বহুদিন বাদে আমার ঠাকুর্দাকে খুঁজে পেয়েছি
আমার ঠাকুর্দার চেহারা আমার খুবই আবছায়া মনে আছে । আমি যখন মাত্র ক্লাস টু-তে পড়ি তখন আমার ঠাকুর্দার মৃত্যু হয় । তবে, বড় হয়ে বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনদের মুখে অনেক শুনেছি আমার ঠাকুর্দার গল্প । আমার ঠাকুর্দার চেহারা থেকে শুরু করে তার অনেক স্বভাব আমি বহুদিন পরে আরেকজনের মধ্যে খুঁজে পেয়েছি । সেই কথাই আজ বলতে চলেছি ।
আমার ঠাকুর্দারা ছিলেন দুই ভাই । ঠাকুর্দা ছিলেন বড় । চেহারা ছিল রোগা, ছোটোখাটো গোছের । গায়ের রং টুকটুকে ফর্সা । আর ভীষণ রাগী । জেদও শুনেছি অসম্ভব রকমের ছিল । এই রাগ আর জেদের কথায় পরে আসছি । ব্রিটিশ আমলে জমিদার শৈলেনবাবুর সময়ে আমাদের সরকার ফ্যামিলির ছিল বোলবোলাও অবস্থা । একটা গোটা গ্রামের প্রায় পুরোটাই ছিল তাদের দখলে । প্রচুর জমিজমারও মালিক ছিল এই সরকার ফ্যামিলি । কালক্রমে বংশ ভাগ হতে শুরু করে এবং সরকার ফ্যামিলির অধিকাংশ জমিজমা বংশের অন্য একটি শাখার দখলে চলে যায়, যার পরিমান ছিল হাজার বিঘে ।
বংশের একটা শাখা আমাদের পুরোনো গ্রামেই থেকে যায় । সেই শাখার একটা অংশ হলো আমার ঠাকুর্দার বাবার । উনি ওই গ্রাম ছেড়ে নতুন এক গ্রামে বসতি স্থাপন করেন । বর্তমানে আমাদের ফ্যামিলির অধিকাংশ সদস্যই এই গ্রামে বসবাস করেন । এই গ্রামে এসে মাত্র আশি বিঘা জমি কিনে বসতি স্থাপন করেন আমার প্রপিতামহ, অর্থাৎ, আমার ঠাকুর্দার বাবা । কালক্রমে তাঁর মৃত্যুর পরে একটা খুবই খারাপ ঘটনার পরে সম্পত্তি দু'ভাগে ভাগ হয়ে যায় আমার ঠাকুর্দা আর তাঁর ছোট ভাইয়ের মধ্যে ।
আমাদের সরকার ফ্যামিলির অতীত ইতিহাস খুব একটা সুবিধের ছিল না বলেই শুনেছি । ইংরেজ আমলে জমিদারের নায়েব হওয়ার সুবাদে প্রজাদের উপর অত্যাচার আর প্রচুর লুঠপাট করেই তাদের সম্পত্তি ফুলেফেঁপে ওঠে । তবে বংশের একটি ধারা ছিল একটু আলাদা । টাকা-পয়সার প্রতি মোহ কম ছিল, সততা ছিল তাদের মজ্জাগত । এরই এই শাখার বংশধর হলুম বর্তমানে আমরা । আমার ঠাকুর্দার বাবা শুনেছি খুবই ভালোমানুষ ছিলেন, তবে আমার ঠাকুর্দার মা খুবই জাঁদরেল গোছের মহিলা ছিলেন । টাকা পয়সার প্রতিও ছিল তাঁর অগাধ টান । তাঁর দুই পুত্রের মধ্যে বড়োটি অর্থাৎ আমার ঠাকুর্দা দেবনাথ ছিল তাঁর বাবার মতোই ভালো মানুষ, কিন্তু ছোটপুত্র অর্থাৎ আমার ঠাকুর্দার অনুজ যতীন ছিল একদম তাঁর মায়ের স্বভাবের । কুট বুদ্ধি সম্পন্ন আর টাকা পয়সার প্রতি অগাধ মোহ ।
