অবতার-২ দেখতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা (১০% @shy-fox এবং ৫% @abb-charity এর জন্য)
তারিখ-১১.০১.২০২৩
নমস্কার বন্ধুরা
আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও খুব ভালোই আছি। অনেকদিন ধরে ভেবেছিলাম "অবতার দা ওয়ে অফ ওয়াটার" সিনেমাটি দেখব।অনেক জায়গাতেই শুনছিলাম এর গ্রাফিক্স খুব ভালো করেছে। যা একরকম দারুন ভাবে দেখার মত। "অবতারের" প্রথম অংশটা আমি যদিও দেখিনি।তাই ভেবেই রেখেছিলাম দ্বিতীয় অংশটা দেখবই।তারপরে রিলিজ হওয়ার পরে বান্ধবীকে বলেছিলাম যে, "চল দেখে আসি।" কিন্তু সে বলল সে "হামি-২" দেখবে। তাই আর দেখা হচ্ছিল না।
হঠাৎ করেই মাসির ছেলের গলব্লাডারের অপারেশন হবে বলে তারা এসেছিল। ডাক্তার অপারেশনের ডেট দিয়েছে আগামী শুক্রবার। বুক মাই শোতে চেক করতে গিয়ে দেখলাম নিকটবর্তী সিনেমা হলে এখনো "অবতার টু" চলছে।তনয় অর্থাৎ মাসির ছেলেকে বললাম, "ভাই সিনেমা দেখতে যাবি?"ও জীবনে কোনদিনও হলে গিয়ে সিনেমা দেখেনি।আমায় বলল, "চল দিদি যাব।আমি তো কখনো হলে সিনেমা দেখিনি।" আমি বললাম, "ভালোই হলো। প্রথম হলে গিয়ে সিনেমা দেখবি তাও আবার থ্রিডি। বেশ আনন্দ পাবি।"
তাই গতকাল রাতেই দুজনের টিকিট কেটে নিলাম। যেহেতু সিনেমা রিলিজ করেছে অনেকদিন হলো। তাই ভিড়টা একদমই নেই। আমরা দুজন সাথে দেখলাম আরো কিছু লোক সিট বুক করেছেন।শো ছিল আজকে দুপুরে আড়াইটা থেকে। একজন টোটো কাকুকে বলে রেখেছিলাম হলে দিয়ে আসতে।সকালবেলা উঠে যথারীতি কাজ বাজ করে দুপুরে খাবারটা খেয়ে নিয়েছিলাম। দুটো নাগাদ দুজনে তৈরি হয় বেরিয়ে পড়লাম সিনেমা হলের উদ্দেশ্যে। হলে যখন পৌঁছলাম তখন দুটো কুড়ি বাজে। মোবাইলে টিকিট দেখিয়ে ঢুকে পড়লাম। ভেতরে একটা বড় টাব পপকর্ন নিলাম। কারণ আমি পপকর্ন ছাড়া সিনেমা দেখতে পারি না।
তারপর মেন হলের ভিতরে ঢুকে পড়লাম এবং নিজেরাই দেখে শুনে নিজেদের সিটটায় বসে পড়লাম। আরেকটা কথা এখানে বলে রাখি, টিকিটের মূল্য ছিল ১৬০ টাকা করে। ভেতরে ঢোকার আগে থ্রিডি চশমাটা নিয়ে নিয়েছিলাম।দুটো চশমার জন্য ১০০ টাকা জমা করতে হয়েছিল। পরে চশমা ফেরত দিলে ওরা টাকাটা ফেরত দেয়। এই সিনেমাটি থ্রিডি চশমা ছাড়া দেখে কোন মজাই পাওয়া যাবে না।
যথাসময়ে সিনেমা শুরু হলো। গ্রাফিক্সের কাজ যদি দেখতে হয় সত্যি এই সিনেমা ছাড়া অন্য কোন অপশন নেই। দেখে মুগ্ধ হতে আপনি বাধ্য। সাথে অন্যায়ের সাথে আপোষ না করলে সত্যের জয় যে সবসময়ই হয় সেটা এখানে আবার প্রমাণিত হল। সিনেমার ডিটেলস রিভিউ আর দিচ্ছি না। পরে যদি কোন পোস্টে দিই সেটা আলাদা কথা। তবে সিনেমা দেখতে দেখতে একটা কথা ভীষণভাবে অনুভব করছিলাম, মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হওয়ার কারণে সমগ্র গ্যালাক্সিতে নিজের অধিপত্য বিস্তার করতে চায়।এটাই বাস্তব। আর এই স্বভাবই মানুষকে ধ্বংসের মুখে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এটা মানতেও কোনো দ্বিধা নেই। বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে মানুষের কাছে বরদান হওয়ার জন্য। কিন্তু সেই বিজ্ঞানকেই মানুষ এখনধীরে ধীরে নিজের দোষে অভিশাপে পরিণত করেছে। মূল অন্তর্নিহিত বিষয়বস্তু খানিকটা এরকমই।
