প্রেম অতঃপর ভয়াবহ মৃত্যু||
আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি লেখা নিয়ে হাজির হয়েছি।যেটা আজ থেকে ১৪ বছর আগে ঘটেছিল।তো চলুন বন্ধুরা লেখাটি শুরু করা যাক।তখন ২০১০ সাল,পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ছি আমি।সেদিন আমাদের স্কুল খুব তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যায় কোনো একটি কারণে।আনুমানিক ১১ টা ছিল সময়টা।আমি আর আমার বান্ধবী তানজিলা স্কুল থেকে বাজার দিয়ে আসছিলাম।আর ওই বাজারটি ছিল একদম নদীর পাশে।আমরা ব্রিজের উপর থেকে মানুষের প্রচন্ড ভিড় দেখে সেখানে যায়।এরপর গিয়ে যেটা দেখি তার জন্য আমরা দুজনের একজনও প্রস্তুত ছিলাম না।একটি কাটা হাত কনুই পর্যন্ত ছিল।অর্থাৎ হাতের অর্ধাংশ।মেহেদী আর নেল পলিশ পরা হাতটা দেখে সেদিন বাসায় এসে আর কোনো কিছু সহজভাবে হচ্ছিলনা। সবসময় অস্থিরতা কাজ করছিল মনে।জীবনে এরকম কোনো কিছু প্রথমবারই দেখা ছিল সরাসরি।
পরের দিন জানতে পারি মেয়েটির ভয়াবহ মৃত্যু নিয়ে।আসলে মেয়েটিকে তার প্রেমিক মেরে ফেলেছিল।তখন সময়টা জুন-জুলাই ছিল।আপনারা জানেন ওই সময়টা পাটের সময়।সাধারণত আগেকার দিনে পাটের সময় মার্ডার,গলাকাটা এদের উপদ্রব এর কথা শোনা যেত।আসলে মেয়েটিকে বিয়ের আগের দিন শেষ বারের মত দেখা করতে যায় তার প্রেমিকের সাথে।পরিবারে চাপে অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল মেয়েটির।তাই তার প্রেমিক শেষ বারের মতো তার সাথে দেখা করতে রাতে ডেকেছিল।তারপর মেয়েটির সাথে ঘটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।মেয়েটিকে মেরে ফেলা হয় এবং তার শরীর টুকরা করে কাটা হয়।তারপর সেগুলো পলিথিনে করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।আমরা যেই এলাকায় থাকতাম ওই নদী দিয়ে মেয়েটির কাটা হাত এসে আটকে যায়।এই ঘটনাটি আমদের ওই এলাকা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বের একটি জায়গায় ঘটেছিল।তারপর স্থানীয় লোকজন হাতটিকে নদী থেকে তুলে বাজারের পাশে রাখে।এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেয়।
মানুষ কতটা ভয়াবহ হলে এরকম করতে পারে।এখানে মেয়েটির কোনো দোষ ছিলনা, যেটা আমার মনে হয়।যদি মেয়েটি তার প্রেমিককে গুরুত্ব না দিত তাহলে তার সাথে রাতে কখনোই দেখা করতে যেত না।কিন্তু তার প্রেমিকের চিন্তা ছিল সে আমার না মানে কারো না।কিন্তু সে চাইলে গল্পটি অন্যভাবে হতো।পারিবারিক চাপ সবজায়গায় থাকে কিছুদিন পর সেটা ঠিকও হয়।মেয়েটিকে সেদিন নিয়ে অন্যত্র চলে গেলে তাদের প্রেমের গল্পটি একটি সাকসেস পেতে পারত।ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ছেলেটি তো আর বাঁচতে পারলো না,অন্যদিকে মেয়েটিও না।দুই পরিবার তাদের প্রিয়জন হারালো।দুইটা জীবন অকালে ঝরে গেল।মেয়েটি একটি সাইকোপ্যাথের প্রেমে পড়েছিল যার কাছে জীবনের মূল্য নেই।তাই মেয়েদের সতর্ক থাকতে হবে যেকোনো বিষয়ে এগোতে হলে ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অবগত হতে হবে।যদিও জন্ম মৃত্যু সৃষ্টিকর্তার হাতে তবে এই ধরনের মৃত্যুগুলো মেনে নেওয়া অসম্ভব।সেদিনের সেই ঘটনাটি আজও আমার মনে পড়ে।অর্ধ কাটা হাতটি পানিতে প্রায় দুই তিনদিন থেকে অনেকটা ফুলে গিয়েছিল।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।
Post by-@rahnumanurdisha
Date- 3rd June,2024
VOTE @bangla.witness as witness
OR
VOTE @bangla.witness as witness
খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। এমন ঘটনা আরও অনেক শুনেছি। আমার মনে হয় দুজন মানুষের মধ্যে সন্দেহের জের ধরেই এমন ঘটনা ঘটে। যাই হোক এই প্রেমের পরিনতি অন্য রকমের হতে পারতো। কিন্তু কি হলো মাঝ খান হতে দুটো জীবনই নষ্ট হলো। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
জি আপু শুনেছি এরকম ঘটনা।তবে সরাসরি দেখার অভিজ্ঞতাও ছিল।মেয়েটা প্রেম না করলে তার ওরকম মৃত্যু হতোনা হয়তোবা।
বেশ মর্মান্তিক একটি ঘটনা শুনে যেন গায়ের কাটা শিউরে উঠে। মানুষ কিভাবে পারে একটা মানুষকে টুকরো করতে এটা মাঝেমধ্যেই ভাবি। আসলে প্রেম করলে মানুষ অন্ধ হয়ে যায় সেজন্য অন্য কিছু চিন্তা করতে পারেনা। ছেলেটি হয়তো ভেবেছে আমি যাকে পাবোনা তাকে আমি কাউকে হতে দিব না। কিন্তু এটা তো আসল সমাধান নয় এটা একপ্রকার পাগলামি। এখন তো আরো হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে মাঝেমধ্যে নিউজ শোনা যায় অনেক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের।
আপনি শুধু লেখা পড়লেন ভাইয়া মেয়েটির ওই হাত আমি দেখেছিলাম কি মর্মান্তিক একটি ঘটনা যেটা বলার মত না।
ভীষণ ভয়ংকর গল্প আপু।একদমই ভালোবাসতো না ছেলেটি যদি সত্যি ভালোবাসতো তবে মেরে ফেলতে পারতো না।মেয়েটিকে নিয়ে পালাতে পারতো।মেয়েটি অবশ্যই ছেলেটিকে ভালো বাসতেন নইলে দেখা করতে যেতেন না।মানুষ কতোটা ভয়ংকর হয়। ধন্যবাদ আপু গল্পটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
জি আপু সাইকো ছিল,ধন্যবাদ আপনাকে।
ছেলেটা আসলেই সাইকোপ্যাথ ছিল, না হলে এমন ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে না। পরিবারের চাপে মেয়েদের অন্য জায়গায় বিয়ে হতেই পারে, তবে সে যদি ভালো বুদ্ধিমান ছেলে হতো তাহলে হয়তো ওই রাতেই তাকে নিয়ে পালিয়ে যেত। তাই বলে তাকে এভাবে হত্যা করার মানে কি! আর মেয়েটি যদি তাকে ভালো না বাসতো, তাহলে তো রাতের বেলা দেখা করতে আসারও কথা নয়। এত বড় একটা ভুলের জন্য দুটো পরিবারকে পস্তাতে হচ্ছে সারা জীবন।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া,আপনি কিন্তু বুদ্ধিমান আছেন যা বুঝলাম আপনার কমেন্ট পড়ে।