আমার ইন্টার্ভিউ এর অভিজ্ঞতা || পর্ব- ২
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। অফিস এর কাজে ব্যস্ততায় সময় কেটে যাচ্ছে। বৃষ্টিময় ঠান্ডা আবহাওয়া আমার অনেক পছন্দের। গরম যেনো আমার শত্রু। আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলে মনও ভালো থাকে। যাক আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার ইন্টার্ভিউ অভিজ্ঞতার ২য় পর্ব। আশা করি আপনাদের ভালোই লাগবে।
তো সেদিন ঘুম থেকে উঠলাম ভোর ৪ টার দিকে। উঠেই কিছুক্ষন পড়লাম। আমার যে এই ইন্টার্ভিউ ভালো মতন দিতেই হবে। চাকরী হোক বা না হোক। ভাইবা তে যেনো না আটকাই। তাই একটু ভালোমতন প্রস্তুতি নিলাম। এরপর ভাবলাম যেহেতু অনেক দূরে একটু আগেই বেড় হতে হবে। আমি ৫ টা ৩০ এ বেড় হবো ঠিক করলাম। কিন্তু আব্বু বললো বেশিক্ষন লাগবেনা সকাল সকাল। তাই ৬ টার দিকেই রউনা দিলাম। রিকশা নিয়ে বাজারে চলে গেলাম। সেখান থেকে একটা বাসে উঠলাম যেটা আশুলিয়া বাজার যাবে। আমি ভেবেছিলাম অফিস সেখানেই। কিন্তু সেটা ছিলো সাভার নতুন ইপিজেড এরিয়াতে। আমি তো আশুলিয়া লেখা দেখে ভাবছিলাম সেখান থেকেই কাছে হবে। যাক আশুলিয়া বাজারে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সময় হয়ে গেলো প্রায় ৮ টা। ৯ টা ৩০ থেকে আমার ইন্টার্ভিউ। এইদিকে তখনো প্রায় ১২ কিলোমিটার এর মতন রাস্তা বাকি তখনো। আমি দেখলাম রাস্তায় ভালোই জ্যাম। আর রাস্তা এটা ভালো না তেমন একটা। বাধ্য হয়েই বাইক ভাড়া নিলাম। যেহেতু এই এরিয়াতে পাঠাও তেমন সচল না। এরা সবাই সিন্ডিকেট করে চলাচল করে। ৩০০ টাকা চাইলো মাত্র ১২ কিলোমিটার রাস্তা। শেষে ২৫০ টাকায় রাজি হলো। বিপদ যেহেতু আমার তাই আমারই ভোগতে হবে। এদের সিন্ডিকেট তো আর আমি ভাঙতে পারবোনা।
বাইকে করে চিপায় চাপায় রাস্তা দিয়ে চলে আসলাম প্রায় ৩০ মিনিট আগেই। কিন্তু আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেলো। রাস্তায় এতো পরিমানে ধুলাবালি ছিলো কি বলবো আর। আমার দুই চোখে অনেক ময়লা জমে ছিলো। এইদিকে মসজিদ ও খোলা পাচ্ছিলাম না যে ফ্রেশ হয়ে নিবো। কি আর করা। ইন্টার্ভিউ কল এর মেইল এর স্ক্রিনশট প্রিন্ট করে চলে গেলাম অফিস এর দিকে। কয়েকজন কে জিজ্ঞেস করে খুজেও পেলাম। সাথে আরেকজন ক্যান্ডিডেট কে পেলাম । পরে দুজন মিলে ভিতরে চলে গেলাম। গেইট এ এন্ট্রি নিলো আমাদের আর একটা করে আইডি কার্ড দিলো ভিজিটিং এর। সেটা নিয়ে আমাদের ভিতরে নিয়ে গেলো। দেখলাম আরো অনেকেই আছে। তারপর আমি সামনে বসে গেলাম। এবার অপেক্ষা পরীক্ষা শুরু হওয়ার। মাঝে টিসু দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিজেই ভাবলাম একি হলো আমার সাথে। টিসু কালো হয়ে গেলো ময়লাতে। এরপর ওখানের এইচআর অফিসার আসলেন আমাদের লিখিত পরীক্ষা নিলেন। পরীক্ষা শেষে বললেন এখন আপনারা এখানে থাকতে পারেন। অথবা বাইড়ে যেতে পারেন। ঠিক ১ টা ২০ এর দিকে আসতে বললেন দুপুরে। যারা ভাইবার জন্য সিলেক্টেড হবেন তাদের নাম থাকবে সেখানে। তারা থাকবেন। বাকিরা চলে যাবেন। চলে আসলাম বাইরে। লিখিতো ভালোই হয়েছিলো আমার। আমি বাইরে এসে বই বেড় করে পড়তে থাকলাম।
দুপুরে এসে দেখলাম ৮ জন এর লিস্ট করেছে। আমার নাম দেখে খুশি হলাম। পরীক্ষা দিলাম ১৫ জন। সেখান থেকে ৮ জন টিকেছি ভাইবার জন্য। এবার আমরা সবাই একটা রুম এ যেয়ে বসলাম। এরপর এক এক করে ভাইবার জন্য ডাক এলো সবার।আমার সিরিয়াল ছিলো ৭ নাম্বার। খুব ভয়ে ছিলাম যে কি হয় না হয়। যেহেতু পুরো ইন্টার্ভিউ ইংরেজিতেই হবে তাই নার্ভাস ছিলাম অনেক। তো এক এক করে আমার সিরিয়াল আসলো। আমি গেলাম। এরপর প্রথমেই নিজের ইন্ট্রো দিলাম। একটু আটকে গিয়েছিলাম। তবে সেটা সামলে নিয়েছিলাম। এরপর বিভিন্ন টপিক এ কথা বললাম। আমি ইন্ট্রোতে বলেছিলাম যে আমার লেখালেখি ভালো লাগে। সেটা নিয়ে জিজ্ঞেস করলো। যে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কেনো লেখার প্রতি ইন্টারেস্ট। সেটাও খুব ভালো ভাবে উত্তর দিলাম। স্টিমিট কে মনে করেই সেই উত্তরটা দিয়েছিলাম। যাক তারপর তারা জানালো যদি আমি সিলেক্ট হই তাহলে আমাকে ৭ দিন এর মধ্যেই জানিয়ে দিবে। জানিনা সিলেক্ট হবো কি হবোনা। তবে দারুণ এক অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর আগে যত গুলো ইন্টার্ভিউ দিয়েছি সব বাংলায় হয়েছিলো। এটাই ছিলো আমার প্রথম ইংরেজিতে ইন্টার্ভিউ। দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য। যেনো এখানে চাকরীটা হয়ে যায়।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
প্রথমবারের মতো ইংরেজিতে ভাইভা দিয়ে দেখছি আপনি অনেক বেশি এক্সাইটেড। আসলে বর্তমান সময়ে এতটা বেশি যানজট রাস্তাঘাটে যে নির্দিষ্ট একটা সময়ে কোথাও গিয়ে যে পৌছাবো এই অবস্থাটা এখন আর নেই। যদিও আপনি আড়াইশ টাকা দিয়ে বাইকে করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো সেই সাথে ভাইবা ভালো হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে। দেখা যাক এখন রেজাল্ট কি হয়। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
রেজাল্ট আর জানায়নি ভাই। তবে আমি আশাহত নই। আবার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।