স্মৃতির পাতা থেকে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখার গল্প//পর্ব-৩(শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখার অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ ছিলো। গ্রাম অঞ্চলে এই নৌকা বাইচের আয়োজন প্রতিবছরই করা হতো। আর ছোটবেলা বন্ধুদের সাথে এসেই নৌকা বাইচের দেখার অনুভূতি অসাধারণ ছিল। যখন আমাদের গ্রাম থেকে সবাই একসাথে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়েছিলাম সেই মুহূর্তটা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। আসলে বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতির মধ্যে এই নৌকা বাইচ দেখার অনুভূতি অসাধারণ ছিলো।সেই দিন কথা খুবই মনে পড়ে, তাই বন্ধুদের সাথে নৌকা বাইচ দেখার অনুভূতির গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের তৃতীয় পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি শেষ পর্বের গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে, তো বন্ধুরা চলুন গল্পটি পড়া শুরু করা যাক।


boat-5889919_1280.png

source

ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ যখন সেমিফাইনালে আমাদের সিরাজগঞ্জ বিজয়ী হলো। তখন আমাদের সিরাজগঞ্জের সকল মানুষ আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠল। কারণ তাদের তখন আশা ছিল যে ফাইনাল বিজয়ী হবে।তাদের আশা ছিলো অবশ্যই আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলার চ্যাম্পিয়ন হবে। আর ঐতিহ্যবাহী এই ফাইনাল খেলা অনুভূতি অসাধারণ ছিলো। সকলেই যেন দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। সত্যি নদীর পাড় দিয়ে হাজার হাজার মানুষ এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য এসেছিল। তাই ফাইনাল খেলার আরম্ভ হলো শুক্রবারে। সকাল থেকেই আমরা এই নদীর পাড়ে খেলা দেখার জন্য এগিয়ে গেলাম। আসলে বন্ধুদের আগে থেকে বলা হয়েছে এই খেলা মিস করা যাবে না। তাই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখার জন্য আমরা শুক্রবারে নামাজের আগে নদীর পাড়ে আসলাম।অনেক মানুষ অনেক সকালে এসে নদীর পাড়ে বসে ছিল। এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য সবাই অপেক্ষা করতে লাগলো।


এই নৌকা বাইচ শুরু হবে দুপুর ২ টা থেকে। আমরা সকাল ১১:০০ টার সময় এসে পৌঁছেছি এবং কেউ কেউ সকাল আটটা থেকে এসে নদীর পাড়ে এসে পৌঁছেছে। আসলে সকলেই এত আনন্দের সাথে উপভোগ করতে ছিল এবং অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এসেছে, রাজশাহী জেলা থেকে মানুষ এসেছে এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য। আর আমাদের সিরাজগঞ্জের যে নৌকা বাইচ হয়েছিল তারা অনেক বড় একটি নৌকা ভাড়া করে নিয়ে এসেছে এবং অনেকে ভালো মানের মাঝিও তারা ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। কারণ সিরাজগঞ্জ জেলার বিজয় হওয়ার প্রধান লক্ষ্য ছিল। সকলে একটাই চাওয়া যেন ভাবে হোক এই নৌকা বাইচের বিজয়ী হওয়া।ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ ছিল তখনকার মধ্যে সবচাইতে আনন্দের এবং উৎসবের একটি মুহূর্ত। তাই এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য নদীর পাড় দিয়ে হাজার হাজার মানুষ এবং আমরা গতবার যে নৌকায় করে উঠে নৌকা বাইচ দেখেছিলাম সেই চাচার সাথে আবারো আমরা যোগাযোগ করলাম এবং তার নৌকাতে আগে থেকেই আমরা উঠে থাকলাম।


boats-3051610_1280.jpg

source

তারপরে তিনটার সময় প্রধান নৌকা বাইচের প্রতিযোগিতা শুরু হলো। আমাদের সিরাজগঞ্জ আর রাজশাহী জেলার সাথে এই নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছিল। রাজশাহীরা অনেক সুন্দর একটি নৌকা নিয়ে এসেছিল এবং বোঝা যাচ্ছিল তারাও অনেক প্রতিযোগিতায় বিজয় হয়েছে।আর আমাদের সিরাজগঞ্জের নৌকাটি অনেক ভালো ছিল প্রতিযোগিতা সময় এত আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে ছিল। যা বলার মতো না, সবাই যেন চারপাশ থেকে চিৎকার করতেছিল, এই নৌকা বাইচ আরম্ভ হওয়া থেকেই আমাদের নৌকাটি এই নৌকার সাথে যাত্রা শুরু করলো। যার কারণে নৌকা বাইচ এর মূহুর্ত উপভোগ করতে লাগলাম। হাজার হাজার মানুষ নদীর পাড় দিয়ে হাততালি দিচ্ছিল আর এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে ছিলো।