আমাদের বাড়িতে শুনেছি আমার ঠাকুর্দার বাবার আমলে প্রচুর ডাকাতি হতো । তো এমনই এক ভয়াবহ ডাকাতির পরে আমার ঠাকুর্দার মা ডাকাতদের পিছু নিয়ে তাদের ডেরায় পৌঁছে ডাকাত দলের সর্দারকে ধর্মের ভাই বানিয়ে লুটপাট হওয়া সমস্ত গয়নাগাটি তো উদ্ধার করেনই উপরন্তু ডাকাত দলের সর্দারের কাছ থেকে বোন হওয়ার সুবাদে প্রচুর ধনরত্ন উপঢৌকন হিসেবে পান । এই মহিলা তাঁর মৃত্যুর পূর্বে ছোট ছেলেকে তাঁর ধনরত্ন বোঝাই সিন্দুকের চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন । আমার ঠাকুর্দার মায়ের মৃত্যু ছিল অস্বাভাবিক এবং আকস্মিক । তাই বড় ছেলে অর্থাৎ, আমার ঠাকুর্দাকে ধনরত্নের সিন্দুকের চাবির সন্ধ্যা দিয়ে যাওয়ার টাইম আর পাননি । গতবছর আমার একটা পোস্টে আমার ঠাকুর্দার মায়ের মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল সেটা বলেছিলাম আপনাদের । নদীর ঘাটে সন্ধ্যায় গা ধুতে নামার সময়ে প্রকান্ড একটা কুমির তাকে টেনে নিয়ে যায় । আর কোনোদিন তার খোঁজ মেলেনি ।
ঠাকুর্দার মায়ের আকস্মিক মৃত্যুর পরে আমার ঠাকুর্দার ছোট ভাই নিজের স্বরূপ ধারণ করে । এক রকম জোর করেই নিজের অগ্রজকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে । আমার ঠাকুর্দা সেদিন একবস্ত্রে গৃহত্যাগ করে নিজের জমিতে এসে বাড়ি তৈরী করে বসবাস শুরু করে । অট্টালিকা ছেড়ে মাটির ঘরে আশ্রয় নেন । নিজের ছোট ভাই তাঁকে ঠকিয়ে জমিজমার অধিকাংশ আর ধনরত্ন সব গাপ করে দেয় । রক্ত কথা বলে আসলে । পূর্বপুরুষদের পাপরক্ত তো শিরায় বহমান । অথচ ওই একই রক্ত আমার ঠাকুর্দার শরীরেও বহমান ছিল, কিন্তু তাঁর স্বভাব ছিল তাঁর মামাদের মতো সজ্জন । কোনো বিচার সালিশের মধ্যে যাননি তিনি । এক কথায় সমস্ত সম্পত্তি ছোট ভাইকে ঘৃণাভরে দিয়ে নিজের অল্প জমিজমায় চাষাবাদ করে সংসার প্রতিপালন করেন । ধন নয়, বিদ্যার প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল । আর তাই নিজের পাঁচ পুত্রকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে তোলেন ।
চল্লিশ বিঘা জমি বেচতে বেচতে শেষমেশ মাত্র বাইশ বিঘাতে এসে দাঁড়ায় । তাও পাঁচ ছেলে আর চার মেয়েকে পড়ালেখা করিয়ে চাকরি পাইয়ে আর বিয়ে দিতে পেরেছিলেন । আর আমার ঠাকুর্দার ছোট ভাই শুধু জমি কিনে চলেছে সেই সময়ে । প্রায় চল্লিশ বিঘা থেকে সাড়ে তিনশো বিঘা সম্পত্তি বাড়িয়েছে, কিন্তু ছেলে-মেয়ের কোনোটাকেই মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেনি ।
আমার ঠাকুর্দা ছিলেন অসম্ভব রাগী আর জেদি । এমন রগচটা লোক ওই গ্রামে দু'টো ছিল না । নিজের ছোট ভাই তাঁর সঙ্গে বেইমানি করে তাঁকে ঠকিয়েছিলো বলে জীবদ্দশায় আর কোনোদিন ছোট ভাইয়ের মুখদর্শন করেননি । পাশাপাশি বাড়ি ছিল, কিন্তু কোনোদিন আর ছোট ভাইয়ের বাড়ি যাননি বা তার মুখ দেখেননি । পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই রাগ পুষে রেখেছিলেন । আমার ঠাকুর্দা খুব অল্পতেই রেগে যেতেন । ভীষণ রগচটা লোক ছিলেন । যখন ভীষণ রেগে যেতেন তখন আক্ষরিক অর্থেই তাঁর ফর্সা গালদ্বয় রক্তিমবর্ন ধারণ করতো । বিপরীতে আমার ঠাকুরমা ছিলেন অত্যন্ত ঠান্ডা মেজাজের, ধীর স্থির আর নরম স্বভাবের মেয়ে । তাই সংসারে কোনোদিন অশান্তি হয়নি ।
