ছোটবেলা বাবার সাথে যমুনা নদীর পাড়ে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বাবা মানে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। বাবারা সবসময় বটের ছায়ার মত সন্তানদেরকে আগলে রাখে। জীবনে যত বাধা বিপদ আসুক না কেন। বাবারা সবসময় নিজের জীবন বাজি রেখে সন্তানের সুখের কথা এবং সন্তানকে আগলিয়ে রাখে। আসলে বাবারা সব কিছু করতে পারে তার সন্তানের জন্য। বাবারা সবসময় সুপারহিরো হয়ে সন্তানদের পাশে থাকে আর এই বাবাদের সাথে আমাদের জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। ছোটবেলা থেকে শুরু করে বড় অবধি পর্যন্ত বাবারা যেন আমাদের মাথার ছায়া হয়ে থাকে। আর এই বাবা যখন হারিয়ে যায় তখনই বোঝা যায় বাবা আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে আজকে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করতে আসলাম। এই গল্পটি হল বাবার সাথে নদীর পাড়ে ভ্রমণের সেই মুহূর্ত। আসলে ছোটবেলা বাবার সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই স্মৃতির পাতা থেকে একটি গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


source

আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি। আর বাবার সাথে যে কোন জায়গায় যেতে বায়না করতাম বাবা যদি অফিসে যেত তখনও বাবার সাথে যেতে চায়তাম।আসলে গ্রামের ঐতিহ্যময় হাট রয়েছে সেই হাটে বাবা যখন যেত আমি বাবার সাথে বায়না করতাম। বাবা নিতে চাইতো না, তবে কান্না করলে আর বাবা রেখে যেত না। তেমনি বাবার সাথে একদিন ভ্রমনে বের হয়েছি। আর বাবা বলল যে আজকে তোমাকে নিয়ে আমি নদীর পাড়ে ভ্রমণ করতে যাব। সাথে আমার আম্মা ও ছিল তখন। আমার খুবই ভালো লাগলো আমি তখন নদীর কথা অনেক শুনেছি আমার মামার কাছে।আমার মামার শহরে বসবাস করত। আর মামা যখন আমাদের বাড়িতে আসছে, তখন মামা শহরের এই যমুনা নদীর গল্প বলতো। মামার কাছে গল্প শুনতে শুনতে নদী দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। মামাকে অনেকবার বলেছি মামা শুধু বলে ঠিক আছে তোমাকে নিয়ে যাব। আজকে যখন হঠাৎ করে বাবা বলল তোমাদের নিয়ে নদীর পাড়ে ভ্রমণ করতে যাব। তখন খুবই ভালো লাগলো এবং মনে হচ্ছিল আজ যমুনা নদীর দৃশ্য দেখতে পাবো, আসলে যমুনা নদী বাংলাদেশের বড় বড় নদীর মধ্যে অন্যতম। যার কারণে এই নদী দেখার খুব ইচ্ছা ছিল আর এই ইচ্ছাটি পূরণ হবে জেনে খুবই ভালো লাগলো।


আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে আম্মাকে রেডি করালাম এবং আম্মাও রেডি হল। আসলে বাবা মার সাথে যখন নদীর পারে ভ্রমণ করতে যাব সেই মুহূর্তটা সত্যি অনেক আনন্দের ছিল। আর আমার স্বপ্নের এই যমুনা নদীর গল্প শুনতে শুনতে যেন যমুনা নদী দেখার প্রতি অন্যরকম একটা আগ্রহ ছিল। তাই বাবা-মা এবং আমি রেড়ি হয়ে একটি রিকশায় করে যাচ্ছিলাম। আর সেই যাওয়ার পথে আমার খুবই ভালো লাগতেছিল। আমি বাবা মার মাঝখানে বসে ছিলাম। সত্যিই সেই দিনের কথা আজ মনে করতে পারি যেন খুবই ভালো লাগছে। কত ছোট ছিলাম আমি।মা-বাবার মাঝখানে বসে যাচ্ছিলাম কত সুন্দর সেই মুহূর্ত ছিলো।তারপরে বাজার থেকে আমরা সিএনজি করে শহরের দিকে রওনা দিলাম এবং শহরের নামলাম। শহরে নামার পথে আরেকটি রিক্সা নিয়ে আমরা যমুনা নদীর পারে আসলাম। তখন ছিল ক্লোজার, আর এই ক্লোজারে নামার পরে অপরূপ সৌন্দর্য নদীর ঢেউয়ের শব্দ শুনতে পেয়ে আমার যেন খুবই আনন্দ হচ্ছিলো।


father-1004022_1280.jpg

source

নদীর পাড়ে এই অপরূপ সৌন্দর্যময় দৃশ্য দেখে আমি দৌড়ে নদীর কিনারার দিকে আসতে লাগলাম। বাবা এসে আমার হাত ধরলো বলল এভাবে আসা যাবেনা। আমার হাত ধরলো, বাবা তখন হাত ধরে নদীর সবকিছু দেখিয়ে দিচ্ছিল। আমি তখন নদীর পাড়ে দেখতে পেলাম বেলুন এবং ঘূর্ণি বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই ঘূর্ণিগুলো বাতাসে ধরলে অনেক সুন্দর ভাবে ঘুরতে থাকে। তাই আমি সেটি কিনলাম। কিনে নদীর পাড়ে বসে থেকে মুহূর্তটা খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করলাম। তারপরে আম্মা আমার পাশে বসলো। আমি আম্মার কোলের ভিতরে বসে থাকলাম, বাবা বাদাম কিনতে গেল এবং বাবা বাদাম কিনে নিয়ে আসলো। বাবা বাদাম ছিলে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিল। বাবা-মার মাঝখানে বসে থেকে নদীর এই প্রকৃতির দৃশ্যগুলো দেখতেছিলাম এবং নদীতে অনেক বড় বড় নৌকা চলতেছিল, সেই দৃশ্য দেখে যেন আমি অবাক হয়ে গেলাম।


বাবাকে বললাম বাবা এত বড় নৌকা হয় কিভাবে। বাবা বলল যে এটি নৌকা না, এটাকে বলা হয় জাহাজ আর এই জাহাজ তখন আমাদের এই নদী দিয়ে চলাচল করত। জাহাজ এবং অনেক ট্রলার ছিল। মালবাহী ট্রলার গুলো নদীতে দিয়ে ভ্রমণ করতেছিলাম। আসলে নদীর পাড় দিয়ে এই প্রথম আমি ট্রলার ও জাহাজ দেখতে পেলাম। তাই আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম, বাবা বলল তুমি কি ট্রলারে চড়বে, আমি বললাম হ্যাঁ বাবা।বাবা বললো ঠিক আছে একটু পরে নদীর কিনারায় ট্রলার এসে থামবে, তখন আমি তোমাকে চড়াবো তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই আগামী পর্বে আপনাদের সাথে ট্রলারে চড়ার সেই মুহূর্তের বাকি অংশটুকু শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। আশা করছি সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last year 

ভাইয়া বাবা থাকলে ছেলে মেয়ের অনেক শক পুরন সহজ হয়ে যায়। আপনি চতুর্থ শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় বাবার সাথে যমুনা নদী দেখেছেন। পরে শেষ পর্যন্ত ট্রলারে চড়তে পেরেছেন কিনা জানাবেন। ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59378.58
ETH 2646.25
USDT 1.00
SBD 2.46