বর্ষাকালে নৌকায় করে পিকনিক খাওয়ার স্মৃতিময় গল্প// পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বর্ষাকালে আমাদের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। আসলে বর্ষাকালের সেই স্মৃতিময় গল্পগুলো এখন মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। কেননা আগের মত আর যেন বর্ষার দৃশ্যগুলো দেখতে পাওয়া যায় না। আগে প্রতিবছরই বর্ষার দেখা পাওয়া যেতো।আর এই বর্ষার সময় চারদিকে যেন পানি থৈ থৈ লাগতো। সকলেই যেন নৌকা নিয়ে চলাফেরা করার সেই দৃশ্যগুলো দেখতে পাওয়া যেত এবং মাছ ধরার সেই দৃশ্যগুলো দেখে খুবই ভালো লাগতো। গ্রাম অঞ্চলে বেড়ে ওঠা মানুষ আমরা, যার কারণে বর্ষার এই স্মৃতিময় দিনগুলো খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে বর্ষাকালে পিকনিক করার সেই স্মৃতিময় একটি গল্প শেয়ার করতে আসলাম। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে তো বন্ধুরা শুরু করা যাক।


ship-952292_1280.jpg

source

গ্রামের সবাই মিলে বর্ষাকালের আয়োজন করেছে তারা পিকনিক করবে, আর সে জন্য তারা নৌকা একটি ভাড়া করেছে। এই নৌকায় করে তারা অনেক দূর গিয়ে ভ্রমণ করবে। এই নৌকাতে গান-বাজনার ব্যবস্থা করেছে। আসলে নৌকায় করে পিকনিক করা সেই মুহূর্তগুলো দেখতে পেয়ে যেন আমারও যাওয়ার জন্য ইচ্ছা করতেছিল। তাই আমি বায়না শুরু করে দিলাম, কিন্তু আমাকে নিয়ে যাবে না। যার কারণে আমি কান্নাকাটি করতে লাগলাম। আর মা বলল যে ওকে নিয়ে যাও। আসলে গ্রামের সবাই যখন পিকনিক করবে অনেক গান বাজনা হয়েছিল, নৌকায় সেটা দেখতে পেয়ে আমার খুবই যেতে ইচ্ছা করতেছিল। তাই এই নৌকায় করে বড় ভাই শেষমেষ আমাকে নিয়ে গেল আসলে তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি। যার কারণে আমাকে নিতে চাইল না কিন্তু আমার বায়নাতে আমাকে নিতে রাজি হলো। অন্যদিকে আমাদের বাড়ির পাশে আরো দুইজন আমার বয়সে ছিল। যার কারণে আমাকে আর না নিয়ে পারলো না, কারণ আমি খুবই এক জিতেছিলাম, না নেওয়া পর্যন্ত যেন কান্নায় থামতে ছিল না। তাই বড় ভাই বাধ্য হয়ে আমাকে সেই পিকনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হল।


বড় ভাইরা এই পিকনিক করার জন্য একটি খাসি কিনেছিল। আর এই খাসিটি তারা সকালবেলায় যেন বাসাতেই জবো করে মাংসগুলো সুন্দর পিস পিস করে কেটে একটি পাত্রে নিয়েছিল। আসলে নৌকায় করে তারাই রান্না করবে নৌকাতে তারা রান্না করার জন্য বড় বড় চুলা নিয়েছিল। যার কারণে এই খাঁটি সকাল বেলায় তারা সুন্দরভাবে মাংসের পিস পিস করে রেখে দিয়েছিল, আর এই জব করার সময় অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আমরা সবাই মিলে কারণ ভোর বেলা তারা এই কাজটি করেছে। আর আমি ভরে উঠেছিলাম। যার কারণে সেই মুহূর্তটা উপভোগ করেছি। তারপরে সকল পিকনিকের ব্যবস্থা তারা করল এবং নৌকাতে উঠানোর ব্যবস্থা করেছিল।


