হাওড়া ব্রিজ -২
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই?
আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। গত পর্বে লিখেছিলাম হাওড়া ব্রিজ নিয়ে। পায়ে হেঁটে হাওড়া ব্রিজ পার হওয়ার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। সাড়ে ছটার দিকে ব্রিজ পার হওয়ার পর আমরা প্ল্যান করেছিলাম ট্রলারে করে নদী পাড় দিব। নদী থেকে ব্রিজ দেখতে নিশ্চয়ই আরো সুন্দর লাগবে। আলো ঝলমলে ব্রিজটি দূর থেকে দেখার অভিজ্ঞতা নিতেই ট্রলারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। ব্রিজ পার হয়ে আমরা ট্রলারের ঘাটে যেতে লাগলাম।
রাস্তার ডান প্রান্তে দেখতে পেলাম হাওড়া স্টেশনের ওল্ড কমপ্লেক্স ভবন। আলোকসজ্জায় সজ্জিত ভবন গুলো দেখতে দারুন লাগছিল। আমরা যখন ব্রিজের ওই প্রান্তে ছিলাম তখনও এই ভবনগুলো চোখে পড়ছিল। অসাধারণ একটি ভিউ। যারা দেখেছেন তারা বুঝতে পারবেন। এই ভবনের দৃশ্যটি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে যখন ট্রলারে চড়ে নদীর মাঝে থাকা যায়।
যাইহোক এরপর আমরা টিকিট কাটলাম। টিকিটের মূল্য কত ছিল আমার এখন ঠিক মনে পড়ছে না, সম্ভবত দশ টাকা করে। চারজনের জন্য চারটে টিকিট কেটে আমরা ঘাটে চলে গেলাম। ঘাটে দাঁড়িয়ে হাওড়া ব্রিজের সম্পূর্ণটা স্পষ্টই দেখা মেলে। ঘাটে ট্রলার ছিল না। আমরা বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম। আর এই অপেক্ষার মুহূর্তে হাওড়া ব্রিজের সৌন্দর্য দর্শন করছিলাম। তখন পুরোপুরি রাত নেমে গেছে। এজন্য ছোট ছোট আলোও চোখে পড়ছে। সম্পূর্ণ ব্রিজটাই লাইটিং করা। লাল নীল ও বাহারি রঙের আলোতে সেজে আছে হাওড়া ব্রিজ।
ঘাটে দাঁড়িয়ে আমরা আরও একটা নতুন স্ট্রিট ফুডের টেস্ট নিয়েছি। অনেকটা ঝাল মুড়ির মতোই। কিন্তু স্বাদটা ভিন্ন রকম। অনেক কিছু দিয়ে বানিয়ে দিল, খেয়াল করিনি কি কি দিয়েছে। আমরা চারজনেই নিয়েছিলাম। খেতে ঝাঁজালো ছিল। ঝাল ঝাল মচমচে চিড়া মুড়ি মাখানো। এটা আগে কখনো খাইনি। আমাদের বাংলাদেশে এরকম দেখিনি কোথাও। খেয়ে বেশ ভালই লাগলো। তবে কলকাতার রং চা খেতে পারিনি তখন পর্যন্ত। যাই হোক একটু পরে সে শখটা ও মিটেছে। অপেক্ষা করার এক পর্যায়ে চলে আসলো আমাদের ট্রলার। সবাই উঠে পড়লাম একসাথে। উঠার পরেই দেখলাম একজন চা বিক্রেতা চা বিক্রি করছে। সেটা রং চা ই ছিল রং চা খাওয়ার ইচ্ছে পূরণ হলো কিন্তু সাধারণ রং চা যেরকম হয় সেটা ওরকম ছিল না।
ওটা ছিল মসলা দিয়ে বানানো রং চা। আমি আসলে কড়া রং চা খেতে পছন্দ করি। যাই হোক তবুও তো পাওয়া গেল। ট্রলারে দাঁড়িয়ে হাওড়া ব্রিজ দেখা আর হাতে এক কাপ রং চা। মুহূর্তটা ফ্যান্টাস্টিক ছিল।
ট্রলারের এক কর্নারে দাঁড়িয়ে হাতে চা নিয়ে হাওড়া ব্রিজ দেখছিলাম আর কাপে চুমুক দিচ্ছিলাম। হাওড়া ব্রিজের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত সম্পূর্ণটাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। হাওড়া ব্রিজের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য বোধহয় এটাই। একে তো সবচেয়ে সুন্দর লোকেশন থেকে পাওয়া ভিউ এবং রাতের কালারফুল ব্রিজ। সব মিলিয়ে পারফেক্ট একটা মোমেন্ট উপভোগ করেছি। সুন্দর সময় গুলো দ্রুতই অতিবাহিত হয়ে যায়। অল্প একটু সময়ের মধ্যে আমরা নদী পাড় দিয়ে ফেললাম।
আসলে নদী পাড় দিতে অনেকটা সময়ই লেগেছে কিন্তু সময়টা ছিল ভালোলাগার, তাইতো মুহূর্তেই যেন শেষ হয়ে গেল।এরপর আমরা নেমে পড়লাম ট্রলার থেকে। সারাটি দিন শুধু হাঁটাহাঁটি আর ঘোরাঘুরি করেই কাটিয়ে দিলাম। সেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক জায়গায় ঘুরেছি। আসলে সময় খুব অল্প নিয়ে আশা তো যার কারণে এত তাড়াহুড়ো। আমাদের হাতে আর একটা দিন আছে। আমরা শেষ মুহূর্তে কিংপ্রোস ভাইকে বিদায় জানালাম। ভাইকে বিদায় জানিয়ে আমরা ট্যাক্সি করে মার্কুইস স্ট্রিটে চলে আসলাম। হাওড়া ব্রিজ দেখার মাধ্যমে আমরা সেদিনের চ্যাপ্টার ক্লোজ করলাম। আজ এ পর্যন্তই।পরবর্তী দিনের গল্প নিয়ে পরবর্তী পর্বে হাজির হব ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।
