শিক্ষক নামের সন্ত্রাস
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
আমাদের সমাজে শিক্ষকদের সম্মান সবার উপরে, সমাজের প্রত্যেকটা মানুষই শিক্ষকদের অনেক সম্মান করে, তার কারণ হলো শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর।আর এই শিক্ষকদের সম্মান আমরা প্রত্যেকেই দিয়ে থাকি, সেই শিক্ষক যদি মানুষ গড়ার কারিগর না হয়েই সন্ত্রাস হয়ে যায়। তাহলে সমাজের অবস্থা কেমন হবে এবং শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে কি শিখবে। বলতে এসেছি মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কথা। মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সুনাম অনেক রয়েছে। এই নিয়ে আমার অনেক পোষ্ট রয়েছে। আজকে তাই এই মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শেয়ার করতে যাচ্ছি। ঘটনাটি শুনে যেন আমার অনেক খারাপ লেগেছে।
গত ০৪-০৩-২০২৪ তারিখে বিকেলবেলা আমি বন্ধুদের সাথে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম। তখনই আমার কাছে একটা কল আসলো আমার কোন এক বন্ধু। সে বললো শুনতে পেলাম মুন্সির আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক নাকি ক্লাসের ভিতরে ছাত্রকে গুলি করেছে। এই ঘটনাটি শোনার পরেই আর দেড়ি না করে বন্ধুকে সাথে নিয়ে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে আসলাম এবং কলেজ ক্যাম্পাসে এসে দেখতে পেলাম কলেজের গেট তালা লাগিয়ে দিয়েছে। বাইরে থেকে কাউকে ভিতরে যেতে দিচ্ছে না। আর এই ঘটনাটি ভালোভাবে শোনার চেষ্টা করলাম। স্যার কিভাবে একজন ছাত্রকে গুলি করতে পারে। স্যার ক্লাসে কেন গুলি নিয়ে আসবে। কি হয়েছিল এই ঘটনাটি জানার চেষ্টা করতেছিলাম। আর ওদিকে কলেজ ক্যাম্পাসে দেখতে পেলাম মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে।
মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অনেক ডাক্তারের সাথে আমার পরিচিত রয়েছে। যার কারণে তাদেরকে আমি ফোন দিলাম, তারা বলল যে শিক্ষার্থী ভালো আছে এবং তাকে অপারেশন করানো হয়েছে এবং গুলি পায়ের থোড়াতে লেগেছিলো। পায়ের থোড়াতে লাগার কারণে খুব একটা সমস্যা হয়নি, সে এখন আশঙ্কা মুক্ত রয়েছে। এটা জানতে পেরে অনেকটাই ভালো লাগলো।
আমার বন্ধুর ভাই এই মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে। তাই ওকে আমি ফোন দিলাম সকল ঘটনা জানার জন্য, ও আমাকে বলল যে ডাক্তার গুলি করেছে। তার নাম ডাক্তার রায়হান শরীফ। আর এই ডাক্তার রায়হান শরীফ স্যার প্রতিদিনই ক্লাসে পিস্তল নিয়ে আসতো। মাঝে মাঝে বিদেশি ছুরি নিয়ে আসতো এবং আমাদের অনেক ভয় দেখা তো। সে বলতো আমার কিছুই করতে পারবি না। যার কারণে সকল শিক্ষার্থী তাকে দেখে খুবই ভয় পেতো।এর আগে এই ডাক্তার রায়হান শরীফের নামে অধ্যক্ষর কাছে কমপ্লেন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষ এর কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কারণ সে ছাত্রলীগের খুব বড় একজন নেতা ছিল এবং খুব প্রভাবশালী লোক। যার কারণে তাকে দেখে সবাই ভয় পেত এবং সে সবসময় পিস্তল নিয়ে এই মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে আসতো এবং ক্লাসে নিতো। আর সকল শিক্ষার্থীদের তিনি অনেক ভয় দেখাতেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারত না তার এই ক্ষমতার কারণে।