boat-164977_1280.jpg

source

খাবারের সব আয়োজন যখন নৌকাতে উঠানো হলো তখন নৌকাটি পিকনিকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করল। আসলে পিকনিকের উদ্দেশ্যে যাত্রা সেই মুহূর্তটা অনেক আনন্দের ছিল। কারণ ৪০-৫০ জন মানুষ হবে বিশাল বড় একটি নৌকায় করে পিকনিক যাওয়া।আর এই নৌকায় করে তারা যাবে তাড়াশের দিকে, অনেক দূরে যাবে যার কারণে সকলেই সুন্দরভাবে এই যাত্রা শুরু করলো। আমিও এই পিকনিকে যাচ্ছি তাই আমার খুবই ভালো লাগছে। আমি সেখানে বসে ছিলাম কারণ আমরা তিনজন ছিলাম ছোট। যার কারণে আমাদের ভালোভাবে দেখাশোনা করতেছিল। আসলে বড়দের সাথে এই পিকনিকে যাওয়ার মুহূর্তটা অনেক আনন্দের ছিল। বিশেষ করে বড় ভাই আর বড় ভাই আমার সাথে খুবই ভালো ব্যবহার করে।যার কারণে ভাইয়ের সাথে কোথাও ভ্রমণে যেতে আমার ভালো লাগতো।


নৌকা যখন নদীর ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল তখন আমার অনেক ভয় হচ্ছিল কারণ নদীর চারদিকে শুধু পানি আর পানি। একসাথে অনেকগুলো নৌকায় চলাচল করতে ছিল এবং আমাদের গ্রামের এই নদীর পারাপার হওয়ার সময় ব্রিজের নিচ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ব্রিজের নিচে যাওয়ার সময় অনেক বেশি ভালো লাগলো, কারণ ব্রিজের আশেপাশে অনেক নৌকায় বাঁধা ছিল। সকলে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল কারণ আমাদের নৌকা ছিল পিকনিকের। যার কারণে গান-বাজনা হচ্ছিল আর এই নৌকার উপরে অনেকেই নাচানাচি করতেছিল। এই দৃশ্যগুলো দেখতে ছিলাম আর উপভোগ করতেছিলাম, সত্যি সেই দিনগুলো অনেক আনন্দের ছিল, বিশেষ করে দেখতে পেলাম ভাইয়াও তার বন্ধুদের সাথে নাচা শুরু করে দিয়েছিল।

আসলে সময়টা ছিল বর্ষাকাল যার কারণে আকাশে মেঘ দেখতে পেলাম এবং হঠাৎ করেই যেন বৃষ্টি নামা শুরু হয়ে গেল। আর আমাদের নৌকাটি, নৌকা চালকে বলল ব্রিজের নিচে নিয়ে যাতে। আসলে ব্রিজের নিচে নিয়ে গেলে এই বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবো। কারণ নৌকাতে অনেক মালামাল রয়েছে। যার কারণে আমাদের নৌকাটি দ্রুত চালিয়ে ব্রিজের নিচে আনা হলো এবং ব্রিজের নিচে নৌকা বন্ধ করে এখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে লাগলাম। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

আপনার আম্মু তো বেশ ভালো, ক্লাস ফাইভে পড়া আপনাকে বড়দের সাথে নদীর মাঝে নৌকায় পিকনিক করতে এলাও করেছেন! তাও আবার বর্ষার দিনে!! আমার আম্মু হইলে তো কান্না করলেও উলটা দুইটা বকা দিয়া বসায় রাখতো!! 🥲
কিছুটা সেন্টি খেয়ে গেলাম এই দু:খেই।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

বর্ষাকালে নৌকায় করে পিকনিক খাওয়ার খুবই সুন্দর একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই স্মৃতিময় গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নৌকাটি ব্রিজের নিচে নিয়ে যাওয়াটা নিঃসন্দেহে দারুন একটি উপস্থিত বুদ্ধি ছিল। যাহোক আপনার এই স্মৃতিময় গল্পের পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76024.68
ETH 2926.23
USDT 1.00
SBD 2.60