নাটক রিভিউ-পথে হলো দেরী|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। নাটক দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে তবে। আজকে কি পোস্ট করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাই আজকে ভাবলাম একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করব। আর সেই ভাবনা থেকে একটি নাটক দেখার চেষ্টা করেছি। আর সেই নাটকটির রিভিউ মাঝে উপস্থাপন করতে চলে এসেছি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
নাম | পথে হলো দেরী |
---|---|
প্রযোজক | এসকে শাহেদ আলী পাপ্পু |
পরিচালনা | জাকারিয়া সৌখিন |
সহকারী পরিচালক | জাহিদুল ইসলাম সুজন |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তটিনী ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ৩৬ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ২৪ ডিসেম্বর২০২৩ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- জিয়াউল ফারুক অপূর্ব-সাদাত
- তটিনী-গল্প
নাটকের শুরুতেই দেখতে পাই এই গল্পের অন্যতম চরিত্র সাদাত তার বিয়ের জন্য আংটি কিনতে গেছে এবং পছন্দ করে একটি আংটি কিনেছে। আর তার মা ও বোনকে বিষয়টি জানাচ্ছে। এরপর সে গাড়িতে উঠে বাড়ি যাওয়ার জন্য। কারণ তার এনগেজমেন্ট ডেট ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় অফিসের বস তাকে এমার্জেন্সি ডেকে পাঠায়। এরপর বাধ্য হয়ে সাদাত অফিসে চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর সে জানতে পারে অফিসের বসের এক বন্ধুর মেয়ে বিদেশ থেকে আসছে। সে কোন এক জায়গায় যেতে চায়। আর সাদাতের দায়িত্ব পড়েছে তাকে গাইড করার। সাদাত প্রথমে রাজি হচ্ছিল না। এরপর যখন অফিসের বস বলছিল যে এই কাজটি না করলে তাকে চাকরি হারাতে হবে তখন সাদাত রাজি হয়ে যায়। আর এনগেজমেন্টের ডেট পিছিয়ে নেয়। এবার যখন সাদাত রেডি হয়ে আসে তখন দেখতে পায় একটি মেয়ে সেখানে এসেছে। আর সেই মেয়েটিকে সে হৃদয়পুর নিয়ে যাবে। যেহেতু মেয়েটি বাইরের দেশ থেকে এসেছে তাই কেমন কিছু চেনেনা। আর তার কথা বলার ধরন সবকিছু আলাদা ছিল। তারা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। মেয়েটি নিজের মত করে গান গাইছিল আর এনজয় করছিল
সাদাত মেয়েটির উপর ভীষণ বিরক্ত হচ্ছিল। এরপর হঠাৎ করে সাদাত মেয়েটিকে বাংলায় কঠিন একটি শব্দে গালি দিয়ে কথা বলে। সাদাত ভেবেছিল মেয়েটি বাংলা বুঝে না। এসব কথা শুনে মেয়েটি তাকে বলে সে সবটাই বুঝতে পেরেছে এবং ভীষণ রেগে যায়। এবার সাদাত অনুরোধ করে যাতে এই ব্যাপারটি সে বসকে না বলে এবং ধীরে ধীরে তাদের দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। আর মেয়েটির নাম হল গল্প। গল্প ভীষণ ভালো একটি মেয়ে। আর খুব দ্রুতই সাদাতের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। গল্প জানতে পারে আসলে সেদিন সাদাতের সাথে অন্য একটি মেয়ের এনগেজমেন্ট ছিল। তাই তো সে ভীষণ রেগে আছে। গল্প সাদতের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। কারণ সে জানতো না সেদিন তারা এনগেজমেন্ট ডেট ছিল। এরপর গল্প বলে সেও একজনকে ভালোবাসে। আর সেই কবির সাথে দেখা করার জন্য সে হৃদয়পুর যাচ্ছে। পথ চলতে চলতে তাদের দুজনের মধ্যে বেশ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এবার হঠাৎ করেই তাদের গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। তখন সাদাত বুঝতে পারছিল না কি করবে। এরপর কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর একজনের কাছে খবর পাঠায় যাতে করে তিনি মেকানিক পাঠিয়ে দেন।
