আমার সাইকেল ও কিছু স্মৃতি।
হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমাদের সবারই ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আছে। আসলে স্মৃতি গুলো নিয়েই আমরা বাস করি। অনেক রকম স্মৃতি আমরা পার করে এসেছি কষ্টের স্মৃতি, সুখের স্মৃতি দুটোই। আজকে আমি আমার ছোটবেলার একটা স্মৃতি নিয়ে আপনাদের সাথে কথা বলব। একটা স্মৃতি বললে ভুল হবে, মানে একটা জিনিসকে কেন্দ্র করে আমার ছোটবেলার স্মৃতি। আর সেই জিনিসটা হলো সাইকেল।
আমি যখন ক্লাস ফোর বা ফাইভে পড়ি সম্ভবত। আমাদের একটা চায়না ফনিক্স সাইকেল ছিল। ওই সময় চায়না ফনিক্স সাইকেলের বেস ডিমান্ড ছিল। চায়না ফনিক্স সাইকেল খুব কমই দেখা যেত। চায়না ফনিক্স এই সাইকেল টিকতো বেশিদিন আর দামও মোটামুটি অন্যান্য সাইকেলের তুলনায় বেশি ছিল। কিন্তু ছোটদের সাথে আবার এই সাইকেলটা যেত না একেবারেই। তবুও আমি আমার ওই সাইকেলটাই চালানো শিখেছিলাম ক্লাস থ্রিতে থাকতে মোস্ট প্রবাবলি। সাইকেল চালানো শিখতে ভালোই মজা হয়েছিল। বহুবার আছার খেয়েছি আবার উঠে চালানো শুরু করেছি। প্রথমে চালাতাম নিচে। অনেকে হয়তো জানেন নিচে কিভাবে চালায়। দেখতে বেশ হাস্যকর লাগে। আসলে আমি তো উপরে নাগাল পেতাম না। এজন্য নিচেই ট্রাই করতাম।
সাইকেল চালানোর প্রতি আমার হেবি একটা নেশা ছিল। আমি যখন ভাবতাম যখন চালানো শিখব তখন সবসময় সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াবো। আর করেছিলাম ও তাই। সাইকেল চালানো যখন মোটামুটি শিখতে পেরেছিলাম তখন সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম সাইকেল নিয়ে। আমি যখন ক্লাস ফোর কিংবা ফাইভে উঠি তখন প্রথম সাইকেল নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, নিচে চালিয়ে যেতাম। নিচে চালালে খুব অদ্ভুত লাগে। কিন্তু আমিতো নাছোড়বান্দা। সাইকেল ছাড়া স্কুলে যেতে আমার ভালো লাগত না। তবে বন্ধুদের মধ্যে আমার পার্টটা খুব বেড়ে যেত। অনেকেই আমার কাছে সাইকেল চাইতো চালানোর জন্য।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
এলাকার বন্ধুরা যখন কোথাও খেলতে যেত, সবাই হেঁটে যেত আমি সাইকেল নিয়ে যেতাম। মাঝেমধ্যে কাউকে উঠাতাম আবার একা একাই চালিয়ে যেতাম। ছোটবেলায় সাইকেল নিয়ে বেশ ভালোই মজা করে বেরিয়েছি। অনুভূতিটা এখনো বেঁচে আছে। শুধু ছোটবেলায় না আমি যখন ক্লাস সিক্সে উঠি তখন হাই স্কুলে যাওয়া শুরু করি নিয়মিত আমার এই সাইকেল নিয়েই এবং সেটা ক্লাস টেন পর্যন্ত। আমার বাড়ি থেকে হাই স্কুল ছিল দু-তিন কিলোমিটার দূরে। বন্ধুদের সাথে সবাই সাইকেল নিয়েই যেতাম স্কুলে ডেইলি।
ছোটবেলায় যখন সাইকেলে আমি কোন ঝামেলা পাকিয়ে ফেলতাম তখন সেটা আব্বু নিজেই বাজারে নিয়ে গিয়ে ঠিক করে নিয়ে আসতো। হাই স্কুলে উঠার পর সাইকেলের সম্পূর্ণ দেখভাল আমাকেই করতে হতো। কোন ঝামেলা হলে আমি নিজেই সেরে আনতাম বাজার থেকে। এই সাইকেলটা আমার বিপদের সময় সাথী হয়েছে। দূর দুরান্তে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও আমার একমাত্র বাহন ছিল এই সাইকেল। স্কুলে যাওয়া, বাজার করা, কোন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাওয়া, কোথাও কিছু নিয়ে যাওয়া সব কিছুই আমি সাইকেল নিয়েই করতাম, এমনকি সরিষা ভাঙাতেও নিয়ে যেতাম আমার সাইকেলে করে মাঝেমধ্যে।
