"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৩ || আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম এর অভিজ্ঞতা।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। দিন কাল কেমন যাচ্ছে আপনাদের।আমার একদমই ভালো যাচ্ছেনা। গরম এর প্রতি কেমন একটা বিরক্ত ধরে গেছে আমার। এতো গরম পরলে কেমনে বাঁচবো? যাক আজ আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম এর অভিজ্ঞতা বলবো আপনাদের৷
"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৩ |
---|
দেখতে দেখতে আমার বাংলা ব্লগ এর ৪৩ তম প্রতিযোগিতা এসে পরলো। শেষ কবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি খুব একটা মনে নাই। সম্ভবত ফুটবল নিয়ে ডাই প্রজেক্ট এর প্রতিযোগিতায় ছিলাম। এরপর চাকরী জীবনে পা রাখার কারণে আর সময় বের করে পার্টিসিপেট করা হয়ে উঠেনি। আমার জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকাম আমার জন্য খুবই স্মরনীয় একটি দিন ছিলো। যেটা কখনো ভুলার নয়৷ আজ সেটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।
আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম |
---|
জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকামটা খুবই চমৎকার একটা অনুভূতি দেয়। বিশেষ করে আমাদের মধ্যবিত্ত ছেলেদের জন্য। কারন অনলাইন ইনকাম এর প্রধান মাধ্যম ছিলো তখন কম্পিউটার। আর বাসায় যে কতো কিছু বুঝিয়ে একটা কম্পিউটার এর ব্যবস্থা করতে হয় তা শুধু একটা মধ্যবিত্ত ছেলেই জানে। জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকাম এর সংখ্যাটা বড় না৷ বড় হচ্ছে প্রথম অনলাইন থেকে টাকাটা পাওয়া। আমাদের সেই সময়টায় একটু ইনকাম এ কতো যে খুশি হতাম তা ধারনার বাইরে৷ স্টিম থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। আর স্টিমিট এর সব থেকে বড় অর্জন আমার বাংলা ব্লগ পরিবার৷ তবে আজ স্টিমিট এর ইনকাম নিয়ে কিছু বলবো না৷ কারণ আমার প্রথম ইনকাম স্টিমিট থেকে নয়৷
সময়টা ২০১৭ এর জানুয়ারি মাস। কুইজ থেকে জেতা ল্যাপটপ টা অনেক আগেই আমি বিক্রি করে দিয়েছিলাম। সেটার টাকা রেখে দিয়েছিলাম পিসি বিল্ড করবো বলে৷ বাসায় কতো কিছু বুঝালাম৷ সাত সাগর আর তেরো নদী পার করে বাসায় বুঝাতে সক্ষম হলাম যে ইনকাম করার জন্য হলেও আমার একটা কম্পিউটার লাগবেই। বিল্ড করলাম কম্পিউটার। কিন্তু শুধু কম্পিউটার দিয়ে তো আর হবে না। সাথে লাগবে ইন্টারনেট। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতেছিলাম তখন। তাই এর জন্য ইনকাম হবে বলে ইইন্টারনেট কানেকশন ও লাগালাম বাসায়৷
এবার কম্পিউটার নিয়ে রিসার্চে বসে গেলাম। আপনাদের এই গুগল ম্যান তখনই গুগলে সার্চ দিলো - "How to earn from online". কতো সাইট যে আসলো৷ এক এক দিন এক এক সাইটে কাজ করতাম৷ কাজ গুলোর বেশির ভাগ ছিলো এড দেখার অথবা ক্যাপচা সলভ এর৷ তো এমন অনেক যায়গায় শুধু কাজই করে গেলাম৷ আর চোখে শুধু ডলার দেখে গেলাম। কিন্তু সে ডলার যে চোখে দেখা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো তা তখন বুঝতাম না৷ দেখা যেতো উইথড্র