কিছুক্ষণ পরে একটি মেকানিক আসে আর তাদেরকে বলে তারা যেন গাড়িটি ধাক্কা দেয়। আর সেই লোকটি সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। আসলে ওটা মেকানিক ছিল না সে চোর ছিল। গাড়িটি হারিয়ে তারা ভীষণ বিপদের মধ্যে পড়ে যায়। কি করবে ভেবেই পাচ্ছি না। এমন সময় গল্প বলে সে ওয়াশরুমে যেতে চায়। আর সাদাত গ্রামের খুবই নিম্নমানের একটি ওয়াশরুমে গল্পকে নিয়ে যায়। এসব দেখে গল্প ভীষণ রেগে যায়। এবার গল্প আর সাদাত দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর গল্প একাই সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে আর রাস্তার মধ্যে কিছু বখাটে ছেলের সাথে দেখা হয়। গল্প আবারও সাদাতের কাছে ফিরে আসে। এসে দেখে সাদাত পানিতে নেমে হাতমুখ ধুচ্ছে। গল্প তার কাছে আসতে গিয়ে কাদায় পড়ে যায়। আর তার সারা শরীরসহ কাদা লেগে যায়। এবার সাদাত গল্পকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় আর সেখানে সবাই ভাবে হয়তো তারা হাজবেন্ড ওয়াই। এবার গল্প নিজের নোংরা কাপড় চেঞ্জ করে নেয়। আর সেই বাড়ির মহিলাটি গল্পকে শাড়ি পরিয়ে দেয়। তখন গল্পকে দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল।
এরপর তারা সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ে হৃদয়পুর যাওয়ার জন্য। এবার তারা খুঁজতে খুঁজতে একটি বাস স্টেশন পায়। আর সেখানে গিয়ে জানতে পারে এক ঘন্টা পরে একটি গাড়ি আসবে। গল্প আর সাদাত দুজনে গ্রামের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছিল। এমন সময় গাড়িটি তাদেরকে ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর তারা জানতে পারে পরদিন সকালে আবার গাড়ি আসবে। এবার তারা দুজনেই চিন্তায় পরে যায়। কি করবে ভাবতে লাগে। সাদাত তখন গল্পকে জানায় তার গার্লফ্রেন্ডের বাসা ফুলতলীতেই। গল্পকে বলে সে যদি চায় তাহলে তারা সেখানে যেতে পারে। এবার গল্প সেখানে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যায়। অন্যদিকে দুজনে প্ল্যান করে তারা হাজবেন্ড ওয়াইফের মত অভিনয় করবে। যাতে করে তার এক্স গার্লফ্রেন্ড জ্বলে পুড়ে যায়। তারা সেই বাসায় চলে যায়। আর সেখানে গিয়ে তারা একদম হাজবেন্ড ওয়াইফ এর মত অভিনয় চালিয়ে যায়। অন্যদিকে নাদিয়া অর্থাৎ সাদাতের এক্স গার্লফ্রেন্ড এসব দেখে ভীষণ মন খারাপ করে। আর ভেতরে ভেতরে অনেক কষ্ট পায়। তারা সেখানে অনেক সুন্দর সময় কাটায়। আর পরদিন সেখান থেকে চলে আসে। তারা যখন বাসে উঠেছে তখন হঠাৎ করে সাদাতের এক্স গার্লফ্রেন্ড ম্যাসেজ পাঠায় যে সে জেনে গেছে তারা হাজবেন্ড ওয়াইফ নয়। কিন্তু তাদের দুজনের যদি বিয়ে হতো তাহলে বেশ ভালো হতো।
এই এসএমএসটি দেখে দুজনে ভীষণ লজ্জায় পড়ে যায়। এরপর তারা আবারও হৃদয়পুরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। এবার কিছুদূর যাওয়ার পর তারা জানতে পারে বৃষ্টির কারণে সেদিন আর সেখানে বাস চলাচল করবে না। এবার তারা একটি পিকনিক স্পটে অনেকটা সময় কাটায়। আর পরদিন আবারো বেরিয়ে পড়ে হৃদয়পুর যাওয়ার জন্য। হৃদয়পুর গিয়ে দুজনের ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। কারণ দুজন দুজনকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল। অন্য