গল্প-পূর্ণতা||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। মাঝে মাঝে গল্প লিখতে অনেক ভালো লাগে। তাই অবসর সময় পেলেই গল্প লেখার চেষ্টা করি। আসলে ভালো লাগার কাজগুলো বারবার করতে বেশ ভালো লাগে। তাই তো আজকে আমি আমার খুবই পছন্দের একটি কাজ করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখা গল্প সবার ভালো লাগবে।
পূর্ণতা:
Source
ভালোবাসা শব্দটাই বড় অদ্ভুত। কখনো আমরা কাউকে ভালোবেসে আগলে রাখতে চাই। কেউবা নিজের স্বার্থে নিজেকে আড়াল করে নেয়। অনু আর রাহুল একে অপরকে ভালোবাসতো। রাহুলের পাগলামির কাছে অনু হার মেনে যেত। তাইতো অনু সবসময় রাহুলকে ভালোবাসার ভরিয়ে রাখতো। কখন যে তাদের ভালোবাসার সময় গুলো কেটে গেছে অনু বুঝতেই পারেনি। কিন্তু সময় বড় নিষ্ঠুর। সময় যেমন জীবন থেকে হারিয়ে যায় তেমনি আপন মানুষগুলো সময়ের সাথে সাথে বদলে যায়। হয়তো ইচ্ছে করে নিজেকে বদলে ফেলে। কিংবা পরিস্থিতি তাদেরকে বদলে যেতে বাধ্য করে।
রাহুল আর অনু একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। কিন্তু এই বিয়ের কথা তেমন কেউ জানতো না। দু একজন কাছের বন্ধু বান্ধবী ছাড়া। তাদের এই বিয়ের কথা কেউ জানতেও পারেনি। চুপি চুপি ঘর বাধার স্বপ্ন দেখেছিল তারা। কিন্তু বিয়ের কিছুর দিন যেতে না যেতেই রাহুল বদলে যেতে শুরু করল। হয়তো অনুকে আর তার ভালো লাগেনা। সময়ের সাথে সাথে রাহুলের বদলে যাওয়া অনুকে ভীষণ কষ্ট দিত। অনু নিজের ভালোবাসার পরিণত দিয়েছিল। হয়তো স্বীকৃতি পায়নি। কোথাও যেন অপূর্ণতার কালো ছায়া তার জীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছিল। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল সময়গুলো। কখনো অবহেলা, কখনো অনাদর, কখনো বা কথার আঘাত সবকিছু মিলে অনু একটুখানি বাঁচতে চেয়েছিল। হয়তো ভালো থাকতে চেয়েছিল। দেখতে দেখতে কখন অনেকটা সময় কেটে গেল তখন অনু বুঝতে পারল তার ভেতরে অন্য কোন অস্তিত্ব বেড়ে উঠছে।
অনুর অপূর্ন এই জীবনে যখন পূর্ণতা এলো তখন অনু অনেক আনন্দিত হয়েছিল। কিন্তু তার আনন্দের সেই জীবনে হঠাৎ করে অন্ধকারের কারো ছায়া নেমে এলো। তার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারলো আজ নাকি রাহুলের বিয়ে। তার মায়ের পছন্দ করা সেই মেয়েটির সাথে রাহুলের বিয়ে হতে চলেছে। এই কথা শুনে অনু যেন আকাশ থেকে পড়ল। নিরবে নিভৃতে চোখের জল মুছে চলে গেল রাহুলের সাথে দেখা করতে। কিন্তু রাহুল কোনভাবেই তার সাথে দেখা করল না। রাহুলের বিয়ের আয়োজন আর আলোকসজ্জা যেন ওর জীবনে অন্ধকার নামিয়ে আনলো। চারপাশে আলো ঝলমল অথচ অনুর জীবনে অন্ধকার। সেদিন অনু নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। তার ভেতরে বেড়ে ওঠা অস্তিত্বকে নিয়ে এই পৃথিবীর বুকে বাঁচতে চেয়েছিল।
সেদিন রাতেই অন্য একটি শহরে চলে যায় অনু। যেখানে নিজের অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই করে সে। এভাবে ধীরে ধীরে যখন সময় পেরিয়ে যায় তখন তার গর্ভের সন্তান পৃথিবীতে চলে আসে। যেদিন অনু প্রথমবার নিজের মেয়ের মুখ খানি দেখেছিল সেদিন বুঝে গিয়েছিল তার জীবনের পূর্ণতা সে পেয়ে গেছে। হয়তো হাজারো অপূর্ণতার ভিড়ে আজ তার জীবন পূর্ণ হয়েছে। মেয়েকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেঁদেছিল অনু। আর বলেছিল তুই যে আমার অপূর্ণ জীবনের পূর্ণতা এনে দিলি। সারা জীবন আমি তোকে আগলে রাখবো। পূর্ণতাকে নিয়ে অনু ভালোই আছে। রাহুলের সাথে আর কখনো দেখা করেনি অনুর। হয়তোবা রাহুল কখনো জানতেই পারেনি তাদের সন্তানের কথা। রাহুল কখনো জানতেই পারেনি অনুর অপূর্ণ জীবন পূর্ণ করতে পূর্ণতা তার জীবনে এসেছে। দেখতে দেখতে সময়টা পেরিয়ে গেল। পূর্ণতাও বেশ বড় হয়েছে। হঠাৎ একদিন রাহুলের সাথে অনুর দেখা হয়ে যায়। সাথে ছিল পূর্ণতা।