লোকেশন: কলকাতা হাওড়া ব্রিজ।
ডিভাইস:Xiaomi Redmi Note 9 pro max
VOTE @bangla.witness as witness

OR
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |













হাওড়া ব্রিজের এই পর্বটা দারুন উপভোগ করলাম। ট্রলারে করে ঘোরার আইডিয়াটি দারুন ছিল। মুড়ি মাখার মতো ভিন্ন স্বাদের একটি খাবার খেয়ে ট্রলারে উঠেছেন। আর চমৎকার আলো আঁধারের খেলায় চমৎকার পরিবেশটা উপভোগ করেছেন।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার পোস্টটি উপহার দেয়ার জন্য।
হাওড়া ব্রিজের এ পর্বটি পড়ে ও খুব ভালো লাগলো। আপনারা মুড়ি মাখার মতো ভিন্ন স্বাদের খাবার খেয়ে ট্রলারে উঠলেন।আপনার মতো আমিও কড়া লিকারের চা পছন্দ করি।আর ট্রলারের এক কর্নারে দাঁড়িয়ে চা খাওয়ার অনুভূতি আসলেই অন্য রকম। খুব বেশি চিল মুডে ঘুরলেন বোঝাই যাচ্ছে। খুব সুন্দর মূহুর্ত আপনারা কাটিয়েছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। সুন্দর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে ভাইয়া, ভালো লাগার মুহূর্তটুকু কখন যে শেষ হয়ে যায়, সেটা সহজে বুঝে ওঠা যায় না। হাওড়া ব্রিজের পাশে অবস্থিত আলোকসজ্জায় সজ্জিত বিল্ডিংটি দেখতে সত্যিই অসাধারণ সুন্দর লাগছে। ভাইয়া আপনাদের ট্রলারে উঠার শখটি পূরণ হয়েছে জেনে বেশ ভালো লাগলো আমার। দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দাদা কলকাতা এসে হাওড়া ব্রিজ ভ্রমণের এই পর্ব দেখে বেশ ভালো লাগলো। বেশ ভালই এনজয় করেছেন আপনি যা বুঝলাম। দাদা, আপনি যে ঝাল মুড়ির মতন জিনিসটা খেয়েছিলেন ওটা ঝাল মুড়িই কারন আমাদের কলকাতাতে ভুনা করা মসলা ছাড়াই ঝালমুড়ি করে। আমি বাংলাদেশ ভ্রমণে গিয়ে ঝাল মুড়ি খেয়ে ছিলাম সেটা অন্যরকম ছিল। কলকাতার ঝাল মুড়ির তুলনায় বাংলাদেশের ঝালমুড়ি আমার খুব বেশি ভালো লেগেছিল।
কলকাতার এই ঝাল মুড়ি কিন্তু আমার কাছে ভালোই লেগেছে। ইউনিক একটা টেস্ট। আগে কখনো খাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না।
আমরা নিয়মিত এইখানকার ঝাল মুড়ি খাই তো দাদা সেই জন্য অতটা ভালো লাগে না এখন আর ।তবে আপনাদের বাংলাদেশের ঝাল মুড়ির স্বাদ এখনো মুখে লেগে রয়েছে। আমি তো বাংলাদেশী ঝাল মুড়ি তৈরির প্রসেস ইউটিউব দেখে শিখেও নিয়েছি এতটা ভাল লেগেছিল।
আমাদের এখানের ঝালমুড়ি আমার কাছেও দারুণ লাগে। তবে সবখানের ঝালমুড়ি আবার ভালো লাগে না৷ আমাদের কলেজে একজন প্রতিদিন ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন। তার বানানো ঝালমুড়ি আমার লাইফে খাওয়া শ্রেষ্ঠ ঝালমুড়ি।
ভাইয়া প্রথম পর্বের পর আজ আপনি হাওড়া ব্রিজ ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। ব্রিজের চারপাশে গড়ে ওঠা দালানগুলো কিন্তু দেখতে বেশ। কড়ালিকারের চা নিয়ে উঠে পড়লেন ট্রলারে । তাও আবার ট্রলারের এক্কেবারে সামনে যেয়ে দাঁড়ালেন। ভাই আপনার ভয় লাগেনি একটু? বেশ চিল মোডেই ছিলেন বুঝা যাচ্ছে।
হাওড়া ব্রিজের এই পর্বটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। তবে সব চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে ট্রলারে করে ঘোরার আইডিয়াটি। আর মুড়ি মাখার মতো ভিন্ন স্বাদের একটি খাবার খেয়ে ট্রলারে উঠা সেই সাথে চমৎকার আলো আঁধারের খেলায় সুন্দর সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশটা উপভোগ করেছেন। ♥♥
হাওড়া ব্রিজ চেনেনা এমন মানুষ মনে হয় বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। যার ফলে কলকাতায় গেলে সবারই এটি দেখার আগ্রহ থাকে। আপনাদের মাধ্যমে আমাদেরও হাওড়া ব্রিজ দেখা হয়ে গেলো। তবে যে খাবারটা আপনারা খেয়েছেন সেটা দেখতে অনেকটা চিড়া ভাজার মত লাগছে। দেখে মনে হচ্ছে খেতে ভালোই ছিল। রাতের বেলায় ট্রলারে চরার মজাই অন্যরকম। দারুন একটা অনুভূতি হয়। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।