ঘূর্ণিঝড় রেমালে আমার কার্যক্রম পুকুরের মাছের জন্য।
source |
---|
Greetings to all,
বন্ধুরা, গরমে যেন শরীরকে টিকিয়ে রাখাটাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অতিরিক্ত গরম নাকি আগামী পঁচিশ তারিখের পরে আরো বৃদ্ধি পাবে। যদিও এটা আমি নিজে কোনো নিউজ থেকে জেনে বলছি না। তবে অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত আবহাওয়ার খোঁজ খবর রাখেন তাঁদের থেকেই জেনেছি।
এখনই সহ্য সীমার বাইরে তাহলে ভাবুন তো কোন পর্যায়ের গরম পড়বে তখন। এটা তো ভাবতেই যেন শরীর শিউরে উঠছে। পাশাপাশি আমি এটা লক্ষ্য করেছি যে ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরে যেন আমাদের এলাকায় তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবহাওয়া আজ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে সেটার জন্য আমরাই দায়ী। কারণ অর্থের জন্য হোক আর যে কারণেই হোক না কেন আমরা তো ভুলে গিয়েছি যে স্থল ভাগের কতো শতাংশ গাছ থাকা জরুরি। আমি লক্ষ্য করেছি ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরে আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তাতে আর আগের মতো ধীর গতিতে হাঁটা যাচ্ছে না।
কারণ আগে গাছের পাতার জন্য রোদ্দুর গায়ে লাগতো না আর এখন যেন সরাসরি রোদ্দুর গায়ে লাগছে। আবার ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে জলোচ্ছ্বাসের জন্য বন্যার জল অনেক বাড়িঘর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অর্থাৎ সমুদ্রের লবণাক্ত জল লোকালয়ে প্রবেশ করেছিল।
source |
---|
যে কারণে এমন কোনো ঘের বা পুকুর নেই যেখানে স্বাদু জলের মাছ মারা যায় নি। তবে ঝড়ের দিন বা তারপরের ২/১ দিনেও জলের লবণাক্ততা উপলব্ধি করা যায় নি। যদিও আমি যখন আমার বাবার সাথে পুকুরে নেট দিচ্ছিলাম তখন আমি জল একটু মুখে নিয়ে চেক করেছিলাম।
কিন্তু বাড়িতে ফিরে যখন আমার ছোট কাকিমাকে বললাম কাকিমা দ্বিমত পোষণ করেছিল। কারণ আমিও খুব বেশি অভিজ্ঞ না তবে ছোট থেকেই মাছের প্রতি আমার খুব আকর্ষন কাজ করে যেটা অনেকেই জানে।
কিন্তু অবশেষে যে আমার ধারণাটাই সঠিক হবে এটা আমিও ভাবিনি। কারণ কাকিমা বিকেলে এসে আমাকে বলল পুকুরে মনে হয় অবশিষ্ট কোনো রুই মাছ আর নেই। দুর্যোগের মূহুর্তে এটা বোঝা যায় না কিন্তু যখনই রোদ্দুর দেখা যায় তখনই লবণাক্ততা আরো বৃদ্ধি পায় যে কারণে এই অবস্থা হয়।
বন্যার সময় পুকুরের মাছের জন্য করণীয়ঃ
➡️ অবশ্যই বাঁধ উঁচু এবং চওড়াই থাকে কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ যখন সবকিছু অতিক্রম করে তখন কিছুই করার থাকে না। যদি ঘরে নেট থাকে তাহলে সেটা দিয়ে দিতে হবে।
➡️ ঘ্রাণ যুক্ত খাবার পুকুরে পর্যাপ্ত দিতে হবে যাতে মাছ খাবার নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। তবে উত্তম হয় যদি বস্তা ছিদ্র করে দেওয়া হয়। তাহলে পুকুরের মাছ ঐটার আশেপাশেই থাকে।
➡️পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে আওয়াজ করা উচিত না।
➡️ পুকুরের জলে না নামাটাই উত্তম। এমনিতেই মাছ নতুন ও অতিরিক্ত জলে ছোটাছুটি শুরু করে আবার যদি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাহলে মাছ থাকবে না বললেই চলে।
ঐ সময়ে আমার কার্যক্রমঃ
সত্যি কথা বলতে ঝড়ে বাতাসের যে ক্ষিপ্র গতি ছিল তাতে ঘর থেকে বেরোনোই সম্ভম ছিল না। তাছাড়া প্রচণ্ড ঝড় শুরু হয়েছিল মধ্য রাতের পরের দিকে ঐ সময়ে তো বাইরে যাওয়াটা একদমই নিরাপদ না।
source |
---|
