কিছু কিছু সময় চাহিদাটা সাধ্যের মধ্যেই থাকা ভালো।
৩০ ই জৈষ্ঠ্য ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
১৩ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ।
|
---|
মানুষের চাহিদা কিংবা বিলাসিতার একটা লিমিটেড থাকা উচিত।কিছু কিছু সময় চাহিদা বেশি হয়ে গেলে জীবনে কখনও কখনও অনেক বড় বিপদে পরা লাগে।
আমেনা ঢাকা শহরের মেয়ে। পড়াশুনা তেমন করেনি।আসলে ওর মা পৈত্রিক সম্পদ পেয়েছে সেই অনুসারে ঢাকা শহরে বাড়ি রয়েছে। যাই হোক আমেনার বিয়ে ঠিক হলো।অন্য জেলার ছেলের সাথে।আসলে ছেলেরা ভেবেছিলো ঢাকা বাড়ি আছে আমেনা কে বিয়ে করলে স্বচ্ছল ভাবে থাকতে পারবে।যাই হোক তাদের বিয়ে হলো তারা ঢাকাতে একটি ভাড়া বাসা ঠিক করলো।তার স্বামী টুকটাক ব্যবসা করে।তবে একদিন কাজ করলে আরেকদিন কাজ করে না।
প্রায় ঝগড়া হতো তাদের,আমেনা ও বেশ অলস প্রকৃতির ছিলো।একদিন তাদের মাথায় বুদ্ধি আসলো তারা টাকা ম্যানেজ করে তার জামাই কে বিদেশ পাঠাবে।তারপর আসলেই আত্নীয় স্বজনের কাছ থেকে টাকা
নিয়ে বিদেশের উদ্দেশ্য রওনা হলো।কয়েকদিন বেশ কষ্টে ছিলো তারপর আস্তে আস্তে সব ঠিকঠাক হয়ে গেলো।দেশে টাকা পাচ্ছে তারপর আমেনা স্বচ্ছল ভাবে চলছে তার পাশাপাশি নেওয়া টাকা গুলো শোধ করছে।কয়েকমাস পর তাদের লোন নেওয়া পাওয়া টাকা শেষ হলো।তারপর আমেনা শুরু হলো বিলাসবহুল জীবন যাপন শুরু হলো।তার বন্ধু বান্ধবী বেড়ে গেলো।বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি শুরু হলো।বড় বড় মার্কেট শপিং করা তার নেশায় পরিনিত হলো।এমন একটা অবস্থা হলো সে কারো থেকে হাওলাদ করে হলেও বিলাসী জীবন যাপন শুরু করলো।
একদিন হঠাৎ আমেনার স্বামী দেশে ফিরে আসলো আমেনাকে না জানিয়ে।আমেনা তো বেশ অবাক,প্রথমে ভেবেছিলো হইতো সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এসেছে কিন্তু কিসের কি সে একেবারে চলে এসেছে তার কোম্পানি পাঠিয়ে দিয়েছে এমনকি তারা একটা টাকাও দেয় নি।
এখন কি করবে তার কোন জমানো টাকা দেয়নি।কিভাবে চলবে কেমনে চলবে। তারপর আমেনা আবার চিন্তা করলো তাকে অন্যদেশে পাঠাবে ধার করে হলেও এবার বেশ ভালো টাকা ধার করে পাঠালো অন্য দেশে কিন্তু সে দেশেও ভাগ্য সহায় হলো না,সে দেশে কয়েকমাস থাকার পর ফিরে আসতে হলো এই দিকে যারা যারা ধার দিয়েছে তারা সবাই চাপ দিচ্ছে টাকার জন্য এখন কি করবে।
বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা উঠিয়ে অল্প কিছু টাকা পরিশোধ করেছে।কিন্তু আরো রয়েছে তাছাড়া তারা ঠিকভাবে চলতে পারছে না।
আর কি করবে তার ঢাকাতে সম্পদে রয়েছে সেটা বিক্রি করার চিন্তা ভাবনা।কিন্তু বিক্রি করতে গেলেও সমস্যা এখানে তার ভাই বোন ও রয়েছে তারা মানতে তারপর তো বিক্রি
।তারপর সবাইকে মানাতে পারলো সবাই বিক্রি করা টাকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জায়গা রাখলো কিন্তু সে বিলাসী জীবন যাপনের জন্য কিছুই করতে পারলো না।
আসলে হঠাৎ করে টাকা পয়সা হয়েছে কি রেখে কি করবে বুঝতে পারে না।কেউ কোন ভালো কথা বললেও কানে নেয় না।
