ছোটবেলা বাবার সাথে যমুনা নদীর পাড়ে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প//পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে বাবার ভূমিকা অপরিসীম। বাবার কোন তুলনা হয় না। এই বাবা সন্তানকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসে যায় এবং সারা জীবন আগলে রাখে,জীবনে হাজার পথ যেন এই বাবার হাত ধরে আমরা হেঁটে বড়ায়।বাবার সাথে আমাদের জীবনের পথচলা শুরু আর এই সেই শুরু থেকে যেন জীবনটা কিভাবে তৈরি করতে হবে সেই দিকনির্দেশনা একমাত্র বাবাই আমাদের দিয়ে থাকে। আসলে বাবারা সবসময় সন্তানকে আগলে রাখে, জীবনের প্রতিটা পথেই যেন বাবা ভূমিকা রাখে। বাবা ছাড়া আমরা সত্যি করেই উঠে দাঁড়াতে পারতাম না। বাবার হাতে হাত রেখে জীবনের পথ চলা আমরা শিখতে পারি। তাই বাবা আমাদের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বাবা যখন আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে যায় না ফেরার দেশে চলে যায়। তখন আমরা বুঝতে পারি বাবার ভূমিকাটা কতটুকু ছিল আমার জীবনে, তো বন্ধুরা বাবাকে নিয়ে আমাদের প্রত্যেকের জীবনের অনেক গল্প রয়েছে। সেই গল্প থেকে স্মৃতির পাতায় জমানো একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি, আশা করছি গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।


father-and-son-2258681_1280.jpg

source

বাবার সাথে আমি ছোটবেলায় নদীর পাড়ে ভ্রমন করেছি। আর যমুনা নদীর পাড়ে ভ্রমণ করা সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। অনেক বড় ট্রলার ও জাহাজ ছিল। আমি বললাম বাবা আমি লঞ্চে চড়বো। তখন বাবা বলল যে বিকেল বেলা এখানে লঞ্চ ও ট্রলার আসে। তখন তোমাকে চড়াবো। তাই যখন বিকাল চারটা বাজলো তখন ঘাটে এসে ট্রলার থামিয়ে রাখল। আর আমি বাবার হাত ধরে সেই ট্রলারে উঠতে লাগলাম। আসলে ট্রলার অনেক বড় ছিল, তাই ওঠার জন্য সিঁড়ির মত একটা ব্যবস্থা ছিল।তখন অনেক বেশি ভালো লাগতেছে।


আমি তখন বাবার হাত ধরে সেই ট্রলারের ওঠার জন্য এগিয়ে যাচ্ছিলাম। বাবা তখন আমাকে কোলে নিয়ে সেই ট্রলারে উঠলো, সত্যি ট্রলারে উঠে আমার খুবই ভালো লাগলো। আর অনেক বড় এই ট্রলাটি ছিলো,স্টিল দিয়ে ট্রলার তৈরি করা হয়,তাই বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম এত লোহা দিয়ে তৈরি করেছে এগুলো পানিতে ডুবে যায় না কেন। তখন বাবা বলল যে লোহা পানিতে ডুবে যায় তবে সেটি যদি নৌকা অথবা ট্রলার বানানো হয় তাহলে আর ডুবে যায় না।পানি প্রবেশ করতে পাবে না, বাবার কথা শুনে যেন অবাক হয়ে গেলাম। তারপরে বাবা হাত ধরে ট্রলার এর উপরে সিঁড়ি দিয়ে তার ছাদে উঠলাম। সত্যি ছাদে গিয়ে যেন অনেক বেশি ভালো লাগতেছিল, কারণ অনেক উঁচু থেকে নদীর দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে ছিলাম এবং অনেক উঁচু থেকে নদীর নিচের দিকে তাকিয়ে যেন ভয় পাচ্ছিলাম। বাবাকে আমি তখন শক্ত করে ধরে রাখলাম।


father-1004022_1280.jpg

source

তারপরে নদীর আশেপাশের অনেক অনেক ছেলে মেয়ে রয়েছে।তারা যেন এই নদীর পারে গোসল করতে আসলো। তাদের গোসল করার দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগলো এবং কয়েকজন আমাদের এই ট্রলারে উঠলো এবং ট্রলারে ছাদে আসলো আর ছাদে এসে যেন তারা নদী পানিতে ঝাঁপ দিবে। সত্যি এই ঝাঁপ দেওয়ার দৃশ্য দেখে আমার অনেক ভয় করতেছিলো।তারপরেও আমার বাবা তাদের না করল, যে এখান থেকে ঝাঁপ দিওনা এখান থেকে ঝাঁপ দিলে পানিতে যদি পড়ে যাও তাহলে অনেক ব্যথা পাবে এবং অসুস্থ হয়ে যেতে পারো।তারা বলল যে না, আমরা এখান থেকে অনেক আগে থেকেই লাফ দিয়ে নদীর পানিতে গিয়েছি। আমাদের কিছু হয় না। না করা শর্তেও তারা এখান থেকে লাফালাফি করতেছিল। তাদের এই ঝাঁপ দেওয়ার দৃশ্য দেখে অনেকটাই ভয় পাচ্ছিলাম। তবে তারা পানিতে পড়ার পরে আবার সাঁতার দিয়ে নদীর কিনারায় যাচ্ছিল। এই দৃশ্যগুলো দেখে অনেকটাই ভালো লাগলো। কারণ এই তারাঅনেক ভালো সাঁতার শিখেছে। যার কারণে নদীতে তারা সুন্দরভাবে সাঁতার কাটতে ছিল। তবে এখান থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া অনেকটাই রিস্কের ছিল, হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো।


তারপরে আমরা ট্রলার থেকে নামলাম এবং নদীর পাড়ে ছোট স্পিডবোট রয়েছে। এগুলো নদীতে অনেক স্পিডে চলাচল করতে ছিল। এই গুলো দেখে যেন আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। বাবা আমাকে বলল তুমি স্পিডবোট চলবা। তখন আমি বললাম হে বাবা এটাতে চললে কি ভয় পাবলো। বাবা বললো না ভয় পাবা না, তোমাকে আমি ধরে রাখবো এটা অনেক দ্রুত চলে নদীর ভিতর দিয়ে এবং এখান থেকে আমরা নদীর ঐ পাড়ে চড়ে রয়েছে সেই চলে যেতে পারবো। তাই বাবার সাথে তখন আমি স্পিডবোট ওঠার জন্য সেখানে আসলাম। তো বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই, আগামী পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব বাকি অংশের গল্প সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last year 

ভাইয়া আপনার বাবার সাথে যমুনা নদী ভ্রমনের প্রথম পর্বটা পেড়েছিলাম। আপনার মত প্রশ্ন আমার মনেও জেগেছিল। পরে ‍উত্তর পেয়েছি,সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। আপনার বাবার উত্তরও ঠিক আছে। ধন্যবাদ।

 last year 

আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 last year 

বাবার সাথে যমুনা নদীতে ঘুরতে যাওয়ার খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্বে শেয়ার করলেন। ভাইয়া এই পর্বে আপনি আপনার বাবার সাথে যমুনা নদীতে ট্রলারে উঠেছেন এবং ট্রলারে ওঠার খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। যা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ জানাচ্ছি এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58551.09
ETH 2617.32
USDT 1.00
SBD 2.44