নারী শিক্ষিকাও সেরা হয়||
আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।
এই বিষয়টি আমারও ছিল।আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তাম।তখন এক নারী শিক্ষিকার বাসায় পড়তে যেতাম।আমার মনে আছে তখন শীতকাল ছিল,তিনি কম্বলের মধ্যে শুয়ে আমাকে পড়াতেন।বেশিদিন এজন্য তার নিকট পড়াও হয়নি আমার।এমন অবস্থা ছিল যে তিনি রান্নাও করতেন সংসারের কাজও করতেন আবার আমাকে পড়াতেন।তো এই বিষয়টি আমার ভালো লাগতো না।তাই আর তখন থেকে কোনো নারী শিক্ষিকার কাছে পড়া হয়নি। এই ধারণা আমারও ছিল যে,নারী শিক্ষিকারা ডেডিকেটেড না তাদের কর্মে।
তারপর একে একে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করলাম পুরুষ শিক্ষকের কাছেই সব কোচিং,টিউশন পড়ে।কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে মনের মতো শিক্ষক পাওয়া হয়নি সব বিষয়ের।যখন অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হলাম।আমার তো গনিত বিষয় ,তাই আমার সেইভাবেই শুরু থেকে টিউশন পড়তে হয়েছিল ।কেননা টিউশন না পড়লে তো গনিত পারা যাবেনা।এখানেও আমি একজন পুরুষ শিক্ষকের কাছেই পড়তে গেলাম।এখন এখানে স্যার এর পড়া ভালোই লাগতো প্রথমের দিকে।তারপর করোনা তে বন্ধ হলো। সব শুরু হলো আমার অনলাইনে টিউশন পড়ার দিন।এভাবে করে প্রথম বর্ষ শেষ হয়ে গেল।তারপর দ্বিতীয় বর্ষের দিকে গিয়ে মনে হতে লাগলো আমার সব গনিত ক্লিয়ার বুঝা হচ্ছেনা।কেননা স্যার বেশিরভাগই বাড়ির কাজ দিতেন।এটা আমার জন্য অসুবিধা হয়ে যেতে লাগলো। অনেকেই ভালো গনিত শিখতে পারতো কিন্তু আমার শেখা হয়ে উঠতো না।
দেখুন একটা বিষয়, সবাই কিন্তু সমান মেধার না।আমাদের এক একজনের ধারণক্ষমতা এক একরকম।কেউ একটা বিষয় বুঝতে এক মিনিট নেয় কেউবা ১০ মিনিট।আমি আবার এই ১০ মিনিটের দলের লোক।আর আমার মতো এরকম আরো বহু শিক্ষার্থী রয়েছে আমাদের দেশে।কেননা অনেক শিক্ষার্থী আমরা এক ব্যাচে পড়ছি।এদের মধ্যে ছেলে মেয়ে উভয়েই রয়েছে ।তাদেরও আমার মতো একই অভিযোগ ,সব গনিত বাড়ির কাজ দেওয়ার এবং সঠিক ভাবে না বুঝানোর।
তারপর অনলাইনে ইউটিউব থেকে হঠাৎ একদিন আমি আমার প্রিয় শিক্ষিকার ক্লাস দেখতে পাই,আর দেখে খুবই ভালো লাগলো ।গনিত বুঝানোর ধরন একটা লাইনের পরে একটা লাইন কিভাবে এলো।তারপর গণিতের উচ্চ পর্যায়ের ক্যালকুলেশন এবং তার সঠিক ব্যখ্যা।যেগুলো স্যার এর থেকেও শেখা হয়নি, অত ডিটেলস ব্যখ্যা করেন না তো সবাই।তারপর আমার দেখা বেস্ট শিক্ষিকা হলেন তিনি। সবসময় ম্যাম তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পড়ান আমাদের।তার ছোট দুই বছরের বাবুও আছে কিন্তু এতদিন ক্লাস করার সময় কখনো দেখিনি তাকে।
একজন সৎ, আদর্শবান নারী শিক্ষিকা আমার দেখা তিনি।তার কাছে পড়ার সুযোগ আমার এই অনলাইনের মাধ্যমেই হলো। করোনাতে অনলাইনের কল্যাণে এই একটা দিকে আমার উপকার হয়েছে বলা যায়।তিনি আমার কলেজ জীবনে পাওয়া সেরা শিক্ষিকা।আজকে এই বিষয় নিয়ে লিখতে আসা এইজন্যই যে, আমাকে আমার ব্যাচের একজন মেয়ে স্টুডেন্ট জিজ্ঞেস করে আমি কোথায় গনিত পড়ি।তখন ম্যাম এর কথা বললে একটু অদ্ভুত আচরণ অনুভব করলাম।তো আমাদের সমস্যায় হচ্ছে আমরা নিজেরা মেয়ে হয়েও অন্য মেয়েদের ছোট মনে করি। তাই সবাইকে বলবো,নারী শিক্ষিকাও সেরা হয়।শুধু সেরাটা খুঁজে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু। আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
VOTE @bangla.witness as witness
আমার তো মনে হয় দশটি ছেলে একত্রে একই বিছানায় ঘুমাতে পারে। আর দুজন মেয়ে এক সাথে হলেই কিন্তু সে খানে আর কেউ থাকার জোড় নেই। মানুষ তার যোগ্যতায় যে যার স্থান তৈরি করে নিতে পারে। হউক না সে নারী। নারী বলে কি তার কোন যোগ্যতাই থাকবে না। বেশ ভালো লাগলো আপু আপনার সেই গনিত শিক্ষকের কথা পড়ে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আমি মনে করি নারী পুরুষ উভয়ই সমান। আপনি একদম যথার্থ বলেছেন, অনেক মানুষ শিক্ষিকাদের কাছে টিউশন পড়তে চায় না,কারণ ভাবে যে সংসারের কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে, তাই ভালোভাবে বুঝাতে পারবে না। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। শিক্ষকেরা ভালোভাবে পড়াতে পারবে এবং শিক্ষিকারা ভালোভাবে পড়াতে পারবে না, এটা মোটেই যুক্তিসঙ্গত কোনো কথা না। ভালো মন্দ সব জায়গায় আছে। নিজেদের জন্য কোনটা ভালো হবে, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে নিজের জন্য খুব ভালো হবে। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শিক্ষিকা হিসেবে নারীরা ভালোই, বর্তমান সময়ে সবাই পড়াতে চায় সত্যিকার অর্থে শিক্ষক শিক্ষিকা খুব কম। তবে আপনি মনের মত একজনকে পেয়েছেন অনলাইনে এটা খুব ভালো লাগলো।