প্রথমবারের মতো ট্রেনে করে কক্সবাজার যাওয়ার অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago
আমার প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? সবাইকে আমার আন্তরিক মোবারকবাদ এবং অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাদেরকে জানাই শুভেচ্ছা।
সবাইকে স্বাগতম আমার নতুন পোষ্টে,আবার ও হাজির হলাম আপনাদের সামনে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে।

প্রথমবারের মতো ট্রেনে করে কক্সবাজার যাওয়ার অনুভূতি।

20240221_083248.jpg

আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আর আজকে টাইটেল দেখেই বুঝে গিয়েছেন কোন বিষয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আজকে সকালে চিন্তা করলাম একটি ভ্রমণ পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। তাই মনে পড়ে গেল গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে চট্টগ্রামে ট্রেনে করে গিয়েছিলাম ল,সেই একটি পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। তাই ভাবলাম আজকে আবার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার যে জার্নিটি সেটার কিছু অনুভূতি শেয়ার করি। তো বন্ধুরা ভূমিকায় না গিয়ে চলুন শুরু করা যাক।

এই মাসের ৫ তারিখে গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম। পরের দিন, মানে ৬ তারিখ সকাল 11:40 এ আমাদের ট্রেন ছিল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। যথারীতি আমরা নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা আগেই রওনা হয়ে গেলাম মামা শশুরের বাসা থেকে।মামা শশুরের বাসা থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন তেমন বেশি দূরে নয়। সিএনজি করে গেলে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট লাগে। তবুও আমরা এক ঘণ্টা আগেই বের হয়ে গেলাম। কারণ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে অনেক সময় ভালো লাগে। আর একটু আগে গেলে রিলেক্সে ট্রেনে ওঠা যায়। সময় মত গেলে তখন একটা টেনশন থাকে এবং ট্রেন মিস করার সম্ভাবনা থাকে।সেজন্য এক ঘন্টা আগেই চলে গিয়েছি।

20240206_104703.jpg

যাইহোক সেখানে গিয়ে পৌঁছে গেলাম এবং আমরা চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে কিছুক্ষণ বসলাম।কিছুক্ষণ পর একটু খারাপ লাগছিল তখন চিন্তা করলাম অনেকক্ষণ তো বসে রয়েছি একটু চা খাই। গেলাম স্টেশনের ভেতরে একটি দোকান ছিল সেখানে। রং চা খেলাম এরপরে বৃষ্টির মাথাব্যথা হয়েছিল তাই বাইরে ঔষধ আনতে গেলাম। তখন সেখানে গিয়ে চিন্তা করলাম আমরা যেতে যেতে তো খাবার সময় হয়ে যাবে। তাই কিছু দুপুরের খাবার পার্সেল নিয়ে নেই। বাইরে যাওয়ার পরে সেখান থেকে ওষুধ নিলাম এবং কয়েকটি দোকান খুঁজেছিলাম খিঁচুড়ি পাওয়া যায় কিনা। পরে দেখি কোথাও নেই কারণ তারা খিঁচুড়ি বিক্রি করে না। তারা তেহেরি বা বিরিয়ানি বিক্রি করে।

20240206_115038.jpg

20240206_115103.jpg

যাই হোক কয়েকটি দোকান দেখে অন্য একটি দোকান থেকে তেহেরি কিনে নিলাম চারজনের জন্য। এরপর এই পার্সেল গুলো,ও ওষুধ নিয়ে আমি আবার ফিরে এলাম স্টেশনে। যথারীতি সময়ে ঘনিয়ে আসলো ট্রেন আসার। ট্রেন ১১:৪০ আসার কথা থাকলেও ট্রেন এসেছিল বারোটায়। ট্রেনের জন্য আমরা অপেক্ষা করতে করতে ট্রেনের প্লাটফর্মে অনেকক্ষণ দুষ্টামি করলাম। নিভৃতের তো খিদা লেগেছিল, তাই তার জন্য লেক্সাস বিস্কুট নিয়েছিলাম,সে সেটা খেয়েছিল। যদিও তাকে এই রকম বিস্কুট খাওয়াই না। তবে ওই দিনের জন্য দেওয়া আর কি।

যাইহোক কিছুক্ষণ পরে চলে এলো ট্রেন এবং আমরা সবাই আমাদের নির্ধারিত সিটে গিয়ে বসলাম।যদিও আমাদের চারজনের সিটের গ্যাপে অন্য দুজনের সিট পড়ে গিয়েছে। মানে দুজন পিছনে মাঝখানে আরো দুজন এরপরে আমরা। তখন আমাদের মাঝখানে যে ব্যক্তিগুলো ছিল তাদেরকে বললাম যে আমরা ফ্যামিলি আছি এখানে আপনার যদি আমাদের সিটে বসতেন তাহলে আমরা একসাথে বসতে পারতাম।এরপর সেখানে থাকা দুজনের মধ্যে একজন বলল কোন সমস্যা নেই উনি যাবে কিনা সেটা জিজ্ঞাসা করেন। তখন বাকি জনকেও বললাম যে ভাই আমরা তো ফ্যামিলি আসলে আমরা টিকিট কাটতে চেয়েছিলাম কিন্তু কাটতে পারেনি সবাই কেটে ফেলেছে। এখন আপনার যদি আমাদের সিটে বসতেন তাহলে আমাদের উপকার হতো যেহেতু আমাদের ফ্যামিলি আছে এখানে।

