দিঘীর পাড়ে বান্ধবীদের সাথে সময় কাটানোর মুহূর্ত।
হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @purnima14 বাংলাদেশী,
আজ- ৩১ আগস্ট, শনিবার, ২০২৪ খ্রিঃ।
কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি বর্তমানে লেভেল চারে আছি, আমি এখন থেকে আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করবো। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো। আজ আমি আপনাদের সাথে ঘোরাঘুরির একটি মুহূর্ত শেয়ার করবো। বেশ কিছুদিন আগে বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম সেই মুহূর্তটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আর দেরি না করে চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যায়না তাই অনেক বেশি ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছিলো। নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। শুনলাম কুষ্টিয়ায় নাকি নতুন একটা জায়গা হয়েছে জায়গাটির নাম দিঘীরপাড়। আমার দুই বান্ধবীকে জায়গাটি সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে ওরাও বলে ওরা সেখানে যেতে চায়।জায়গাটি একেবারেই নতুন আগে কখনো যাওয়া হয়নি। জায়গাটি সম্বন্ধে আমরা তিনজনেই ফেসবুক থেকে জানতে পেরেছি।
সেদিন আমাদের ইনস্টিটিউটে ক্লাস অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। তারপর আমরা তিনজন যে যার রুমে গিয়ে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ি । ওরা দুজন হোস্টেলে থাকে। আমার দুই বান্ধবী দ্রুত রেডি হয়ে আমাদের ইনস্টিটিউট এর সামনে আমার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তারপর আমি আমার মেসের সামনে থেকে একটা রিকশা নিয়ে নিই। আমাদের ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে ওরা উঠে পড়ে। আমরা তিনজন মিলে এক রিকশায় রওন দিই।
যেতে যেতে আমরা অনেক মজা করি। বান্ধবীদের সাথে কোথাও গেলে অনেক বেশি আনন্দ করি আমরা সকলে। দিঘির পাড়ে যেতে হলে লাহিনি বটতলা দিয়ে যেতে হয়। যেহেতু জায়গাটা একেবারেই নতুন রিক্সাওয়ালা মামারাও জায়গাটা সম্পর্কে খুব একটা জানেনা। আমরাও জায়গাটা চিনিনা। আমরা রিক্সাওয়ালা মামাকে বলি দিঘীরপাড় যাবো রিকশাওয়ালা মামা না চিনেই আমাদের নিয়ে যেতে থাকে। লাহিনি বটতলা পর্যন্ত যাওয়ার পর মামা কোন দিকের রাস্তায় যাবে সে আর বুঝতে পারেনা। তারপর আমি মামাকে বলি মামা সোজা যান।
সোজা গিয়ে কিছুক্ষণ পর এক পথচারীর কাছে জিজ্ঞেস করি এখানে দিঘীরপাড় টা কোন দিকে। সে বলে আপনারা ভুল রাস্তায় এসেছেন । লাহিণী বটতলা মোড় থেকে বামের দিকের রাস্তাতেই দিঘিরপাড়। ততক্ষণই আমরা অনেক বেশি ভিতরে রাস্তায় চলে গেছি। কি আর করার রাস্তাটা যখন ভুল আবার ফিরে আসতে হলো। রিক্সাওয়ালা মামা ততক্ষণে রেগে গেছে রেগে বলছেন ,এ কোথায় নিয়ে আসলেন মামা? আমরা আর কোন কথাই বললাম না তারপর পথচারীর দেখানো পথে রিক্সাওয়ালা মামা আমাদের নিয়ে আসতে থাকলো। কিছুদূর যেতে যেতে চোখে পড়ল এটা ব্যানারের উপর সুন্দরভাবে লিখা আছে দিঘিরপাড় । তারপর আমরা নিশ্চিন্ত হলাম।
তারপর রিক্সায়ালা মামা বাঁধানো আরেক ঝামেলা ভাড়া নিয়ে তর্ক। আমরা আসার সময় তিনজনে যাবো ৬০ টাকা দিবো এরকমটা ঠিক করে এসেছিলাম। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর পর মামা কিছুতে ৬০টাকা নিতে রাজি হচ্ছিলো না। তার দাবি ১০০ টাকা দিতে হবে। অবশেষে তাকে ৮০ টাকা দিয়ে কোন মতো শান্ত করে রিকশা থেকে নেমে গেলাম।
খোলা মাঠের মধ্যে পুকুরটা। পুকুরটা বেশ বড। পুকুরের ওই পাশে মাঠ আর এই পাশে রাস্তা। রাস্তার সাথেই কিছুটা জায়গা ঘেরাও করে নাম দেওয়া হয়েছে দিঘীরপাড়। সেখানে সুন্দর চায়ের সুব্যবস্থা। চা এর সাথে পোড়া রুটি আমার বেশ ভালই লাগে। প্রথমে সেখানে প্রবেশ করে আমরা তিন জনের জন্য তিন কাপ চা অর্ডার দিয়েছিলাম।পুকুর পাড়ের শীতল হাওয়া বেশ ভালো লাগছিলো।পুকুরপাড়ের ওই হাওয়া অনুভব করার জন্যই হয়তো মানুষ ওখানে যায়। দিঘির পারে দেখার মতো তেমন কিছু নেই শুধু অনুভব করা যায় শীতল হাওয়া ।
সেখানে ছিলো নানান ধরনের ফুলের গাছ। পুকুরের মধ্যে একটা বোর্ড ছিলো সেখানে উঠে আমরা অনেক ছবি তুলেছিলাম। পুকুর পাড়ে দুটি দোলনা দোলনায় দোল খেতে কি যে ভালো লাগছিলো বলে বোঝাতে পারবো না। আমরা সেখানে দুই ঘন্টা মতো সময় কাটিয়েছিলাম। তিন বান্ধবী মিলে বেশ মজা করেছিলাম সেদিন। যেহেতু জায়গাটা একেবারেই নতুন সেহেতু মানুষের চাপ ও বেশি। এমনিতে নতুন জায়গাতে ঘুরতে সবাই পছন্দ করে।জায়গাটা ছোট কিন্তু সেই হিসেবে সেখানে অনেক মানুষের ভিড়। মানুষের এতো ভিড় ছিলো যে আমরা দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও আমাদের চা আমরা পাইনি।
