ঈদের আমেজ। #২ [ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার গল্প]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। যারা বাড়িছাড়া বাহিরে থাকে তাদের ঈদের আগের সবচেয়ে আনন্দদায়ক এক মুহূর্ত হলো বাড়ি ফেরার মুহূর্ত। গতকাল আমি ঢাকা থেকে বাসায় ফিরেছি। সেদিন তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম অনেক দিন ধরে। প্রত্যেকদিন একটা একটা ডেট কেটে দিতাম কবে বাড়ি যাবো হিসেব করে।

পরীক্ষা থাকায় আরো আগে আসতে পারিনি। ১৬ তারিখে ছিল আমার শেষ পরীক্ষা। আগে থেকেই ১৬ তারিখের বাসের টিকিট কেটে রেখেছিলাম। ১৬ তারিখে আমার পরীক্ষা ছিল সকাল সাড়ে দশটা। জানেন তো এখন কি পরিমান রোদ বাহিরে, ঢাকা শহরে ব্যাপক গরম। সকালবেলা পরীক্ষা দিতে গেলাম আর পরীক্ষা দিয়ে যখন ফিরলাম তাতেই অবস্থা খারাপ। কিন্তু বাড়ি ফেরার আনন্দটা আরো অনেক বেশি ছিল। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরে গোসল করে রেডি হয়ে নিলাম সাথে সাথেই। আমার বাস ছিল সাড়ে তিনটা। আমি বাসা থেকে বেরিয়ে ছিলাম দুপুর দুটোর দিকে।

train-4998334_1280.jpg
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY

বাসা থেকে বেরিয়ে একটি সিএনজি নিলাম গাবতলী যাওয়ার জন্য। এত পরিমাণ রোদ আর এত পরিমাণ গরম সিএনজির মধ্যে বসে মনে হচ্ছিল বাহির থেকে আগুনের বাতাস এসে লাগছে গায়ে। অবস্থা খুবই খারাপ। গাবতলী পৌঁছে গিয়েছিলাম আড়াইটার দিকে। এখন এক ঘন্টা ওখানে বসে থাকতে হবে। অতিরিক্ত এক্সাইটমেন্টে একটু আগেই চলে এসেছি। যাইহোক কি করার, এক ঘন্টা অপেক্ষা করলাম। এরপর বাস চলে আসলো। বাসে উঠে নিজের সিটে অবস্থান করলাম। তারপর বাস চলতে শুরু করলো।

আসল ঝামেলাটা বাঁধলো সাভারে এসে। আমরা যে বাসে আসতেছিলাম এই বাসটা কোন কারনে নষ্ট হয়ে গেছে। মেজাজটা তখন অত্যাধিক গরম হয়ে গেল। এমনিতে আগুনের মতন গরম বাহিরে তারপর আবার বাস নষ্ট হয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এখন তাদের বক্তব্য হলো তাদের অন্য একটা বাস আসবে তারপর আমরা সবাই সেই বাসে উঠে চলে যাব। এটা সত্যিই আমাদের জন্য খুবই বিরক্তিকর একটা অবস্থা ছিল। আমরা প্রায় ৪৫ মিনিট থেকে ৫০ মিনিট ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়া আবার এখানে এসে এরকম ঝামেলায় পড়া সব মিলিয়ে আমি খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমরা অন্য একটা বাসার জন্য যখন অপেক্ষা করছিলাম তখন আমি একটা দোকানে গিয়ে দুই বোতল ঠান্ডা ফ্রিজে পানি নিলাম। এক বোতল পানি রেখে দিলাম আরেক বোতল পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ফেললাম। ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে ফেলার পর একটু শান্তি লাগছিল।

