরপরে যে বস্তুটি রান্না হয়েছিলো সেটা আর টেস্ট করে দেখার সাহস পাইনি । পরিশেষে শুধু একটা কথাই বলতে চাই সেই রোস্ট খেয়ে @winkles এখনো ফুলকপির রোস্টের নাম শুনলে আঁতকে ওঠে । আমার শ্বশুরমশাই জামাইয়ের মন খারাপ যাতে না হয় সেজন্য পাতের সবটুকু খেয়ে পেটের যন্ত্রনায় দুই দিন পুরো শয্যাশায়ী ছিলেন । আর কতবার কে বাথরুমে গিয়ে তাঁকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে কাটাতে হয়েছে তার সীমা নেই ।
আমি চালাক মানুষ, তাই নিজের রান্না ফুলকপির রোস্ট খাইনি সেবার 😜
↩ধন্যবাদ↪
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)
তারিখ : ০৫ মার্চ ২০২৪
টাস্ক ৫১৮ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : 59514cdceaae3ba7969dee09f5b2025765fab83e18ae1e37d7dedf2f244e11fc
টাস্ক ৫১৮ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Muy bonita historia,ya iba a copiar la receta pero leyendo me di cuenta que era una bomba explosiva😂muy buena su narrativa ,la lectura me dejó llevar hasta el final y entender,saludos y feliz tarde
Congratulations, your post has been upvoted by @upex with a 50.00% upvote. We invite you to continue producing quality content and join our Discord community here. Keep up the good work! #upex
হা হা হা হা -----হা হাসি থামাতে পারছি না দাদা। ফুলকপির রোস্ট রান্না করতে গিয়ে আজব সব কাহিনী ঘটিয়েছেন আপনি ।ওই রান্না আবার সবার সামনে পরিবেশন করেছেন তাই ভাবতেই হাসি থামাতে পারছি না ।আর কি চালাক লোক নিজে খান নি, অন্যদের দিয়ে খাইয়েছেন। রান্না করতে গিয়ে তো রীতিমতো এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছেন। সত্যি দারুন ছিল আপনার ফুলকপির রোস্ট রান্নার গল্প। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আপনি সত্যি সত্যি মনে হয় অনেক ভালো ফুল কপির রোস্ট রান্না করতে পারেন। আমারও খাবার ইচ্ছে জেগেছিল ।কিন্তু আপনার রান্নার বিবরণ শুনে খাবার ইচ্ছা মরে গেছে। সত্যি ভীষণ মজার ছিল আপনার লেখনি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
আমি বরাবরের মতোই আপনার পছন্দের তারিখ করছি দাদা, কারন অনেক ক্ষেত্রেই আপনার পছন্দের সাথে আমার পছন্দ মিলে যায়। আর রান্নায় ভুল করে কিছু আমি স্বীকার করি না, হতে পারে একটু নুন, একটু চিনি অথবা একটু মরিচ বেশী হয়ে যায় তাতে কি, আপন মনে খেয়ে নিলেই হয়ে যায়। আমি উইংলেস ভাই অবশ্যই বাহবা দিবো, কারন উনি আপনার রেসিপির চমৎকার ফ্যান এবং ভালো না হওয়া সত্বেও ভাই আপনার সম্মান রক্ষা করছে। বাথরুমে না হয় সেদিন একটু বেশীই গিয়েছিলেন, এটা কোন ব্যাপারই না, হি হি হি।
ভাই লেখাটা আমি আর হিরা একসঙ্গে পড়ছিলাম, আর খিলখিল করে হাসতে ছিলাম। এমন রেসিপি করে একবার দাওয়াত দেওয়া হোক সবাইকে।
অনেকবার শুনেছি ফুলকপির রোস্ট খেতে নাকি খুবই সুস্বাদু হয়। ভাবলাম আপনার রেসিপি টা শিখে নিব কিন্তু এটা তো পুরো উল্টা হয়ে গেল দাদা। রেসিপি পোস্ট পড়ে হাসতে হাসতে পেটে ব্যথা হয়ে গেল। শশুর শাশুড়িকে খাওয়াবেন ভেবেছিলেন তাই উত্তেজনায় হয়তো এই ভুলভাল কাজগুলো হয়ে গেছে। বেশ মন খুলে হাসলাম দাদা আপনার ফুলকপি রোস্ট রেসিপিটি পড়ে। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
বাহ্ দাদা আপনার শ্বশুর মশায়েরও নতুন খাবার খাওয়ার প্রতি বেশ উৎসাহ রয়েছে। ফুলকপির ও যে, রোস্ট হয় সেটা জীবনের প্রথম বার শুনলাম। আপনার এই পোস্টটি যত সময় ধরে পড়েছি তত সময় ধরেই হেসেছি 😁 এরকম ভয়ংকর টেস্টর ফুলকপির রোস্ট তৈরি করেছেন আর নিজে চালাকি করে খাননি এটা মোটামুটি বুদ্ধিমানের মত কাজ। যাইহোক আপনার শ্বশুর মশাই আপনাদের বাড়িতে আসলে আবার এমন ধরনের ইউনিক রোস্ট খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন দাদা। 😎
হাহাহা!! 🤣🤣🤣🤣আপনি যেমন পাঁকা রাধুনী,, সব ঝামেলার ই একটা না একটা সমাধান (!) তৎক্ষনাৎ করে সামলে নিয়েছেন! 🤣🤣 কিন্তু আপনার শ্বশুড় মশাই তো জামাই বাবাজীর এমন কান্ড-কীর্তির কথা জানতেন না, ওই বেচারা খুব বিপদেই পরে গিয়েছিলেন সেদিন খেতে বসে! জামাই এর মন রাখতে গিয়ে পরবর্তীতেও কী ভোগান্তি টাই না ভুগতে হলো তাকে! পুরোটা পড়ে হাসিও পাচ্ছে আবার আপনার শ্বশুরের জন্য ভীষণ মায়া ও হচ্ছে।