দিয়ে মিস্টার বিন এর মত অপেক্ষা করে গিয়েছি টাকা আর হাতে পৌঁছে নাই। খুবই হতাশা কাজ করতো। একটা সময় একটা সাইট এর সন্ধান পাই যেটার নাম ছিলো Picoworkers। সে সাইট এর লিংক হচ্ছে: https://picoworkers.net/। যেখানে ছোট ছোট কাজ হতো। যেগুলাকে মাইক্রোওয়ার্ক বলে। কাজ গুলোর মধ্যে ছিলো ভিডিও দেখা, ফেসবুক পেজ লাইক, কারো পোস্ট প্রোমশন অথবা কারো রেফারেল এ একাউন্ট খোলা। যার জন্য খুবই সামান্য পরিমানে ডলার পাওয়া যেতো। তবে এই সামান্যই ছিলো সে সময়ে আমাদের জন্য অনেক। এবার ডলার হাতে পাবো কিনা এটা না ভেবেই কাজ করা শুরু করলাম। কখনো কোথাও একাউন্ট খুলি তো কারো পেজে লাইক দেই৷ আবার কখনো কোনো সাইট এর প্রমোশন করি। $0.1, $0.2 এমন করে আয় হতো টাস্ক প্রতি। $0.5 এর কাজ পেলে তো খুশিতে আত্নহারা হয়ে যেতাম। তো সর্বোচ্চ আয় হয়েছিলো একটা টাস্ক থেকে $2.5 পেয়েছিলাম৷ সেটা ওই সাইট এর প্রমোশন থেকেই। কেউ আবার ভাবিয়েন না টাস্ক নিলেই টাকা দিয়ে দিতো৷ সেগুলো আবার ভেরিফাই করা হতো। এমন অনেক হয়েছে যে কাজ করেছি তবে টাকা পাইনি।
ওই সাইটের মিনিমাম উইথড্র ছিলো ৭ ডলার৷ প্রায় ১৫ দিন কাজ করার পর আমার ৭ ডলার হয়। পরে আমি স্ক্রিল নামে একটা পেমেন্ট সাইট এর মাধ্যমে পেমেন্ট নেই৷ ডলার যখন স্ক্রিল একাউন্ট এ পৌছালো কি যে ভালো লেগেছিলো আমার। সে অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। জীবন এর প্রথম অনলাইন ইনকাম৷ আমার কাছে মনে হচ্ছিলো দুনিয়ার সব থেকে খুশি মানুষ আমিই। যদিও পরিমানটা এখন এর সাপেক্ষে অনেক কম তবে বিশ্বাস করেন সে ইনকাম ছিলো আমার কাছে লাখ টাকার বেশি৷ এখন মাস শেষে অনেক টাকাই আয় হয় তবে সেই প্রথম ইনকাম এর ফিল টা আসেনা কখনো। সে ডলার গুলো বিক্রি করে ৬০০ টাকা পাই। আমার মনে আছে এখনো ৮৬ টাকা করে পেয়েছিলাম ডলার প্রতি৷ ৬০২ টাকা হয়। হাতে পেয়েছিলাম ৬০০ টাকা৷ চলে গেলাম মিস্টির দোকানে। এক কেজি দই কিনলাম ১৫০ টাকা দিয়ে। এক কেজি রসমালাই কিনলাম ২৫০ টাকা দিয়ে। বাসায় এসে আব্বু আম্মু আর ছোট ভাই এর সাথে উপভোগ করলাম আমার প্রথম অনলাইন ইনকাম এর টাকা দিয়ে কেনা দই আর রসমালাই। আমার সে অনুভুতি মনে পরলে এখনো চোখের কোণে পানি এসে যায়। কি সুন্দর ছিলো সে অনুভুতি।
তো এই ছিলো আমার জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকাম এর অভিজ্ঞতা। আশা করি ভালো লেগেছে। কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেননা। ভালো থাকবেন সবাই। আবার দেখা হবে নতুন এক পোস্ট এ।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
এটাতে যে অনুভূতি ভাই , অনলাইন থেকে এই সামান্য ইনকাম গুলো এটা আমরা যারা করেছি তারা ছাড়া কেও বুঝবেনা। এটা যে কতটা আনন্দের ছিলো আমাদের কাছে তা আল্লাহ জানে আর আমরা জানি।
ঠিক বলেছেন ভাই। সে দিন গুলো যেনো ভুলার মত নয়। সামান্য ইনকাম এ আমরা খুশিতে যেনো আত্নহারা হয়ে যেতাম। দিন গুলো সত্যি খুব খুব আনন্দের ছিলো।
তাহলে প্রথম অনলাইন ইনকাম করেন ৬০০ টাকা। তাও ভাল আপনি প্রথম ধাপেই সফল হয়েছেন। আমি যে কত সাইট ঘুরেছি তার কোন হিসাব নেই। পরে স্টিমিটে এসে স্থায়ী হয়েছি। প্রথম অনলাইন ইনকামের মত আনন্দ আর হয় না। ধন্যবাদ।