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আরেকটি বাস আসল তারপর আমরা সবাই সেই বাসে উঠলাম এরপর আবার যাত্রা শুরু করলাম। যখন চলছে বাস তখন ভালই লাগছিল যে বাড়ির দিকে আগাচ্ছি। যখন ইফতারের সময় হলো তখন আগে থেকে রেখে দেওয়া পানি দিয়ে বাসের মধ্যে ইফতার করেছিলাম। এরপর যখন আমরা ফেরিঘাটে নামলাম তখন সেখান থেকে হালকা কিছু নাস্তা পানি করে নিয়েছিলাম।

1681731713002-01.jpeg

ফেরি পার হওয়ার পর তখন আসলেও অনেক শান্তি কাজ করতেছিল ভিতরে যে অনেকটাই চলে এসেছি নিজেদের এরিয়াতে। আর ওই সময় গরম বাতাস ছিল না মোটামুটি ঠান্ডা বাতাস আসতেছিল জানালা দিয়ে। অনেক ক্লান্ত থাকার কারণে ওই সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন দেখি আমি আমাদের যে স্টেশনে নামবো সেটা পেতে আর মাত্র ৩৫ কিলোমিটার বাকি আছে। এরপর কিছু ছোট ভাইদের ফোন দিলাম যাদের আসার কথা আছে আমাকে রিসিভ করতে। ওরাও কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে দিল আমাকে নিয়ে আসতে।

আমি যখন নামলাম বাস থেকে তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরাও চলে আসলো বাসস্ট্যান্ডে। এরপর বাইকে চড়ে আমি ড্রাইভ করলাম অনেকদিন পর। বাইক ড্রাইভ করতে দারুন লাগছিল৷ ফিল নিতে নিতে রাস্তা দিয়ে আসলাম আমরা । পরিবেশটা অদ্ভুতভাবে চেঞ্জ, দুপুরবেলা যে কি পরিমাণ গরম ছিল আর এখন ঠান্ডা বাতাস অনুভব করছিলাম বাইক চালানোর সময়। যাই হোক আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম বাড়িতে। সবার সাথে দেখা, বাড়িতে আপু, দুইটা ভাগ্নে, ওয়াইফ, ছোট ভাই সবাই ছিল সবাই।

বাড়িতে এসেই প্রথমে আম্মুর সাথে দেখা। এরপর এক এক করে সবার সাথে। যাইহোক এটাই ছিল আমার কালকের ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসার গল্প। ইন্ডিয়া থেকে সবার জন্য যে শপিং গুলো করে নিয়ে এসেছিলাম সেগুলো সবাইকে আজকে দিয়েছি। সবাই খুব আনন্দিত। যাইহোক, আজকে তাহলে আমি এখানে বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্ট ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 years ago 

আসলে ঈদে বাড়ি যাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। তবে যাত্রা পথের ভোগান্তি খুব কষ্ট দেয়, বিশেষ করে আপনার গাড়িটা নষ্ট হওয়াতে আরো বেশি কষ্ট হয়েছে। ঢাকায় এখন রেকর্ড পরিমাণ তাপমাত্রা বিরাজ করছে 😕 গরমে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছি আমরা।
যাক শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাই বড় বিষয়। সবাইকে নিয়ে আনন্দের সাথে ঈদ উদযাপন করুন এই কামনা করছি। দোয়া রইল ভাই।

 3 years ago 

যাক অনেক ঝক্কি ঝামেলার পর বাড়িতে নিরাপদে পৌছাতে পেরেছেন এটাই ভাল খবর। আপনি বেশ আগেই বাড়িতে পৌছে গেছেন ঈদের জ্যামে আর পরতে হবে না। সবার সাথে ঈদ করা আর বাড়ি ফেরার আনন্দই সকল কস্ট আর কস্ট মনে হয় না। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার বাড়ি যাওয়ার অনুভূতি গুলো পড়ে বেশ ভাল লাগলো। কষ্ট হয়েছে, গাড়ি নষ্ট হয়েছে এটা কিন্তু আবার ভাল লাগেনি।সবকিছুকে ফেলে আপনি যে খুব সুন্দর ভাবে প্রিয় মানুষের পাশে গেলেন এটা খুব আনন্দের। সবাইকে নিয়ে আনন্দে কাটাবেন এটাই কামনা করি।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

