বাংলাদেশ ভ্রমণ। পর্ব : ১৮
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই। আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার বাংলাদেশ অন্যতম একটা আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করব। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লাগবে।
আমাদের মন্দির দেখতে দেখতে এদিকে আবার মন্দিরের প্রসাদ খাওয়ার সময় চলে এলো। এদিকে আমার মেসো উনি মন্দিরের প্রসাদ গ্রহণের জন্য টিকিট কাটতে চলে গেলেন। তো আমরা কিছুক্ষণ মন্দিরের একটা গাছের নিচে বসে রইলাম। আসলে এই মন্দিরে প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হয়।
কিছুক্ষণ পর উনি একটা বালতি এবং একটা জলের জগ নিয়ে চলে এলেন। আমি তখন ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম এই বালতি এবং জলের জগ দিয়ে কি হবে। তখন উনি আমাকে বললেন, এই বালতিতে করে ভাত আনতে হবে এবং জগে করে ডাল আনতে হবে।
আমি পরবর্তী বিষয়টার জন্য খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। কারন আমাদের নিজেদের গিয়ে খাবার আনতে হবে রান্নাঘর থেকে। আসলে রান্না ঘরের ছবি তোলা নিষিদ্ধ থাকায় আমি ওখানকার ছবি তুলতে পারলাম না। রান্নাঘরের দিয়ে দেখি এক বিশাল আয়োজন। অর্থাৎ অনেক লোক মিলে একদিকে রান্না করছে আর অন্যদিকে সবাই বিভিন্ন ধরনের থালাবাসন পরিষ্কার করছে।
আমাদের যাওয়াতে তারা আমাদের কাছে টোকেন চাইলেন। আমাদের টোকেন দেখে তারা আমাদের বালতিটায় ভাত এবং আলু সেদ্ধ এবং পরবর্তীতে জগের ভেতর ডাল দিলেন। আশ্চর্য একটা ব্যাপার হল ভাতটা দিয়ে একটা সুন্দর সুগন্ধ আমার নাকে আসছিল।
আমরা খাবারের জায়গায় গিয়ে একটা ভালো বড় টেবিলে বসলাম সবাই মিলে। আসলে খাবারের স্থানটি ছিল অনেক বড়। একসাথে প্রায় দুই থেকে তিন শত লোক এই জায়গায় বসে খেতে পারবে। আমরা পুনরায় আমাদের দেওয়া প্লেটগুলো বাইরে গিয়ে ধুয়ে আনলাম।
আসলে এখানের প্রতিটা ব্যবস্থাই খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আশেপাশে কোথাও আমি এক টুকরো ময়লা দেখতে পেলাম না। যেটা আমার খুব ভালো লেগেছিল। তো আমরা খেতে বসে প্রথমে আমি আলু সেদ্ধ আর ভাত খাচ্ছিলাম। ভাতটা আমার কাছে এমনিতেই খুব ভালো লাগছিল খেতে। আর ডালের স্বাদটা ছিল অসাধারণ।
এরকম খাবার আমি আগে কখনো খাইনি। খাওয়ার সময় আমরা সবাই মিলে গল্প করছিলাম। আসলে পরিমাণে তুলনায় অনেক বেশি ভাত দিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের। তো আমি ভাত নষ্ট করতে না চাওয়াই বাইরে থেকে একজন গরিব লোককে ডেকে আনলাম। তাকে ডেকে এনে আমরা বাকি খাবারটুকু তাকে দিয়ে দিলাম।
আর খাবারের ঘরের পাশে রয়েছে অনেক বড় একটা মাঠ। এই মাঠে বিভিন্ন ধরনের ফুল ফলের গাছ রয়েছে। আমি পুরো মাঠটাই একবার ঘুরে দেখলাম। এই ফুল ফলের গাছ দেখাশোনার জন্য সর্বদা একজন লোক নিযুক্ত থাকেন।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা আবার আরেকটা মন্দিরে যাওয়ার জন্য রেডি হলাম। এই মন্দিরটি হল মহাশ্মশান কালী মন্দির। এই মন্দিরে আবার একটি শ্মশানও রয়েছে। এই শ্মশান নাকি অনেক পুরনো।
আমরা মন্দিরটি চারিপাশ ঘুরে দেখতে লাগলাম। এখানে বিভিন্ন ছোট ছোট মন্দিরও রয়েছে এবং একটা গাছের নিচে একটা শিবলিঙ্গ রয়েছে। আসলে এখানে চারিদিকে পরিবেশটা অনেক ঠান্ডা। কারণ পুরো মন্দির জুড়েই বিভিন্ন বড় গাছ ছায়া দিয়ে রয়েছে।
অনেক লোক আবার ক্লান্ত হয়ে এই গাছের নিচে একটু স্বস্তির ঘুম দিচ্ছিলেন। এখানে একটা আমরা বড় গাছ দেখতে পেলাম। যে গাছে মানুষ মানত করে দড়ি বাধেন। শুনেছি নাকি এতে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। এরপর আমরা মন্দিরের সামনে ছোট ছোট দোকানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী দেখতে লাগলাম। আসলে দেখতে দেখতে আমাদের অনেকটা সময় পার হয়ে গেল।
অবশ্যই এখানে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগছিল। কারণ চারিদিকে শান্ত একটা পরিবেশ এবং খুব মনোরম শান্তি এখানে বিরাজ করে। চারিদিকে ভীষণ গরম থাকার সত্ত্বেও এই মন্দিরের ভিতরে এতটাই ঠান্ডা যে মনে হয় এখানে আর কিছুটা সময় একটু থেকে যাই। তো আমাদের বাড়ি ফিরতে হবে এজন্য আমরা আর বেশি দেরি না করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম
ক্যামেরা পরিচিতি : Xiaomi
ক্যামেরা মডেল : M2007J20CI
ক্যামেরা লেংথ : 3 mm
তারিখ : 12/10/2022
তো এই ছিল আজ আমার পোস্ট। আশাকরি আপনাদের সবার খুব ভালো লেগেছে। আর আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
বেশ অনেকদিন পর কাজে ফেরায় আপনার আগের পর্বগুলো দেখা হয়নি।তবে ১৮ তম পর্বটা দেখে বেশ ভালোই লাগলো।
শুভ কামনা রইলো।
আসলে আপনি যে আবার পুনরায় চলে এসেছেন তা জানতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে। আসলে বাংলাদেশে কাটানো সময় গুলো আমার খুব ভালো ছিল। অনেক মিস করছি বাংলাদেশকে। আবার কখনো ঘুরতে আসবো বাংলাদেশ।