আমার জীবনের স্মৃতির পাতায় হাজারো গল্প জমা হয়ে রয়েছে। আসলে ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে যেন খুবই ভালো লাগে। যদি ফিরে পেতাম সেই দিনগুলো তাহলে কতই না ভালো হতো। অনেক আনন্দ হাসি নিয়ে সেই দিনগুলো পার করেছি।আসলে আনন্দ হাসি নিয়ে দিনগুলো ফেলে আসার মধ্যেও,আবার অনেকদিন গুলো রয়েছে কষ্টের। জীবন মানেই কষ্ট এবং সুখ, এই সুখ দুঃখ নিয়ে জীবনের পথ চলা। জীবনের পথ চলার মধ্যে হাজারো স্মৃতি আমরা ফেলে এসেছি। সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। এটাই যেন মনের ভিতরে কল্পনা হয়। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতা থেকে একটি গল্প শেয়ার করতে আসলাম। সেই গল্পটি হল নদীতে মাছ ধরার গল্প। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।

আসলে তখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়াশোনা করি। আর তখন ছিল বর্ষাকাল। বর্ষাকালে আমাদের বাড়ি চারপাশে শুধু পানি আর পানি থাকে। কারণ আমাদের বাড়ি চারপাশেই ফসলের মাঠ আর সেখানেই রয়েছে বিল। এই বিলে পানি বর্ষার পানি খুব দ্রুতই প্রবেশ করে। যার কারণে এই বিলে মাছ ধরার জন্য সকলেই ধুম পড়ে যায়। আর এই মাছ ধরার মুহূর্তগুলো সত্যি অনেক আনন্দের। কারণ বর্ষার পানি আসলে এলাকার সকল বড় ছোটরা শুরু করে মাছ ধরা কাজে। ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেই মুহূর্তগুলো খুবই ভালো লাগে। আর বর্ষার পানিতে নতুন নতুন পানিতে মাছ ধরতেও খুবই ভালো লাগে। তাই বর্ষার পানি যখন আমাদের বিল পেরিয়ে আমাদের পুকুর পাড়ে আসলো। তখনই সকলেই যেন মাছ ধরার ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আর আগে নদী বিলে বর্ষার পানিতে অনেক মাছ পাওয়া যেত।

যখন বর্ষার পানি নতুন ভাবে আসা শুরু করে।তখন মাছ ধরার জন্য সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে।আমরাও বন্ধুদের সাথে মাছ ধরা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।তাই মাছ ধরা নিয়ে আমার চাচাকে বললাম যে আমরা আজকে বিলে মাছ ধরতে যাব।চাচা শুনে বললো আজকে নৌকা নিয়ে আমিও মাছ ধরতে যাবো।চাচা বললো আমার সাথে যাবি নাকি। আমি তো চাচার কথা শুনে খুবি খুশি হলাম। বললাম অবশ্যই যাব, যার কারণে আমি আর স্কুলে গেলাম না। চাচার সাথে আমি মাছ ধরতে যাব কিন্তু আমার আম্মা আমাকে মাছ ধরতে যেতে দিবে না। কিন্তু আমি চাচাকে বললাম আম্মাকে বলতে। তাই চাচা মাকে বলল তখন বলল সাবধানে যেও বর্ষার পানি ও যানি না নামে।আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়াশোনা করি তখন আমি সাঁতার পারতাম না। যার কারণে আমার আম্মা এই পানিতে আমাকে যেতে দিতে চাচ্ছিলো না।

চাচা তাই বললো কোন সমস্যা হবে না। আমি নৌকা নিয়ে যাব ও আমার সাথেই বসে থাকবে। ওকে পানির ভিতরে নামাতে দিব না। আমি মাছ ধরবো ও শুধু মাছগুলো ধরে রাখবে। তাই চাচার সাথে যখন আমরা মাছ ধরতে গেলাম, চাচা তখন অনেক জাল নিয়ে গেল মাছ ধরতে। আর এই মাছ ধরার মুহূর্তটা খুবই আনন্দময় ছিল। কারণ চাচা যখন বিলের মধ্যে আসলো, তখন জাল পেতে লাগলো। আর এই জালগুলোর নাম ছিল কারেন্ট চাল অর্থাৎ এই জালে কারেন্টের মতো মাছ ধরা পরে। কোন মাছ যদি আটকে যায় তাহলে এই মাছ আর কখনোই ছুটে যেতে পারে না। যার কারণে এই জালের নাম ছিল কারেন্ট জাল,আমি প্রথমে বলতাম চাচাকে, চাচা এই জালের নাম কারেন্ট কেন, এখানে কি হাত দিলে শর্ট করবে।

চাচা বলতো এর নাম কারেন্ট জাল তবে এখানে কারেন্ট নেই বুঝেছিস। এখানে মাছ যদি আটকে যায় তাহলে সেই মাছ আর ছুটে যেতে পারে না, যার কারণে এই জালের নাম কারেন্ট জাল। আসলে বিলের ভিতর এসে চাচা সেই জালটি অনেকখানি পেতে রাখল। আর এই জালগুলো অনেক লম্বা হয়ে থাকে। আর আধা ঘন্টা পরেই মাছ ধরা পরে। চাচা তখন জালগুলো পাতলো তারপর একটি লাঠি দিয়ে চারপাশে পানিতে আঘাত করতে লাগলো। বললাম পানিতে আঘাত করেন মাছ ভয় পেয়ে ছুটে চলবে, আর তখনই এই জালের সাথে আটকে যাবে। কিছুক্ষণ পরে আমরা প্রায় এক ঘন্টার মত অপেক্ষা করলাম। এক ঘন্টা পরে যখন জালগুলো তুলতে লাগলাম। দেখতে পেলাম অনেক ধরনের মাছ ধরেছে। ছোট বড় সকল মাছ,আসলে জালটা তুলতে এত ভালো লাগতেছিল আর এই জাল থেকে মাছগুলো ছাড়িয়ে আমাকে দিল আমি মাছগুলো নিয়ে ব্যাগে রাখতে ছিলাম।