যেহেতু আমার দুই বান্ধবী হোস্টেলে থাকে সন্ধ্যার পরে হোস্টেলে ঢুকতে দেবে না এই জন্য আমরা তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে আসি। অনেক অপেক্ষা করার পরেও যা আমাদের কপালে জোটে না। দিঘির পাড়ে চা খেতে পারেনি তো কি হয়েছে আমাদের কুষ্টিয়ার বিখ্যাত লাহিনি বটতলার চা মিস করিনি। লাহিনি বটতলা থেকে জায়গাটা বেশি দূরে না হওয়াই আমরা সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে লাহিনি বটতলা চা এর দোকানে চলে আসি। সেখানে এসে দ্রুত চা অর্ডার করি। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করার পর আমাদের চা চলে আসে।তাড়াতাড়ি করে চা খেয়ে সেখান থেকে উঠে পরি। চা এর বিল পেমেন্ট করে আমরা মেসে আসার জন্য রিক্সায় উঠে পড়ি।
আসার সময়ও আমরা তিনজন এক রিকশায় অনেক মজা করতে করতে আসছিলাম। আমরা যখন তিনজন মিলে গানগায় রিক্সাওয়ালা মামাও আমাদের সাথে গান করছিলো বেশ ভালো লাগছিলো মামার গান। এর আগের দিন যখন আমরা এক রিকশায় করে লাহিনী থেকে আসছিলাম সেদিনও ঠিক এরকম মজাই করেছিলাম। আমি আমার বান্ধবীদের আমাদের ইনস্টিটিউটের সামনে নামিয়ে দিয়ে রিকশা নিয়ে আমার মেসের সামনে এসে আমি নেমে পড়ি।আমরা সন্ধ্যার ১৫ মিনিট আগেই যে যার গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম।
সব মিলিয়ে অনেকদিন পর বান্ধবীদের সাথে ঘোরাঘুরি করে নিজেকে অনেক হালকা লাগছিলো। অনেক বেশি ভালো লাগছিলো।
ছবির বিবরণ
ক্যামেরা: ১৩ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১১ আগস্ট,২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া
প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।
আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।
@purnima14
আমিও মাঝেমধ্যেই এরকম আমার ফ্রেন্ডের সাথে অচেনা জায়গা গুলোতে ঘুরতে যাই। নতুন নতুন জায়গা গুলোতে ঘুরতে ভালই লাগে। আপনারা বান্ধবীরা মিলে দারুন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন দীঘির পাড়ে। বেশ ভালো লাগলো আপনাদের কাটানো মুহূর্ত গুলো দেখে। অনেক ধন্যবাদ আপু মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য। বেশ এনজয় করেছেন সময়গুলো।
হ্যাঁ আপু অচেনা জায়গা গুলোতে ঘুরতে ভালই লাগে। আপনি মাঝেমধ্যে আপনার ফ্রেন্ডের সাথে অচেনা জায়গা গুলোতে ঘুরতে যান জেনে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বান্ধবীদের সাথে দীঘির পাড়ে ঘোরাঘুরি সুন্দর মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার এই আনন্দ খানা মুহূর্তটা দেখে বেশ ভালো লাগলো মনে পড়লো অতীতের অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতির কথা। যখন আমরাও ঠিক এভাবে ঘোরাঘুরি করতে যেতাম।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মতামত প্রকাশের জন্য।
খুব সুন্দর একটি ব্লগ আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যেখানে বান্ধবীদের সাথে ঘোরাঘুরি করতে গেছেন দিঘির পারে এবং সেখানে খাওয়া-দাওয়া আনন্দ সবকিছুই উপভোগ করেছেন যা কিছুটা হলেও আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আপনার সুন্দর এ ব্লগ দেখে বেশ ভালো লাগলো, যেন মনে হলো আমিও আপনাদের সাথে উপস্থিত ছিলাম। কারণ এমন পরিবেশে ঘোরাঘুরি করতে আমিও পছন্দ করি এমন কি আমরা তিন বন্ধু ঘোরাঘুরি করেছি অনেক।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনারা তিন বান্ধবী মিলে তো দেখছি অনেক সুন্দর একটা জায়গায় ঘুরাঘুরি করেছেন। দিঘীরপাড়ের জায়গাটা কিন্তু সত্যি খুব সুন্দর। আর এটা আপনার ফটোগ্রাফি দেখেই বুঝতে পেরেছি। দিঘির পাড়ে তো দেখছি অনেক সুন্দর দোলনাও রয়েছে। ওখানে চা খেতে না পারলেও বটতলায় এসে চা খেয়েছিলেন শুনে ভালো লাগলো। এরকম সুন্দর একটা জায়গায় এত সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখেই অসম্ভব ভালো লেগেছে। আর সন্ধ্যা হওয়ার 15-20 মিনিট আগেই আপনারা নিজ নিজ স্থানে পৌঁছে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভালোই উপভোগ করলাম এটা।
হ্যাঁ আপু দিনটিকে আমরা বেশ দারুন ভাবে উপভোগ করেছিলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মতামত করে পাশে থাকার জন্য।