শৈশব স্মৃতি- রান্না করার মজার একটি স্মৃতি||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। শৈশব স্মৃতিগুলো সত্যি অনেক মধুর ছিল। কথায় আছে শৈশব আমাদের জীবনের সোনালী অধ্যায়। আর সেই সোনালী দিনগুলো সব সময় স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকবে। এমন কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। আর হঠাৎ করে কোন স্মৃতি মনে পড়ে গেলে মনের অজান্তেই হেসে ফেলি। আসলে কিছু কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। তেমনি আজকে আমি খুবই মজার একটি শৈশব স্মৃতি সবার মাঝে উপস্থাপন করতে চলে এসেছি।
রান্না করার মজার একটি স্মৃতি:
Source
আমার এখনো মনে পড়ে সেই দিনটির কথা আমি তখন খুব সম্ভবত সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি। যেহেতু যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি তাই রান্নার ধারে কাছেও কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে আম্মু আব্বু সবার থেকে আলাদা থাকতেন। তখন আমার সবচেয়ে ছোট বোন সবেমাত্র হাঁটতে শিখেছে। বোন হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই তো আম্মু আব্বু বোনকে নিয়ে সেনাবাহিনীর মেডিকেল হসপিটালে যায়। হসপিটালে গেলে সত্যি অনেক দেরি হয়ে যায়। অন্যদিকে সেদিন আমার স্কুল বন্ধ ছিল। তাইতো আমি বাসায় ছিলাম। ভাবলাম আম্মু এসে রান্না করবে তাতে অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমি ভাবলাম নিজে নিজেই কোন কিছু করি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। প্রথমে আমি ভাবলাম ডাল রান্না করে রাখি। আম্মু এসে অন্যকিছু রান্না করবে। এরপর আমি এক কেজি ডাল সিদ্ধ করার জন্য দিয়েছিলাম🤭। আসলে আমি বুঝতে পারিনি যে অল্প ডাল সিদ্ধ করলেই অনেকগুলো হয়ে যায়।
এরপর যখন কড়াই ভর্তি হয়ে যাচ্ছিল তখন দেখে তো আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কড়াই এর চারপাশ দিয়ে পড়ে যাচ্ছিল। কোনরকমে কড়াই নামিয়ে রেখেছি। এবার আমারও একটু ক্ষুধা লেগে গিয়েছিল। তাই ভাবলাম আমার পছন্দের ডিম ভাজি করে ফেলি। যখন ডিম ভাজি করতে যাব তখন হঠাৎ করে মনে হল আলু দিয়ে যদি ডিম ভাজি করি। এরপর ডিম ভাজি করে নিয়ে আলু দিয়ে ভাজি করেছিলাম। আর সেই ডিম ভাজি নিয়ে ফ্রিজে রেখেছিলাম 😅😅। যখন ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা ডিম ভাজি বের করেছিলাম তখন খাওয়ার উপযোগী ছিল না। আসলে সবাই গরম গরম ডিম ভাজি খায় আর আমি বোকার মত ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম। আসলে সেই দিনের কথা কখনোই ভুলতে পারবো না। আমি তো ভেবেছিলাম সব তরকারি ফ্রিজে রাখলে ভালো থাকে তাই তো ডিম ভাজি করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম।
এবার আসি তৃতীয় রান্নার কথায়। বাসায় একটি কাজের মেয়ে ছিল সেও আমার থেকে বয়সে ছোট। শুধু আমার বোনকে দেখাশোনা করত। এবার সে এসে বলল আপু লাল শাক আছে এগুলো রান্না করো। আমি তো আবার মনে করেন সেরা রাধুনী🤭🤭। তাইতো আমিও লাল শাক কেটে ধুয়ে নিলাম এবং কড়াইয়ের মধ্যে তেল গরম করে এর মধ্যে পেঁয়াজ, লবণ, মরিচ, জিরা, আদা, রসুন, যা ছিল ঘরে সবকিছু দিয়ে দিলাম। এরপর শাক দিলাম। একটু পরে দেখি কড়াই ভর্তি পানি। এটা দেখে তো আমি ভাবলাম শাক ভাজির ঝোল হলো কেন 😅😅। এসব ভয়ংকর রান্নাবান্না দেখে আমি তো টাস্কি খেয়ে গেলাম। ভাবলাম আজকে কপালে নির্ঘাত দুঃখ আছে। আম্মু এসে আজকে সেই লেভেলের বকা দিবে। করতে গেলাম ভালো আর হয়ে গেল সবকিছু এলোমেলো। এবার আমার বোঝা হয়ে গিয়েছিল কপালে কি আছে। সবকিছু রেখে সোজা গিয়ে পড়তে বসলাম। কারণ সব সমস্যা মোকাবিলা করার সমাধান হলো পড়তে বসা।
আমার রান্না করার ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে জানিনা তবে এই কথাগুলো মনে পড়লে আমার এখনো ভীষণ হাসি পায়। আসলে সেই দিনগুলো হয়তো ফিরে আসবেনা তবে স্মৃতির পাতায় সারা জীবন থেকে যাবে। তাই তো মন খারাপের সময় গুলোতে এই কথাগুলো মনে হলে ভীষণ হাসি পায়। আর এখনো মাঝে মাঝে আম্মু এগুলো বলে। আশা করছি আমার এই পোস্ট সবার ভালো লাগবে।
বিশ্বাস করেন আপু কি পরিমান হেসেছি আমি। যদি পারতাম ভিডিও করে পাঠিয়ে দিতাম। এক কেজি ডাল, ডিম দিয়ে আলু ভাজি , তাও আবার ঠান্ড করতে ফ্রিজে। এটলাস্টা জিরা আদা দিয়ে লাল শাক ভাজি। আচ্ছা আপু আন্টি এসে কি বলেছিল সেটা তো বললেন না। আর আমার হাসির উপহার দেন। এত হাসালেন কেন?