এই বাড়ি ফেরার গল্প গুলো পড়তে কিছুটা আমার ভালোই লাগে, কারণ খুঁজে পাই যেন আমার হারানো দিনের শৈশব।

 3 years ago 

যারা বাড়ি থেকে বাইরে থাকে তারা এই ঈদের সময়টার জন্য সবচেয়ে বেশি অপেক্ষা করে। কারন নিজের লক্ষ্যপূরণ করতে হলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেই হয়। পরবর্তীতে এরকম কোন উপলক্ষ থাকলে বাড়িতে ফেরার জন্য নিজে যেরকম আগ্রহী হয়ে থাকে ঠিক তেমনি বাড়ির মানুষগুলোও অধীর আগ্রহে বসে থাকে কখন বাড়ি ফেরা হবে। তবে এটা শুনে কষ্ট লাগলে তীব্র গরমের মধ্যে তাও আবার রমজান মাস এই সময়ে বাস নষ্ট হয়ে গেল এবং বেশ অনেকটা সময়ই কষ্ট করতে হয়েছে। আমরা ঘরেই টিকতে পারছি না আর বাইরে তো যা গরম বলার বাইরে। অবশেষে বাড়িতে ফিরেছেন সুস্থভাবে এটাই তো খুশির বিষয়।

 3 years ago 

ভাইয়া আমরা গ্রামে থেকেই এই তাপদাহ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। আর এরকম আবহাওয়াতে ঢাকা শহর গরমে উত্তপ্ত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এরকম উত্তপ্ত অবস্থায় যদি গাড়ি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তো মেজাজটা গরম হওয়াটাই স্বাভাবিক। যাহোক, ভাইয়া শেষ পর্যন্ত যে বাড়িতে পৌছাতে পেরেছেন এটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। ভাইয়া আপনি যেন ঈদের সময়টুকু আপনার পরিবার-পরিজনদের নিয়ে খুবই আনন্দের সাথে কাটাতে পারেন এমনটাই আমি প্রত্যাশা করি।

 3 years ago 

সত্যিই যারা বাইরে থাকে ঈদের আগে বাড়ি যাওয়াটাও তাদের কাছে একটা আনন্দের মুহূর্ত। সকাল বেলায় পরীক্ষা দিয়ে ফিরে আবার রেডি হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বাস স্ট্যান্ডে এক ঘন্টা আগে গিয়ে অপেক্ষা করে আবার বাস ছাড়ার কিছুক্ষন পর বাস খারাপ হয়ে যাওয়া, তারপর আবার ৪৫ মিনিট মতো অন্য বাসের জন্যে অপেক্ষা করা। সত্যিই অনেক ধৈর্য্যের ব্যাপার। তবে রাতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় মজা করে বাইক রাইডিং করে বাড়ি ফিরে ,সকলকে দেখে আপনার ক্লান্তিটা নিশ্চয়ই অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল।

 3 years ago 

সত্যিই যারা বাইরে থাকে ঈদের আগে বাড়ি যাওয়াটাও তাদের কাছে একটা আনন্দের মুহূর্ত। সকাল বেলায় পরীক্ষা দিয়ে ফিরে আবার রেডি হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বাস স্ট্যান্ডে এক ঘন্টা আগে গিয়ে অপেক্ষা করে আবার বাস ছাড়ার কিছুক্ষন পর বাস খারাপ হয়ে যাওয়া, তারপর আবার ৪৫ মিনিট মতো অন্য বাসের জন্যে অপেক্ষা করা। সত্যিই অনেক ধৈর্য্যের ব্যাপার। তবে রাতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় মজা করে বাইক রাইডিং করে বাড়ি ফিরে ,সকলকে দেখে আপনার ক্লান্তিটা নিশ্চয়ই অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.30
JST 0.034
BTC 114758.78
ETH 4165.71
USDT 1.00
SBD 0.62