ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? কলকাতা ভ্রমণের পর্ব হাফিজ ভাই অনেকগুলোই বানিয়ে ফেলেছে। আমার আর লেখা হয়ে উঠছে না। সেই ঈদের আগে মনে হয় লিখেছিলাম। কলকাতায় অনেক ঘুরাঘুরি করেছি আপনাদের সাথে সবগুলো শেয়ার না করলে কি হয়? যাই হোক সিকুয়েন্স অনুযায়ী আমি লাস্টে যে পর্ব শেয়ার করেছি তারপরে আমরা কলকাতা জাদুঘর পরিদর্শনে গিয়েছিলাম সেটাই শেয়ার করবো আপনাদের সাথে আজ।
সেদিন প্রচণ্ড গরম ছিলো। সারাদিন ঘুরেছি, প্রচুর হেঁটেছি। কলকাতা ভিক্টোরিয়ার পর আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল কলকাতা জাদুঘর। আমরা তিনজন আর কিংপ্রোস ভাই মোট চারজন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাদুঘরের গেটে পৌঁছাই। ওখানে ঢুকতে টিকিটের মূল্য ছিল ৫০ টাকা। ভারতীয় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই রেট। বিদেশীদের জন্য ৫০০ টাকা করে। ৫০০ টাকা করে আমাদের তিনজনের পনেরশো টাকা দিয়ে ঢুকতে হবে। কি করা যায়, কি করা যায়!! আমাদের কিংপ্রোস ভাই নিজেই গিয়ে চারটি ৫০ টাকার টিকিট কিনে আনলেন। কে বুঝবে আমরা বিদেশী। হিহিহি।
আমাদের সাথে ক্যামেরা ছিল। কিন্তু ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে হলে ৫০০০ টাকা দিতে হবে। কি এক মহাবিপদ। রেখেই যেতে হলো বাইরে। আবার ফোনে ছবি তুলতে চাইলে ৫০ টাকা করে দিতে হবে। আগে থেকে ৫০ টাকা মূল্যের তিনটি ছবি তোলার টিকিট কিনে নিয়েছিলাম আমরা। মিউজিয়াম দেখতে আসলাম আর ছবি না তুললে কি হয়? যাইহোক ক্যামেরাটা সেইফ জনে রেখে আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। বিকেল হয়ে গিয়েছিল, মিউজিয়ামের ভেতরের মাঠে ছোট বাচ্চারা খেলা করছিলো, কেউ কেউ বসে আড্ডা দিচ্ছে, গল্প করছে আবার কেউ হাঁটাহাঁটি করছে। যাইহোক একটুখানি বসে এরপর আমরা মিউজিয়ামের ভিতরে প্রবেশ করতে লাগলাম। সে এক বিশাল মিউজিয়াম। প্রথমে বাহির থেকে দেখে ঠাউর করতে পারিনি যে এটা কত বড় হতে পারে। ভেতরে গিয়ে জাস্ট অবাক হয়েছি। আমরা নিজের তলা থেকে দেখতে শুরু করলাম।
পুরাতত্ত্ব বিথীকা, মথুরা শিল্প শৈলী, ভারহুত এবং বহু পুরনো আমলের কয়েন সহ অনেক কিছুই দেখলাম। হাজার বছরের অবিকৃত পুরনো সব মূর্তি সাজানো রয়েছে। এগুলো দেখে শেষ করতেই প্রায় আধা ঘন্টা পার হয়ে গেল। তবুও সবকিছু ইতিহাস সহ খুঁটিয়ে দেখা হয়নি। আসলে সময়ের স্বল্পতা, আর এরিয়া অনেক বড়। সব দেখে কভার তো করতে হবে। যাইহোক পুরাতত্ত্ব বীথিকা সংগ্রহশালার দর্শন শেষ করে The world of invertebrates অর্থাৎ অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের জগতে প্রবেশ করলাম। সেখানে বিভিন্ন অমেরুদন্ডী প্রাণীদের নমুনা রাখা আছে। প্রাণীগুলো অনেক বড় সাইজের বানানো আর সাথে ইতিহাস পাতিহাস সব লেখা আছে। অমেরুদন্ডী প্রাণী জগতে ঢুকে প্রাণীগুলো সম্পর্কে জানতে বেশ ভালো লাগছিল।
যতদূর জানি এখানে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একেবারে বিনামূল্যে প্রবেশ অধিকার রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য শেখার সুবর্ণ একটা সুযোগ রয়েছে এখানে। বই পুস্তকে পড়ে যতটা না বুঝা যায় এখানে এসে বিশদ ধারণা অর্জন করা খুবই সহজ আমার মনে হলো। এমনটা আমাদের ঢাকাতে থাকলে আমি মাঝেমধ্যেই আসতাম। হাজার বছরের ইতিহাস এখানে স্বচক্ষে দেখা এটা দারুন অনুভূতি। যাইহোক অমেরুদন্ডী প্রাণী জগত থেকে বেরিয়ে আমরা Mammal Gallery তে ঢুকলাম। এখানে প্রাগৈতিহাসিক প্রাণিদের ফসিল সংরক্ষণ করে রাখা আছে। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এই জায়গাটা। প্রত্যেকটি প্রাণী মনে হচ্ছিল জীবন্ত। অনেক সময় নিয়ে দেখেছি এই গ্যালারিটি।