আমার ঠাকুর্দা যদি কোনো কিছুতে না বলতেন তো দুনিয়ার কারো সাধ্য ছিল না সেটাকে হ্যাঁ-তে পরিণত করা । নিজের ছেলে-পেলে আর নাতি-নাতনিদের বুড়ো অসম্ভব শাসনে রাখতো । কিন্তু, আমার সব কাজিনদের মধ্যে বয়সে সব চাইতে ছোট আমরা দু'ভাইকে বুড়ো অত্যন্ত স্নেহ করতো । কোনোদিন রাগ করতে দেখিনি আমাদের দুই ভাইয়ের উপর । আবদারগুলোও পূর্ণ করতো ।
আমার ঠাকুর্দার মৃত্যুর কারণও ছিল এই রাগ । মাঠ থেকে ঠিক দুপুরবেলা বাড়ি ফিরে এসে দেখেন বাড়ির কাজের লোক চারা গাছে জল দেয়নি তখনো অব্দি, আর গাছগুলো শুকিয়ে গিয়েছে । এই দেখে রাগে কাঁপতে কাঁপতে নিজের গাছের জল দেওয়া শুরু করেন, সেই সাথে চিৎকার-চেঁচামেচি । এরই মাঝে হঠাৎ স্ট্রোক । দীর্ঘদিন স্ট্রোকে শয্যাশায়ী থাকার পরে একদিন এলো সেই সর্বনাশা দিন । অসাবধানতা বশতঃ আগুন লেগে ছারখার হয়ে যায় আমাদের বাড়ি । আমাদের বাড়ির এগারোটা ঘর, মায় চণ্ডীমণ্ডপ অবধি পুড়ে ছাই হয়ে যায় । ঠাকুর্দাকে কোথায় রাখবে তখন ? তাই বাধ্য হয়ে ঠাকুর্দার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে নিয়ে রাখা হয় তাঁকে । তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে ওই বাড়ি প্রবেশ করানোর জন্য প্রচন্ড ক্রোধে ঠাকুর্দার দ্বিতীয়বার স্ট্রোক করে । আর তারপরে সব শেষ ।
বহুদিন বাদে আমার ছোটবেলার ঠাকুর্দাকে আমি ফিরে পেয়েছি । তার চেহারা, স্বভাব, রাগ আর জেদ আমার ঠাকুর্দার মতোই হয়েছে । সে আর কেউ নয় সে হলো আমাদের ---
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)
তারিখ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
টাস্ক ৫০৪ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : ac362898ba08a63e97e1c8e4f67eb158fedf8f1d4e1491924e9f8c9cbb097e77
টাস্ক ৫০৪ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
টিনটিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি ভাই। লেখাটা যখন পড়ছিলাম, অনেকটা যেন গভীরে ঢুকে গিয়েছিলাম লেখার। সৎ , নিষ্ঠাবান হোক টিনটিন ঠিক আপনার ঠাকুরদার মত, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
This post was upvoted by @upex upvoting Services with 59.94%. To learn more Join our Discord community here.
I am really sorry about the death of your grandfather.
It's quite painful you didn't get a real glimpse of his appearance.
From the story you have shared, your grandfather was real a nice person, just like you.
He also keeps the interest of others ahead of his own.