20240206_133718.jpg
যাইহোক এই কথা বলার পরে সে দুজন কথাটা রাখল এবং তারা আমাদের সিটে গিয়ে বসে। আমরাও তাদের সিটগুলোতে বসে যাই যাতে করে আমরা একসাথে থাকতে পারি। মূলত ফ্যামিলি সহ কোথাও ঘুরতে গেলে একসাথে না বসতে পারলে তখন এমনিতে একটু খারাপ লাগে। যাইহোক ট্রেন চলতেছিল এমতাবস্থায় চারিদিকে সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম। ট্রেনের আসল মজা হচ্ছে জানালার পাশে বসা। আর এদিক থেকে জানালার পাশে বসার জন্য তিনজন প্রার্থী। আমার ওয়াইফ তার ভাই ও তার বোন তিনজনই চাইতেছে যে জানালার পাশে বসতে। কিন্তু আমাদের তো দুটো জানালা বরাদ্দ। তাই আর কি করার শ্যালক তার ছোট বোনকে বলে যে আমি যেতে বসেছি, তুই আসতে বসিস।
20240206_124312.jpg

20240206_124431.jpg

আমার আবার এসব নিয়ে তেমন মাথা ব্যাথা নেই।কারণ আমি অনেকবার জানালার পাশে বসেছি। যাই হোক তাদের আনন্দ বা তারা মজা পেলেই আমার কাছে ভালো লাগবে। সর্বোপরি যখন ট্রেনে যাচ্ছিলাম খুব ভালো লাগলো। এদিক ওদিক দু চারটা ফটো উঠিয়ে নিলাম।এরপর যখন খাওয়ার সময় হয় তখন আমরা খাওয়া দাওয়া করলাম। আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষে ট্রেনের মধ্যে কফি খেলাম।আসলে কিছুক্ষণ পরপর কফি, চিপস, দধি, আইসক্রিম, পানি, অনেক কিছু নিয়ে আসা যাওয়া করছিল। তখন প্রথমত কফি খেলাম।এরপরে তারা চিপস খাবে বলছে, তখন তাদেরকে দুই রকমের চিপস নিয়ে দিলাম।

20240206_152700.jpg

20240206_153825.jpg

যাকে এভাবে করতে করতে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে এবং আমরাও অপেক্ষায় রইলাম কক্সবাজার কবে নামবো সেজন্য। দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে।ট্রেন গিয়ে যখন স্টেশনে থামল তখন তো মনটা অন্যরকম আনন্দে ভরে উঠলো। আর এই কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন অনেক বিশাল করে করতেছে। এখনো কাজ চলতেছে এত বিশাল করে করছে যে, এখনো কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। এরপর আমরা ট্রেন থেকে নেমে গেলাম। তারপর আমার কয়েকটি ফটো তুলে নিলাম।যাইহোক বন্ধুরা অন্যদিন বাকি সব শেয়ার করব। আজকে আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এখানে সমাপ্ত ঘোষণা করছি।

তো বন্ধুরা এই ছিল আজকের ব্লগ যেটি আমার মত করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন।আর কষ্ট করে ব্লগটা যারা পড়েছেন তাদেরকে মনের অন্তস্থল থেকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণভ্রমণ ।
ক্যামেরা.মডেলএম ৩২
ক্যাপচার@nevlu123
সম্পাদনারিসাইজ &সেচুরেশন।
অবস্থানবাংলাদেশ

images (2).png

𝒩ℰ𝒱ℒ𝒰123

images (2).png

IMG-20231214-WA0050.jpg

আমি বাংলাদেশ থেকে ইমদাদ হোসেন নিভলু।আমার স্টিমিট আইডি হল @nevlu123।আর Nevlu123 নামে আমার একটি ডিসকোর্ড অ্যাকাউন্ট আছে।বর্তমানে আমি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে রয়েছি, আর সেই প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আমি স্টিমিট এ কাজ করি।জাতিগতভাবে আমি মুসলিম। কিন্তু ভাষাগতভাবে আমি বাঙালি। কারণ আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি, তাই ভাষাগতভাবে আমি বাঙালি।আমার সবচাইতে বড় শখ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করা।এ পর্যন্ত আমার তিনটি দেশ ভ্রমণ করা হয়েছে যদিও আরও ইচ্ছে রয়েছে অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করার।যাইহোক শখের মধ্যে আরো রয়েছে গান,ভিডিও ইডিটিং ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি আর্ট এবং টুডি থ্রিডি ডিজাইন এর কাজ।
images (2).png

