মানবিকতা কোথায়?
আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন? আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি লেখা নিয়ে।আমার আজকের লেখাটি অনেকটাই বাস্তবিক।তাই আশা করছি লেখাটি আপনাদের বেশ ভালো লাগবে।
আমার আজকের লেখাটি অনেকটাই বাস্তবিক বর্তমান সময়ে মানুষের এমন একটা হাল যে,একজন মানুষ দুর্বল হলে তার উপর চলে যতো ধরনের অবিচার।আমাদের সমাজে যারা একটু বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ আছেন,তাদের মধ্যে এই বিষয় গুলো সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।একজন অর্থহীন,দরিদ্র ব্যক্তিকে তারা মানুষের আওতায় ধরেন না। মোটকথা, যারা সমাজে দুর্বল শ্রেণীর তাদের সাথেই সকল অবিচার করে থাকেন সেই সমস্ত উচ্চবিত্ত লোকেরা।সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সেরা জীব হিসেবে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন,প্রত্যেককে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করার জন্য।কিছু লোকদের বেশি পরিমাণ অর্থসম্পদ দিয়েছেন এবং কিছু লোকদের সামান্য আবার কাউকে মেধাসম্পন্ন করেছেন আবার কাউকে মেধাহীন।কাউকে আবার করেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন।
প্রকৃতিকে ব্যালেন্স করার জন্য হয়তো সৃষ্টিকর্তার এই ধারাবাহিকতা যতদূর আমার মনে হয়।কেননা সবাই যদি ধনী হতো,তাহলে একজন মানুষের অন্যজনের নিকট যাওয়ার কোনো প্রয়োজন থাকতোনা। যাদের অর্থসম্পদ আছে,তারা যদি মানবিক হতেন তাহলে পৃথিবীতে কোনো পীড়ার সৃষ্টি হতোনা।একজন ধনী সহজেই একজন গরীব,দুর্বলের বন্ধু হয়ে পাশে থাকতেন।একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তির আপত্তিকর ভাষার প্রতিবাদ না করে তাকে খুশি করে বিদায় করে দিতেন যা তিনি চান।
আমার আজকের এই লেখাটি যে বিষয়কে কেন্দ্র করে,তা এখন আপনাদের মাঝে আমি শেয়ার করছি বন্ধুরা।গত শনিবার ঘটনাটি আমার বাসার নিচে ঘটে।
আমার বাসা যেহেতু রাস্তার সাথেই তাই বেলকনিতে দাড়িয়ে অনেক কিছুই দেখা সম্ভব হয়।সেদিন বিকেলে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন।বাসার নিচে মার্কেট হওয়ায় এখানে অনেক দরিদ্র লোকই আসেন সাহায্য নেওয়ার জন্য।ওই মানসিক ভারসাম্যহীন লোকটিও সেদিন এসেছিলেন এবং নিচে যিনি দোকানে ছিলেন তার কাছে টাকা চেয়েছিলেন। যার কাছে টাকা চেয়েছিলেন,তিনি বিত্তবান একজন ব্যক্তি।অনেককেই তিনি সাহায্য করেন,যেহেতু প্রচুর লোক আসেন।সেদিন পাগল লোকটিকে তিনি টাকা দেননি কোনো কারণে হয়তোবা।যেহেতু পাগল লোক,টাকা না পাওয়ায় রেগে যান এবং খারাপ ভাষায় গালমন্দ করেন,কিছুটা ধর্ম নিয়েও করেছিলেন।তারপর হেঁটে চলে যাচ্ছিলেন।আর ঠিক সেই মুহূর্তেই বেলকনিতে গিয়ে আমি দৃশ্যটি দেখতে পাই।তখন পাগল লোকটিকে মারতে দৌঁড়ে আসেন সেই বিত্তবান ব্যক্তি।তখন লোকটি হাতের কাছে বালি তোলা বেলচা পান,আর সেটি দিয়ে পাগল লোকটিকে খুব জোরে করে পিটান।
পাগল লোকটি বেশ বৃদ্ধা ছিলেন,এই ধরুন তার বয়স ৬০ থেকে ৭০ এর মধ্যে।লোকটি বেশ ব্যাথা পেয়েছিলেন কেঁদে ফেলেছিলেন।তাকে যখন মেরেছিলেন,অন্য লোকরাও ছিল তারা সেই বিত্তবান লোকটিকে বাঁধা দিচ্ছিলেন না মারতে।একজন শুধুমাত্র একটু বাঁধা দিচ্ছিলেন তাও নামমাত্র,ঠিকভাবে বাধা দিলে কোনোভাবেই তিনটি বাড়ি দিতে পারতেন না বেলচা দিয়ে। যিনি মেরেছিলেন তার মা এসে আটকান তাকে পরে। অতঃপর লোকটি ওখান থেকে যেতে পারেন।সেদিন যদি তার মা না থাকতেন,আরও খারাপ অবস্থা হয়ে যেতে পারতো পাগল লোকটির।লোকটি দরিদ্র,দুর্বল আর পাগল ছিলেন তাই সেদিন তাকে মার খেতে হয়েছিল।অন্যদিকে যিনি মেরেছিলেন,তাকে কেউ আটকান নি ঠিকভাবে ওই বয়স্ক লোকটিকে মারতে।আমাদের মানবিকতা কোথায় দাড়িয়ে এখন সেটা আসলে প্রশ্ন থেকেই যায়।আজকে ওই পাগল লোকটি যদি একটু বুদ্ধিসম্পন্ন হতেন তিনি তো কখনোই গালমন্দ করতেন না।এই স্বাভাবিক ব্যপারটা ওই বিত্তবান লোকটি কি বুঝেননি।আমার তো মনে হয় তিনি সবই বুঝেছিলেন,তাই তাকে মেরেছিলেন।কেননা তিনি জানতেন,তাকে মারলে কোনো সমস্যায় হবেনা কারণ সে দুর্বল সমাজে তার নিদ্দিষ্ট একটা জায়গা নেই।যেকোনো ধর্মেই পাগল,মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হয়,এই বিষয়গুলো তে রেগে যাওয়া ঠিক নয়, একজন বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তির।তাই আমার মনে হয় সেদিন পাগল লোকটিকে মেরে সেই বিত্তবান লোকটি মোটেও ঠিক করেন নি,কারণ তিনি পাগল এবং বৃদ্ধা ছিলেন।সেদিন পাগল লোকটিকে মেরে ঠিক করেছিলেন তিনি,আপনাদের কি মনে হয় বন্ধুরা?কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