Thank you for sharing this with us Dada ❤️❤️❤️
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
আমরা যতই অর্থ সম্পদের মালিক হই না কেনো,দিনশেষে যদি ছেলে মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করতে না পারি, তাহলে সবকিছুই বিফলে যায়। দিনশেষে কিন্তু আপনার ঠাকুরদা সফল। কারণ উনি উনার এতগুলো ছেলে মেয়েদেরকে পড়াশোনা করিয়ে, মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন। অপরদিকে আপনার ঠাকুরদার ছোট ভাইয়ের অঢেল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্যর্থ, কারণ উনার ছেলে মেয়েদেরকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেননি। আসলে কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো জিততে পারে না। সৃষ্টিকর্তা ঠিকই বিচার করেন, সেটা দুদিন আগে নয়তো পরে। যাইহোক আমাদের টিনটিন বাবুর মাঝে আপনার ঠাকুরদাকে খুঁজে পেয়েছেন, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। টিনটিন বাবুও অনেক জেদি। দোয়া করি টিনটিন বাবু বড় হয়ে যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে এবং আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
পুরো পোস্টটি পড়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম দাদা। দিনশেষে আপনার ঠাকুরদা কিন্তু সফল, সম্পদ কম থাকলেও তার মধ্যে সততা ছিল, দিনশেষে সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে নিজের ছেলে মেয়ে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত। যা আপনার ঠাকুরদা দিয়ে যেতে পেরেছে বলে আমি মনে করি। এছাড়া অপরদিকে আপনার ঠাকুরদার ছোট ভাই অঢেল সম্পত্তি থাকার পরেও বেশি কিছু করে উঠতে পারেনি। পোষ্টের মধ্যে নাম উল্লেখ করতে না করলেও আমরা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পেরেছি, আপনি টিনটিন বাবুর কথা বলছেন। একটি বিষয় ভেবে অনেকটা অবাক হচ্ছি দাদা আপনার পূর্বজ সম্পর্কে আপনার অনেক ধারণা রয়েছে। আমি ও আমার দাদীর মুখে আমাদের বংশের অতীতের কথা শুনেছিলাম, সময় পেলে আমিও একদিন শেয়ার করব। আপনার এবং টিনটিন বাবুর জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এছারাও দোয়া করি টিনটিন বাবু যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
আপনাদের বংশের অনেক কিছুই জানলাম আপনার পোষ্ট টি পড়ে দাদা। আপনি এত সবিস্তারে লিখেছেন যেন চোখের সামনেই সবকিছু কেমন দেখতে পেলাম নাটকের মত। সেই ক্লাস টু তে পড়া অবস্থায় যাকে আপনি আপনার জীবন থেকে হারিয়েছেন, আজ আপনার ছেলের মাধ্যমে চেহারা, স্বভাব, রাগ কিংবা জেদে আপনি আপনার ঠাকুরদারকেই খুঁজে পেলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। প্রার্থনা করি টিনটিন বাবু বড় হয়ে আপনার ঠাকুরদার মতোই ভালো মনের, বড় মাপের মানুষ হোক।
আমি তো ভাবছি ভিন্ন কথা। আগুন লেগে এগারটি ঘর আপনাদের পুড়ে ছাই হয়ে গেল।সেই স্মৃতি চোখের সামনে ভাসলেই কেমন যেন শরীরটা শিউরে উঠছে।অতিরিক্ত রাগ আর জীবের কারণে আপনার ঠাকুরদার দুই দুইবার স্টক করে,এটা ভাবতেও কেমন যেন লাগছে।
বহুদিন পর আপনার এই স্মৃতিচারণ ঠিক ঠাকুরদার মত দেখতে আমাদের সকলের প্রিয় টিনটিন বাবু।টিনটিন বাবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
যদি ভুল না হয় তবে সে হলো বোধহয় টিনটিন।কারণ তার রাগ আর জেদ বেশ ভালোই আছে।তবে আপনার ঠাকুর্দার মা এর ব্যাপারটা পড়ে কিছুটা হাসিই পেয়েছে। কারণ ডাকাতকেই হাত করে ফেললো।বিশাল সাহসী মহিলা!