যাইহোক প্রায় তিন ঘন্টা ১৫ মিনিটের সিনেমা। অনেকটা বড় সিনেমা দেখার পরে বাইরে বেরিয়ে দেখি অন্ধকার হয়ে গেছে।বেরিয়ে একটু টক দই, মিষ্টিএগুলো নেওয়ার কথা ছিল সে কারণে মিষ্টির দোকানে গেলাম।কিন্তু মিষ্টি বা টকদই কোনটাই পছন্দ হল না। বরং গিয়েই সিঙ্গারা,চপ এগুলো চোখে পড়ল। বাড়ির জন্য সাতটা সিঙ্গারা এবং চারটি চিংড়ি মাছের চপ নিলাম। তারপরে যথারীতি অটো তে উঠে পড়লাম। এরপর অটোতে কর বেদীভবনবন বাজারে নামলাম। সেখান থেকে টক দই,মিষ্টি এসব নিয়ে আবার টোটো তে উঠলাম। এবার টোটো তে করে সোজা বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরে সকলে মিলে মজা করে সেই সিঙ্গারা,চপ খাওয়া দাওয়া হল।সাথে মুড়ি,চা তো ছিলোই।
দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দারুণ সময় কাটলো। সব থেকে আত্ম তৃপ্তি হচ্ছিল তনয় কে দেখে। জীবনে প্রথমবার সিনেমা হলে গিয়েই থ্রিডি সিনেমা দেখে ও বিস্মিত, আনন্দিত।
আজ এখানেই শেষ করছি।আমার আজকের অভিজ্ঞতা আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আবার আসব নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে ভালো থাকবেন।
🌸🌸🌸ধন্যবাদ🌸🌸🌸
পরিচিতি
আমি পায়েল।ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার কাছাকাছি ডাক্তার বিধান রায়ের স্বপ্নের শহর কল্যাণীর বাসিন্দা।একসময় যদিও চাকরী করেছি কিন্তু বর্তমানে ফুলটাইম ব্লগার এবং ভ্লগার।যদিও নিজেকে এখনও শিক্ষানবিশ মনে করি। আর তা ই থাকতে চাই ।সফল হয়েছি কিনা বা কতদিনে হব তা জানি না, কিন্তু নিজের প্যাশনকেই লক্ষ্য করে এগিয়ে চলেছি।বাকিটা আপনাদের হাতে।আশাকরি আমার সাথে যুক্ত থাকলে আশাহত হবেন না।
এভাটার ওয়ান দেখেছি অনেক ভাল লেগেছিল। সেখানেও গ্রাফিক্স এর অনেক দারুন কাজ করেছিল। অপেক্ষায় ছিলাম কবে নেক্সট সিকুয়েল আসবে। যদিও অনেকদিন পর বের হয়েছে কিন্তু অনেকের কাছেই প্রশংসা শুনেছি। আপনার লেখা পড়ে আরো আগ্রহ বাড়ল দেখার। আপনি আর ছোট ভাই মিলে বেশ আনন্দ নিয়েই মুভি দেখলেন। শেষে টকদই , মুড়িও খেয়েছেন। ধন্যবাদ দিদি।
ধন্যবাদ দাদা। টকদই খাই নি। কিনে এনেছিলাম। সাথে চপ সিঙাড়া।
ভাইয়ের সাথে সিনেমা দেখতে গেছো সেটা বেশ ভালো কথা, তবে একটা জিনিস আমার মাথায় ঢুকলো না। সেটা হল থ্রিডি চশমা নেওয়ার জন্য আবার ১০০ টাকা জমা দিতে হবে কেন। আজ পর্যন্ত কোন সিনেমা হলে গিয়ে এই ধরনের কথা শুনিনি যেটা আজ শুনলাম। যাইহোক খুব ভালো লাগলো তোমার পোস্টটা পড়ে।
যাতে কেউ চশমা নিয়ে পালিয়ে না যায়। ছ্যাঁচড়া লোকজনের অভাব নাই তো।