কালী পূজা। পর্ব:- ৫
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আজকে অনেক হাটাহাটি হলো আর তার সাথে হল অনেকগুলো কালী মায়ের প্যান্ডেল দর্শন। এবার চলে এসেছি যে উদ্দেশ্যে এই নৈহাটিতে আসা। অর্থাৎ নৈহাটির বিখ্যাত বড় মায়ের মন্দির। শুনেছি বড়মা নাকি জাগ্রত, এখানে মায়ের কাছে পুজো করে কোন কিছু চাইলে মা তার আশা পূর্ণ করে। প্রতি শনিবার এবং মঙ্গলবার অনেক বড় লাইন পড়ে এই বড়মার পুজো দেওয়ার জন্য। তবে বড় কালী মায়ের যে মন্দিরটি আছে সে মন্দিরে উল্টোদিকে করে এই বড় মায়ের প্যান্ডেল। বড় মায়ের প্রতিমার দুপাশেও আরো অনেক কালী মায়ের প্রতিমা পুজো করা হয়। তাই সামনে গিয়েই প্রথম কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করলাম। এই প্রতিমা টি বেশ লম্বা এবং অনেক বড় করেছে। মায়ের চারটি হাত, এক হাত দিয়ে আমাদের আশীর্বাদ করছেন। অন্য হাত দিয়ে শত্রু দমনের জন্য খাড়া তুলে ধরেছেন। আরেকটি হাতে কাটা মুন্ডু ধরে আছেন, এবং অন্য হাতে আমাদের জীবনে শান্তি ভরিয়ে দিচ্ছেন।
এখানে কিন্তু মাকে যেসব গয়না পড়ানো হয়েছে সবই রুপা দিয়ে তৈরি। এমনকি আইব্রো তেও ছোট বড় পাত বসানো আছে। মাকে যে সকল মালা পড়ানো হয়েছে সবই আসল ফুলের তৈরি। কিন্তু আমার সবথেকে নজর কেড়েছে কালী মায়ের চুল। কালী মায়ের চুলগুলো অনেক সুন্দর লাগছে, যেমন ঘন তেমন কোকড়ানো। তবে এমন কোকড়ানো চুল যদি আমার হতো তবে আমার মোটেও ভালো লাগতো না। কারণ এমন কোঁকড়ানো চুল সামলানো অনেক কষ্টকর। কালী মায়ের সামনে দেখতে পাচ্ছি পাঁচটি ছোট ছোট ঝুমুর লাগানো আছে আর কতগুলি হ্যালোজেন লাইট লাগিয়ে মাকে আলোকিত করা হয়েছে। আমরা আরো একটু সামনে এগিয়েই দেখতে পেলাম আরেকটি কালী মায়ের প্রতিমা। এই প্রতিমা টি আগের প্রতিমার তুলনায় অনেকটা ছোট প্রতিমা করেছে। এই মায়ের প্রতিমাটিতে দেখতে পেলাম কিছু স্বর্ণের গহনা পড়া আর কিছু রুপার গহনা পড়া। গলায় একটি ফলের মালা পড়ানো হয়েছে, আর কিছু জবা ফুলের মালা পড়ানো হয়েছে।
এই কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করে যেই আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলাম দেখতে পেলাম বড় কালী মায়ের মন্দির। মন্দির থেকে পুরোহিতরা কালী মায়ের প্রসাদ নিয়ে প্যান্ডেলের দিকে যাচ্ছেন। হয়তো আর কিছুক্ষণ বাদেই বড় মায়ের পূজা হবে তাই একে একে সব প্রসাদ নিয়ে প্যান্ডেলে মায়ের প্রতিমার কাছে নিয়ে গেল। উপরদিকে তাকিয়ে দেখলাম একটি বড় স্ক্রিনে মায়ের পুজো এবং মায়ের সামনের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। আসলে একটা রাস্তাতেই পরপর লাইন দিয়ে অনেকগুলি কালী মায়ের পূজো হয়। এবং সবকটি প্রতিমাতেই আসল স্বর্ণের এবং রুপার গহনা পড়ানো হয়। তাই এখানে অনেকগুলি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। আমরা বড়মার প্যান্ডেলের সামনে যেতেই দেখলাম এখানে প্রচুর ভিড় হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে ভিড়ের মধ্য দিয়ে বড়মার দর্শন পেলাম। বড় বড় ঝুমুর এবং হ্যালোজেন লাইটে কালী মায়ের প্রতিমাকে আলোকিত করা হয়েছে। সব প্রতিমা থেকে সবচেয়ে বড় করে এই বড় কালী মায়ের প্রতিমা। বড় কালী মায়ের গায়ে যত গয়না আছে সবই আসল স্বর্ণের এবং রুপার তৈরি।
কানে বড় রুপার দুল রয়েছে তার ওপরে আবার সোনার বড় ঝুমকা পড়ানো হয়েছে। অনেক মানুষ তার প্রার্থনা পূরণ হলে মাকে গয়না গড়িয়ে দিয়ে যায়। অর্কিড ফুল এবং গাঁদা ফুল সহ বেশ কিছু ফুলের মালা মাকে পড়ানো হয়েছে। এছাড়াও দেখতে পারছি রুপার মুণ্ড মালা কালী মাকে পড়ানো হয়েছে। এছাড়াও খেয়াল করলাম কালী মায়ের আইব্রো সোনার পাত দিয়ে তৈরি করা। এক কথায় বলা যায় বড় কালী মায়ের প্রতিমাকে স্বর্ণ এবং রুপা দিয়েই সাজানো হয়েছে। শিব ঠাকুর কেও কিন্তু এখানে স্বর্ণ এবং রুপা দিয়েই সাজানো হয়েছে। বড় কালী মায়ের সামনে এত বেশি ভিড় ছিল যে আমরা বেশিক্ষণ দাঁড়াতেই পারলাম না। আমরা আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে দেখতে থাকলাম। তবে অন্য সব জায়গায় সুন্দর করে থিম প্যান্ডেল করলেও বড় কালী মায়ের এখানে কিন্তু কোন থিম প্যান্ডেল হয় না। এখানে সবাই আসে শুধু মাত্র বড় মায়ের দর্শন করতে। এবং প্রতিবছর মায়ের এই একই রূপ আমরা দেখতে পাই। এখানে কোন আধুনিকতার ছোঁয়া পাওয়া যায় না।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
ᴀʀᴛ & ᴀʀᴛɪꜱᴛꜱ