নৌকা বাইচে সেই মুহূর্তগুলো বন্ধুদের সাথে আনন্দের সাথে উপভোগ করতেছিলাম। আসলে নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করেছে এত আনন্দ উৎসব হয় সেটা আমি প্রথম উপভোগ করেছি। আর আমাদের সিরাজগঞ্জের এই নৌকাটি আগে উঠে গেল অর্থাৎ নৌকাটি বিজয়ী হয়েছে।তখন আনন্দ উল্লাসে নদীর পাড়ে মানুষ চিৎকার করতে লাগলো। সকলের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। সবাই যেন আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠল। নদীর পাড়ে মানুষ হাজারও মানুষ দেখতে পেয়ে যেন কত ভালো লাগলো। সকল মানুষ অনেক আনন্দের সাথে সেই মুহূর্ত উপভোগ করতে লাগলো। আসলে এভাবে উৎসব মুখর পরিবেশ আমি প্রথম দেখেছিলাম, যার কারণে সেই দিনগুলো যেন আমার স্মৃতির পাতায় রয়ে গেছে। এই দিনটি কখনো ভলার নয়। আসলে নদীর পারে এবং নৌকায় হাজারো মানুষ ছিল সকলেই যেন এই উৎসবে মেতে উঠেছিলো।এত ভালো লাগতেছিল যা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমিও অনেক আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করেছি।

আমাদের সিরাজগঞ্জ নৌকা বিজয়ী হয়েছে যার কারণে আমরা সকলে আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে ছিলাম। আর বিজয়ী এই নৌকা মাঝিদের পুরস্কার দিতে দিতে সন্ধান নেমে আসলেও। সন্ধ্যাবেলা বিজয় নৌকার সকলকে মেডেল দেওয়া হল এবং একটি বড় ফ্রিজ পুরস্কার করা হলো। আর এই ফ্রিজটি নিয়ে আমাদের গ্রামের মানুষ যেন আনন্দের সাথে আসতে লাগলো। সত্যিই সেই মুহূর্তগুলো খুবই ভালো লেগেছিল এবং অনেক রাত হয়েছিল বাড়িতে আসতে। তবে বিজয়ী হয়েছিল জেনে আমাদের গ্রামের মানুষ এবং আশেপাশের সকল গ্রামের মানুষ অনেক আনন্দের সাথে সেই দিনটা উপভোগ করেছে। আর এই দিনগুলো যেন আমার স্মৃতির পাতায় রয়ে গেছে আজীবন। তাই স্মৃতিময় এই গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করছি আমার এই গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই পরবর্তীতে আবারও আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতা থেকে ভিন্ন কোন গল্প নিয়ে হাজির হবো।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইলো।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

নৌকা বাইচ কখনো সরাসরি দেখা হয়নি তবে টিভিতে অনেক বার দেখেছিলাম। কিন্তু আমার অনেক ইচ্ছে অনেক কাছ থেকে দেখার আবার আপনাদের এদিকে খেলা হলে দাওয়াত দিয়েন। যেন আমরা এই আনন্দ উপভোগ করতে পারি। নৌকা বাইচ খেলায় আপনাদের সিরাজগঞ্জ বিজয়ী হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। নিজের গ্ৰাম এমন একটি ঐতিহ্যবাহী খেলায় বিজয়ী হলে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। ধন্যবাদ এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

আপনার সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🌻🌹

 11 months ago 

গ্রাম অঞ্চলে নৌকা বাইচের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।আমাদের ওখানেও কালি পূজার সময়ে নৌকা বাইচ হতো।অনেক মানুষের ভিড়ে ছোটবেলায় নৌকা বাইচ দেখতে খুবই ভালো লাগতো।বিশেষ করে নৌকায় বসে নৌকা বাইচ দেখার মজাই আলাদা।আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।

 11 months ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 63441.26
ETH 2477.91
USDT 1.00
SBD 2.64