আউটিং ও খাবারের রিভিউ (১০% @shy-fox এর জন্য)
তারিখ-০৬.০৪.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি।জানিনা কেন নিজেকে মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমার নাম পায়েল না হয় বরং বিরিয়ানি কুইন হওয়া উচিত ছিল। যখনই কোন রেস্তরাঁয় যাই ভাবি অন্যরকম খাবার খাব। কিন্তু সব সময়ই রেস্টুরেন্টে গেলেই বিরিয়ানিতে আটকে যাই। কি করে যে আমি ফুড ব্লগার হব জানিনা। কারন ফুড ব্লগাররা সবই খায়। আমার মত বিরিয়ানিখোর হয় না। যাইহোক, আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে একটা খাবারে ছোট রিভিউ, সাথে বান্ধবীর সঙ্গে আউটিং দুটোই ভাগ করে নেব। আমার বান্ধবী শর্মিষ্ঠার বিয়ে হয়েছিল সেটা অনেক আগেই আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। বিয়ের পরে সে সুদূর বোম্বাইতে চলে যায়।তারপরেই প্রায় দেড় মাস পরে তার সাথে আমার দেখা।
দুজনে মিলে ঠিক করলাম একটা সিনেমা দেখব। যে সিনেমাটা দেখতে গিয়েছিলাম, তার রিভিউ আগের দিন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। সিনেমা দেখে বেরিয়ে প্রায় সাড়ে চারটা বাজে। দুজনের খুবই খিদে পেয়েছিল। ঠিক করলাম ঢাকেশ্বরী চাইনিজ রেস্টুরেন্টে যাব। ঢাকেশ্বরী চাইনিজের খাবারের রিভিউ এর আগেও আমি করেছি। আবার নিয়ে এলাম আর একটা রিভিউ। রেস্টুরেন্টে ঢুকেই দুজনে ঠিক করলাম বিরিয়ানি খাব। অর্ডার করলাম দু প্লেট মাটন বিরিয়ানি সাথে স্টার্টার হিসেবে নিয়েছিলাম ফিস ফ্রাই। এত সুস্বাদু ফিস ফ্রাই আমি খুব কম জায়গাতেই খেয়েছি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফিস ফ্রাইডের কোটিং এত বেশি মোটা থাকে যে কোটিং এর ভেতরের মাছটা মুখেই পড়ে না। এক্ষেত্রে বিষয়টা কিন্তু একদমই সেরকম নয়। মাছের ফিলের উপরে ভালো করে রসুন এবং লঙ্কা বাটার একটা মিশ্রণ লাগিয়ে, জিনিসটাকে আরো ফ্লেভারফুল করা হয়েছিল। সাথে লেবুও ছিল বোঝা যাচ্ছিলো এবং গোলমরিচ যা মাছের ফ্লেভারটা আরো দ্বিগুণ করছিল। একটা ফিসফাই একজনের জন্য যথেষ্ট।
ফিশ ফ্রাই টা খেয়েই অপেক্ষা করছিলাম কখন বিরিয়ানি আসবে। বিরিয়ানি দেওয়ার আগে রেস্টুরেন্টের ওয়েটার কে বললাম মটনেরপিসটা একটু দেখেশুনে দিতে। একটু রেওয়াজি ধরনের দিতে। এরপর ওয়েটার যখন দুজনের দুটো বিরিয়ানির প্লেট নিয়ে আসলো, দেখলাম আমার প্লেটের মটনের পিস টা বেশ ভালই বড় দিয়েছে। কিন্তু শর্মিষ্ঠার পাতের পিসটা এতটাই ছোট যে একবার খেলেই মাংস শেষ হয়ে যাবে।
এবার একরকম প্রতিবাদ করে বললাম, "আমি বড় দিতে বললাম বলে শুধু আমাকেই বড় দিলেন।আর ও বলল না বলে ওকে একটা ছোট এরকম পিস দিলেন?৩১০-১৫ টাকা দাম নিচ্ছেন আর এটা মাংসের পিস?"
বলার সাথে সাথেই প্লেটটা নিয়ে গিয়ে শর্মিষ্ঠাকে একটা তুলনামূলক ভালো পিস দিল। কিন্তু অতটাও বড় ছিল না।
এইবার যখন বিরিয়ানি টা মুখে দিলাম, বিরিয়ানির রাইসটা নিয়ে কোন কমপ্লেইন ছিল না। কারণ সুস্বাদু, খুবই সুন্দর ফ্লেভার রাইসটা থেকে আসছিল এবং একটা চালও ভাঙেনি। খুবই ঝরঝরে কিন্তু বিরিয়ানির যে আলুটা দিয়েছিল সেই আলুর ভেতরে এক ফোঁটাও নুন ঢোকেনি। ফলে আলুটা খেতে খুবই বিস্বা লাগছিল। ডিমটা ছিল ডিমের মতোই। ডিমের ভেতরে অতিরিক্ত নুন ঢুকে গিয়েছিল। এবার আসি "স্টার অফ দা প্লেট" অর্থাৎ মটনের ব্যাপারে!মটনটা খুবই ভালো সেদ্ধ হয়েছিল। ভেতরে নুনও ভালো ঢুকেছিল। কিন্তু মটনটা যে টাটকা ছিল না সেটা মটনের যে আঁশা ব্যাপারটা অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল সে থেকে বোঝা যাচ্ছিল। যাই হোক, কোন রকমে খেয়ে এটা কোল্ড্রিংস অর্ডার করে নিলাম। কমপ্লেইন অবশ্যই করে এসেছি। কারণ এক প্লেট ৩১০ টাকা দাম হিসেবে কোয়ালিটি মোটেই পছন্দ হয়নি। দাদা বৌদির বিরিয়ানির দাম ৩১০ টাকা আর তার স্বাদ দুর্দান্ত।
কিন্তু ৩১০ টাকা এরকম ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা, সত্যি বলতে এই দোকানে এর আগে হয়নি।যত সময় যাচ্ছে দাম বাড়ছে, কিন্তু মান খারাপ হচ্ছে। একগাদা টাকার বিল মিটিয়ে দুজনে বেরিয়ে এলাম।বেরোনোর আগে অবশ্যই বেশি করে মুখ সুদ্ধি হিসেবে মৌরিটা তুলতে ভুলিনি।
আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো আমার করা রিভিউ এবং আমাদের আউটিং এর গল্প, অবশ্যই জানাবেন। আবার আসব নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।





Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আরে বাহ! আজকে তো দেখছি দারুন একটা খাবারের মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। বিরিয়ানের জন্য অপেক্ষা করার মুহূর্তটা হয়তো খুবই উত্তেজনা কর মনের মধ্যে কাজ করছিল। তবুও বলবো খুব ভালো লেগেছে আপনার এত সুন্দর একটা পোস্ট দেখে। অবশ্য মাঝেমধ্যে এভাবে খেতে যাওয়ার মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।
অনেক ধন্যবাদ ভাই। বাঙালির ঘোরা মানেই ঘোরা গৌণ। খাওয়া মুখ্য।😃😆