জামাই ষষ্ঠীর সকাল বেলা
আপনারা সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন।সুস্থ আছেন। আমিও ভালো আছি। সুস্থ আছি। আজকে আমি জামাইষষ্ঠী দিন সকাল বেলায় কি কি করলাম সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
২৯ শে জ্যৈষ্ঠ ছিল জামাইষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠ মাসে শুক্লপক্ষে অনুষ্ঠিত হয় জামাইষষ্ঠী। বাঙ্গালীদের বারো মাসে তের ষষ্ঠী থাকে। প্রত্যেক মাসেই বিশেষ বিশেষ ষষ্ঠী তিথি থাকে। প্রত্যেকটি ষষ্ঠীতে মায়েরা মা ষষ্ঠীর পূজা করেন। সন্তানদের মঙ্গল কামনার জন্য। যাদের সন্তান নেই তারা সন্তানের আশায় মা ষষ্ঠীর পূজা করেন। অন্যান্য ষষ্ঠীর মতোই উল্লেখযোগ্য ব্রত হলো জামাইষষ্ঠীর ব্রত। এই পুজোতে উল্লেখযোগ্য প্রধান কারণ হলো মেয়ে জামাইকে আমন্ত্রণ করা।
বটগাছ কে আমরা মা ষষ্ঠীর পূজা করে থাকি। অনেকে আবার মা ষষ্ঠী মূর্তি ও পূজা করে থাকে। আমি ছোট থেকেই দিদার সাথে ষষ্ঠী গাছ তলায় পুজো দিতে যাই ।মা ষষ্ঠীর পূজাতে পাঁচ রকম পাঁচটা গোটা ফল লাগে। গ্রীষ্মকালীন প্রায়ই সব ফলই পূজাতে ব্যবহার করা হয়। যেমন আম, কাঁঠাল, লিচু, মাদার, জামরুল ,তাল শাঁস ,জাম ,কলা ইত্যাদি। এছাড়া ষাটটি বাঁশের শিস, ষাটটি দুর্বা ঘাস ,বটগাছের ডাল, খেজুরের থকা, পুজোতে লাগে। একটা তালপাতার পাখা নিয়ে যেতে হয়। মা ষষ্ঠীকে হাওয়া দেবার জন্য। বাড়ি থেকে সর্ষের তেল দিয়ে হলুদ ও সিঁদুর গুলে নিয়ে যায়। ষষ্ঠী কাছে পুজো দিতে গিয়ে গোটা ফল আম কিংবা কলা ছাড়িয়ে গেছে লাগিয়ে দিতে হয়। তালপাতার পাখা দিয়ে মা ষষ্ঠীকে হাওয়া দিতে হয়।
গাছ তলায় একজন ঠাকুর মশাই থাকে উনি সব পূজো দিয়ে দেন। বাড়িতে জামাইকে যখন ষষ্ঠী খাওয়ানো হয়। তখন ৫ টা ফল দিয়ে বটগাছের ডাল দিয়ে জামাইকে বরণ করতে হয়। এছাড়াও মা ষষ্ঠীকে হাওয়া দিয়ে এসে। ওই পাখা দিয়ে জামাইকে হাওয়া করে। আর হলুদের ফোঁটা বাড়ির প্রত্যেকের কপালে পরিয়ে দেওয়া হয়। আমার বিয়ের পর থেকে ষষ্ঠী গাছ তলায় পুজো দিতে যাওয়া হয়নি। ভেবেছিলাম এবারেও যাব না। কারণ বাইরে প্রচন্ড গরম। এবারে আমাদের মামার বাড়িতে ষষ্ঠী পালন করা হয়েছিল মা ,বোন ,সব জামাইরা মামার বাড়িতে এসেছিল।
কিন্তু সবাই সময়ে এসে পৌঁছাতে পারেনি। তাই আমি, দিদা ,আর মামার মেয়ে গিয়েছিলাম ষষ্ঠী গাছ তলায় পুজো দিতে। যেহেতু সকালবেলায় ফাঁকা ছিল তাই তাড়াতাড়ি পুজো দিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলাম। আমরা পূজো দিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরই মা বোন সবাই চলে এসেছিল। মা যেহেতু বাড়ি থেকে পুজো দিয়ে আসেনি তাই আবার মায়ের সাথে যেতে হয়েছিল পুজো দিতে। দ্বিতীয়বার পুজো দিতে গিয়ে দেখলাম পাশের বাড়ির মাসিরা ও সবাই গিয়েছে পুজো দিতে। মাসির ছেলের জন্য মা ষষ্ঠীর কাছে মানসিক করা ছিল ।তাই মাসি প্রত্যেককে প্রসাদ বিতরণ করছিল। মা ষষ্ঠীর প্রসাদ আঁচল পেতে নিতে হয়। মা ষষ্ঠীর প্রসাদ খই, চিরে ,মুড়ি ,মুরকি কলা। আমি যেহেতু প্রথমবার গিয়েই পূজো দিয়ে ছিলাম ।তাই আর দ্বিতীয়বার গিয়ে পুজো দিইনি।
