বিকেল বেলার যাত্রা - সন্ধ্যেবেলায় শীতের পিঠা- রাত্রিবেলায় বাড়ি ফেরা ।
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই?? আপনারা যারা আমার গত কালকের পোস্ট পড়েছেন তারা জেনেছেন যে আমি গতকাল একটি পার্সেল আনতে শহরের দিকে যেতে গিয়েছিলাম। আমার সাথে যে একটি ছেলে যেতে চেয়েছিল, ও আমাকে রিসিভ করতে আসার সময় হঠাৎই অ্যাক্সিডেন্ট করে। যে কারণে গতকাল আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আজ সকালের দিকে ওকে ফোন দিয়েছিলাম। ও মোটামুটি ভালই হাঁটাহাঁটি করতে পারছে। যদিও শরীরে অনেক ব্যাথা, কারণ অনেক জায়গায় কেটে গিয়েছিল। আজ বিকেলের দিকে আমি বাড়িতেই ছিলাম। হঠাৎ আমার বাড়িতে ওরা চলে আসলো। আমি দেখে অবাক, যে ভালোভাবেই হেঁটে বেড়াচ্ছে। আমার কিছু কাজ ছিল ওগুলো শেষ করে চিন্তা করলাম কোথাও ঘুরতে যাব। এরপর প্ল্যান করলাম ওকে বাইকের মাঝখানে বসিয়ে শহরের দিকে যাব । তাহলে গতকালকে আনতে না পারা পার্সেলটি আজকে নিয়ে আসতে পারবো।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
দ্রুত আমার কাজগুলো সেরে আমরা সবাই বেরিয়ে পড়লাম। আমরা যেখানে যাচ্ছিলাম সেটা আমাদের বাড়ি থেকে ১১ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। আস্তে-ধীরে যেতে যেতে বিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম। প্রথমে গেলাম সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস সেন্টারে। আমরা যেখানে জানতাম ওই খানে গিয়ে দোকানটি পেলাম না প্রথমেই। ওখানে থাকা আরো একটি দোকানে জিজ্ঞেস করলাম, উনি বললেন স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এরপর উনার দেখানো পথে গিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের নতুন সেন্টারটি খুঁজে পেলাম। ওখানে গিয়ে অবশেষে আমার সেই কাঙ্ক্ষিত পার্সেলটি হাতে নিলাম।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
এটি আসলে আমার ওয়াইফের জন্য একটা গিফট ছিল। অবশেষে পার্সেলটি হাতে পেয়ে বেশ ভালই লাগছিল। এরপর পার্সেলটি নিয়ে আমরা শহরের একদম শেষের দিকে একটি জায়গা আছে যেখানে পিঠা বিক্রি করে ওইখানে চলে গেলাম। ওখানে গরম গরম ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। একটা মহিলা ছিল যিনি ওখানেই উনুন নিয়ে বসেছিলেন।কেউ অর্ডার দিলে সাথে সাথেই বানিয়ে দিচ্ছিলেন। আমরা ৪ জন ছিলাম। প্রথমেই চারটি পিঠা নিলাম। খুবই গরম ছিল। মাত্রই উনুন থেকে নামানো ।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
খেঁজুরের গুড় এখনো ভালোভাবে ওঠেনি। এজন্য আখের গুড় দিয়ে এই পিঠাগুলো বানাচ্ছিলেন। খেতেও বেশ মজা ছিল। আমি একটাই খেয়েছিলাম। আর সবাই দুটো করে খেয়েছিল। মিষ্টি যেকোনো জিনিস আমি একটু কমই খেতে পারি। আর ওখানে পিঠা গুলোর দাম ছিল খুবই কম। মাত্র ৫ টাকা করে। আমি প্রথমে দাম শুনে আরো একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম। পরে শিওর হলাম উনি আসলেও ৫ টাকাই বলেছেন। যাইহোক, বছরের প্রথম ভাপাপিঠা খেলাম। ভালই লাগলো।