সবার প্রতি শুভেচ্ছা এবং এই পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।

gifeditor_20181225_230443.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

,🙏▶🙏💤

 7 months ago 

চট্টগ্রাম আপনার মামা শ্বশুর বাড়ি ছিল সেখানে থেকেই মূলত চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যেতে বেশি সময় লাগে না। তারপরে আগে বের হয়েছেন। আসলে ট্রেনে করে ভ্রমণ করলে আগে বের হওয়াই ভালো। সময় নিয়ে বের হলে অনেক সময় ট্রেন মিস হয়ে যাওয়ার চিন্তা থাকে। যাইহোক আপনারা আগে এসে সেখানে বসে থেকে কিছু মুহূর্ত উপভোগ করলেন। আসলে ট্রেনে একসাথে বসলে ভালো লাগে পরিবারের সকলই যখন ভ্রমণ করি। সবাই একসাথে বসলে আর ভালো লাগে আপনারা সেটাই করলেন এবং আপনি জানার পাশ থেকে বসে সুন্দর সময় কিছু ফটোগ্রাফি করলেন। আর কক্সবাজার রেল স্টেশন এর এত বিশাল করে তৈরি করা হয়েছে সেটা এখনো দেখা হয়নি আসলে ফটোগ্রাফি দেখেছি অনেকবার তবে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

জি আসলেই ট্রেনে একসাথে বসলে ভালো লাগে পরিবারের সকলই যখন ভ্রমণ করা হয়।

 7 months ago 

প্রথমবার ট্রেনে করে চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সুন্দর বর্ণনা শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আসলে ট্রেন ভ্রমনের মজাই আলাদা। আর একদম ঠিক বলেছেন, জানালার পাশে বসলে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে ভ্রনণটা আরো আনন্দদায়ক হয়ে ঊঠে। ট্রেনের সিট বদল প্রায়ই করতে হয়। দুজন মানুষ তাদের নির্দিষ্ট সিট ছেড়ে আপনাদের চার জনের ফ্যামিলি টুরকে আরো আনন্দদায়ক করে তুলেছে। পোস্টের ছবি গুলোও সুন্দর হয়েছে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 6 months ago 

জি আপু ট্রেন ভ্রমনের মজাই আলাদা।।

 7 months ago 

ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে আপনারা কক্সবাজার গিয়েছেন, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। ট্রেন জার্নি বরাবরই বেশ আরামদায়ক। কারণ বাহিরের চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করতে করতে যাওয়া যায়। এটা ঠিক একসাথে কয়েকজন ঘুরতে গেলে,সবাই একসাথে না বসতে পারলে ভালো লাগে না। আপনারা দুটি সিট পরিবর্তন করে সবাই একসাথে বসেছেন,এটা খুব ভালো হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনের ফটোগ্রাফি দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে পোস্টটি বেশ উপভোগ করলাম ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

জি ভাই ট্রেন জার্নি বরাবরই বেশ আরামদায়ক।

 7 months ago 

প্রথম বার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার অনুভূতি সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম -কক্সবাজার রেললাইন চালু হলেও কমিউটার ট্রেন বা লোকাল না থাকায় আমাদের মতো মাঝামাঝি অবস্থান করা মানুষদের বর্তমান অবস্থা
আমার বাড়ির সামনে দিয়া ট্রেনে করে সবাই যায়
আমার বুকটা ফাইট্টা যায়।

আপনার সুন্দর বর্ণনা দেখে আমার মন তো উতলা হয়ে গেলো।
ট্রেন এ সিট আলাদা পড়ায় কিছু ভালো মনের মানুষের জন্য সিট বদল করে একসাথে বসার সুযোগ পেয়েছেন এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো।এখনো ভালো মনের মানুষ আছে

 6 months ago 

হাহা,তাই নাকি আপু মজা পাইলাম।😄😄😄

 7 months ago 

চমৎকার একটি অনুভূতি শেয়ার করলেন আপনি। প্রথমবার যেহেতু ট্রেনে চড়লেন তাহলে তো একটু ভালোলাগা বেশি কাজ করবে। যেহেতু এক ঘন্টা আগেই চলে এসেছিলেন তাহলে বুঝতে হবে আপনাদের অনুভূতিটা কেমন ছিল। অবশেষে অপেক্ষা করতে করতে ট্রেনে উঠে পড়লেন। বিশেষ করে ভালো লেগেছে ট্রেনের উপরে উঠে যখন ফটোগ্রাফি গুলো নিলেন। মনে হচ্ছিল আপনি প্লেন থেকে নিলেন ফটোগ্রাফি গুলো। বেশ ভালই লেগেছে চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার ট্রেন ভ্রমণের অনুভূতি।

 6 months ago 

ভালো বলেছেন আপু।😃❣

 6 months ago 

আসলে অন্যরকম মজা হয়েছিল সেদিন। যাই হোক তোমার ছেলে তো অনেক বেশি উপভোগ করেছে। ধন্যবাদ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য।

 6 months ago 

ছেলে তো খুশি হবেই, খোলা মেলা জায়গা তাই মজা করলো।

 6 months ago 

🌻🚙

 6 months ago 

তার মজাইতো আমাদের মজা।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 52827.29
ETH 2171.15
USDT 1.00
SBD 2.28