ছোট বেলার এক মজার ঘটনা।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। দিন কাল কেমন যাচ্ছে আপনাদের? আমি আছি ভালোই। তবে গরমে বেশি একটা ভালো নাই বললেও বলা যায়। আজ ছোট বেলার এক মজার ঘটনা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আশা করি ভালো লাগবে।
মানুষ এর জীবনে ছোট বেলায় কতই না মজার ঘটনা থাকে। মাঝে মাঝে সেগুলো মনে পরলে কত্তো যে হাসি পায় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমার ছোট বেলার অনেক মজার ঘটনাই আছে। এর মধ্যে অনেক গুলো শেয়ার ও করেছি আপনাদের সাথে। আজো একটি তুলে ধরছি। সময়টা ছিলো ২০০৯। তখন আমি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন সে সালটা ছিলো নির্বাচন এর সাল। প্রচুর পরিমানে মিছিল হতো। আমার খুবই ভালো লাগতো স্লোগান দিতে। যদিও দল জিনিশটা তখনো ঐ ভাবে বুঝিনি। দুই দল এর মিছিল আসলেই আমি খুশি হতাম।
বিকেলের সময়টা কাটাতাম আমি আমাদের দোকানে। তখন আমাদের টেইলারিং দোকান ছিলো। বিকেলে আমি আর আমার ছোট ভাই দোকানে থাকতাম আব্বুর সাথে। আমি তো মিছিল দেখলেই চলে যেতাম। দোকান থেকে ২০-৩০ ফুট পর্যন্ত দূরত্ব মিছিল করে আসতাম যেয়ে। কখনো নৌকা তো কখনো ধানের শিষ। একটা সময় আমার স্লোগান দুইটা মিলে এমন হয়ে গেলো যে আমি মিছিল দেখলেই স্লোগান দিতাম "নৌকা মার্কা ধানের শীষ" 🤣🤣🤣। ভাবুন একবা কতোটা পাগল ছিলাম আমি সে সময়ে। মানে আমার মিছিল করতে ভালো লাগতো। তবে বেশি দূর যেতে পারতাম না।
তো একবার আমার মামা বললো মিছিল করতে যাবে। আমি বললাম আমিও যাবো। কিন্তু মামা তো আমাকে নিবেই না। আমি তো কেঁদে অবস্থা খারাপ। পরে আব্বু বললো নিয়ে যেতে। তো মিছিল শুরু হবে আমাদের দুই দোকান পর থেকে। আমি আগেই প্রস্তুত হয়ে চলে গিয়েছিলাম সেখানে। একটা কার্ড দিলো। বললো এটা মিছিল শেষে জমা দিলে নাকি টাকা দিবে। আমি তো আরো খুশি। প্রথমে তো মিছিল করতে পারবো তাই ভেবে খুশি। আর ২য় তো মিছিল শেষে আবার টাকাও পাবো। তো মিছিলটা অনেক বড় হবে শুনলাম। আশে পাশে এলাকা গুলো থেকে ছোট ছোট মিছিল গুলো এসে একটা বড় মিছিল হবে। এরপর আমরা এক সাথে মিছিল করবো। তো ধীরে ধীরে সবাই চলে আসলো। আমরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে গেলাম। খুব চিল্লাই চিল্লাই স্লোগান দিচ্ছিলাম। তবে আমার হাতে কোনো প্লেকার্ড ছিলোনা। আমার মামা সামনের দিকেই ছিলো। ওনার হাতে অবশ্য প্লেকার্ড ছিলো। স্লোগান তো প্রথমে একজন দেয় পরে বাকিরা দেয়। মিছিল করতে করতে তো অনেক দূর চলে গিয়েছিলাম। এবার তো হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিলো খুব। ভাবছিলাম কখন শেষ হবে। কিন্তু মিছিল তো আর শেষ হয়না। ২ ঘন্টা ধরে হাঁটতেই ছিলাম। আমার পা আর চলে না।
যাক একটা সময় মিছিল শেষ হয়। তো এলাকায় এসে পরি। এবার টাকা নেওয়ার পালা। অনেক ভিড় ছিলো। তো মামা কার্ড নিয়ে গেলো এরপর এসে আমার হাতে ৩০ টাকা ধরিয়ে দিলো। ঐ সময় তো আমি ৩০ টাকা পেয়েই কতো খুশি। কিন্তু পায়ে ব্যাথায় অবস্থা খারাপ। তো বাসায় এসে পরলাম। পরদিন সকালে তো আমি হাটতেই পারিনা। তবে ভয়ে বাসার কেউ রে জানাই নি। কি করলাম সেই ৩০ টাকা দিয়ে ব্যাথার ক্রিম নিয়ে আসলাম। তারপর সেটা ব্যবহার করেই ব্যাথা কমলো। যাই হোক মিছিল তো করেছি 😂😂😂😂। লাভ না হয় নাই হলো। নৌকা মার্কা ধানের শীষ তো বলেছি। হেহেহে।
তো আজ এই পর্যন্তই। আশা করি ভালো লেগেছে। কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেননা। ভালো থাকবেন সবাই। আবার দেখা হবে নতুন এক পোস্ট এ।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
হা হা 😄
পুরোটা পড়ে বেশ মজা পেলাম, নৌকা মার্কা ধানের শীষ 😂
আর ত্রিশ টাকা দিয়ে ব্যাথার মলম কেনার ব্যাপারটা আরো দারুন ছিল। ছোট বেলায় আসলেই আমরা কত কিছুই করেছি ভাবলেই হাসি পায়। যাইহোক আপনাকে ধন্যবাদ জানাই চমৎকার পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ ভাই। মিছিল করে যা পেয়েছি তা ডাক্তার কেই দিতে হয়েছে।
ছোটবেলায় আমরা কত কিছুই না করি, বড় বেলায় সেটা মনে পড়লে হাসি পায়। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই হাসলাম। নৌকা মার্কা ধানের শেষ ভালোই স্লোগান দিতেন। যাইহোক, সুন্দর এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
তা একদম বলেছেন। ছোট বেলার জিনিশ গুলো বড় বেলায় মনে পড়লে অনেক হাসি পায়।