না ভাই এই সফলতার পেছনে অনেক ব্যার্থতা আছে৷ অনেক সাইটে কাজ করেও টাকা পাইনি।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য। প্রথম অনলাইন থেকে ইনকাম করানো অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। তবে আপনার জার্নিটা খুবই কষ্ট ছিল। শেষমেষ আপনি সফল হয়েছেন অনলাইন থেকে ইনকাম করা নিয়ে। আসলে আপনার লেখা গুলো পড়ে আমারও অনেক খুশি লেগেছিল। দিনটা যেন ঈদের দিনের মতোই অনলাইন থেকে প্রথম ইনকামের অনুভূতিটা। অনেক ভালো লেগেছে পুরো লেখা পড়ে।
হুম আপু। আমাদের সময় একটু কষ্টই ছিলো বিষয় গুলো৷
অনলাইন থেকে ইনকাম করা মোটেই সহজ নয়। ইউটিউব বা গুগলের মাধ্যমে জেনে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অনলাইনে। তবে পেমেন্ট উইথড্র করার সময় হতাশ হতে হয়। তাই ট্রাস্টেড সাইট থেকে যখন অল্প পরিমাণেও ইনকাম করা যায়, সেই অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কারণ এমাউন্ট অল্প হলেও মনের মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে এটা ভেবে, যে এই ইনকামের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। যাইহোক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এমন প্রতারনার শিকার হয়েছি অনেক৷ মন দিয়ে কাজ করার পর দেখি পেমেন্ট নাই৷
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা। আপনার শেয়ার করা পোস্টটি পরিবেশ ভালো লাগলো। কুইজ থেকে জেতা ল্যাপটপটা আপনি বিক্রি করে দিয়েছি জেনে বেশ খারাপ লেগেছে ভাই আমার কাছে। আসলে মানুষের জীবনে কখন কি হয় কোন কিছু বলা যায় না। বেশ দারুন পোস্ট ছিল ভাই ফিউচার আর্টিকেল হিসেবে পোস্টটি মনোনীত হয়েছেন দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া৷ এতো সুন্দর মতামত এর জন্য। কিছু বানান ভুল হয়েছে সম্ভবত ভয়েজ টাইপিং এর জন্য৷ ঠিক করে নিয়েন৷
তাও তো ৬০০ টাকা ইনকাম করে সেটা দিয়ে সবাইকে মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। আসলে প্রথম প্রথম যখন আপনি এই কাজগুলা করতে শুরু করবেন তখন সীমিত ইনকামেই মন খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় যেমনটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছিল তবে আগে জানলে আপনার থেকে রসমালাই আর দইয়ের ভাগ নিতাম হাহাহা।
একদম ভাই৷ তখন অল্পতেই আমরা অনেক খুশি হয়ে যেতাম৷ একটা তৃপ্তি কাজ করতো।
প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার প্রথম অনলাইন আয়ের মুহূর্ত এবং তা থেকে আয় করা অর্থ যে পরিবারের সবার সাথে দই-মিষ্টি খেয়ে উৎযাপন করার মুহূর্ত পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আপু এতো সুন্দর এক মন্তব্য করার জন্য। ভালো লাগলো আপনার কমেন্ট পড়ে৷
প্রথমেই আপনাকে কনটেস্ট ৪৩ এর জন্য শুভকামনা জানাই।প্রথম অনলাইন থেকে ইনকাম,সেটা সবার জীবনেই ভিন্ন এক অনুভূতি।আর সবার এই অনুভূতি জানতে পারলাম এই কনটেস্টটির মাধ্যমে।অনেক ভালো লেগেছে পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।