আসলে আমাদের প্রত্যেকের উচিত অতীতকে মনে রাখা তার সাথে পাশাপাশি অব্যশই ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনা।যখন মানুষ তার অতীত কে ভুলে যায় ঠিক তখনই মানুষ পিছনে পরে যায়।
যখনই মোহ কাজ করবে তখনই খুব বিপদে পরতে হয়।আর সব সময়ই মানুষ যখন উপরের দিকে তাকাবে অর্থাৎ নিজ থেকে উপরের মানুষের চলাফেরা নিয়ে প্রতিযোগিতা করবে ঠিক তখনই মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।আর যখন মানুষ নিজে যেমন তার থেকে নিচের দিকের মানুষ দিকে তাকায় তাহলে জীবনে চলার পথে আর থেকে যেতে হয় না।এখন আমেনা
তার নিজের ভুলের জন্য নিজে ঠিক ভাবে চলতে পারছে না এমনকি নিজের সন্তানদেরও পড়াশোনা করাতে পারছে না।আমেনার কিছু কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারনে কতগুলো মানুষ আজ অসহায় এবং কষ্ট করছে।আমেনা নিজেও কষ্ট পাচ্ছে।তাই বলা যায় চাহিদাটা আয় অনুসারে ব্যয় করতে হয়।
আজ আর নয় ,আবার আসবো অন্য কোন দিন অন্য কোন পোস্ট নিয়ে ,সেই অব্দি সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।এই প্রত্যাশা নিয়ে শেষ করছি।
এতক্ষন সাথেই থাকার জন্য ধন্যবাদ
আমার পরিচয়
আমি রাহিমা খাতুন নেভি। আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর B.S .C করেছি। আমার ভালো লাগে নতুন নতুন জিনিস দেখতে এবং শিখতে।আমার বাংলা ব্লগের সাথে সকল নিয়ম কানুন মেনে থাকতে চাই।
Posted using SteemPro Mobile
সব সময় আমি মনে করি নিজেদের ভিতরে চাহিদাটা কম রাখা দরকার। সাধ্যের মধ্যেই চাহিদা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখন তো মানুষ চাহিদার থেকে বেশি আশা করে থাকে। যেটা তাদের জন্য একেবারে ভুল হয়ে থাকে। আমেনা বিলাসিতার জীবন যাপন শুরু করার কারণেই শেষ পর্যন্ত তাদের এরকম অবস্থা হয়েছে। তার হাজবেন্ড যখন টাকা আয় করে দেশে পাঠাচ্ছিল, তখন তার উচিত ছিল টাকা জমানো। সে যদি টাকা জমাতো তাহলে তার স্বামী দেশে এসে কোন কিছু করতে পারতো সেই টাকা দিয়ে। কিন্তু বিলাসিতা তাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আরেক দেশে গেলেও সেখান থেকেও ফিরে এসেছে।
গল্পের মধ্য দিয়ে চমৎকার ভাবে শিক্ষনীয় একটি বিষয় আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করেছেন। আমাদের বিলাসী জীবন গুলো পরিহার করে সাদামাটা জীবন যাপন করাই উত্তম। বিলাসী জীবনযাপন করতে গিয়ে চাহিদার পরিমাণ সবসময়ই বৃদ্ধি পায়। আমেনা তার স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে ধার-দেনা পরিষদ করে বিলাসি জীবন যাপন শুরু করে। যেটি মোটেও কাম্য নয়। অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে বেশিরভাগ মানুষই নিজের সাধ্যের থেকে সবসময় বেশি চাহিদা রাখে। যেটা তাদের জন্য একেবারেই ভালো হয় না। এক সময় এটার জন্য তারা খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। আমেনা যদি এরকম বিলাসবহুল জীবন না কাটাতো, তাহলে হয়তো তার সাথে এরকমটা হতো না। তার উচিত ছিল সব সময় একটু কম চাহিদা রাখা। আর সব সময় টাকা জমানো। তাহলে এখন তাদের আর এরকম কষ্টের দিন দেখতে হতো না।