স্কুল লাইফে বন্ধুদের সাথে কম্পিটিশন নিয়ে মজার স্মৃতি(শেষ পর্ব )||

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।


ছবির উৎস

অন্যান্য পোস্টের ভিড়ে এই গল্পের শেষ পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়ে ওঠেনি।তাই ভাবলাম আজকে গল্পটির শেষ হোক।গত পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমার বন্ধুদের সাফল্যের বিষয় কম্পিটিশন করে পড়ার পর।এটি আমার নতুন স্কুলের ছিল।তবে পুরাতন স্কুলের বান্ধবী যারা ছিল কেউ এ প্লাস পেয়েছিল না।শুধুমাত্র শাফিন পেয়েছিল যার সাথে কম্পিটিশন চলতো আমার।অষ্টম শ্রেণীতে ও এ প্লাস পেয়েছিল না।এজন্য ফরিদপুর শহরের একটি স্কুলে ভর্তি হয়ে ভালো করে এস এসসি তে।এখানে মজার বিষয় কি ছিল জানেন ।আমার আব্বুর সাথে ওর আব্বুর একদিন মার্কেটে দেখা হওয়ায় আমি শাফিনের রেজাল্ট জানতে পারি।কিন্তু শাফিন আমার রেজাল্ট আগে থেকেই জানতো ।আমার স্কুলের পুরো রেজাল্ট সিট অনলাইন থেকে ও দেখে নিয়েছিল আর এই কথা ওর আব্বু আমার আব্বুকে বলেছিল। মানে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে হেরে যাওয়া আবার অষ্টম শ্রেণীতে বেচারা মানতে পারেনি তাই আমাকে মনে রেখেছিল আরকি,হিহি।

এদিকে আমার কিন্তু ওর কথা মনে ছিলনা।পূর্বের স্কুলের কথা কার বা মনে থাকে। তাও পুরোপুরি তিন বছর আগের কথা।তাহলে বুঝুন বন্ধুরা,ছেলেরা কি পরিমাণ হিংসুটে হয়।সবসময় মেয়েদের হিংসুটে খেতাব দেওয়া হয়,যেটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য,হিহি।আমার এই গল্পের টুইস্ট আমার দুই বন্ধু ।যাদের গল্প শেয়ার করলাম কম্পিটিশন করে একে অন্যের থেকে ভালো করার যে জেদ সেটা আমাদের সবার জন্যই উপকারী ছিল।

এত গুলো পর্বে আমার সাফল্যের গল্প শুনলেন।সবজায়গায় আমি জিতেছি।কিন্তু এর ঠিক পরেই শুরু হয় আমার পতনের গল্প।আমি শহরের ভালো সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হই।তখন মেয়েরা সবাই মহিলা কলেজেই ভর্তি হতো বিজ্ঞানের যারা ছিল।আর আমার বন্ধুরা সবাই রাজেন্দ্র কলেজে,এটি ছেলেদের জন্য ভালো ছিল সেই সময়।এখন ছেলে মেয়ে উভয়েই ইন্টারমিডিয়েট পড়ে বিজ্ঞান বিভাগে । এরপরে আমাদের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা হয়।কেউ খুব একটা ভালো করতে পারেনা।তবে সবাই মোটামুটি পাস করে যায়।সবার জিপিএ ৩/৩.৫/৪ এর মধ্যেই।এতো ভালো রেজাল্ট করা শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট ইন্টারে এসে খারাপ হওয়ার কারণ অন্য কোনো একটি পোস্টে ডিটেইলসে শেয়ার করব।

আমাদের কলেজে ৪০০ সিট এর মধ্যে ৩৫০+ এ প্লাস ভর্তি হয়ে থাকে প্রতিবার।অন্যান্য বার রেজাল্ট গিয়ে দাড়ায় ১০০/১২০ জন এ প্লাস।তবে আমাদের বার পূর্ববর্তী সব রেকর্ড ভেঙে যায় ১৯ জন এ প্লাস পাই।এর মধ্যে শুধুমাত্র ফিজিক্সে ফেল করে ৬৪ জন শিক্ষার্থী।আর এই তালিকায় আমার নাম এসে যায়।অর্থাৎ আমার ফিজিক্সে সেকেন্ড পার্ট এ ফেল আসে।এখানে আমার নতুন স্কুলের সেকেন্ড যে ছিল সেও ফেল করে এই ফিজিক্সে দুই পার্ট এ।আর এজন্যই মোটামুটি বেঁচে যায় আরকি সবার বকা থেকে।তারপরেও এতো মানুষের এক্সপেক্টেশন নষ্ট করেছিলাম যে যার জন্য এখনো কথা শুনতে হয় লোকের।এবার ফেলের কথা বলি চলুন,আসলে ফেল করব এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল।আমি কখনোই ভাবিনি যে ফেল হয়ে যাবে আমার।তাহলে পরীক্ষা ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী বছর দেওয়ার চেষ্টা করতাম।অন্যদিকে আমার স্কুলের যে মেয়েটিও ফেল করেছিল।তার বিগত সব ক্লাসেই গোল্ডেন এ প্লাস ছিল রেজাল্ট।আর আমার শুধু এ প্লাস।তাই মিনিমাম পাশ এটা তো এক্সপেক্ট করতেই পারি যতই খারাপ করিনা কেন।