বিস্তারিত ছবি আপনাদের সাথে পরে শেয়ার করব। এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ১৮০৪ সালে উদ্ধার করা এক বড় ব্লু হোয়েলের কঙ্কাল। মায়ানমার উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। আরো একটি বিশেষ আকর্ষণ হল ভারতীয় হাতির কঙ্কাল। এটি সত্যি বিশাল। রাজা পঞ্চম জর্জকে বারাণসীর মহারাজা মুম্বাইতে আসার সময় উপহার দিয়েছিলেন। সত্যিই এতো পুরনো ইতিহাসগুলো চোখের সামনে দেখতে পাওয়ার অনুভূতি একেবারেই ভিন্ন রকম। ওয়েবসাইট থেকে জানতে পেরেছি দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে পাওয়া বিভিন্ন প্রাণীর হার এবং জীবাশ্মের একটি বিশাল সংগ্রহশালা এটি।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের গ্যালারি থেকে বের হয়ে আমরা আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়েছি। বহু পুরনো আমলের পাথর, অনেক পুরনো আর্ট, জিওলজিক্যাল ইকোসিস্টেম সহ আরো কয়েকটি জায়গায়। আমার ফোনের মেমোরি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে আর বেশি ছবি তুলতে পারিনি। ওইদিনই বিকেলে আরো যে জায়গাগুলোতে ঘুরেছিলাম সেই জায়গা গুলোর কিছু ছবি তুলেছি মেমোরি কার্ড থেকে কিছু ফটো ডিলেট করে। এটি আমার জন্য স্যাড ছিল। যাইহোক বহুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর একটা বিষয় রিয়েলাইজ করলাম যে আমরা ফিফটি পার্সেন্ট ও দেখতে পারিনি। এখানে আসতে হলে আরো অনেক বেশি সময় হাতে নিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া এই জায়গাটি একদিনে দেখে কভার করার মতন জায়গা না। এখানে আসতে হলে বেশ কয়েকবার আসতে হবে।
আজ আমি এই পর্বটি এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে ফটোগ্রাফি নিয়ে আপনাদের সাথে আরো তথ্যসহ কয়েকটি পর্ব শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।
লোকেশন:- কলকাতা মিউজিয়াম।
ডিভাইস:- Xiaomi Redmi note 9 pro max
VOTE @bangla.witness as witness

OR
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

















Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলেই কে বুঝবে আপনারা বিদেশি ,কিংপ্রোস দাদা ঠিক কাজই করেছেন।আমিও হলে সেটাই করতাম।কিন্তু সেটা শুধুই বাঙালিদের জন্যই সম্ভব, বাকিদের তো চিনে ফেলবে।হি হি, কলকাতা জাদুঘরে অনেক পুরোনো ঐতিহ্য রয়েছে।এখানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই সুবিধাটা রয়েছে।আপনারা দারুণ সময় পার করেছেন,তবে ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে পারেন নি জেনে খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ দাদা।
ঠিকই বলেছেন। আমরা বাঙালি তো, আসলে দুই বাংলার লোকদের দেখে আলাদা করা দুষ্কর।
এতো বড় মিউজিয়াম ভাবা যায় ৷ যাক কিংপ্রোস দাদা ছিল বলে ৫০ টাকা করে টিকিট পেয়েছেন নয়তো টাকা করে দিতে হতো ৷ এদিকে আবার ক্যামরা দিয়ে ছবি তোলা নিষেধ কি একটা অবস্থা ৷ যা হোক তারপরেও ফটোগ্রাফি গুলো দেখে দারুন লাগল ৷ আসলে এটা সত্যি যে ভারতবর্ষ মানেই হলো পুরনো ঐতিহ্য আর ইতিহাস ৷
আমিও আপনাদের মত বিদেশীদের জন্য ৫০০ টাকা করে টিকিট হওয়ায়, আমার সাথে দুজন বাংলাদেশি পর্যটক থাকায় তাদের টিকিট নিজে গিয়ে কেটে নিয়ে এসেছিলাম, যাতে দশগুণ টাকা কম লাগে, হি হি হি। শুধু আমি একাই না দেখছি আমরা সকলেই তো কমবেশি এই কাজ থাকি, হা হা হা। একদমই তাই ভাই ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম এতটাই বড় যে ,খুব ভালো করে কোন জিনিস খুঁটিয়ে একদিনে দেখা সম্ভব নয় ।বেশ কিছুদিন ধরে অল্প অল্প করে দেখলে বিষয়টা ভালো করে দেখা সম্ভব। মিউজিয়ামের ভিতরের খুব সুন্দর কিছু দৃশ্য আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন ।ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর ছিল ।