রাজবাড়ীতে গিয়ে ভূত দেখার গল্প//পর্ব-৪( শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


স্মৃতির পাতায় হাজারো গল্প রয়েছে। বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলোই যেন এখন গল্প হয়ে আমাদের স্মৃতির পাতায় জমা হয়ে রয়েছে। আগের দিনগুলো কতই না মজার ছিল। কত আনন্দ হাসি করতাম বন্ধুদের নিয়ে, সেই দিনগুলো খুবই আনন্দের সাথে কেটেছে কিন্তু এখন আর সেই দিনের কথা মনে হলেই যেন ফিরে যেতে ইচ্ছা করে। তবে সেই সব দিনে আর ফিরে যেতে পারবো না। যদি ফিরে যেতে পারতাম তাহলে বন্ধুদের সাথে সেই দিনগুলো আরো আনন্দের সাথে কাটাতাম। এরকমই ইচ্ছা মনের ভিতরে জাগে। আসলে কল্পনাতে অনেক ইচ্ছা থাকলেও বাস্তবতার সাথে তা মিল নেই। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে রাজবাড়ির ভুত দেখার গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে আসলাম।আশা করছি এই গল্পটি শেষ পর্ব করে আপনাদের ভালো লাগবে।


castle-1483681_1280.jpg

source

আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ভূত নিয়ে গল্প রয়েছে। আসলে ছোটবেলা কল্পনার যুগে যেন এই ভূতের গল্প বেশি আমরা শুনেছি, যার কারণে ভুতের নিয়ে আমাদের মনের ভিতর একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করতো। আর এই বন্ধুদের সাথে যখন রাত তিনটার দিকে আমরা রাজবাড়ি থেকে ভয়ে ভয়ে বের হলাম, তখন আরো বেশি যেন এই ভূতের কথাই মনে করতে ছিলাম।তারপর সাদা সাদা একটা কি যেন দেখেছি যার কারণে মনে হচ্ছিল ওটা ভুত।মানিক তো ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো মনে হয় এখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে । তারপরে আমরা রাস্তায় আসলাম এবং রাস্তায় তখন নিরিবিলি ছিল হেঁটে হেঁটে মানিকদের বাড়িতে আসলাম। আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু গেলাম না কারণ এত রাতে গেলে নানান প্রশ্নের আনসার দিতে হবে।


রাত তখন সাড়ে তিনটা বাজে। রাস্তাই কেউ নেই, আমরা হেঁটে হেঁটে আসছিলাম। আসলে মনের ভিতরে ভুতের চিন্তা ছিল বেশি। তারপর চিন্তা ছিল যে কেউ এসে যদি এখন আমাদের চোর ভেবে মার শুরু করে দেয়, তাহলে তো খবর হয়ে যাবে। তখন ভয়ে ভয়ে আল্লাহ করতে করতে আমরা মানিকদের বাড়িতে আসলাম। মানিকদের বাড়িতে এসেই দরজা খুলেই ভিতরে প্রবেশ করে যেন দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে শুয়ে পড়লাম। কারো মুখে কোন কথা নেই।পাঁচ বন্ধু যেন একদম নিচু হয়ে গেলাম, কোন কথাই বের হচ্ছিল না তখন আমাদের মুখ থেকে।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

আসলে সাদা ওই কাপড় দেখতে পেয়ে আমিও খুব ভয় পেয়েছিলাম, কারণ পানির উপর দিয়ে সাদা ঐ কাপড়টি ভেসে যাচ্ছিল। ওটা যেন আমার চোখে সামনে বারবার ভেসে উঠতে ছিল এবং অন্যদিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম মানিক কান্না করছে।মানিক তখন বলল জীবনে আর কোনদিন এভাবে রাতের বেলায় চুরি করতে কিংবা রাতের বেলায় কখনোই বের হবো না। আজকে আমাদের জীবন বেঁচে গেছে, আর ওই সাদা কাপড়ের কথা মানিকে বলল যে ওটা ভূতে ছিল। ওটা আমার দিকে আসতেছিল, যার কারণে আমি চিৎকার করে ছিলাম। তোরা ভয় পাবি দেখে আমি তাড়াতাড়ি করে চলে এসেছি। আসলে মানিকের অনেক সাহস ছিল যার কারণে ওর বুকের ভিতর চাপা রেখেছিল। যার কারণে রুমে এসেই যেন কান্না করতে লাগলো। আর বলতে লাগলো আমি আর তোদের সাথে নেই, আমি কোনদিনও রাতের বেলা বের হবো না।


তারপরে আমরা সকল বন্ধুরা প্রতিজ্ঞা করলাম আর কোনদিন কারো গাছ থেকে কিছু চুরি করবো না এবং রাতের বেলা কখনোই বের হবো না। আর সকাল বেলা আমরা মসজিদের হুজুরের কাছে গিয়ে সকল কিছু বলে আমরা পানি পরা খেয়ে নেব। তাই আমরা সকালবেলা হুজুরের কাছে এসে পানি পড়া খেলাম,তওবা করলাম যে কোন দিনে চুরি করবো না। এরকম দুর্ঘটনার মধ্যে পড়বো না। আসলে আল্লাহ তাআলা আমাদের বাঁচিয়েছে তা না হলে সেই রাতে অনেক বড় বিপদে পড়তে হত। হুজুর সেটা আমাদের ভালো করে বুঝিয়ে দিলেন।

হুজুরের কথাগুলো আমরা মন দিয়ে শুনলাম এবং বন্ধুরা মিলে প্রতিজ্ঞা করলাম, তারপরে থেকে আর কোনদিন আমরা রাতের বেলা বের হয়নি এবং কারো গাছ থেকে কিছুর চুরিও করিনি। আসলে সেই রাতটা অনেক কষ্টে কেটেছে, আর এত ভয়ে ভয়ে ছিলাম ওই দিনের কথা জীবনে ভুলবো না। সারা জীবন যেন আমাদের মনের ভিতর সেই রাতের কথা ভেসে বেড়াবে। তো বন্ধুরা আপনাদের মাঝে সেই স্মৃতিময় দিনের কথার গল্পটি শেয়ার করলাম। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

ভুত দেখে এক দিক দিয়ে আপনাদের ভালোই হয়েছে রাতের বেলায় চুরি করার অভ্যাস চলে গিয়েছে। আসলে মানিকের অনেক সাহসের পাশাপাশি অনেক ভালো ছেলেও বটে। তা না হলে সে নিজে ভয় পেলেও আপনারা ভয় পাবেন জন্য চেপে গিয়েছে। পরে রুমে এসে সবকিছু বলেছে। আসলেই বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলেন সেদিন। শুনেই তো ভয় লাগছে আমার।

 5 months ago 

খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। আসলে ভূত দেখার মজাই আলাদা। আপনারা সকলে মিলে ভূত দেখেছেন শুনে খুব ভালো লাগলো। তার মধ্যে মানিক অনেক সাহসী এবং খুব ভালো ছেলে। তা না হলে সে আপনাদেরকে সেই সময় ভয় পেয়ে বলে না৷ যাতে করে আপনারা ভয় না পেয়ে যান৷ পরে সে বাসায় এসে সব কিছু বলল৷ অনেক ভালো লাগলো এই গল্পটি পড়ে৷

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59634.64
ETH 2590.21
USDT 1.00
SBD 2.47