এই রায়হান শরীফ ডাক্তার ছিলেন মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যক্ষ। আর ৪ তারিখে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছিল ভাইবার,আর এই ভাইভা পরীক্ষার শরীর স্যার ভাইভা নিচ্ছিল এবং সে অনেকবার বলতে ছিল আজকে ভাইবা ভালো না হলে দেখেনেবো তোদের। আজকে তোদের কিছু একটা করব। আর যে শিক্ষার্থীকে গুলি করেছে তার নাম ছিল আরাফাত আমিন তমাল। আর এই আরাফাতকে স্যার প্রথম থেকে টার্গেট করেছে।আরাফাকে তেখতেই পারতো না কোন এক কারণে । তাভ পরীক্ষা নেওয়ার আগেই বলেছিল তোকে আজকে দেখে নিব, তোকে আমি আজকে শুট করে দিব। তো স্যার ভাইবা নেওয়া শুরু করে দিল এবং টেবিলের উপরে বন্দুক রাখল লোড করে। এটা দেখে কেউ কি আর ভালোভাবে ভাইবা পরীক্ষা দিতে পারবে। তারপরে অনেকেই ভাইভা পেয়েছে এবং এই তমাল যখনই আসলো ভাইবা দিতে আর তখনই স্যার হুট হাট প্রশ্ন করল। স্যারের প্রশ্নের অ্যানসার দিতে পারছিল না। স্যারের মাথা হয়ে গেল গরম। যার কারণে স্যার অনেক বকাবকি মুখোমুখি শুরু করে দিল। আর তমাল রাগ করে ক্লাস রুম থেকে বের হতে যেতে যাচ্ছিলো। আর তখনই শরীফ স্যার তমালকে উদ্দেশ্য করে গুলি করে দেয়। তমাল একটু দৌড় দিয়েছিল যার কারণে গুলিটা ওর পায়ের উরুটে লেগে যায় এবং তখনই ওখানে শুয়ে পড়ে। আরও অনেক শিক্ষার্থীরা তখন দৌড়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়।
সাথে সাথে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। কলেজের সকল স্যাররা একসাথে চলে আসে এবং কলেজের প্রশাসনিক যে পুলিশ ছিল তারাও চলে এসে। শরীফ স্যারকে একটি রুমে নিয়ে রেখে দেওয়া হয়। আর এই তমালকে সাথে সাথেই ইমারজেন্সি অপারেশন রুমে নেওয়া হয় এবং অপারেশন শুরু করে দেওয়া হয়। আর এই নিয়ে যেন কলেজ ক্যাম্পাসে এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং আন্দোলনের নেমে পড়ে সকল শিক্ষার্থীর। কারণে এই শিক্ষকের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে তাদের। আজকে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে পড়েছে। এতদিন ভয়ে চুপ করে ছিলো।
সাথে সাথে সিরাজগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, ডিবি গিয়ে সেই রায়হান শরীফ স্যারকে ধরে নিয়ে আসে এবং তাকে তল্লাশি করে তার কাছ থেকে দুটি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও অনেক বিদেশি চুরি উদ্ধার করে। আসলে সে স্যার নামে যেন পুরো একজন সন্ত্রাস এবং অস্ত্রের কারখানা তৈরি করেছে। তার এই সন্ত্রাসীর কান্ডের বহু দিন হতেই করে আসছে।সাথে নিয়ে থাকতেন তাও এগুলো লাইসেন্স নেই । একজন ডাক্তার, একজন শিক্ষক, সে কিভাবে এই অস্ত্রগুলো নিয়ে থাকতে পারে এবং তার শিক্ষার্থী তার ছাত্রকে গুলি করতে পারে। সে তো সাধারণ মানুষকে যখন তখন গুলি করতে পারে পাখির মতো, এটাই যেন সমাজের প্রশ্ন। আসলে একজন স্যার কিভাবে এতটা ভয়াবহ রূপ নিয়ে আমাদের সমাজে থাকে, আমাদের সমাজের কি অবস্থা হবে সেটাই যেন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
আপনার পোস্ট পড়ে তমাল এর জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া একটা শিক্ষা ব্যবস্হা যদি এমন হয় তাহলে দেশ কিভাবে চলবে।আর এমন শিক্ষকের আমাদের সমাজে কোন প্রয়োজন নেই। আসলে সন্ত্রাস তো ভালো কথা এত সন্ত্রাসের ও উপরে আরো কিছু। সত্যি বলেছেন ভাইয়া ক্ষমতা কোনদিন চিরস্থায়ী হয়না। এই শিক্ষকের কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। এরকম কথা আমি কখনো শুনি নাই যে শিক্ষক ছাত্রকে গুলি করেছে।মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে এরকম ঘটনা সত্যি যে কোন মানুষ শুনলে তার কাছে খারাপ লাগবে। যাই হোক ছাত্রটির পায়ে গুলিয়ে গেছে এই কারণে তার কোন বড় আকারে সমস্যা হয় নাই। তবে একজন শিক্ষক থেকে ছাত্ররা কি শিখবে। পড়ালেখা নাকি সন্ত্রাসী। যাই হোক তাকে আইনের আওতায় এনেছে ভালোই করল। বাস্তব একটি ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।