➡️ তবে আমি যেটা করেছিলাম তা হলো বাবার মতামত না শুনেই আমার কাছে থাকা টাকা দিয়ে নারকেলের খৈল ক্রয় করে নিয়ে এসেছিলাম। কারণ আমি জানতাম যে আমাদের পুকুরে অনেক গলদা চিংড়ি ও সাদা মাছ আছে যেটা জলের জন্য বেরিয়ে যাবে।
মাছের খাবার:-
স্থান | খাবারের নাম | পরিমাণ | বি ডি মূল্য | স্টিম মূল্য |
---|---|---|---|---|
বাংলাদেশ | নারকেলের খৈল | ২০.০০কেজি | ১৬০০.০০৳ | ৭৬.২০ প্রায় |
ঝড়ের পরবর্তী অবস্থাঃ
ঝড় এবং বন্যার পরে বাবার মুখটা যেন মলিন হয়ে ছিল। আমিও নির্বাক কিছু বলার ছিল না। তবে সত্যি বলতে গতকাল রাতে বাবার মুখে হাসি দেখেছি। কারণ পুকুরে জাল দিয়ে মাছ দেখতে গায়েই দুই কেজির মতো বাগদা চিংড়ি পেয়েছিল। এমনকি ঐ সাইজের বাগদা চিংড়ি গুলো আমাদের পুকুরে ছিল না।
তাছাড়া বাবা বলল সাদা মাছ ও আছে আর বাবার ধারনা আমাদের পুকুরের মাছ তেমন বের হয়নি। বরং মাছ আরো আমাদের পুকুরে এসেছে। এতোটা নিশ্চিত হতে পারছি আমরা জন্ম থেকেই মাছ দেখতে দেখতেই বড় হয়েছি। পাশাপাশি আমার বাবা পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়েই মাছের অবস্থান নির্ণয় করতে পারেন।
যাইহোক, আমার আজকের লেখাটি আমি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনি পুকুরের মাছের জন্য যে তথ্যগুলো শেয়ার করেছেন এটি আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমার নিজের বাসায়ও পুকুর আছে। সে ক্ষেত্রে আপনার দেওয়া পরামর্শ গুলো বন্যার সময় আমি কাজে লাগাতে পারবো। আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমানে মানুষ যে পরিমাণে গাছপালা কেটে ফেলা শুরু করেছে যা বলার মত নয়। তবে আপনাদের দক্ষিণ অঞ্চলে পুকুরে বাধ কেমন দেওয়া থাকে সেটা আমি জানি না। কিন্তু আমাদের পুকুরের বাধ অনেকটাই উঁচু।
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
এই তীব্র গরমের জন্য দায়ী আমরা মানুষরাই। নির্বিচারে গাছ কেটে পরিবেশের যে পরিমাণ ক্ষতি করছি সে পরিমাণ গাছ কিন্তু কেউ লাগাচ্ছে না। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মাছ চাষ নিয়ে তেমন কোন ধারণা নেই। তবু আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ঝড়ের সময় কিভাবে পুকুরের মাছের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুনে ভালো লাগলো এই ঝড়ে আপনাদের পুকুরের মাছের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি করার জন্য।
দিদি আমরা উত্তরাঞ্চলের মানুষ। তাই আমাদের লবনাক্ত পানি নিয়ে কোন চিন্তা নেই। শুধু চিন্তা বন্যা। বন্যার সময় আমাদের এলাকা বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিশেষ করে পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যায়। অনেকেই ঘের দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু মাঝে মধ্যে বিফল হয়। তবুও প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করেই চলছি। যেহেতু বন্যাপ্রবন এলাকা আমাদের তাই আগে থেকেই আমাদেরও কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয়।
আপনার প্রস্তুতি এবং আপনার এলাকা সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। আশাকরি আপনার উল্লেখিত পয়েন্টগুলি অনেকেরই কাজে দিবে। ভালো থাকবেন দিদি। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই, উত্তরাঞ্চলের দিকে এই লবনাক্ততার কোন ঝামেলা নেই। তবে এটাও সঠিক যে আমাদের এলাকার মতো জোয়ার ভাটা না থাকার কারণে বন্যায় আপনাদের এলাকা প্লাবিত হয় এবং সেই জল দীর্ঘস্থায়ী হয়।
আমাদের এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হলেও দেখা যায় পরবর্তী দু-একদিনের মধ্যেই বন্যার জল নামতে শুরু করে।