পিঠা খাওয়া শেষ করে আমরা আর একটু সামনে এগিয়ে গেলাম। ওখানে নামকরা একটি চায়ের দোকান আছে। ওখানে দুধ চা, রং চা, লেবু চা আর চন্দন চা পাওয়া যায়। ওখানে আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি। কিন্তু একবারও চন্দন চা টেস্ট করা হয়নি । যদিও এখানে চন্দন চা টাই বিখ্যাত। আমি মিষ্টি জিনিস খুবই কম খাই। দুধ চা ও খাই না কখনোই। আমার কাছে রং চা ই বেস্ট লাগে। একটু কড়া করে এক কাপ রং চা হলেই আমি খুশি। ওই দোকানে গিয়ে প্রথমেই চারজনের জন্য চারটি রং চা এর অর্ডার দিলাম আর বাইক গুলো সাইডে দাঁড় করিয়ে ওখানেই চেয়ার পেতে বসে পড়লাম।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
জায়গাটা বেশ ফাঁকা। সামনে একটি বড় বটগাছ ছিল। বটগাছের নিচে সুন্দর একটি বসার জায়গা ও আছে। ওখানে বসেই আশেপাশের পরিবেশ টা একটু দেখছিলাম। অল্প সময়ের মধ্যে চা ও হাতে পেয়ে গেলাম। কাপে চুমুক দিতেই বুঝলাম আজকের চা টা একটু বেশি সুন্দর হয়েছে। এরপর চা খাওয়া শেষ করে দোকানে গেলাম বিল দিতে। বিল দেয়ার সময় দেখলাম দোকানের সামনের দিকে দুই পাশে চন্দন চা এর কাপ সাজিয়ে রেখেছে। কাপগুলো খুবই ছোট ছোট মাটির তৈরি। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল। সুন্দর জিনিস দেখলেই আমার ক্যামেরা অটোমেটিক অন হয়ে যায়। হা হা হা।
Picture was taken by: Xiaomi Redmi note 9 pro max Mobile
এরপর বাইকে স্টার্ট দিয়ে সোজা বাড়ির দিকে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একজন বলল, দূরে একটি বাজার আছে। ওখানে মাংসের চপ বিক্রি করে। ওগুলো নাকি খুবই সুস্বাদু। তবে জায়গাটা অনেক দূরে। আমরা যেখানে ছিলাম ওখান থেকে আরও দশ পনের কিলোমিটার দূরে। একবার যখন মুখ দিয়ে উচ্চারণ করেছে সেহেতু না যেয়ে উপায় নেই। কি আর করার,, গেলাম। শীত লাগছিল ভালোই। শীতের প্রটেকশন ছিল না তেমন একটা। প্রচুর বাতাস লাগছিল হাইওয়ে দিয়ে যেতে। খুব দ্রুত গতিতে যাওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা সে বাজারে পৌঁছে গেলাম। এরপর মাংসের সেই চপ নিলাম কয়েকটা। আমি তেলের জিনিস বেশি একটা খাই না এই জন্য একটাই খেলাম। খাওয়া শেষ করে এবার সোজা বাড়ির দিকে আর কোথাও দাঁড়ানো নেই।
এরপর আধাঘন্টার মধ্যেই বাড়িতে চলে আসলাম। সবমিলিয়ে আজকের বিকেল টা ভালই কাটলো। পার্সেলটাও হাতে পেলাম আর একটু ঘোরাঘুরি ও হলো। আজকের পোস্টটা করতে একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে কারণ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত হাতে অনেকগুলো কাজ ছিল এজন্য দুপুরে পোস্ট লিখতে পারিনি। যাইহোক শেষমেষ আপনাদের সাথে সুন্দর মুহূর্তটা শেয়ার করতে পারলাম। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে আবার আগামীকাল। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। খোদা হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