এই সাইকেলে করে অনেকবার এক্সিডেন্ট করার ও রেকর্ড আছে। বন্ধুদের সাথে রেস করতে গিয়ে একবার গরুর চারের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। সেবার সাত দিন হাঁটতে পারছিলাম না ভালো করে। এরপর খাদেও পরেছি বেশ কয়েকবার। ক্লাস নাইনে আমাদের বোর্ড পরীক্ষা ছিল। ক্লাস নাইনের পরীক্ষার সময় ১০ কিলোমিটার দূরে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম ও আমার ওই সাইকেলটা নিয়েই। তারপর থেকেই অবশ্য আমার সাইকেল চালানো কমে এসেছিল। অল্প চালাইতাম। খুব প্রয়োজন না হলে সাইকেল নিতাম না। আর কলেজে উঠার পর সাইকেল চালানো শেষ হয়ে যায়।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
পরবর্তীতে আমাদের সাইকেল চালানোর মতন আর কেউ ছিলনা। আব্বু চালাতো না আমিও চালাইতাম না। আর ছোট ভাই ছিল ও তো এসব সাইকেল চালানোর লোক না। ওকে একটা স্টাইলিশ সাইকেল কিনে দিছিল আব্বু। যাই হোক পরবর্তীতে আমার এই পথ চলার বন্ধুকে বিক্রি করে দিয়েছিল। শেষ যেদিন আমাদের বাড়িতে সাইকেলটি ছিল সেদিন অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম, ভাবছিলাম কত দিন সাইকেলটা আমার সাথে ছিল। খারাপ লাগছিল সেদিন। সাইকেলটা বিক্রি করে দেয়ার পর আর কখনো চোখে দেখেনি।
আপনাদের সাথে গল্পটা শেয়ার করে রাখলাম। স্মৃতির বস্তুটা তো হারিয়ে গিয়েছে, ব্লকচেইনে গল্পটা থেকে যাক। আজ আমি এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনি তো দেখছি একটা সাইকেল নিয়েই একেবারে ক্লাস টেন পর্যন্ত পার করে দিলেন। অবশ্য সাইকেলটা ভালো ছিল এজন্যই পেরেছেন। আবার দেখছি অনেকবার পড়ে যাওয়ার রেকর্ড ও আছে। কলেজে উঠে গিয়ে দেখছি বড় হয়ে গেছেন, সাইকেল চালানো ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আসলে ছোটবেলার স্মৃতি জড়িয়ে থাকলে কোন কিছুর সাথে স্মৃতি যেন ভোলার নয়। আপনার ছোটবেলার স্মৃতি পড়ে আমারও অনেক কথার মনে পড়ে যাচ্ছিল।
আপনি যখনকার সময় বলছেন তখনকার সময়ে সাইকেলের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং ভালো মানের সাইকেল ছিল ফনিক্স। তখন সাইকেল প্রেমিক এর কাছে ফনিক্স মানেই ফাজারুর সমতুল্য ছিল। তবে এটা ঠিক আমি নিজেও যখন কলেজে পড়াশোনা করি তখন সাইকেল বাজারে রেখে তারপর রিক্সায় করে কলেজে যেতাম। কলেজে সাইকেল নিয়ে যেতাম না। মান ইজ্জত বলে কিছু আছে তো ভাই তাই। নতুন নতুন কলেজে উঠেছি সাইকেল নিয়ে গেলে কেমন লাগে তাই সাইকেল নেওয়া হতো না। যাই হোক অবশেষে সাইকেলটি বিক্রি করে দিয়েছেন এবং সাইকেলের মায়ায় পড়ে অনেকটা খারাপ লেগেছে বুঝা গেল। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি স্মৃতি ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য।