আরে সেদিন তো আমি নিজেই অনেক ভয়ে ছিলাম ঘর থেকে বেরোলে তো কিছু বলবে। 😅😅
আপু আপনার রান্না করার মজার স্মৃতিটুকু পড়ছিলাম আর সব যেন চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছিলাম। যতই গল্প পড়ছিলাম ততই যেন হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছিল। ১ কেজি ডাল সিদ্ধ করে রান্না করলে কেমন হবে সে ধারণাটা আপনার ছিল না। আবার অন্যদিকে লাল শাকের মধ্যে আদা রসুন পেঁয়াজ সহ ঘরে থাকা মশলাও দিয়ে দিয়েছিলেন, লাল শাকে যে প্রচুর পানি ওঠে সে বিষয়ে আপনার জানা ছিল না। আর ডিম ভাজি ফ্রিজে রাখা হাহাহাহা। খুব মজা পেলাম আপু, আপনার শৈশবে রান্না করার মজার স্মৃতিটুকু পড়ে।
ভিন্ন ধরনের রান্নার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম ভাইয়া। সেই স্মৃতিগুলো সত্যি সারা জীবন মনে থাকবে। মন্তব্য প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।
সত্যি আপু বিষয়টি পড়ে অনেক হাসি পেল ডিমের সাথে আলু ভাজি করলেন আপনি আবার ফ্রিজে ঢুকায় রাখলেন।সবকিছুর মধ্যে একটা অভিজ্ঞতা লাগে অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন কিছু করা সম্ভব না। তাছাড়া ডালের ব্যাপারটাও আরো মজার ছিল। খুব সুন্দর শৈশবের কিছু স্মৃতি শেয়ার করলেন আপনি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য বিষয়টি।
আমিতো ডিম ভাজি নষ্ট হওয়ার ভয়ে ফ্রিজে রেখেছিলাম। এরপর বের করে দেখি ঠান্ডায় আর খাওয়া যাচ্ছে না। যাইহোক আপু শৈশবের অনেক স্মৃতি আছে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকে
এই স্মৃতিটিও আমার সারা জীবন মনে থাকবে।
ডিম ভাজি ফ্রিজে রাখার ব্যপার পড়ে এতো হাসি পাচ্ছিল আপু।আবার লাল শাক ভাজিতে এতো উপকরণ।আসলেই আপু সেরা রাধুনী না হলে এতো কিছু সম্ভব না।গল্পটি মজার ছিল হাহা।সবার রান্নাবান্নার প্রথম জীবন হয়তো এরকমই।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ডিম ভাজি ফ্রিজে রাখার ব্যাপারটি শুনে আপনার হাসি পেয়েছে জেনে সত্যি ভালো লাগলো। আসলে আমরা যারা প্রথম প্রথম রান্না করেছি তখন অনেক রকমের ভুল হয়েছে। আর সেই স্মৃতিগুলো মনে হলে এখনো হাসি পায়।
আমার ফুফাতো বোন অনেক আগে ডাল রান্না করতে গিয়ে আপনার মতো একই কাহিনী করেছিল। যদিও কলেজে পড়া অবস্থায় সে এই কাহিনী করেছিল। আপনার রান্না করার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা শুনে তো হাসতে হাসতে শেষ। দারুণ মজার স্মৃতি শেয়ার করেছেন আপু। পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার ফুফাতো বোন আমার মত করে রান্না করেছিল তাই বুঝতে পারছি ব্যাপারটা বেশ ভয়ঙ্কর ছিল। আসলে ভিন্ন কিছুর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সত্যি ভালো লাগে।