খাবার-দাবারের গল্প শুনে খিদা লেগে গেল ভাইয়া। আপনি প্রতিনিয়তই আপনার কাটানো দারুন মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেন এটা আমার খুবই ভালো লাগে। শীত শুরুর মানে ছোট ছোট টং এর উপরে পিঠার দোকানগুলো গড়ে ওঠে। এসব দোকান থেকে পিঠা খেতে খুবই ভালো লাগে। তবে চন্দন চা নামটি আমার কাছে একদমি নতুন। আমি এর আগে কখনো চন্দন চা খাইনি। আপনি প্রতিনিয়ত আপনার কাটানো দারুন দারুন মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেন এর ফলে দারুন দারুন খাবারের নাম গুলো জানতে পারি। ভাবির জন্য যে গিফট অর্ডার করেছিলেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। আশাকরি ভাবির অনেক পছন্দ হয়েছে।
বুঝলাম বউয়ের জন্য অর্ডার করা গিফট হাতে পেয়ে সবার একটু ভালোই লাগে । স্বভাবতই আপনি ব্যতিক্রম নন। যাক ভাল লাগল আপনার ছোট ভাইটি এক দিনের ভেতর সুস্থ হয়ে গেছে। সুস্থ হওয়ার একটা বিষয় হচ্ছে কি মনোবল ঠিক থাকলে, সাহস থাকলে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। সুস্থতার আসলে আমাদের মনে। আর আপনার ভ্রমণ কাহিনী প্রতিদিন পড়তে ভালই লাগে বেশ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। যাইহোক সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন ভালো থাকবেন ভাইয়া ।
আমি মেইনলি ভ্রমণকাহিনীর পোস্টগুলো করতে আর পড়তে দুটোই পছন্দ করি। আরো ভালো লাগে যখন আপনারা আমার লেখাগুলো পছন্দ করেন। যদিও আমি খুব প্রফেশনাল ভাবে লিখতে পারিনা।
আপনাকে ধন্যবাদ। 😌
শীতের রাতে ভাপা পিঠার দারুন স্বাদ নিয়েছেন ভাইয়া। তবে সব চেয়ে বড় বিষয় ভাবীর জন্য গিফ্টস 🥰 নিশ্চয়ই গিফ্টস পাওয়ার পর মনের মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল।সব মিলিয়ে রাতের সময়টা অসাধারণ কেটেছে তাতে কোন ভুল নেই। ভালো থাকবেন আর ভাবীকে আমার সালাম দিবেন।
ঠিক ধরেছেন।।। আজকের সন্ধ্যা টা অনেক ভালো কেটেছে।
গতকাল আপনার পোষ্টের শেষ অংশ পড়ার পর একটু খারাপ লেগেছিল, আপনার বন্ধুর এক্সিডেন্ট এর কারনে। আজকে উনি হাঁটতে পারছে শুনে খুব ভালো লাগলো। রাজু ভাই এর পাঠানো পার্সেল নিতে গিয়ে আপনারা ভালো সময় উপভোগ করেছেন। এত কম দামে ভাপা পিঠা বিক্রি হয় আগে জানতাম না। চন্দন চা এর আগে কখনো খাওয়া হয়নি। তবে আপনার প্রশংসা শুনে মনে হচ্ছে এই চা খুব সুস্বাদু। আপনাদের ঘোরাঘুরি মুহূর্তের সবকিছুই খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
চান্দন চা আমিও খাইনি। আর রাজু ভাইয়ের পাঠানো পার্সেলটি আমার পছন্দ হয়েছিল।
খাবো না খাবো না করেও কত কিছু খেয়ে ফেললেন!! এইগুলা কি ঠিক?
