খেজুরের রস খেতে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প //পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


শীতকালে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প জড়িয়ে রয়েছে। আসলে শীতের অনুভূতি যেন একটি অন্যরকম। আর এই শীতের মধ্যে অনেক আনন্দময় মুহূর্তে উপভোগ করা যায়। বিশেষ করে শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। আর এই খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতিগুলো সত্যি অসাধারণ হয়। বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে যখন খেজুরের রস খাওয়ার জন্য সকালবেলা বের হওয়ায় সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের হয়। এখনো আমরা দেখতে পাই শীত আসলেই বন্ধুদের সাথে নিয়ে সকলেই খেজুরের রস খেতে যায়। আসলে খেজুরের রস খাওয়ার যেন ঐতিহ্যময় হয়েছে।আর শীতকালে এই মুহূর্তগুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করা যায়। তাই আপনাদের সাথে শীতকালে খেজুর রস খাওয়ার স্মৃতিময় গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা চলুন দ্বিতীয় পর্বটি পড়া শুরু করা যাক।


winter-3197686_1280.jpg

source

তো আমরা যখন শীতের কুয়াশার মধ্যে দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সেই ঐতিহ্যবাহী উল্লাপাড়া আসলাম, খেজুরের রস খাওয়ার জন্য এবং রাস্তার মধ্যে বড় ভাইদের সাথে দেখা হল। আর এই বড় ভাইদের সাথে আমরা আগুন জ্বালিয়ে হাত তাপিয়েছিলাম। আসলে শীতের সকালে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তার ভিতরে হাত তাপানোর মুহূর্তটা অনেক আনন্দময় ছিল। তাই বন্ধুদের সাথে এবং বড় ভাইদের সাথে যখন আমরা এই খেজুরের রস খাওয়ার জায়গায় এসে পৌঁছালাম। তখন আমাদের খুবই আদর যত্ন করতে লাগলো। আর বড় ভাইকে তারা চিনতে পেরেছিল কারণ তারা আগেই এসেছিল,খেজুর রস খাওয়ার জন্য। তার সাথে ভালোকটা সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে আমাদের সাথে খুবই ভালো ব্যবহার করলো এবং আমাদের চেয়ারে বসতে দিল। মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে দিল যাতে আমাদের এই শীতের জড়োতা কেটে যায় এবং তারা আমাদের সামনে খেজুর গাছে উঠলো খেজুরের রস পারলো। চোখের সামনে এভাবে খেজুর রস পাড়া এবং খাবার মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে।


আমাদের সামনেই গাছ থেকে খেজুরের রস পাড়ল এবং এই খেজুরের রস খুবই সুন্দরভাবে গ্লাসে গ্লাসে আমাদের দিল এবং বলল যে আপনারা যত গ্লাস খেতে পারবেন এর কোন টাকা দিতে হবে না। সত্যি বিষয়টা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। তারা কত ভালো মানুষ। আসলে এখানে যারা আসে এবং যে যতটুকু খেজুর রস খায় এর টাকা দিতে হয় না। যখন বাড়িতে নিয়ে যাবে তখন শুধু টাকা দিতে হয়। আর কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তারা নেয়।তাদের এই ব্যবহারটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমাদের খেতে দিল আমি দুই গ্লাস খেলাম এর বেশি খেতে পারলাম না। আসলে অরজিনাল টাটকা খেজুরের রস বেশি খাওয়া যায় না এবং আমার বন্ধুরা ও বড় ভাইদের খাওয়া দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। তারা জানে একের পর এক গ্লাস খেতেই লাগলো।


cyclist-4910488_1280.jpg

source

খেজুর রস খাওয়া শেষে আমরা বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম এবং বড় ভাইরা বললো তারা ১০ আর ৫ লিটার অর্থাৎ ১৫ লিটার খেজুর রস নিয়ে যাবে। আমার বন্ধু ৫ লিটার এবং আমিও ৫ লিটার এই ১০ লিটার খেজুরের রস আমরা নিলাম। আর এই খেজুর রস নিয়ে বন্ধু বলল যে এখান থেকে অরজিনাল খেজুরের রস দিয়ে গুড় বানিয়ে নিয়ে যাব। আমিও এই কথা শুনে।খেজুরের রস দিয়ে কিভাবে গুড় বানায় সেই দৃশ্য দেখার খুব ইচ্ছা হল। বড় ভাইরা বলল আমরাও তো খেজুরের গুড় নেব। তাহলে আমরা একসাথে আবার রওনা দিবনি। তাহলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর। তারা আরো কাছ থেকে খেজুরের রস পেরে আনলো।তারপর বড় একটি কড়াইয়ের মধ্যে রস ঢেলে দিয়ে গুড় বানানোর জন্য জ্বাল দিতে লাগলো।