VOTE @bangla.witness as witness
মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের পাশে যদি সবাই দাড়াতো তাহলে তারা এতটা অসহায় হত না। আসলে সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষগুলোর মানসিকতা আরো বেশি খারাপ। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভাল লাগলো। সত্যিই আপনি দারুন লিখেন।
ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন আপু আপনি আমাদের সমাজে এখন মানবতা উঠে গিয়েছে। আপনার বাসা যেহেতু মার্কেটের উপরে সে হত আপনি মানবিক ভারসাম্যহীন লোককে খুবই কাছ থেকে দেখেছেন। আসলে লোকটি গরিব হওয়ার কারণে হয়তো সেই লোকটির কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল খাবার জন্য। কিন্তু লোকটি পরবর্তীতে লোকটিকে মেরেছিল আসলে এই বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এমন বিষয় মনে হয় নিজে চোখে দেখাও পাপ। আমরা চেষ্টা করব একে অপরের সহযোগিতা করা এবং মানবিক হওয়ায়। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
একজন মানসিক ভারসাম্যপূর্ণ মানুষ যদি সেই ভারসাম্যহীন মানুষের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারতো তাহলে এই ধরনের কাজ করার মন মানসিকতা তাদের মধ্যে তৈরি হতো না। সত্যিই মানুষ হিসেবে নিজের জ্ঞানের সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত।
ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ ভুলবশত অনেক কিছুই বলতে পারে, তাই বলে আমরা যারা সুস্থ রয়েছি তাদের ব্যাপারটা অনেক সময় অন্যভাবে দেখা উচিত। একজন দুর্বল এবং মানসিক প্রতিবন্ধী মানুষকে এভাবে মারাটা আমার কাছেও মনে হয় না ঠিক হয়েছে। যিনি মেরেছেন লোকটাকে আমার তো মনে হয় যে উনি নিজেও একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। না হলে এরকম কাজ করবেন কেন। আসলে এরকম ঘটনা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়তই ঘটে। এই জন্য দেখতে দেখতে এখন কেমন জানি সয়ে গেছে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া এগুলো এখন সয়ে গেছে।কারণ প্রতিনিয়ত এটা হচ্ছে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সবসময় উৎসাহিত করার জন্য।
যদিও আপনার লেখাটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল তবে লেখাটা পড়ে অনেকটাই খারাপ লেগেছে। বর্তমান সময়ে বিত্তবান মানুষের সমাজের বুকে এমন ভাবে চলাফেরা করে যেটা দেখলে খারাপ লাগে কষ্ট হয়। তবে আমি জানি আমার এই খারাপ লাগা বা কষ্ট লাগা দেখে তাদের কিছু যায় আসে না, এটা আমার একটা সমস্যা। কিন্তু তাদের করা এরকম ছোট ছোট অত্যাচার আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না রক্ত গরম হয় মন চায় কিছু বলতে কিন্তু বলা আর হয়ে ওঠেনা। যাইহোক ভারসাম্যহীন ওই মানুষটাকে ওইভাবে মারাটা মোটেও উচিত হয়নি যে মেরেছে আমি তাকে একটা পশুর চোখে দেখি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া,ধন্যবাদ আপনাকে সবসময় সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।
সুন্দর সচেতন মূলক একটি পোস্ট আজ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার এ পোস্ট পড়ে অবশ্যই আমার একটু খারাপ লাগলো তবে আমাদের সমাজ যেন দিন দিন নষ্টের দিকে চলে যাচ্ছে। হালকা একটু ধন-সম্পদ হলেই যেন মানুষ আর মানুষের পরিচয় দেয় না। মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে। আর সামাজিক কিছু অবক্ষয়মূলক আচরণগুলো যেন মানুষকে সবসময়ই নিপীড়নের মধ্যে রাখে। যাইহোক এ বিষয়ে আমাদের মাঝে সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আশা করি অনেকে সচেতন হবে।
ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।