দিকে গল্প তার সেই কবিকে পেয়ে যায়। কিন্তু গল্প মোটেও খুশি হতে পারছিল না। তার ভেতরে চাপা কষ্ট অনুভব করেছিল। সাদাত সেখান থেকে চলে এসেছিল। গল্প কেন জানি সব সময় মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকতো। এরপর কবি তাকে জানায় আসলে সে তাকে ভালোবাসে না। আর এরকম অনেক মেয়ের সাথেই তার সম্পর্ক রয়েছে। এই কথা শুনে গল্প কেন জানি খুশি হয়ে যায়। আর দ্রুত সেখান থেকে চলে আসে। এরপর সে সাদাতের কাছে যায়। আর জানতে পারে সাদাতের এনগেজমেন্ট ভেঙ্গে গেছে। আর সে অনুরোধ করে সে যেন তার পছন্দের আংটি গল্পের হাতে পাড়ায়। এভাবেই এই সুন্দর নাটকটি শেষ হয়ে যায়। আর সুন্দর একটি ভালোবাসার পূর্ণতা পায়।
নাটক দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। তবে এই নাটক একেবারে ভিন্নরকম ছিল। দীর্ঘ পথ চলতে চলতে দুজন মানুষের মধ্যে গভীর ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল। হয়তো হৃদয়ের অনুভূতি থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছিল। হয়তো সেই ভালোবাসা মনের গহীনে লুকিয়ে ছিল। আর শেষে দুজনের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছিল। সব মিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
আপু আপনি সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ উপস্থাপন করেছেন। এই নাটকটি কিছু দিন আগে দেখলাম। খুবই সুন্দর একটা নাটক। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে নাটকটি। আপনি চমৎকার ভাবে নাটকটির রিভিউ উপস্থাপন করেছেন।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
নাটক সময় পেলেই দেখি আমি।নাটক দেখতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।আপনি আজ খুব সুন্দর ভাবে নাটকের রিভিউটি শেয়ার করলেন। আপনার শেয়ার করা নাটকের রিভিউটি পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ হলো।আশা রাখি সময় পেলেই দেখবো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
নাটক দেখতে সবারই খুব বেশি একটু ভালো লাগে। তার নাটকের অনেক ঘটনা আমাদের বাস্তবে এর রূপ দেয়। নাটকের অনেক ঘটনা থেকেই মানুষ নিজেকে শুধরিয়ছ নিতে পারে। অপূর্ব এর নাটক আমি কমবেশি একটু দেখি। আপনি আজকে যে নাটকটি শেয়ার করছেন সেটি হচ্ছে পথে হল দেরি নাটকটি যদি আবার দেখা হয়নি তবে আপনার এই পোস্টটি দেখে দেখার আগ্রহী বেড়ে গেল ধন্যবাদ আপনাকে।
নাটকটার রিভিউ ফেসবুকে টুকটাক দেখেছি আর আজকে আপনার এই পোস্টে পুরোপুরি পড়লাম। হৃদয়নগর যাওয়ার ট্রুর নিয়েই মূলত এই নাটকের মূল কাহিনী। যে ট্রুরের কারণে এনগেজমেন্ট হলো না সেই ট্রুরমেট কে আংটি পরিয়েছে এ বিষয়টা মজা লেগেছে।
অপূর্ব নাটক মানে প্রেম অনুভূতি। আর এর নাটকগুলো আমার অনেক ভালো লাগে। ঠিক সে ভালো লাগার নাটকগুলোর মধ্য থেকে একটি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার নাটক রিভিউটা অনেক সুন্দর হয়েছে। নাটকটা অবশ্য আমার দেখা না থাকলেও দেখার প্রতি খুবই ইচ্ছা পোষণ হলো রিভিউ দেখার মধ্য দিয়ে।
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি৷ খুবই সুন্দর হয়েছে নাটকটি। আমি এই নাটকটি অনেক আগেই দেখে নিয়েছি৷ ভেবেছিলাম কিছুদিন পরে এই নাটকের রিভিউ দিব৷ তবে আজকে দেখি আপনি এই নাটকের ভিডিও দিয়ে দিয়েছেন৷ খুবই সুন্দরভাবে এই নাটকের সবগুলো বিষয়বস্তু ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