এভাবে খেজুরের রস দিয়ে সরাসরি গুড় বানানো এ বাড়ি আমি প্রথম দেখেছি। সত্যি তাই আমার খুবই ভালো লাগছে। আর খেজুরের রস দিয়ে এভাবে গুড় বানানো হয় সেটা আমি কখনোই ভাবিনি। তাই আমি তাদের সাথে এই খেজুরের রস দিয়ে গুড় বানানোর দৃশ্য দেখার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। আসলে খেজুরের রস থেকে গুড় বানাতে অনেক সময় লাগে। তারা অনেকক্ষণ জ্বাল দিয়ে এই খেজুরের রস থেকে গুড় বানায়। আর এই দৃশ্য সত্যি অসাধারণ। খেজুরের গাছে থেকে এভাবে খেজুর রস পেড়ে অনেক জ্বাল দিয়ে গুড় বানানোর মুহূর্তটা আমরা সকল বন্ধুরা মিলে আনন্দের সাথে দেখতে ছিলাম। আসলে সেই মুহূর্তগুলো খুবই ভালো লাগতেছিল আমার। বিশেষ করে গুড় বানানোর জন্য খেজুরের রস অনেক জ্বাল দিয়ে গারো করে সেটা আমাদের দিয়ে ছিলো, খেতে দারুণ লেগেছিলো।


তারা এভাবেই খেজুরের গুড় বানানোর জন্য জ্বাল দেওয়া শুরু করে দিল। আর আমরা বন্ধুরা মিলে চারপাশের দৃশ্য গুলো ভালোভাবে দেখতে ছিলাম। সত্যিই সেখানকার পরিবেশ অসাধারণ ছিল। আর বড় ভাইরা বললে তোরা বেশি দূরে যাস না। আরেকটু সামনে ঘুরে আয় খেজুরের বাগানের দৃশ্য দেখে আয়। অনেক ভালো লাগবে। তাই আমরা সেখান দিয়ে ঘুরতে গেলাম। তো বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই, আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব খেজুরের গুড় বানানোর দৃশ্যের মুহূর্তগুলো এবং বাকি অংশটুকু। আশা করছি সে পর্বের জন্য আপনারা সবাই অপেক্ষা করবেন। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 months ago 

ভাই আপনার খেজুরের রস খাওয়ার গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার গল্প পড়ে জানতে পারলাম আপনি এবং আপনার বন্ধু মিলে দুইজনা দশ লিটার রস নিয়ে ছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে এখান থেকে অরজিনাল করে রস থেকে গুড় তৈরি করে নিয়ে যাব । ধন্যবাদ ভাইয়া রস খাওয়ার এমন এমন স্মৃতিময় গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

শীতকাল আসলেই চারিদিকে খেজুরের রস পাওয়া যায় আর রাতের বেলা খেজুরের রস খাবার মধ্যে অন্য রকমের একটা আনন্দ রয়েছে। আপনারা তো দেখছি অনেক বেশি রস নিয়ে এসেছেন বাড়ির জন্য। ঠান্ডার মধ্যে খেজুরের রস খাবার মধ্যে অন্য রকমের একটা মজা রয়েছে।

 6 months ago 

শীতের সময় মানে খেজুরের রস খাওয়ার আনন্দ উৎসব। ঠিক এমনই মধুর স্মৃতি আমারও অনেকগুলো রয়েছে ভাই। আজকে আপনি শেয়ার করেছেন দেখে আমারও মনে পড়ে গেল খেজুরের রস খাওয়ার বিভিন্ন বিষয়। বেশ চমৎকারভাবে অজানা অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমিও চেষ্টা করব আপনাদের মাঝে এই বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।

 6 months ago 

শীতের সময় খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা৷ যদি শীতকালে খেজুরের রস খাওয়া না হয় তাহলে শীত যেন অপূর্ণ রয়ে যায়৷ আপনার এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছি৷ আবার আজকে দ্বিতীয় পর্বটিও পড়তে পেরে খুবই ভালো লাগলো৷ আপনি ও আপনার বন্ধু মিলে সেখানে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, সেখান থেকে খাঁটি গুড় তৈরি করে বাসায় নিয়ে আসবেন শুনে খুবই ভালো লাগলো৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি গল্প শেয়ার করার জন্য৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57893.29
ETH 3130.56
USDT 1.00
SBD 2.44