গরুর চারের মধ্যে শেষ পর্যন্ত এক্সিডেন্ট করলেন। আর জায়গা ছিল না ভাইয়া 🤭। গরু না জানি মনে মনে আপনাকে কত বকা দিয়েছে। আপনার দীর্ঘদিনের সঙ্গীকে বিক্রি করে দিতে আপনার কষ্ট হয়েছে বুঝতে পারছি ভাইয়া। আসলে আমাদের জীবনে এমন কিছু প্রিয় জিনিস থাকে যেগুলো সময়ের সাথে সাথে অপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিংবা কম ব্যবহার করা হয়। সেগুলো যখন চোখের আড়াল হয়ে যায় তখন খুবই মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। ভাইয়া আপনার লিখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
হাই স্কুলটা পুরাই আপনি সাইকেল করে চালিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে সাইকেলটা আপনার কতটা ক্লোজ। আসলেই এই বয়সের ছেলেদের সাইকেলের প্রতি আলাদা একটা ঝোক থাকে। ক্লাস নাইনের বোর্ড পরীক্ষা ছিল এটা আমি আগে জানতাম না।সাইকেল নিয়ে এক্সিডেন্ট করার পর সাত দিন হাটতে পারেননি শুনে খুবই খারাপ লেগেছিল।আসলে সাইকেল এ অনেক এক্সিডেন্ট হয়,যদি ও সেগুলো মারাত্মক না তারপরেও। আস্তে আস্তে বড় হতে হতে সাইকেলের প্রতি আগ্রহ অনেকেরই কমে যায়। আসলে যে সাইকেল আপনি এত দিন চালিয়েছেন সেটা বিক্রি করতে খারাপ লাগারই কথা।
সত্যি তখনকার সময় ফনিক্স সাইকেলটি অনেক উন্নতমানের ছিল। তবে আপনি তো দেখছি সাইকেলটি অনেক বছর ধরে চালিয়েছেন। হাই স্কুলে থাকতে আমি নিজেও সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতাম। আপনি তো দেখছি কয়েকবার পড়ে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। বিশেষ করে গরু চরের মধ্যেও পড়ে গেলেন। তবে আসলে কলেজে উঠলে তখন আর কেউ সাইকেল চালায় না। তখনকার সময় স্মৃতিগুলো এখন খুবই মনে পড়ছে আপনার লেখাগুলো পড়ে।
আপনার অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ছোটবেলায় সাইকেল নিয়ে আপনি সবকিছু করছেন বিশেষ করে ইস্কুল যাওয়া বাজারে যাওয়া বিভিন্ন খেলার মাঠে যাওয়া বিশেষ করে ছেলেরা সাইকেল নিয়ে এধরনের জায়গা গুলোই বেশি চোষে বেড়ায় আর আমাদের মেয়েদের জন্য এরকম সুবিধা তো নেই।তবে আপনার অনুভুতি পড়ে আমার একটি কথা মনে পড়ে গেল সেটি হল আমি ছোটবেলায় আমার ভাইয়ের সাইকেলের পিছনে উঠে এক আত্মীয়র বাসায় যাচ্ছিলাম এমন সময় সাইকেলের চাকার ভিতরে আমার পা ঢুকে অনেক টুকু কেটে গিয়েছিল।
জি ভাইয়া, ওই সময় সাইকেল চালানো শেখার প্রথম ধাপ ছিল সাইকেলের নিচের অংশে চালানো শেখা। আর প্রথম প্রথম সাইকেল চালানো শুরু করলে সেটা বিরাট একটি নেশায় পরিণত হতো। সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে অ্যাক্সিডেন্ট করাটা ওই সময়টার জন্য একটা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে থাকে। আর ১০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বোর্ড পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথাটি জানতে পেরে ভাইয়া অবাক হয়ে গেলাম। যাহোক ছোটবেলার দারুন একটি স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার সাইকেলের গল্পের সাথে আমার জীবনের গল্পটাও কিছুটা মিল আছে। তবে আমি নিচে দিয়ে কখনোই চালাতে পারতাম না। আর সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে কখনো পড়ে যায় নি। আপনাদের মত আমার আব্বার একটি সাইকেল ছিল। আমি সেটি চালাতাম। তবে বেশি দিন চালাইনি। ধন্যবাদ ভাইয়া।