পুজো দিতে যাওয়ার সময় দিদা কিছু ফল কেটে নিয়ে যায় কারণ ষষ্ঠী গাছ তলায় অনেককে প্রসাদ দেয়। বট গাছটাকে একটা শাড়ি পরানো হয়।দ্বিতীয়বার পুজো দিতে গিয়ে অনেক ভিড় ছিল। ষষ্ঠী গাছ তলায় অনেকে জামাই মেয়েকে একসাথে পুজো দিতে নিয়ে যায়। পুজো দেওয়ার পরে সবাই মিলে আমরা একটু ছবি তুলে নিলাম। পুজো দিতে গিয়ে দেখলাম পাশে একটা গাছে লাল রঙের ফুল ফুটে রয়েছে। গাছটা আলো হয়ে ফুটে রয়েছে এছাড়াও গাছের নিচেও অনেক ফুল পড়ে ছিল । দেখতে সত্যিই খুব সুন্দর লাগছিল ।আজ এই পর্যন্তই থাক আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। আবার নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব।
জামাই ষষ্ঠীর সকাল বেলার মুহূর্ত আমাদের মাঝে আপনি তুলে ধরেছেন। যেখান থেকে জানতে পারলাম আপনারা বট গাছের মা ষষ্ঠীর পূজা করেন। এটা আমার কাছে অজানা ছিলো এবং আনন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাদের মা ষষ্ঠীর পূজোর কথা অনেক শুনেছি। কিন্তু এই মা ষষ্ঠীর পুজো নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আমার জানা ছিল না। হ্যাঁ আমিও অনেকেরই দেখেছি মা ষষ্ঠীর পূজা মূর্তিকে দিয়ে থাকে। কিন্তু আপনারা বটগাছকে ষষ্ঠী পূজা করে থাকেন।
আপনাদের ষষ্ঠী পূজায় পাঁচ রকমের ফল লাগে।
পুজোর সুন্দর মুহূর্ত নিয়ে পর শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
আমার পোস্টে এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জামাইষষ্ঠীর সকালের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। কারণ দেশ ও এলাকার ভিন্নতার জন্য আচার -অনুষ্ঠানে থাকে ভিন্নতা। তাই এই কার্যক্রম গুলো আমার অজানা ছিল এবং মনে হলো এটা আমার জন্য তথ্যবহুল ও বটে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি লেখা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
এই ষষ্ঠী পূজার নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো সামনে থেকে এই পুজোর নিয়মাবলী দেখার সুযোগ হয়নি। আর যেহেতু আমাদের ওদিকে এই পুজোর নিয়ম ছিল না,তাই এই পুজো করারও কখনো সুযোগ হয় নি। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বেশ কিছুটা ধারণা পেলাম ষষ্ঠী পূজার সম্পর্কে। আপনারা সকলে মিলে এই পুজোর মুহূর্তগুলোকে বেশ উপভোগ করেছিলেন তা আপনার পোস্ট পড়ে এবং ছবি দেখে বুঝতে পারলাম। জামাইষষ্ঠীর দিন পাখা দিয়ে জামাইকে হাওয়া দিতে দেখেছি, তবে সেই পাখা দিয়ে যে আগে মা ষষ্ঠীকে হাওয়া দিয়ে আসতে হয় এটা অজানা ছিলো। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ভালো থাকবেন।
ওরে বাবা এটা তো মনে হয় আপনাদের বেশ বড় একটা অনুষ্ঠান। বট গাছের নিচে সবাই মিলে পূজো দিয়েছেন এবং সবাই মিলে খুব সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন। জামাইষষ্ঠী আসলে কেন পালন করা হয় সেটা আমার জানা নেই। তবে আপনারা খুব সুন্দর ভাবে সেটাকে পালন করেছেন। ধন্যবাদ নিজের পরিবারের সাথে কাটানো এত সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।