অন্যদিকে আমাদের ক্লাসে যারা একটু দুর্বল পর্যায়ের ছিল তারা সবাই পাশ করে যায়।এখানে আপনাদের একটি কথা বলি পড়াশুনায় ভাগ্য বলতে একটা বিষয় আছে।আপনারা ভাবতে পারেন হয়তোবা প্রেম রিলেটেড সমস্যা ছিল আমাদের।কিন্তু না এরকম কিছুই ছিলনা যেহেতু আমরা মহিলা কলেজে পড়তাম।আর আমাদের দুজনের বৈশিষ্ট্য একই ধরনের ছিল।অন্যদের সাথে খুব একটা কথা বলতাম না,এজন্য অনেকে মুডি মনে করতো।আসলে আমার এরকম নিজের কাছে কখনো মনে হয়নি যে আমি আর আমার সেই বান্ধবী এরকম ছিলাম।স্কুল পর্যায়ে থেকে শুরু করে সবসময় নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছিলাম।শুরুতেই আমার একটা থিম ছিল আমি কারো সাথে বন্ধুত্ব করতাম না ।কারণ আমার পরিবারে দেখেছি কয়েকজনকে বন্ধু বান্ধব তাদের জীবন দুর্বিষহ করে দিয়েছে।তাই সবসময় দুরত্ব মেইন্টেইন করেছি।

আমার আগের স্কুলের সবাই বর্তমান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ আর্টস এর কোনো কোনো সাব্জেক্টে পড়াশুনা করছে।আর ওই দুই বন্ধুর মধ্যে শাফিন একটি প্রাইভেট ভার্সিটি তে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ছে।আর রাজকিং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গণিতে অনার্স করছে।আমাদের স্কুলের সেকেন্ড গার্ল যে ফেল করেছিল ম্যানেজমেন্ট এ পড়াশুনা করছে সাইন্স থেকেই বেরিয়ে গেছে সে।আর আমার কথা তো সবাই জানেন ।এখন আর কারো সাথে যোগাযোগ নেই।এসব ঘটনার জন্য পুরোনো ফেসবুক আইডিটা ডিলিট করে দিয়েছিলাম।আর এরপর ওই শহর তো ছেড়েই দিয়েছি।তবে আমি বাদে সবাই একই শহরে একই ক্যাম্পাসেই আছে। আমাদের সবার কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বন্ধুদের সাথে সেইভাবে কোনো যোগাযোগ ছিলনা।শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ হতো।এজন্য পড়াশুনায় কোনো কম্পিটিশন ছিলনা একজনের সাথে অন্যজনের।যদি স্কুলের মতো সবাই এক স্যারের কাছে পড়া হতো তাহলে হয়তোবা সবারই ভালো করা সম্ভব ছিল।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date-1st June,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Sort:  
 2 months ago 

আসলে আমরা কিন্তু কমবেশি সবাই বন্ধুদের সাথে কম্পিটিশন করেই পড়ালেখা করতাম। তবে আপনাদের দেখি অনেক বড় কাহিনী। কিন্তু এত ভালো স্টুডেন্টরা একদম ফেল করবে এটা আসলে আশা করা যায় না। যে কিনা গোল্ডেন এ প্লাস এবং এ প্লাস এই দুইজন ছাত্রী কিভাবে ফেল করে। বিষয়টা আসলে একদমই মাথায় ঢুকলো না। তবে স্কুল কলেজের জীবন পেরিয়ে গেলে তখন আর কারো সাথে দেখা হয় না। আপনার স্মৃতিগুলো পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে।

 2 months ago 

জি কম্পিটিশন বেশ বড় কাহিনী ছিল আপু।ফেল এর জন্য অপ্রস্তুত ছিলাম🙂।অবশ্য ওইবার রেজাল্ট গরমিল হইছিল পুরো কলেজ এই।এতো ফেইল করেনা আবার এতো কম এ প্লাস ও পাইনা কোনোবার।

 2 months ago 

আমাদের সবার জীবনে কমবেশি এই মধুর স্মৃতিগুলো জড়িয়ে থাকে সারা জীবন। স্কুল কলেজের স্মৃতিগুলো বেশ ভালো লাগে মনে পড়লে। কিছু কষ্টের স্মৃতি থাকে আবার কিছু ভালো লাগার স্মৃতি থাকে। আপনার আজকের পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত পড়ে বুঝতে পারলাম। খুব সুন্দর একটি স্মৃতি শেয়ার করলেন আপনি আমাদের সাথে সেই স্কুল জীবনের বন্ধুদের সাথে কম্পিটিশনের। অনেক ভালো লেগেছে জানতে পেরে।

 2 months ago 

জি আপু,ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66094.73
ETH 3446.09
USDT 1.00
SBD 2.66