এলাকার উন্নয়ন করতে গিয়ে জীবন অবসান (শেষ পর্ব)
দেখতে দেখতে চলে আসে ১৬ই ডিসেম্বরের সেই রাত। শফিক রাত একটার দিকে তার ইউনিয়নের একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়িতে ফিরছিলো। শফিক সব সময় মোটরসাইকেলে চলাফেরা করে। তার সাথে লোকজন বলতে মাত্র একটা ছেলে থাকে। শফিক যে এলাকাতে গিয়েছিলো সেখান থেকে ফেরার সময় একটা নির্জন জায়গা পরে। নির্জন সেই রাস্তার দুই পাশ দিয়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। মাদক ব্যবসায়ীরা ঠিক করেছে এ নির্জন জায়গাতেই তারা শফিককে হত্যা করবে। মাদক ব্যবসায়ীদের একজন লোক শফিকের পেছনে আগে থেকেই লাগানো ছিলো তার খোঁজখবর নেয়ার জন্য। সে মোবাইলে মাদক ব্যবসায়ীদের কে জানায় শফিক এখন সেই জায়গার দিকে রওনা দিচ্ছে।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে মাদক ব্যবসায়ীরা সবাই রাস্তার দুই পাশে গাছের আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে থাকে। আর রাস্তার ভেতরে এক ধরনের পেরেক ফেলে রাখে। যেগুলোর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলের চাকা ফুটো হয়ে যাবে। তারা সবকিছু রেডি করে শফিকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা একটা মোটরসাইকেলের হেডলাইটের আলো দেখতে পায়। তারা বুঝতে পারে শফিক আসছে। তখন সবাই প্রস্তুত হয়ে থাকে। শফিকের মোটরসাইকেল যখন তাদের সামনে দিয়ে পার হচ্ছিলো ঠিক তখনই সেই পেরেকে শফিকের মোটরসাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে যায়। হঠাৎ করে চাকা পাংচার হওয়াতে মোটরসাইকেল কাত হয়ে শফিক এবং তার সহকারি মাটিতে পড়ে যায়।
সাথে সাথে দুই পাশ থেকে মাদক ব্যবসায়ীর এবং তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা এসে শফিককে ঘিরে ফেলে। তারপর শহর থেকে ভাড়া করা সেই সন্ত্রাসী শফিকের মাথা এবং বুক লক্ষ্য করে কয়েকটা গুলি করে। গুলি করার পরে সে চেক করে দেখে যে শফিক জীবিত আছে কিনা। যখন নিশ্চিত হয় শফিক মারা গিয়েছে তখন তারা সেই স্থান ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় তারা শফিকের সহকারীকে বলে যায় যদি তুই এই ব্যাপারে কারো সাথে কোনো কথা বলেছিস। তাহলে তোকেও শফিকের মতো এই দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেবো। সেই ছেলেটা ভয়ে তাদেরকে কথা দেয় আমি এই ঘটনা কারো কাছে বলবো না। এই কথা বলে ছেলেটা সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আর নির্জন রাস্তার উপরে শফিকের মরদেহটা পড়ে রয়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
এই দুনিয়াতে ভালো কাজের দাম নেই। ভালো কাজ করলেই সেখানে কষ্ট পেতে হয়। নয়তো বিশাল বড় ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। শুরু থেকে শফিক সবার ভালো চিন্তা করে এসেছে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীরা তো আর নিজেদের ক্ষতি হওয়া দেখতে পারে না সেজন্যই মূলত শফিককে হত্যা করে ফেলল। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের হয়তো কোন বিচার হবে না। কারণ কে বা কারা হত্যা করছে সেটা শফিকের সেই সহকারী ও জানাবে না কাউকে। অবশেষে ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে শফিক মৃত্যু উপহার পেল।
গল্পের পরিসমাপ্তিটা খুবই দুঃখজনক। মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে শফিকের মৃত্যু মেনে নেওয়ার মতো নয়। প্রতিটা সমাজে মাদক ব্যবসায়ীরা উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাদেরকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সুবিধামতো পেলে তাদেরকে হত্যাই করা হয়। আপনার ধারাবাহিক পোস্টগুলো পড়েছি এবং শেষ পর্যন্ত অনেক দুঃখ পেয়েছি। বাস্তব সম্মত একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।