অনুকে দেখে রাহুলের চোখ ছলছল করছিল। কিন্তু অনু একবারও রাহুলের সাথে কথা বলেনি। রাহুলের স্ত্রী পূর্ণতার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল এমন মিষ্টি মেয়ে যদি আমার থাকতো তাহলে হয়তো অপূর্ণ এই জীবনটা পূর্ণ হয়ে যেত। এই কথাটি শুনে অনুর বুঝতে বাকি রইল না তারা এখনো নিঃসন্তান। মনে মনে অনু যেন পূর্ণতার হাসি হাসলো। আর মনে মনে ভাবলো হয়তো এভাবেই অপূর্ণ জীবনগুলো পূর্ণ হয়ে যায়। কিংবা অপূর্ণতার কালো ছায়া কোন এক পূর্ণতা এসে পূর্ণ করে দিয়ে যায়। এভাবেই হয়তো কেটে যায় হাজারো আধার।
অনেক খারাপ লাগছে আপু অনুর জন্য। আচ্ছা আপু বলেন তো কেন অনুদের জীবন এমন হয়? আসলে আল্লাহর বিচার বলে তো কিছু আছে তাই না। আমার তো মনে হচেছ রাহুল তার সঠিক পাওনা পেয়ে গেছে। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে গল্পটি আমাদের জন্য উপস্থাপন করেছেন। আমার তো বেশ মন ছুঁয়ে গেল। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
হয়তো অনুরাই সবসময় কষ্ট পায়। তাদের জীবনেই হয়তো এরকমটা হয়। আর রাহুলদের মত ছেলেরা নিজেদেরকে বদলে নেয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
সত্যিই অনেক সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন আপু। অণুর জীবন কাহিনী পড়ে খুবই খারাপ লাগলো তার জন্য। কীভাবে রাহুল তার ভালোবাসাকে ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে পারলো ?সেটা সেই জানে। তবে কর্মফল বলে একটা জিনিস আছে, সেটা একদিন না একদিন মানুষ কোন না কোনভাবে ঠিকই ফেরত পাবে।
আমার লেখা গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে কিছু কিছু জীবনের গল্প আছে যেগুলো সত্যি অনেক কষ্টের। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
পূর্ণতা গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো আপু। অণুর জীবন কাহিনী খুবই দুঃখের। আসলে মানুষ এভাবেই হঠাৎ করে বদলে যেতে পারে ,তাই আজকাল মানুষকে বিশ্বাস করতে খুব ভয় হয়। তবে শেষ পর্যন্ত, অণুর কন্যা সন্তান পূর্ণতা তার জীবনে পূর্ণতা এনে দিল, এটাই অনেক।
আসলে কিছু কিছু গল্প আছে সেগুলো অনেক দুঃখের। হয়তো হঠাৎ করে প্রিয় মানুষ যখন বদলে যায় তখন সত্যিই অনেক কষ্ট হয়। তবে পূর্ণতা এসে অণুর জীবনে পূর্ণতা দিয়েছে।
আপু আপনার গল্পটা পড়ে সত্যি অনুর জন্য খারাপ লাগল রাহুলের মতো এমন মানুষের জন্য মানুষ ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারে না। যাইহোক আপু কর্মের ফল মানুষ ঠিক পায় আগে আর পরে।অনুর জীবনে পূর্ণতায় ভরেগেছে।আর রাহুলের জীবনে কি পেল। এটাই রাহুলের শাস্তি।
রাহুলের মত মানুষরা সবসময় প্রিয় মানুষটিকে কষ্ট দেয়। কিন্তু তারা ঠিক সময়ে নিজের কর্মের ফল পায়। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।