পুলিশ মানুষ যদি নিজের কথা না রাখে তাহলে আমাদের মত চোরদের কি হবে বলেন তো? 😜
পুলিশের ই কথা ঠিক নাই আমাদের আর কি ঠিক হবে! তবে আমার কাছে এই চন্দন চা এর ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো। আমি আসলে কোনোদিন নাম শুনিনি। ভাবির রিয়েকশন বা আন্সার কিন্তু জানাবেন কোনো এক সময়।
আসলে চেষ্টা করি বাইরের খাবার কম খেতে। কিন্তু আমি একটা গ্রুপ পেয়েছি,এদের সাথে চলাফেরা করলে বাইরের খাবার না খেয়ে উপায় নেই। এটা খাবে, ওটা খাবে,,, মাঝখানে আমি কি একা দাঁড়িয়ে থাকতে পারি।।। কি আর করার।।
আপনার ভাবি এখন নিজের বাপের বাড়ি। কাল রাতে ছবি তুলে পাঠিয়েছি। আশাকরি পছন্দ হবে 🙂
সময়টা অনেক ভালো ছিল। ঠিকই বলেছেন রং চা বেস্ট। আপনার সাথে আমার খুব মিল আমারও রং চা খুব ভালো লাগে।রং চা খেলে আলাদা একটা তুপ্তি পাওয়া যায়।শীতের চায়ের মজা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
শীতের সকালে চা খেতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। খুব ভোরে কোন হাইওয়ে দিয়ে বাইক চালানোর সময় কোন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে এক কাপ রং চা খাওয়া অসাধারণ অনুভূতির ব্যাপার।
চলেন যায় একদিন
শীতের সন্ধ্যায় ভাপা পিঠা খাওয়া মজাই আলাদা।আশা করি ভাবির গিফট পছন্দ হয়েছে।আর চন্দন চা এর কথা এই প্রথম শুনলাম।খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো আমার কাছে।আসলে সবাই
সাথে থাকলে বাইরের খাবার না খেয়ে থাকা যায় না। তবে বাইরের খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
হ্যাঁ বৌদি।। ওর গিফট গুলো খুবই পছন্দ হয়েছে। ঐ প্যাকেটের মধ্যে দুটি জামা ছিল। দুটো জামা ই অনেক সুন্দর ছিল।
চন্দন চা আমিও শুধু দেখেছি,, কখনো খাইনি। মিষ্টি খাবার আমি খুব কম খাই তাই জন্য। তবে একদিন চন্দন চা খেয়ে রিভিউ দেয়ার চেষ্টা করব। 😌
শুনে খুবই মজাদার লাগলো ভাইয়া,আপনার সেই ছোট ভাই এখন সুস্থ আছে৷ আর ভাবীর জন্য উপহার নেয়ার বিষয়টিও খুব ভালো লাগলো, ভাবী নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার ভাইয়ের সুস্থতার কথা জেনে ভালো লাগলো।আপনার দেওয়া গিফটি পেয়ে ভাবি নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে।তাছাড়া ভাপা পিঠাটি অনেক সুন্দর ও লোভনীয় ছিল।দাদা আমার কাছে সবথেকে ভালো লাগে আপনাদের ভ্রমণের পাশাপাশি জমিয়ে খাওয়া -দাওয়ার বিষয়টি।
তাছাড়া আপনি বললেন মাটির কাপগুলি খুবই ছোট কিন্তু ছবি দেখে আমি তো ভাবলাম ,একটি ভাড়ের মতো বড়ো।এভাবেই টিকে থাকুক আপনার সুন্দর মুহূর্তগুলি।ধন্যবাদ দাদা।
মাটির কাপগুলো বড় মনে হচ্ছে ছবিতে, কিন্তু আসলে কাপগুলো ছোট ছিল। যেমনটি চায়ের কাপ হয়।
হুম, বুঝলাম দাদা।
ওহ উপহার হাতে আসলে মনখুশি আর মন খুশি হলে জগৎ এর সব ভালো লাগে।যাই হক আপনার শীতের বিকাল টা গরম গরম পিঠা ,চা , মাংসের চপ সব মিলিয়ে চমৎকার কাটিয়েছেন বন্ধুদের সাথে ।আমার ও মন লাফিয়ে উঠলো আপনার আনন্দমুহূর্ত গুলো দেখে ।ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ।